চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের নেপথ্যে..... (পর্ব ১)
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ২৭ মে, ২০১৫, ০৮:৪০:৫২ রাত
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষন যেন এক মহামারির রুপ ধারণ করেছে। বাসে ধর্ষন, ট্রেনে ধর্ষন, ট্রাকে ধর্ষন, মাইক্রোবাসে গনধর্ষন, শহরে ধর্ষন, গ্রামে ধর্ষন, আত্বীয় স্বজনকে বেধে তাদের সামনেই ধর্ষন। শিশু থেকে শুরু করে বিবাহিত যুবতী মেয়েরাও রেহাই পাচ্ছে না এসব থেকে। পাবলিক ইভেন্ট বা প্রোগ্রামেও চলছে এ বন্যতার জোয়ার। কলংকময় সেই থার্টি ফার্স্ট নাইটের কথা বাদ দিলেও হালের একুশে বই মেলা এবং সর্বশেষ গত পহেলা বৈশাখে TSC সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেয়েদের বস্ত্রহরণ, শ্লিলতাহানি ও উত্যক্তের মত চরম ঘৃনিত ও লজ্জাজনক ঘটনা ম্যাসিভ আকার ধারণ করেছে। এমন চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের নেপথ্যে কোন কোন বিষয় ইন্ধন যোগাচ্ছে? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে তার একটি এনালাইসিস-
১. সাস্কৃতিক আগ্রাসন:
গত এক দেড় দশক থেকে বানের পানির মত বিদেশি সংস্কৃতি ঢুকছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিতে। আমরা বাঙ্গালী, তারচেয়েও বড় কথা আমরা মুসলিম। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে মুসলিম অধ্যুসিত অঞ্চলে আঞ্চলিক সংস্কৃতির উপর ইসলামের স্বকীয় সংস্কৃতিই প্রবল থাকে। আমাদেরও তাই। বাঙালী সংস্কৃতির সাথে প্রবলভাবে দৃশ্যমান ইসলামী সংস্কৃতি মিলেই আমাদের আবহমান কালের নিজস্ব সংস্কৃতি। কিন্তু বর্তমান অবস্থা হল, বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনের পাশাপাশি আমরা নিজেরাও এগুলোকে গলধঃকরন করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছি। নাইট ক্লাব, ডিজে পার্টি, ৫ তারকা হোটেলে মদের বার এর লাইসেন্স, ক্যাসিনো ক্লাব, বলরুম ও অভিজাত দেহ পসারিনীদের উর্বর বাজার তৈরি করে আমরা পশ্চিমা সংস্কৃতির ইমপোর্ট লাইসেন্স দিয়ে রেখেছি। এগুলো অভিজাত শ্রেনী থেকে শুরু করে এমনকি সমাজের উচ্চ মধ্য বিত্তের মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের পেছনে বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
পশ্চিমা সমাজ বিজ্ঞানীরা যখন এই ব্যাপারগুলো নিয়ে খুবই চিন্তিত এবং সমাজকে এসব থেকে রেসকিউ এর পথ খুজছেন, পশ্চিমা চিন্তাশিল মানুষরা যখন এগুলোকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করছে, আমরা তখন সংস্কৃতির এই উচ্ছিষ্টকেই সমাদরে তুলে নিচ্ছি। ওদের রক্ষনশীল পরিবারগুলো যখন নৈতিক ও চারিত্রিক শিক্ষার জন্য মুসলিম স্কুলের দিকে ঝুকছে, আমরা তখন তাদের ধাচে গড়া স্কুল কলেজে সন্তানদের ভর্তির প্রতিযোগিতা শুরু করেছি। যেখানে শালীন পোষাক নিষিদ্ধ, মিনি স্কার্ট সহ অশালীন পোষাক আর ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশাই যেখানে আভিজাত্য! সচেতনতার নামে কনডম যেখানে একটি শিক্ষা উপকরণ !!
ভারতীয় সংস্কৃতি এখন আমাদের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। তাদের সংস্কৃতির অনুস্বরন অনুকরণে আমরা হরদম ব্যাতিব্যাস্ত। ভারতীয় টিভি চ্যানেল, হিন্দি সিনেমার জন্য আমাদের দরজা একদম উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এগুলো পশ্চিমা সংস্কৃতির মত সরাসরি বেলেল্লাপনা বেহায়াপনার পিছনে না থাকলেও মনস্তাত্বিক ভাবে আমাদের সমাজ সংস্কৃতিকে মারাত্বকভাবে প্রভাবিত করছে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ভারতিয় সংস্কৃতি কাবু করে ফেলায় আমাদের যুবা তরুণরা গানিতিক হারে মারাত্বকভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে এ সংস্কৃতির মিষ্টি রসে। পিয়ার ইশক মোহাব্বাতের মিষ্টি রসমালাই আলটিমেটলি সেই বেহায়াপনার দিকেই টেনে নিচ্ছে। এই মালাইয়ের নিদারুন আকর্ষণ নিয়ে যাচ্ছে পার্ক ডেটিং, রুম ডেটিং এবং হোটেল ডেটিং এ।
...চলবে
বিষয়: বিবিধ
১১২০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নাচতে নামবেন , আবার ঘোমটাও খুলবেন না তা কি হয় ? যারা এরকম মনে করে বিপদ তাদেরই ।
বোলিং করতে নামলে আপনি যেমন উইকেট পাবেন , তেমনি চার ছয়ও খাবেন । চার ছয় খেলেই কি বলবেন ক্রিকেট খেলা ভাল না ? তাহলে তো আপনার ক্রিকেট খেলায় নামাই উচিত হয় নি ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন