কমুনিষ্টদের প্রতারণা
লিখেছেন লিখেছেন Medha ২০ মে, ২০১৪, ০৩:০৬:৫৫ দুপুর
পৃথিবী বস্তুর নিয়মের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এজন্য কোন সার্বজনীন সত্ত্বাবা খোদার প্রয়োজন নেই’’।-কার্ল মার্কস।
কমুনিষ্টরা মূলত: বস্তুবাদী। বস্তুই আদী এবং বস্তুই শেষ। কিন্তু এই মতবাদের বিজ্ঞানভিত্তিক যৌক্তিকতা নেই বলে তারা মানুষকে কিভাবে ধোকাদেয় এবংকিভাবে প্রতারণার আশ্রয় নেয় সে বিষয়ে উল্লেখ করছি। যারা এটা পড়বেন তারা যেন আমাদের দেশেররাজনীতিবিদদের কথা ও আচরণ সামনে রাখেন। সত্যটুকু জানতে পারলে মানুষেরপরিচয় জানা সম্ভব। ৯১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হবার পর কমুনিষ্টরা ৯৬ সাল থেকে ধর্ম নিয়ে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাদেশবাসি স্বচক্ষেদেখেছে এবং দেখে আসছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য দেশের মুসলমানরা বাহ্যিকতা দেখে নেতাদেরকে বিচার করেছে। তাই তাদের মূলউদ্দেশ্য আজো বুঝতে পারেনি। অথচ আল্লাহ দেখেন মানুষের অন্তরকে। মানুষের সাথেপ্রতারণার মাধ্যমে আজ পর্যন্ত প্রতারণার আফিম খাইয়ে তারা ঘুম পড়িয়ে রাখছে। বাহ্যদ্রষ্টা মুসলমানরা কিছুই বুঝতে পারছে না।
তাদের প্রতারণা:
১.ধর্মীয় বদ্ধ ধারণাগুলো থেকে মেহনতি মানুষকেমুক্ত করাই পার্টির লক্ষ্য।-কমিউনিষ্ট পার্টির ধর্ম বিষয়ক কর্মসূচী।
২.আমরা আমাদের কর্মসূচীতে নিজেদেরকে নাস্তিকহিসেবে ঘোষণা করবো না।...তবে ধর্ম বিশ্বাসীদের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করাটা সযত্নে এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ আঘাত করলে ধর্মীয়উম্মাদনা আরো বেড়ে যেতে পারে।-ধর্ম প্রসঙ্গে’ পুস্তকে লেনিন।
৩.যদি ধর্মে আঘাত করা হয় তবে প্রলেতারিয়েতরাক্ষেপে যেতে পারে। প্রচার মাধ্যমেধর্মীয় চেতনা দূরীকরণের প্রত্যাশা বুদ্ধিহীনতার নামান্তর। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ধীরে ধীরে ধর্ম সম্পর্কে মানুষ যাতেআগ্রহ হারিয়ে ফেলে এজন্য তাদের মস্তিস্ক ধোলাই করতে হবে।-ধর্ম প্রসঙ্গে’ পুস্তকেলেনিন।
৪.এ কারণেই যে সব ধর্মীয় নেতা বা বুদ্ধিজীবি আছেযাদের মধ্যে এখনো কিছু কিছু ধর্ম বিদ্যমান তাদেরকে আমাদের পার্টিতে আসা নিষেধ করা হয়নি।-ধর্ম প্রসঙ্গে’পুস্তকে লেনিন।
৫.সরকারী নথিপত্রে যে কোনো নাগরিকের ধর্মেরউল্লেখ মাত্রও প্রশ্নাতীতভাবে বর্জিত হবে।-ধর্ম প্রসঙ্গে’পুস্তকে লেনিন।
৬.ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক কোন সংস্থাকে কোন প্রকারসরকারী অনুদান বা বৃত্তিদান করা চলবে না।-ধর্ম প্রসঙ্গে’পুস্তকে লেনিন।
৭.ধর্মকে ধংস করতে হবে, রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে এবং ধর্ম থেকে বিদ্যালয়কেবিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে। ধর্মীয় কোন প্রচারকিংবা ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে ক্রমান্বয়ে ধর্ম বিদায় হবে।-ধর্ম প্রসঙ্গে’পুস্তকে লেনিন।
৮.‘‘এঙ্গেলসধর্মের বিরুদ্ধে তাদের সকল রকম প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণাকে নির্বুদ্ধিতা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণার ফল হবে ধর্মে মানুষের আগ্রহ জাগিয়ে তোলা। সত্যিকার অর্থে তখনধর্মের বিলুপ্তি কঠিন হবে।’-ধর্ম প্রসঙ্গে’ পুস্তকেলেনিন।
(কি বুদ্ধিবৃত্তিকপ্রতারণা ও চাতুর্যের সাথে তারা ধর্মের বিলুপ্তি সাধনে নেমেছে। তাই কমুনিষ্টরা মুসলমানদের সাথে নামাজ পড়ে, অনেকে বারবার হজ করে এবং নামের আগে আলহাজ শব্দটি ব্যবহার করে। তারা কোরবানীও করে। জানাজায় অংশগ্রহণ করে। মোট কথা প্রতিনিয়ততারা মুসলমান সেজে মুসলমানদের সাথে প্রতারণা করে। তারাই স্বঘোষিত নাস্তিকদের জানাজা ও কবর দেবার ব্যবস্থা করে। এবংনিজেকে মুসলমান প্রমাণ করার জন্য বারবার প্রকাশ্যে নিজের নামাজ ও কোরআন পড়ার কথা ঘোষণাকরে।)
৯.পার্টি সব ধরণের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ধর্মবিরোধীপ্রচারণা চালায়। শ্রমজীবী মানুষের মনকে বিষাক্তকারী ধর্মবিশ্বাসী নেতাদের ব্যাপারেও পার্টি নিরব থাকতে পারে না।-লেনিনবাদের সমস্যা’:-ষ্ট্যলিন।
১০. ধর্ম অত্যন্ত পবিত্র এবং ব্যক্তিগত বিষয়। তাই এটাকেরাজনীতিতে টেনে আনা ঠিক নয়।-আমাদের দেশের মুখচেনা বুদ্ধিজিিব ও রাজনীতিবিদ।( অর্থাৎ রাজনীতিকে তারা চিরকালই অপবিত্র ও কলুষিত রেখে সকলপ্রকার দুষ্কর্মেরআখড়ায় প্রতিষ্ঠিত রাখতে চায়। না হলে তাদের স্বার্থ সিদ্ধি হয় না। ধর্মের পবিত্রতা দিয়ে তারা রাজনীতিকে পবিত্র করতে চায়না। আর ইসলামের আবির্ভাবরাজনীতিকে পবিত্র করার জন্য।)
কমুনিষ্ট দেশে ধর্মীয় সম্মেলন, আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানবা ওয়াজ মহাফিলের জন্য কোন হল বা স্থান ভাড়া বা বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হয় না।
তবে সরকার দেশ-বিদেশের আলেমদের নিয়ে সভা করে এবংদেশ ও বিশ্বকে দেখায় তারা ধমের্র বিরুদ্ধে তো নয়ই বরং ধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।
কমুনিষ্টদের কাছে তাই-ই নীতি যা তার স্বার্থেরঅনুকুলে। স্বার্থের বিপরীত হলে তারা আপনজনকেও ক্ষমা করে না।
১১.রাষ্ট্রীয় আইন হবে ধর্মকে প্রসারিত করার জন্যনয়, বরং ধর্মকে সংকুচিত করারজন্য।
১২.ধর্মীয় সংস্থাগুলো কোনো সেবামূলক, সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ডেঅংশ নিতে পারবে না।
উপরোক্ত বিষযগুলো সচেতন মানুষের জন্য যথেষ্ঠ বলেমনে করি।
বড়বড় রঙিন রঙিন মন ভোলানো কথাই হচ্ছেকমুনিষ্টদের হাতিয়ার। প্রতারকদের কথায় যাদু থাকে। বর্তমানে মুসলমানরা কি ধরণের অন্ধকার গর্তে পড়েছে হয়তো তারা নিজেরাও জানেনা। একদিকে কমুনিষ্ট,অন্যদিকে কাদীয়ানী, আর চতুর্দিকে মুশরিক ইহুদী বলয়।
রসূলুল্লাহ স:-এর জীবনে এইরকম চতুর্মূখী সমস্যাও আক্রমণবহুবার এসেছে। কিভাবে স্বল্প জনবল, স্বল্পঅস্ত্র এবং ক্ষুধার্ত পেটে আল্লাহর রাসূল স: সেই সব সমস্যা হতে মুক্তি পেয়েছেন, সেই ইতিহাসকে সামনে রেখে অগ্রসর হওয়া দরকার। ষষ্ঠ হিজরীতে খন্দকেরযুদ্ধের পর আল্লাহর রাসূল স: বলেছিলেন,‘‘এই বছরেরপর কুরাইশরা আর তোমাদের উপর হামলা করিতে পারিবে না, বরং অত:পরতোমরাই তাহাদের উপর আক্রমণ চালাইবে।”
আসলে বেশি বেশি আত্মরক্ষা মানুষের মনকে দুর্বলএবং ভীরু করে দেয়।
বিষয়: বিবিধ
৮৮৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন