"র" এর ইতিহাস (প্রথম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন বশর সিদ্দিকী ১৮ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:০৯:১৭ রাত
১৯৬৮ সালের ২১ শে সেপ্টেম্বর তৎকালিন ভারতের প্রধানমন্ত্রি ইন্দিরা গান্ধির নির্দেশে আইবি(ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) বিভক্ত হয়ে 'র' এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। কিন্তু কেন তৎকালিন শক্তিশালি আইবি ভেঙে আলাদা ভাবে শুধু মাত্র বৈদিশিক কর্মকান্ডের জন্য একটি আলাদা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পরল?
এটি জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৬০-১৯৭০ এর সময়ে। তৎকালিন পুর্বপাকিস্তানের চট্টগ্রাম জেলার অত্যান্ত দুর্গম পাহারি অঞ্চল গুলোতে। ভারতের মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ড প্রদেশ দুটিতে স্বাধিনতার জন্য বিদ্রোহ প্রচন্ড রকম মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। আর এই স্বাধিনতাকামি বিদ্রোহেদের একটি প্রধান আশ্রয়ের এবং লুকিয়ে থাকার আদর্শ স্থান ছিল এই অঞ্চলটি।
এর মধ্যে তৎকালিন পাকিস্তান সরকার এর সামরিক ইন্টেলিজেন্স বা থিংক ট্যাঙ্ক এই বিষয়টিকে তাদের জন্য একটি সুযোগ হিসাবে নেয়। কারন ভারত যত বেশি পরিমানে অস্থিতিশিল হবে তাদের এই অঞ্চলে পাকিস্থানের স্বার্থ আরো বেশি পরিমানে সংরক্ষিত হবে। তাই তাদের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা চট্টগ্রামের এই বিস্তির্ন দুর্গম পাহারি অঞ্চলে বেশ কিছু সামরিক ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করে।
প্রথমেই তারা নাগাল্যান্ড থেকে পালিয়ে আসা বিদ্রোহি নেতা ফিজো এবং তার অনুসারিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে। ফলে সমগ্র নাগাবিদ্রোহিদের কাছে আইএসআই একটি ভরসার নাম হয়ে উঠে। ফলে নাগাল্যান্ডে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। কারন নাগাল্যান্ড পুর্বপাকিস্তানের স্টাইলে ভারত দ্বারা স্বাষিত হত না ডাইরেক্ট ধর্ষিত হত।
এর পরই আসে মিজোরাম। তবে মিজোরাম এর বিদ্রোহিরা বেশি সহয়তা পেত বার্মা এবং চিনের দ্বারা। এর কারন আমি পরের পর্বে র এর চিনের সাথে কর্মকান্ড নিয়ে লিখব ইনশাআল্লাহ। তবে ১৯৬০ এর দিকে আইএসআই মিজো বিদ্রোহি নেতা লালদেঙ্গার নেতৃত্বাধীন মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (এমএনএফ) পার্বত্য চট্যগ্রামে আশ্রয় দেয়। এতে মিজোরামের সাধারন বিদ্রোহিদের কাছে আইএসআই এবং পাকিস্তান আরো গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে চলে যায়।
এই সব শক্ত বিদ্রোহি দেরকে সামরিক কায়দায় হামলা চালিয়ে হত্যা করে দমন করা ভারতের জন্য ছিল একটা অসম্ভব ব্যাপার। কারন পাকিস্তান সুযোগ খুজছিল যে কোন ভাবে ভারতের সাথে যুদ্ধ করার। কারন সেটাই ছিল তাদের ক্ষমতার মসনদের বসে থাকার একমাত্র উপায়। আর এর মধ্যে যদি ভারত পুর্ব পাকিস্তানে একটি সামরিক অভিযান বা এ ধরনের কোন কিছু পরিচালনা করে তবে বল পাকিস্তানের পায়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল শত ভাগ।
ঠিক এইরকম কঠিন সময়ে সময়ে ভারতের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল গুপ্ত হামলা চালিয়ে এদের আস্তানা গুরিয়ে দেয়া। আর তার জন্য প্রয়োজন ছিল এদের অবস্থান সম্পর্কে ব্যাপক গোয়েন্দা ইনফরমেশন কালেক্ট করা। ঠিক সেই মুহুর্তে আইবি তাদের বৈদেশিক এবং আভ্যন্তরিন দুই ক্ষেত্র একই সাথে পরিচালনা করতে পারছিল না। বিশেষ করে তাদের বৈদেশিক শাখা পুর্বপাকিস্তানে একেবারেই ফেইল মারছিল আইএসআই এর হাতে। নাগাল্যান্ড হাতছারা হবার পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। মিজোরামের ব্যাপারে ভারত সরকারের হাতে কোন তথ্যই ছিল না।
চলবে..................
বিষয়: রাজনীতি
১৭৩৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন