বাংলাদেশে জনগন কারা এবং কি তাদের অবস্থা ?

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মিজানুর রহমান সোহেল ১৮ আগস্ট, ২০১৩, ১২:০১:৪১ রাত

মো: মিজানুর রহমান সোহেল, ফ্রান্স থেকে ।

বাংলাদেশের জনগন প্রসঙ্গে আমার প্রশ্নের কারন বলতে গিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে খানিকটা তুলে ধরতেই হচ্ছে| বাংলাদেশে রাজনীতি এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছে, যার ফলে প্রায় প্রতিটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরক্ষভাবে, সক্রিয় বা সমার্থনের মাধ্যমে কোন না কোন দলের সাথে জড়িত এমনকি পরস্পরকে জানতে দলীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করতে দেখা যায়।

সেক্ষেত্রে সে নিজেকে একজন দলীয় লোক হিসেবে ব্যক্ত করেন। এবং সেই সাথে দাবী করেন আমরা জনগনের কল্যানে কাজ করছি। সমার্থনের কারনে ব্যক্তির পরিচয় হয়ে যায় দলীয়। অর্থাৎ নিজেকে জনগনের সারি থেকে সরিয়ে জনগনের জন্য কাজ করে এমন একটি প্রতিনিদি দলের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তাহলে জনগন কে ??

এবার দেখা যাক বাংলাদেশের প্রধান প্রধান দলের “দেশের জনগন” সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা ও কর্মসূচীঃ সরকারে ক্ষমতায় থাকা দলগুলোর কর্মকান্ডের বিরোধিতা করে বিরোধী দলগুলো প্রতিবাদ স্বরুপ বিভিন্ন কর্মসুচি নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে “বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে জনগন অতিষ্ট। জনগন তাদেরকে চায়না। তাই জনগনের চাহিদা পূরন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা দলীয় লোকজন নিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে যাব।“ আবার সরকারে থাকা ক্ষমতাসীন দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়-“বিরোধী দলগুলোর নৈরাজ্য ও ধ্বংশাত্মক কর্মসূচী জনগন সমার্থন করেনা। এই ভাবে প্রতিটি বিষয় ক্ষমতায় থাকা দলগুলোর লোকজনেরা বলে, জনগন ঐটা চায়না, এটা চায়। বিরোধী দলের লোকজনেরা বলে, জনগন এটা চায়না, ঐটা চায়। কারা সেই জনগন মূলত ?

সম্প্রতি ক্ষমতায় থাকা দলগুলো থেকে ঘোষনা দেয়া হয়, বিরোধী দলগুলোর নৈরাজ্যকে কঠোর হস্তে দমন করতে ও জনগনের জান মালের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনিক বাহিনীর সাথে আমাদের দলীয় লোকজন মাঠে থাকবে। আর তাদের এই কথিত “জনগনের জান মালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত দলীয় লোকজনের দ্বারা আক্রমনের শিকার হয়ে, কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বিশ্বজিৎএর মত একজন নিরপেক্ষ সাধারন লোক যখন প্রান হারায়, প্রসঙ্গত প্রশ্ন জাগে তাহলে কারা সেই জনগন ? যাদের জন্য এত আয়োজন?

রাজনৈতিক দলগুলোর দাবী ও কর্মকান্ডের ভিত্তিতে জনগনের পরিচয় হিসেবে, সম্পূর্ন নির্দলীয় নিরপেক্ষ কিছু শান্তিকামী মানুষের মুখ ভেসে ওঠে। তাদের সংখ্যা কত ? কোন দলের সাথে জড়িত নয় বা কোন দলকে সমর্থন করেনা এমন লোকের সংখ্যা বর্তমান বাংলাদেশে ক্ষুদ্র । আর এই অতি সামান্য জনগন নামের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর একটি লোকের লাশ রাস্তায় বা কোথাও পড়ে থাকলে, কোন একটি বা একাধিক দলের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তিকে নিজেদের লোক বলে দাবী করে প্রতিপক্ষ দলের উপরে হত্যার দায় চাপিয়ে দেয়া হয়। ইস্যূ নামের ঘৃনীত রাজনৈতিক খেলার আমেজে হারিয়ে যায়| তার সেই জনগন পরিচয়টুকুও। রাজনৈতিক মারপ্যাচে অজ্ঞাতই রয়ে যায় তার জীবন নাশের কারনটিও। অথচ যে কিনা প্রান হারাল হয়ত ছিনতাই কারীর অস্ত্রের আঘাতে। অথবা প্রতিবাদ করায় মেয়েদের উত্তক্তকারী কোন বখাটের হাতে।

তাহলে শতাধিক দল ও তাদের কোটি কোটি লোকজন নিয়ে অতি সামান্য সংখ্যক লোকের ছোট্ট একটি জনগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও মৌলিক চাহিদা পূরনে অবিরত কাজ করে যাওয়ার পরেও আদৌ কি শান্তিতে আছে সেই জনগন? পেয়েছে কি নিরাপত্তা? পূর্নতা পেয়েছে কি মৌলিক চাহিদা গুলো? প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই কাঙ্খিত সেই অধিকার| আজ এই প্রশ্ন গুলো শুধু একা আমার নয়। সেটি প্রতিটি সচেতন নাগরিকের।

বিষয়: বিবিধ

১৭১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File