দাদা শ্বশুর বনাম নাতজামাই
লিখেছেন লিখেছেন ট্রাস্টেড থিফ ০৫ মে, ২০১৪, ০৫:৫৫:৩০ সকাল
রাত্রি রাত্রি
-জী দাদা জান
-নাত জামাই কি করে?
-ওয় তো ঘুমাইতেছে এখনো
-ফজরের সময় যাইতেছে! ডাক ওরে।
-আমি তো ডাকা ডাকি করছি। ওঠে না। আপনি ডাকেন তো।
দাদা শ্বশুর দরোজায় দাড়িয়ে নামাজের জন্য ডাকছে
-ওই মিয়া আর কত ঘুমাইবা। ওঠ এবার।
শায়ন মনে মনে বলছে এই বুরাটার জন্য একটু ভালোভাবে ঘুমাইতেও পারছি না। এইটা শ্বশুর বাড়ী না জমের বাড়ী।
শ্বশুর বাড়ীতে দাদা শ্বশুর জোয়ারদার সাথে শায়নের জমে খুব ভালো। সকালে হাঁটতে যাওয়া, বিকেলে চা খেতে খেতে রাজনীতি সমাজনীতি বিষয় আসয় নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনা সব মিলেয়ে প্রাক্তন এই প্রভাষক গল্প করার জন্য পারফেক্ট সঙ্গী পেয়েছেন।
যে দিন প্রথম তারা প্রাত ভ্রমণে বের হয়-
- জোয়ারদার চলো
- কই
- কই আবার তোমারে ক্যাট ওয়াক শিখামো
দাদাও দুষ্টামির ছলে
-আমি বিড়ালের মত করে হাটা শিখতে হবে কেন? আমিতো আশরাফুল মখলুকাত
- আরে তুমি তো হাটা ভুলে গেছ! তোমার হাটা নুগাবার মত হয়ে গেছে।
- নুগাবা কে?
- নুগাবা। ওহ নুগাবা? ওই যে নুরুল হুদা আছে না।?
- তার ছেলে না মেয়ে
- আরে না না। নুরুল হুদার গরুর বাচুর।
- আমার বাড়ীতে থাইকা আমারে কস নুগাবা। তুতো তো নিমক হারাম রে?
সে দিন দাদা শ্বশুর বিকেলে পান চিবুচ্ছে আর নাত জামাইয়ের সাথে গল্প করছে
শায়ন হঠাত করে জিগাইলো
- আচ্ছা বুড়ো তোমার বাপের নাম কি ছিল?
- আমার বাপের নাম জাইনা তোমার কি হইবো?
- আরে বলোইনা।
- আনা মুন্সী জোয়ারদার।
- কোন হালায় তোমার বাপের নাম রাখছে। আমি পাইলে ওরে পানিতে চুবাইতাম।
- এই ফইরা (ফকির) তুই আমার বাপেরে শালা কস। খারা আমি আইতেছি যাইস না।
- হ যাও যাও বাথরুমের ছিটকানি আটকাইতে ভুইলো না কিন্তু। হাঁ হাঁ হাঁ
রাত্রি কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে ছুটে এসে তার সামনের সোফায় বসে-
দাদাকে নিয়ে মজা করছ কেন? আরে বাবা তোমার দাদার সারাদিন লেকচার শুনতে শুনতে আমার হালুয়া টাইট।
- এগুলো কি ভাষা ইউজ কর।
- আরে চমচ্যা কোথায়?
বাবার সামনে গেলে তো ভেজা বেড়াল হয়ে থাক। আহা যেন ভাজা মাছটাও উল্টায় খেতে জানে না।
- তোমার বাবা এত বলদ তা আমি কিন্তু মনে করি না।
- মানে কি এখানে বাবা বলদ হতে হতে যাবে কেন?
- আরে শুনই না। তোমার বাবা নিশ্চয়ই এমন কারো হাতে তোমাকে তুলে দেয় নাই যে মাছ ধরাতো থাক দুরের কথা মাছ উল্টায়াও খেতে পারে না। তার মানে হয় উনি জানেন আমি মাছ উলটাইয়া খেতে পারি না হয় উনি বল...
- চুপ কর।
দাদা শ্বশুর ফ্রেশ রুম সেরে রাত্রির পাশে বসলো। বুবু আমার মাথাটা খুব ধরেছে একটু টিপে দিবে
- হাঁ দাদা জান। কই দেখি। চুলে মেহেদী লাগিয়ে দিব?
-না থাক।
শায়ন চুপচাপ শুনছিল
- এই যে বুড়ো আমার বউয়ের পাশে যে বসেছ আমার অনুমতি নিচ?
- এই ফইরা তুই কেঠা রে?
- ওই যে তোমার পাশে সুন্দরী যে মেয়েটি আমি তাহার স্বামী।
- বুবু তুমি ওরে চিন?
- না দাদা জান। তয় চেনা চেনা লাগতেছে
- এই যে তোমার খেলা শেষ।
শায়ন কপালে হাত দিয়ে
- হায় হায়রে এই বইড়া আমার বউরে তাবিজ করছে রে। বাহিরের দিকে তাকিয়ে বলতেছে আহা বাহিরে ডানা কাঁটা কি সুন্দর পরী।
রাত্রি এই কথা কি আর সহ্য হয়?
- দেখছ দাদু কত খারাপ নিজের বউয়ের সামনে অন্য মেয়ের প্রশংসা করতেছে। সেও বাহিরে উকি দিয়ে, কই দেখি? বাহিরে তো কাউকেই দেখছি না।
এখন শায়ন পার্ট নিচ্ছে
- এই যে জোয়ারদার আপনার খেলা কিন্তু খতম।
- কেমনে ? একটু আগেইতো শুনলেন আপনার নাতনী স্বীকার করলো যে আমি তার স্বামী।
- কি ভাবে?
- একটু আগেইতো তার নিজের মুখে শুনলেন "নিজের বউয়ের সামনে অন্য মেয়ের প্রশংসা করতেছে"। তার মানে সে আমার স্ত্রী।
- হাঁ গিলু আছে তোমার
- আবার জিগায় ফ্রেস মগজ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন