একটা ধর্ষণের বিচার করলে ধর্ষণ বন্ধ হয়ে যাবে।
লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ১৪ জুন, ২০১৫, ১১:৪৬:৩২ সকাল
বাংলাদেশে বর্তমানে শেয়ার বাজারের ধর বৃদ্ধির মত ধর্ষণ বেড়েই চলছে। এখন পর্যন্ত একটা ধর্ষণের মনে হয় সঠিক বিচার হয় নাই। প্রায় প্রতি ১০ জনের মধ্যে মনে হয় এক জনও সঠিক বিচার পায় না। আর বেশ কিছু দিন আগে বাংলাদেশের আদালত ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে দিয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশে ধর্ষণের দিক দিয়ে অতীতেও এগিয়ে ছিল সোনার ছেলেরা তারা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করেছে। বর্তমানেও সোনার ছেলেরা এগিয়ে আছে। আবার তাদের বিচারও করা হয় না কারন তারা যে এই দেশের সোনার ছেলে।
যাক এই সব নিয়ে বেশি না বলে মূল কথায় আসি।
বাংলাদেশের মধ্যে যদি ইসলামিক আইন অনুযায়ীয় একটা ধর্ষণের বিচার করা যায় তাহলে আর এই দেশে ধর্ষণ হবে না। এবং এই আইন সবার জন্য সমান ভাবে প্রয়োগ করা হবে বলে যদি আদালতে রুল জারি করে তাহলে পরবর্তীতে আর ধর্ষণ হবে না।
ইসলামে ধর্ষণের সংজ্ঞাঃ-
ইসলাম ধর্ষণকে ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেনি। কারণ ইসলামে ধর্ষণ ভিন্ন কোনো অপরাধ নয়। বরং বিবাহবহির্ভূত যে কোনো যৌন সঙ্গমই ইসলামে অপরাধ। যাকে “যিনা” শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। যিনা সুস্পষ্ট হারাম এবং শিরক ও হত্যার পর বৃহত্তম অপরাধ।
আল-কুরআনে আছেঃ- এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (ফুরকান, ৬৮-৭০)
এবং আরেক আয়াতে বলেন, আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (ইসরা, ৩২)
ইসলামে যিনার শাস্তিঃ-
ইসলামে যিনার শাস্তি ব্যক্তিভেদে একটু ভিন্ন। যিনাকারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে। আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশত ছড়ি মারা হবে। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একই শাস্তি।
সূরা নূরে দ্বিতীয় আয়াতে এই শাস্তির কথা উল্লেখ করে দিয়েছেন, ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী উভয়ের প্রত্যেককে এক শত বেত্রাঘাত করো। আর আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে তাদের প্রতি কোন মমত্ববোধ ও করুণা যেন তোমাদের মধ্যে না জাগে যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনো। আর তাদেরকে শাস্তি দেবার সময় মু’মিনদের একটি দল যেন উপস্থিত থাকে। [সূরা নূরঃ- ২]
সহীহ বুখারী শরীফের হাদিসে আছে, "মূসা’দ্দাদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ দু-জন ইহুদী নারী-পুরুষকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে আনা হলো। তারা যিনা করেছিল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা ইহুদীগণ এ যিনাকারী ও যিনাকারিনাদের সাথে কি আচরণ করে থাক? তারা বলল, আমরা এদেরকে (এক পদ্ধতিতে) মুখ কালো ও লাঞ্ছিত করে থাকি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাওরাত এনে তা তিলাওয়াত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা তাওরাত নিয়ে আসল এবং তাদেরই খুশিমত এক ব্যাক্তিকে ডেকে বলল, হে আওয়ার! তুমি পাঠ কর। সে পাঠ করতে লাগল। পরিশেষে এক স্থানে এসে সে তাতে আপন হাত রেখে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার হাতটি উঠাও। সে হাত উঠাল। হঠাৎ যিনার শাস্তি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা (রজম)-এর আয়াতটি স্পষ্টত দেখা যাচ্ছিল। তিলাওয়াতকারী বলল, হে মুহাম্মাদ! এদের (দু-জনের) মধ্যখানে শাস্তি পক্ষান্তরে রজমই, কিন্তু আমরা পরস্পর তা গোপন করছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে রজম করার নির্দেশ দিলে তাদেরকে রজমই করা হয়। বর্ণনাকারী বলেনঃ যিনাকারী পূরুষটিকে মেয়ে লোকটির উপর ঝুকে পড়ে তাকে পাথর থেকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখেছি।
ইসলামে ধর্ষণ প্রমাণ করাঃ-
যিনা প্রমাণের জন্য ইসলামে দুটোর যে কোনোটি জরুরী। ১. ৪ জন স্বাক্ষ্য ২. ধর্ষকের স্বীকারোক্তি।
তবে স্বাক্ষ্য না পাওয়া গেলে আধুনিক ডিএনএ টেস্ট, সিসি ক্যামেরা, মোবাইল ভিডিও, ধর্ষিতার বক্তব্য ইত্যাদি অনুযায়ী ধর্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করে স্বীকার করার জন্য চাপ দেয়া হবে। স্বীকারোক্তি পেলে তার ওপর শাস্তি কার্যকর করা হবে।
বাংলাদেশে একটা শাস্তি যদি দেওয়া যায় এবং তা যদি প্রতিটা টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সারাদেশে সরাসরি সম্প্রচার করা যায় তাহলে আর কোন ধর্ষক ধর্ষণ করতে সাহস পাবে না।
কিন্তু মূল কথা হচ্ছে বাংলাদেশে এই আইন কোন দিন সরকার বাস্তাবয় করবে না কারন তারা নিজেরাই এই সব করে থাকে। যদিও তাদের খবর মিডিয়া আসে না।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন