এতে কি আমার কোন দোষ আছে ??
লিখেছেন লিখেছেন জোস্নালোকিত জ্যাস ১৭ আগস্ট, ২০১৪, ০১:১০:৫৭ রাত
রাত্রি এগারো টা বাজে। স্টেজে একজন বক্তা বয়ান চালিয়ে যাচ্ছে । ময়দানে মানুষের উপস্থিতি স্বল্প।মুহতামিম হুজুরের মন খারাপ। বারবার আক্ষেপ করিতেছে। মাদ্রাসার অথিতিখানায় আমি সহ কয়েকজন মুরুব্বি তেনার কথা নিরবে হজম করিতেছি।
এক পর্যায়ে হুজুরা খানা থেকে বের হয়ে ময়দানের অবস্থাও দেখে এলাম। বললাম হুজুর লোকজন নাই সেই জন্যে এত আক্ষেপ? সুযোগ পেয়ে আবার আম জনতাকে ভিন্ন ভাষায় গালাগালি শুরু করে দিলেন। বিশেষ করে উর্দুতে। ভেবেছিলেন কেহ হয়তো বুঝতেছেনা তাই বকেই যাচ্ছিল। আমি ভ্রুকুটিত করে আজব দৃষ্টিতে চাহিয়া শুনিতেছি। অসহ্য হয়েই বলিলাম, মুহতারাম ইয়ে কন্সি দাঈ কি খুছুসিয়াত কি নাজারা পেস হো রাহে ? [মুহতারাম এটা কোন ধরনের দাঈর বৈশিষ্ট্য আপনি দেখাচ্ছেন? ] উপস্থিত সবাই আমাকে চক্ষু রাঙিয়ে অবাক চাহনিতে একটা ভাব লইলো, যেন আমি কথার মাঝে কথা বলে ওহী আগমনে ব্যাঘাত ঘটিয়ে এক প্রকার কবিরা গোনা করেছি। হুজুর এক্কেবারে চুপ হয়ে গেছে। হুজুরের চুপ হওয়া দেখে সবাই কমবেশি প্রশ্ন শুরু করে দিল কি জিজ্ঞেস করিয়াছি। আমি কইলাম হুজুর কি কি বলেছে আপনারা বুঝেছেন? উত্তর যখন না এলো তখন কইলাম তাহলে আমার টাও বুঝা লাগবেনা। হুজুর হালকা হাসি দিয়ে পরিবেশ আবার তার অনুকূল নিয়ে গেল। এবারের প্রসঙ্গ উঠলো মাহফিলের এত ব্যাপক ব্যায়ের কি হবে, বক্তাদের কি অর্থ দেবেন, মাদ্রাসার উন্নয়নের আর্থিক সাহায্যের কি হবে? উত্তরাঞ্চলে সাধারণত মাহফিল গুলোতে প্রধান বক্তা উঠার আগমুহূর্তেই এই অর্থ গুলো তোলানো হয়। চেয়ে চেয়ে নিয়ে তারপর রুমাল ছেড়ে দিয়ে তোলা হয় অর্থ। তারপর সেই অর্থের কিছু অংশ ভাড়াটে বক্তাদের কমিটমেন্ট অনুযায়ী দিয়ে তারপর মাদ্রাসা ও অন্যান্য দিকে অর্থ যায়। কিন্তু হুজুরের এই ৭৬ তম ঐতিহাসিক মাহফিলে লোকজন খুব কম এসেছে। বরাবরের মত বিপুল অর্থ তুলতে না পারায় মূলত এই বুলি গুলো আউরাচ্ছেন তিনি। তিনি আরও বলতেছেন যে এবার তিনি নামকরা বক্তা না এনেই এই মসিবতে পরলেন। তাই সামনে দামি দামি বক্তা আনিবেন। মেজাজটা এবার মোষের মত বিগ্রে গেল।
বললাম আপনার মত একজন আলেম মানুষ অর্থের মাপকাঠিতে বক্তা আনলে সেটা হবে সম্পূর্ণ ধর্মব্যবসায়ীতার পরিচয়। আপনারা সমাজে শিক্ষা দেন কি আর নিজে কি করেন। আপনি যোগ্যতার বলে না এনে যদি অর্থের দামে বক্তা কিনতে চান তাইলে সেই মাহফিলে আসাও পাপ হবে। ধর্মের বিনিময় যারা খোজে তাদের ওয়াজ নসিহতে কি আল্লাহর রহমত আসবে? তাদের কথার কি আদৌ তাছির হবে?
রাসুলুল্লাহ বা তার কোন সাহাবী গন দ্বিনের প্রচারের বিনিময় নিয়েছেন? খালি কালেকশন কালেকশন নামক অর্থের খেলার জন্যই বুঝি প্রত্যেক বছর এই মাহফিলে দাওয়াত দেন? নাকি দ্বিন প্রচার আপনার উদ্দেশ্যই নয়?
একসাথে ডজন খানেক প্রশ্নের ফলে পরিবেশ পুরাই উত্তপ্ত। অনেকেই পায়তো তেরে আসতেছে। অদিকে প্রধান বক্তা স্টেজে উঠবে বলে একজন হুজুর ডাকতে এলো। হুজুর চুপচাপ উঠে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে আরেকটি প্রশ্ন করার জন্য চিৎকার শুরু করলাম। কইলাম খুবতো লেবাস লইয়া দৌড়ানি দেন, মাথার উপরে ইহুদিদের সংস্থার পোষ্টার কেন? সামান্য একটা UNICEF এর টিউবওয়েলের লোভ সামলাইতে পারেনা ? উত্তর দিয়া যান......
হন হন করিয়া চলিয়া গেল ময়দানের দিকে, এদিকে আমার চাচারা আমারে জোর করিয়া চ্যাংদোলা করি নিয়া গেল বহু দুরে..................
বিষয়: বিবিধ
১২০৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নাকি হাল্কার উপর ঝাপসা টাইপের মাতলামী?
হয়তো বলবেন একটু নষ্টালজিয়ায় ভুগছেন ইদানিং!
তাই বলে এমন স্বপ্ন তো কুয়ার ব্যাঙও দেখবে না।
যাক। ধরেই নিচ্ছি এটা পৌরাণিক অলিক কোন কল্পকথা। বেশ ভালো, ঠাকুর মা'র ঝুলি তো অনেক হলো। আপনি বরং ঠাকুরদা'র ঝুলি খোলার চেষ্টা করুন।
আপনার যদি খুব কুটুস কুটুস করে কামড়ায় তবে আসিয়েন আমার কাছে, হুজুরের সামনে আপনাকে মলম লাগিয়ে দেব!
আপনার যদি খুব কুটুস কুটুস করে কামড়ায় তবে আসিয়েন আমার কাছে, হুজুরের সামনে আপনাকে মলম লাগিয়ে দেব!
মন্তব্য করতে লগইন করুন