জলতরঙ্গের প্রতিধ্বনি-২
লিখেছেন লিখেছেন ট্রাস্টেড থিফ ১১ মার্চ, ২০১৪, ০১:১৬:১৯ রাত
এত ঘটনার মাঝে দিয়ে সাগর নদীর সম্পর্কের ব্যাপক টান পোড়ন চলছে। তার কারণ তার মা বোতা কামাল নামে যে ছেলেটির মাধ্যমে পাসফোর্ট বানানো থেকে শুরু করে ফাইল প্রসেস করেছিল তার সাথে নদীর সম্পর্ক আছে বলে দাবী করছে বোতা কামাল। সে এলাকার সব চেয়ে বড় ক্যাডার।
এই বোতা কামাল আবার তাদের জমি জমার বিরোধেও তাদেরকে অনেক হেল্প করতো, ইভেন তাদের জমির দলিল গুলাও তার কাছে। নদীর ফুফু আছেন একজন তিনি এই বোতা কামালকে ইউজ করে জমি কিনতেন সস্তা দরে। নদীর ফুফু চাইতেন যে নদী এই ছেলেটিকে বিয়ে করুক। কিন্তু নদীর মায়ের সাথে সাগরের বাদানুবাদ হলেও তিনি সাগরকে ভীষণ পছন্দ করতেন অন্যদিকে বোতা কামাল মদ গাঁজা থেকে শুরু করে এমন কিছু নাই যে সে খায় না।
সাগর ২০০৯ সালে দেশ ছাড়ার পর পরই বোতা কামাল নদীর পেছু নেয়। সাগর তখনো ইউকেতে, গত ৬ মাস আগে এ ছেলেটি একদিন রাস্তার মাঝ খানে নদীর পথ আগলে দাঁড়ায়, তার সাথে ছিল মোটর সাইকেল। সে তাকে মোটর সাইকেলে উঠতে বলে কিন্তু রাজি হয় না বলেই সে তাকে রাস্তার উপরেই চড় থাপ্পড় মারা শুরু করে। তাতে নদীর একটা দাঁতও ভেঙ্গে যায়। এলাকায় তার প্রকাণ্ড দাপট। নদী ভয়ে তার মটর সাইকেলে উঠতে বাধ্য হয়। যাই হোক সে তাকে নিয়ে কোন এক জায়গায় যায় এবং তার থেকে জোর করে বিয়ে রেজেষ্ট্রির সাদা ষ্ট্যাম্পে সই করে এবং তাকে বিয়ে করতে হবে বলে কোরআন শপত করায় (নদীর ভাষ্য অনুযায়ী)।
সাগর বিষয়টা জানার পরে তার মনে খুত খুত করে। সে বিষয়টা এত সহজ ভাবে নিতে পারছেনা। সে বার বিষয়টা নিয়ে প্যাঁচায় আর নদী ততই রাগান্বিত হয় আবার ঠিকও হয়ে যায়। সাগর বার বার জানতে চায় আসলেই সে কি তোমাকে কিছু করছিলো কি না। তার মনে খুত খুত করার আরো কারণও আছে কারণ সেই ছেলেটির সাথে নদীর এখনও ফোনে কথা হয় এবং তা সাগরের সামনেই এমন কি নদী প্রায় সেই ছেলেটির মোটরসাইকেলে উঠে। সাগর
ঘোরতর আপত্তি জানালে নদী জানায় সে তাদের দুজনের ভালোর জন্যই এমন করছে তাছাড়া ওই ছেলেটির হাতে রয়েছে সেই সই করা ষ্ট্যাম্প। ফোনে তাদের জগরা অভিমান নিয়ে চলতে থাকে। কিন্তু সাগরের মন থেকে অবিশ্বাস যায় না।
গত কিছু দিন আগে সেই বখাটে নদীদের বাসায় আসে যখন তার মা অফিসে এবং তার বাবা বাহিরে। সে তাদের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে। নদীর ভাষ্য অনুযায়ী সে ঘরে ঢুকে নদীকে কুৎসিত ভাবে গালাগালি করে আর একারণে সে ভাঙ্গা জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়। যার কারণে তার হাতে কয়েকটা রগ কেটে যায়। এই অবস্থায় সেই তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে নদী এখনো সে বোতা কামালের সাথে ফোনে কথা বলছে।
কিছু দিন আগে ঘটনা, তাদের অবিশ্বাস এতই চরমে উঠেছিল নদীকে তার দাদি জিগ্যেস করলো যে তুমি কাকে বিয়ে করতে চাও সে জানালো সে বোতা কামালকে বিয়ে করতে চায়। স্বাভাবিক ভাবেই এত ঘটনার পরে তার মা এই বখাটের উপর ভীষণ ক্রোধন্বিত। এদিকে সাগরের মনে যে নদীর স্থান ক্রমশই কমে যাচ্ছে তা তার মাও অনুধাবন করছে। সে দিন সে সাগরকে ফোন করে অনুরোধ করতে লাগল বাবা তুমি আমার মেয়েটাকে বুঝাও, তোমার কথামতো আগে সে শুনত। তুমি একটু বুঝাও আমার মেয়েটাকে বাচাও বাব। সাগর ট্যাকনিকালি বলল আচ্ছা আন্টি আমিতো ওকে বুঝাই কিন্তু আমার সত্যটা জানা দরকার, সত্য কখনোই চাপা থাকেনা আমি তো আপনার ছেলের মতই, আমি সব জেনে ডিসিশন নিতে চাই। আপনি আমাকে এটুকু বলেন যে ওই ছেলের সাথে নদীর আসলে কি সম্পর্ক, ওই ছেলে ডাকলেই কেন সে চলে যায়, কি আছে মূলত ওই ছেলের হাতে।
- দেখ বাবা তোমার কাছে আমি কিছুই লুকাবোনা। ওই ছেলেটার কাছে নদীর একটা ভিডিও আছে এবং কিছু ছবিও আছে। সে এগুলো ফেসবুকে ইন্টারনেটে আপলোড করে দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে। এই সব কিছু নদীর ফুফুও জানতো। এবার তুমি বিয়ে কর
না কর সেটা তোমার সিদ্ধান্ত আমি যা জানি তোমারে জানায়া দিলাম। তুমি শুধু ওকে বুঝাও যেন সে লম্পট টাকে বিয়ে না করে।
সাগরের ভাষ্য এই ভিডিও দিয়ে ওই লম্পটটা তাকে যখন তখন ইউজ করতো আর নদী মূলত ভিডিওর যায়গায় সই করা ষ্ট্যাম্প বলতো অথবা সই করা ষ্ট্যাম্পও আছে সাথে। শুধুমাত্র এই ভিডিওটার কারণে বখাটেটি তাকে যখন তখন ডেকে নিয়ে যেতে।
সাগর প্রায় সময় তাকে ফোন দিত কিন্তু সে রিসিভ করতো না। সে তার বাড়ীতেও ফোন দিত তার মা বলতো ভার্সিটিতে, ভার্সিটিতে তার বান্ধবীর কাছে ফোন দিত তারা বলত আসে নাই। জিগ্যেস করলে এড়িয়ে যেত, বেশী চাপ দিলে রেগে যেত। এর সমীকরণ সাগর কখনোই কখনোই মিলাতে পারতো না। কিন্তু আজকে সব যেন পানির মত মিলে যাচ্ছে। আসলে নদী চেয়েছিল সাগর যদি নদীকে ইউকেতে নিয়ে যেতে অথবা সাগর দেশে ফেরার পরেও নদী যদি এমেরিকায় চলে যেতে পারতো তাহলে সব জামেলা চুকিয়ে যেত। আর এর কোন কিছু নিয়েই সাগরের সাথে জগরা করতে হতো না। কিন্তু বিধি বাম এর কিছুই হয়নি। আর নদীও যে ধোয়া তুলসী পাতা তা নয়। এসবের আগথেকেই সে সাগরের পাশা পাশি ওই ছেলেটার সাথে কথা বলতো ফোনে। বদভ্যাস থাকলে যেমনটি হয় আরকি। নদী এখন পর্যন্ত ছবির কথা স্বীকার করেছে কিন্তু ভিডিওর কথা স্বীকার করেনি। করবেও বা কি করে। তার একটি ছোট বোন আছে। সামাজিকতা, লোক লজ্জা এগুলোকে কি করে এড়াবে। এই ভিডিও প্রকাশ হয়ে গেলে একটি পরবারের মৃত্যু হবে, একটি সংসার তচনচ হয়ে যাবে। এর জন্য না যাওয়া যাবে আদালতে না পুলিশে। আর তাই হয়তোবা মুখ বুজে সব সয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় কি? কিন্তু এভাবে কি আসলেই চলতে পারে?
আজ আমার বন্ধুটির চোখের সামনে ধর্ষিত হচ্ছে তার সকুল সুখ স্বপ্ন আশা ভালোবাসা। রাতের নীরবে বালিশে মুখ গুজে কান্না ছাড়া সে আর কিছু করতে পারছেনা। চোখের লোনা জলে তৈরি হওয়া স্রোত ধারায় জলতরঙ্গের প্রতিধ্বনি যেন বুদবুদেই মিলিয়ে যাচ্ছে । কিচ্ছু করার নাই মানুষ না জেনে বিষ পান করতে পারে কিন্ত জেনেশুনে তিতাও গিলতে চায় না। আর যে ভাবেই বিষ পান করা হোক না কেন ইহা হজম যোগ্য নয়।
(আপনাদের মতে তার কি করা উচিৎ এখন)
আগের পর্ব -১
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Thanks
মন্তব্য করতে লগইন করুন