এটাই কি ইসলাম?
লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:০৫:০৮ সন্ধ্যা
একটা ঘটনা শুনছিলাম,এক চোর চুরি করার পূর্বে আল্লাহর কাছে আকুল কন্ঠে দোয়া করে,আজকের চুরিতে যেনো বেশী বরকত হয় এবং সে যেনো ধরা না পড়ে।
কয়েকদিন পূর্বে হ্যাপি আক্তারের একটা পোস্টে দেখি,সে কুরআন-হাদীসের ব্যাখ্যা দিয়ে রুবেলকে জাহান্নামের ঠিকানা দিয়ে দিয়েছে।আর আল্লাহ প্রতারককে কি শাস্তিও দেন,সেটারও ব্যাখ্যা করেছে।
গতকাল একটা দোকানে ঘুরতে গিয়ে দেখি,এক জায়গায় লেখা রয়েছে-আল্লাহ শহীদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন,কিন্তু মানুষের দেনা মাফ করেননা।
লেখাটা দেখে হাসতে হাসতে ক্লান্ত হয়ে যাই।ছোট ভাইকে দেখানোর পর বলে-যার যেখানে যেমন দরকার,সেখানে তেমন ইসলামই ব্যবহার করে থাকে।
এবার আসল কথায় আসি।
একটা সময় নিজের ইসলাম নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম।কখনো কারো ইসলাম বুঝা নিয়ে কোন দৃষ্টিভঙ্গি দেইনি।যে যেমন ইসলাম বুঝে,সে তেমন ইসলামই পালন করুক,এই নীতিতে চলতে বিশ্বাসী।
কিন্তু ইসলামকে জীবনবিধান হিসেবে মেনে না নিয়ে ব্যবহার করা লোকদের দেখে বিরক্ত হয়ে গেছি।নিজেকে বিশাল ইসলামপন্হীরুপে দাবী করে ইসলামের উল্টা-পাল্টা ব্যাখ্যা ইসলামের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে।
কেউ নিজস্ব মতামতে না পেরে পিছনে গিয়ে অপবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে আর বলছে,আমি দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত আছি।আবার ধরা পড়ে গিয়ে বাচ্চা ছেলেদের মত মহিলাদের আচলের নিচে লুকিয়ে থাকছে।আর কেউ কেউ সেটাকে নিয়ে অন্যখানে বীরত্ব দেখিয়ে বেড়াচ্ছে।
একদিকে ইসলামী পোস্ট দিচ্ছে,আরেকদিকে পর্নোসাইটে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।আবার সেই পর্ণোসাইট দেখে দেখে ইসলামের দৃষ্টিতে কেনো এটি খারাপ,এর ক্ষতিকর প্রভাব কি,সেটির বিশ্লেষণমূলক লেখা লিখছেন।
কোন ছেলে মেয়েকে নিয়ে বা কোন মেয়ে ছেলেকে নিয়ে গবেষনা করে কে কোনদিকে তাকাচ্ছে,কতবার তাকাচ্ছে,সেটি বিশ্লেষণ করে ইসলামী পোস্ট দিচ্ছে।কুরআন-হাদীসের ব্যাখ্যা দিয়ে সেটিকে হারাম বুঝিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু পরস্পর পরস্পরকে নিয়ে গবেষণা করাটা জায়েজ কিনা,সেটি উনি জানেননা।
নিজেকে ইসলামের বিশাল দায়ীরুপে পেশ করে বিপরীত লিঙ্গের সাথে রাত জেগে ইসলামের অপ্রকাশ্য দাওয়াতী কাজ করে যাচ্ছেন।
নিজস্ব ইসলামের সাথে কারো মতের মিল না হওয়ায় কেউ কেউ উপাধিতে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছেন।কাউকে পর্ণোনির্মাতা,লুইচ্চা,নারীলোভীসহ আরো উপাধিতে ভূষিত করছেন।আবার অনেক সময় এটিতে না পেরে নিজস্ব লোকদের পোষা কুকুরের মত অন্যদের পিছনে লেলিয়ে দিচ্ছেন।
মানুষের সাথে মিশে,তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে,তাদের আভ্যন্তরীণ খোজ-খবর নিয়ে কারো কারো কাছে বলে বেড়াচ্ছেন-আর বইলেননা!ফালতু একটা লোক।মানুষকে ইসলামের কথা শোনায়,কিন্তু নিজের বোনকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছেন।আর সেটা নিয়েও আবার দ্বীনের কাজে ব্যস্ত হয়ে যান।
চরিত্রহীন ও লম্পটধারী মানুষদের ধরে ধরে জান্নাতের সার্টিফিকেট দিচ্ছেন।আবার তাদের কাছ থেকেও জান্নাতের সার্টিফিকেট নিয়ে নিচ্ছেন।
ইসলামের নামে ব্যবসা করে কেউ কেউ মানুষকে প্রতারিত করছে।আবার সেটাকে আল্লাহর পরীক্ষা বলে দিব্যি বলে বেড়াচ্ছেন।
নিজস্ব স্বার্থের জন্য একটা সহজ ঘটনাকে ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন।আবার সেটা নিয়ে ব্ল্যাকমেইলও করছেন।কাউকে বাসায় দাওয়াত দিয়েও সেটাকে আবার মিথ্যাচার করে অন্যকিছু বলা হচ্ছে।
নিজেকে ইসলামের বীর দাবী করা লোকের অভাব নেই।এদেরই কেউ কেউ সামনে ভিজা বিড়াল হয়ে কোন কোন মহিলার কাছে বাঘের রুপ ধারণ করে।আর সেখানে গিয়ে হুমকি দিয়ে বেড়ায়।
কাউকে নিয়ে ইচ্ছেমত কটুক্তিকর,অশ্লীল পোস্ট দিচ্ছেন,কিন্তু পরে যখন আবার আরেকজন উনার জবাবে উনাকে নিয়ে পোস্ট দেন,সেটাকে উনার আল্লাহর পরীক্ষা ও ঈমানের পাল্লা বেশী বলে বেড়াচ্ছেন।
মাঝে মাঝে ভাবি,এটাই কি ইসলাম?নিজের মতের সাথে মিললেই সেটা ইসলাম থাকবে আর না মিললে গালিগালাজ শুরু হয়ে যাবে।
ইসলামের ভিতরকার কীটগুলোই ইসলামের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর,সেটা অনেক দেরীতেই বুঝেছি।ইসলামের ভিতর থেকেই ইসলামের গাদ্দার ও ইবনে উবাইয়ের মত লোক বের হয়ে আসে।আর তারাই ইসলামের রুপ নিয়ে ইসলামের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত হয়।
আল্লাহ হয়ত মুসলিম জাতির ভাগ্য এটাই রেখেছেন।গাদ্দার শ্রেণীর লোকেরা ইসলামের বাণী শোনাবে আর সেই বাণীর ফলে ইসলাম দ্বিধা বিভক্তি হয়ে যাবে।
ইসলামের নামে বাণিজ্য করা লোকের অভাব নেই।আর সেখানে সহীহ ইসলামের কথা বলতে ঐ শ্রেণীটাই সর্বপ্রথম সামনে বাঁধা প্রদান করে।তবে তাদের সাথে যোগ দিয়ে দিলে একজন চরিত্রহীন ও লম্পটধারীকেও জান্নাতের সার্টিফিকেট দিতে দেরী হয়না।
বিষয়: বিবিধ
১৫২৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
". . . ইসলামের নামে বাণিজ্য করা লোকের অভাব নেই। . . . তবে তাদের সাথে যোগ দিয়ে দিলে একজন চরিত্রহীন ও লম্পটধারীকেও জান্নাতের সার্টিফিকেট দিতে দেরী হয়না। . . . !! - আসলে নামধারী মুসলমানদের অসৎ-কুৎসিত মানসিকতার জটিলরূপটি স্পস্ট হয়ে উঠেছে।
এর কারণ হিসাবে বলা যায়, আমাদের সমকালীন মানব সভ্যতায় কুশিক্ষার প্রভাব, অসততা আর অশ্লীলতার অবাধ চর্চা, বিরামহীনভাবে হারাম উপার্জন গ্রহন, . . . ইত্যাদি। . . . কিন্তু, দূঃখের বিষয় হচ্ছে, আমরা জেনে-বুঝেও খবিছ ইবলিসের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ইতিবাচক কিছু করতে পারছি না।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ...
আমাদের ভিতরকার কুৎসিত মননই উঠে আসল লেখায়!
আমাকে সহ সকল কে ধান্ধাবাজীর এই অপকর্ম থেকে হেদায়েতসহ আল্লাহ হেফাযত করুন,আমিন!
কে রাসূলের সমকক্ষ দাবী করেছে?
কারা যা-ই করে তা সওয়াব?
আরেকজনের মিথ্যা অপবাদের জন্য দায়ী করে নিজেই বাচ্চাদের মত নিকৃষ্ট রকমের অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাতে ক্ষতিটা কার হচ্ছে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন