বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৯ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২৬ জুন, ২০১৪, ০৭:৩৩:৪২ সকাল
১ম পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/45670 (plz click & read)
প্রশ্নঃ- মক্কায় যখন সন্ধ্যা তক্ষণাৎ ১ম চাঁদের খবর প্রচার করা হলে অন্য দেশে তখন সুবহে সাদিক হবে । রমযানের তারাবী, সেহেরী, নিয়ত ঐ দেশের লোকেরা কিভাবে করবে ?
তারাবীর জন্য-
রাসুল (সঃ) সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে
মাত্র তিন দিন জামাতের সহীত তারাবীর নামায পড়েছেন ।
হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন আমরা রাসুল (সঃ) এর সাথে রোযা রেখেছি, নবী (সঃ) আমাদের তারাবীর নামায পড়ালেন না, এমনকি রমযানের আর সাত দিন বাকি ছিল অর্থাৎ তেইশ তারিখ পর্যন্ত । তারপর তেইশ তারিখে রাত্রে আমাদের তারাবীর নামায পড়ালেন তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত । চব্বিশ তারিখ পড়ালেন না । পঁচিশ তারিখ রাত্রে অর্ধ রাত পর্যন্ত তারাবী পড়ালেন । আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসুল (সঃ)! কতইনা ভাল হত যদি আপনি আমাদের সারারাত নামায পড়াতেন । নবী (সঃ) বললেন যে ব্যক্তি ইমাম মসজিদ থেকে চলে আসা পর্যন্ত ইমামের সাথে জামাতে নামায পড়েছে সে সারা রাত ইবাদত করার ছওয়াব পাবে । এরপর যখন সাতাশ তারিখ হয়ে গেছে তখন আবার নামায পড়লেন এবার পরিবারবর্গ এবং মহিলাদেরকেও আহবান করলেন এবং সুবহে ছাদেক পর্যন্ত নামায পড়ালেন (তিরমিযী । নাসাঈ । ইবনে মাযাহ । সহীহু সুনানি আবি দাউদ ১/৩৭৯ হাঃ ১৩৭৫)
তারাবীর নামায ছাড়া রোযা রাখা যায় ।
উপরের হাদিসটি কি বলছে ভাল করে বুঝুন, জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিন ?
এছাড়া উক্ত দেশের লোকেরা ব্যক্তিগতভাবে
তাহাজ্জুদ নামায পড়তে পারে যা তারাবীর সমতুল্য ।
কেউ বলে কিয়ামু রমযান হলো- তাহাজ্জুদ । কিয়ামু রমাযান অর্থাৎ তারাবীহ (মুসলিম শরীফ ৩য় খন্ড অনুচ্ছেদ ১০৯ অধ্যায় সালাত পৃঃ ৮৯ ইঃ ফাঃ)
আনোয়ার শাহ কাশমিরি হানাফী (রহঃ) লিখেছেন-
আমার নিকট এ দুটি নামায একই নামায । সাধারণ লোকেরা এটার অর্থ না বুঝে দুটো আলাদা নামায বানিয়ে দিয়েছে (ফয়জুল বারী শরাহ বুখারী ২য় খন্ড ৪২০ পৃঃ)
দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রটিষ্ঠাতা আল্লামা কাসেম নামুতুবী (রঃ) তার কিতাবে লিখেছেন- জ্ঞানীদের নিকট এ কথা গোপন নয় যে,
কেয়ামে রমযান ও কেয়ামুল্লায়ল আসলে এ দুটো একই নামায । যেটা মুসলমানদের সুবিধার জন্য রাতের প্রথম অংশে নির্দিষ্ট করা হয়েছে । কিন্তু গুরুত্ব হচ্ছে শেষ রাত্রে আদায় করা (ফয়েজে কাসেমিয়া ১৩ পৃঃ)
সেহেরী নিয়তের জন্য-
যাদের দেশে চাঁদ দেখা যায় নাই তারা
২৯ শে শা’বান দিবাগত রাত্রে সেহেরী খেয়ে রমযানের নিয়ত করতে পারেন ।
যদি দিবাভাগে জানতে পারেন বিশ্বে চাঁদ উদয় হয়েছে তাহলে এক সাথে হয়ে গেল ।
আর যদি চাঁদ উদয় হয় নাই জানতে পারেন তাহলে ঐ দিনের রোজা ভেঙ্গে দিবে (যারা নিয়মিত শা’বানের রোজা রাখে না তাদের জন্য)
ঠিক এমনই একটি সন্দেহযুক্ত দিনে একবার প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) এর সামনে একটি ভূনা বকরী উপস্থিত হয় এবং তখন তিঁনি (সাঃ) সকলকে বললেন-খাও । কিন্তু জনৈক ব্যক্তি দূরে সরে গিয়ে বলল-আমি রোজাদার ।
আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) বললেন-যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত দিনে রোজা রাখে সে আবুল কাসিমের (রসূল সাঃ) সাথে অবাধ্য আচরণ করেছে (সূত্র: আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩২৭, তিরমিযী)
নবী করীন (সাঃ) বলেছেন, তোমরা রমজান মাসের একদিন বা দুই দিন আগে থেকে রোযা রেখ না । তবে কারও যদি আগে থেকেই কোনো নির্দিষ্ট দিন রোযা রাখার অভ্যাস থাকে এবং ঘটনাক্রমে সে দিনটি ২৯ ও ৩০ শাবান হয় তাহলে সে ওইদিন রোযা রাখতে পারে (সহিহ বুখারী ১/২৫৬ হাঃ/১৯১৪)
আর যারা একেবারেই অলস অজ্ঞ গুরুত্বহীন চেষ্টা করবেন না ঘুম থেকে জেগে দেখলেন ফজর হয়ে গেছে পরে চাঁদ উদয়ের খবর পেলেন
পূর্বে মনে যদি নিয়ত থাকে সম্ভব হলে এ অবস্থায় সেহারী না খেয়ে রোজা রাখতে পারেন ।
না রাখলে এক সঙ্গে ঈদ করে পরে একটি রোজা কাযা করে নিতে পারেন ।
শরীয়া ক্ষেত্রে উদাসীনতার জন্য আল্লাহ’র নিকট খাঁটি তওবা করুন ।
হযরত আসমা বিনতে আবুবকর (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এর জামানায় একদিন আমরা মেঘের কারনে রোযা ইফতার করেছি, কিন্তু পরে সূর্য দেখা গেছে । [হাদিসের রাবি বলেন] আমি হিশামের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, মানুষদের কি কাজার আদেশ দেয়া হয়েছিল ? হিশাম বলল, কাজা ব্যতীত অন্য কোন পন্থাও তো ছিল না ।-ইবনে মাজাহ, সহিহ আল বুখারী ২/২৫৮ হাদিস নং ১৮২০
অনুরুপে বলা যায়, চাঁদ দেখার খবর সুবহে সাদেকের পূর্বে না পেলে এবং বিশেষ কারনে রোজা রাখতে না পারলে ঈদের পরে কাযা করা যাবে ।
প্রশ্নঃ- সব কিছু এক সাথে করা সম্ভব নয় । যেমন সেহেরী ও ইফতারের সময় এবং নামাযের সময় ।
সমাধান......
(চলবে)
১০ম পর্ব http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/48150 (plz click & read)
বিষয়: বিবিধ
১৫০৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন