অধিকাংশ মানুষ ঈমানদার......কিন্তু মুশরিক......মানে !!!???
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২১ মার্চ, ২০১৫, ০৮:২২:৫৫ রাত
যারা ক্বলেমা স্বীকার করে, সলাত আদায় করে, সিয়াম পালন করে, যাকাত দেয়, সামর্থ হলে হজ্জ্ব-ওমরা করে,......আরও নফল ইবাদত-যিকির করে তাদেরকে ঈমানদার বলা হয় ।
তাহলে ঈমানদারগণ মুশরিক হবে কেন ? কেন আল্লাহ ঈমানদারদের বলছেন
আর মানুষের মাঝে কেউ-কেউ বলে থাকে -- “আমরা আল্লাহ্র প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান এনেছি”, অথচ তারা মুমিনদের মধ্যে নয়। (বাকারা আয়াত ৮)
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্র দিকে ফেরো বিশুদ্ধ ফেরায়….(আত্তাহরীম আয়াত ৮
হে যারা ঈমান এনেছ পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ কর (বাক্বারা, আয়াত ২০৮)
পূর্ণ ঈমানদার হওয়া, পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করতে হলে আল্লাহ’র বাণী ও রাসুল (সাঃ) এর ছহীহ হাদিস জন্ম থেকে মৃতু পর্যন্ত মেনে চলতে হবে । আল্লাহ বলেন
আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসুলের (ইমরান, আয়াত ৩২, ১৩২; নিসা, আয়াত ৫৯; আনফাল, আয়াত ১, ২০, ৪৬; নুর, আয়াত ৫৪, ৫৬; মুহাম্মদ, আয়াত ৩৩; মুজাদালাহ, আয়াত ১৩; আততাগাবুন, আয়াত ১২)
রাসুল (স) বলেছেন, তোমরা যদি ২টা জিনিষ আঁকরে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না, এ দু’টি জিনিষ হলো আল্লাহর কুরআন ও আমার সুন্নাহ (মিশকাত ১ম খন্ড হা ১৭৭)
সকলেই বলে আমরা আল্লাহ ও রাসুলের কথা মানি !!!
তবে আরবী ভাষা ভাল বুঝি না বলে আমাদের আলেমরা (দলের নেতা, মুস্তাহিদ, মুহাদ্দিস, মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, পীর, দরবেশ, ফকির, মাজারী......) যা বলে তাই মেনে চলি ।
ভাল, আপনার আলেম যদি কুরআন ও ছহিহ হাদিসের দলিল সহ বলে তাহলে আপনি অন্য কয়েক আলেম দিয়ে যাচাই করে দেখতে পারবেন বা বর্তমানে সকল কিছুর অনুবাদ আছে তার সাথে আপনি নিজেও মিলিয়ে দেখতে পারেন সঠিক কিনা ।
যদি দলিল ছাড়া বলে আর আপনি যাচাই না করে অন্ধভাবে মেনে নেন তাহলে কি আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ) কে মান হবে ??? কক্ষণ না !
আল্লাহ বলেন
তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তাঁর অনুসরণ করো এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অলী আওলীয়াদের অনুসরণ করো না । তোমরা অল্প সংখ্যক লোকই তা স্মরণ রাখো (আ’রাফ, আয়াত ৩)
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের কোনো এক দলের অনুবর্তী যদি তোমরা হও, তারা তোমাদের ফিরিয়ে নেবে অবিশ্বাসীদের দলে তোমাদের ঈমান আনার পরেও(ইমরান আয়াত ১০০)
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের পিতৃবর্গকে ও তোমাদের ভ্রাতৃবৃন্দকে তোমরা অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না যদি তারা বিশ্বাসের চাইতে অবিশ্বাসকেই ভালোবাসে। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ তাদের মুরব্বীরূপে গ্রহণ করে তবে তারা নিজেরাই হবে অন্যায়কারী (তাওবা আয়াত ২৩)
আর মানুষের মাঝে কেউ-কেউ আল্লাহ্কে ছেড়ে অন্যকে মুরব্বী বলে গ্রহণ করে, তারা তাদের ভালোবাসে আল্লাহ্কে ভালোবাসার ন্যায়(বাকার আয়াত ১৬৫)
অনেকের মনে জ্বালা ধরে গেল কি তার আলেমের গভীর ভালভাসা কারনে ? কুরআনের নিচের আয়াতের মতই কি বলেবেন যে-
যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে পথে এবং রাসুলের পথে আস । তখন তারা বলে, আমরা আমদের বাপ দাদাদেরকে যার উপর পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট । যদিও তাদের বাপ দাদারা কোন জ্ঞান রাখে না এবং হিদায়াত প্রাপ্তও না হয় তবুও কি তারা তাই করবে (মায়েদা, আয়াত ১০৪)
মুনাফিক হবেন না
তাদেরকে যখন বলা হয় যে আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সেইদিকে এবং রাসুলের দিকে আসো । তখন মুনাফিকদের দেখতে পাবেন যে, তারা আপনার নিকট আসতে ইতস্তত করছে ও পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে (আন নিসা, আয়াত ৬২)
রাগ না করে আপনি অথবা আপনার আলেমের কাছ থেকে ছহিহ দলিল সহ জেনে যাচাই করে নিজে মেনে চলুন ও অন্যকেও দলিল সহ জানান ।
আল্লাহ বলেন-
যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর (নিসা, আয়াত ৫৯)
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সামনে তোমরা আগবাড়বে না, আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা(হুমাজাহ আয়াত ১)
সে লোক ইমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে [রাসুল স] ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে (নিসা, আয়াত ৬৫)
যারা ছহিহ দলিল ছাড়া বলে, আমল করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ আরও কঠোরভাবে বলেন-
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই কাফের (মায়েদা, আয়াত ৪৪)
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই জালেম (মায়েদা, আয়াত ৪৫)
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই পাপাচারী (মায়েদা, আয়াত ৪৭)
আর কেহ আল্লাহ ও রাসুলের অবাধ্য হলে এবং তাঁহার নির্ধারিত সীমা লংঘণ করলে তিনি তাহাকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন । সেখানে সে চির কাল থাকবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে (নিসা, আয়াত ১৪)
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে বিরোধীতা করে তারা লাঞ্ছিত হবে (মুজাদালা, আয়াত ২০)
যারা রাসুলের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সতর্ক থাকা উচিত যে তারা যে কোন বিপদের সম্মুখীণ হবে অথবা যন্ত্রনা দায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে (নূর, আয়াত ৬৩)
এক্ষণে যে কেহ আল্লাহ ও রাসুলের কথা অমান্য করবে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে এবং তারা উহাতে চিরকাল থাকবে (জ্বীন, আয়াত ২৩)
যে সকল আলেমরা জেনেও ছহিহ দলিল ছাড়া বলে তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন
ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিঃসন্দেহ পন্ডিতদের ও সন্ন্যাসীদের মধ্যের অনেকে লোকের ধনসম্পত্তি অন্যায়ভাবে গলাধঃকরণ করে(তাওবা আয়াত ৩৪)
আপনি কেন ছহিহ দলিল ছাড়াই যাচাই না করে অন্ধভাবে অনুসরণ করবেন ? আল্লাহ বলেন-
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না (নূর আয়াত ২১)
রাসুল (স) বলেন- বিদআতিদের নামায, রোযা, হজ্জ, উমরাহ, জিহাদ, যাকাত এবং ফরজ নফল কোন এবাদতই আল্লাহর নিকট কবুল হবে না তারা ইসলাম থেকে সেরুপ ভাবে খারিজ হয়ে যাবে, যেভাবে আটা থেকে চুল পৃথক হয়ে যায় (ইবনে মাযাহ ই ফা ১ম খন্ড হা ৪৯)
তোমাদের নিকট যে জ্ঞান পৌঁছেছে তারপরও যদি তোমরা তাদের (কুরআন-হাদিস বহির্ভূত কারো কথা) মনের ইচ্ছা ও বাসনার (দলিল বিহীন মতবাদ) অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চিত রুপে তোমরা যালিমদের মধ্যে গণ্য হবে (বাক্বারা, আয়াত ১৪৫)
কোন আলেমর কথা ছহিহ দলিল ছাড়া যাচাই না করে অন্ধভাবে অনুসরন করাই মুশরিকের অন্তভুক্ত । এজন্যই আল্লাহ বলেন-
তাদের অধিকাংশই আল্লাহকে বিশ্বাস করে; কিন্তু তারা মুশরিক (সুরা ইউসুফ আয়াত ১০৬)
বিষয়: বিবিধ
১১২৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সামনে তোমরা আগবাড়বে না, আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা(হুমাজাহ আয়াত ১)
সে লোক ইমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে [রাসুল স] ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে (নিসা, আয়াত ৬৫)
যারা ছহিহ দলিল ছাড়া বলে, আমল করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ আরও কঠোরভাবে বলেন-
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই কাফের (মায়েদা, আয়াত ৪৪)
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই জালেম (মায়েদা, আয়াত ৪৫)
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই পাপাচারী (মায়েদা, আয়াত ৪৭)
জাজাকাল্লাহ খায়রান,অনেক দারুন লিখেছেন
বর্তমান বাংলাদেশে পীর মাজার ওয়ালারা মানুষকে অন্ধ করে দিচ্ছে!
জাজাকাল্লাহ
এটা কতটা সম্ভব, এবং সব সময় সম্ভব কি না? সবারতো দলীল দস্তাবেজ যাছাই করার ক্ষমতা বা পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে না, তখন?
ভাল,
আপনার আলেম যদি কুরআন ও ছহিহ হাদিসের দলিল সহ বলে তাহলে আপনি অন্য কয়েক আলেম দিয়ে যাচাই করে দেখতে পারবেন বা বর্তমানে সকল কিছুর অনুবাদ আছে তার সাথে আপনি নিজেও মিলিয়ে দেখতে পারেন সঠিক কিনা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন