বাংলাদেশ নিয়ে "টাইমস অব আসাম" আজকের লেখাটা আওয়ামীলীগকে প্রায় ন্যাংটা করে রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছে!

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তির মিছিল ১২ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৪০:১০ বিকাল

দশম জাতীয় নির্বাচনের কিছু না বলা কথা: টাইমস অব আসাম

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সত্যিকারের গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা। যে শাসন ব্যবস্থায় বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা হবে। জাতীয় সংসদে একাধিক রাজনৈতিক দল কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। একই সঙ্গে যে দল ক্ষমতায় থাকবে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখবে। দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী মাতৃভূমির স্বাধীনতার রক্ষা, নিরাপত্তার বিধান এবং মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সদা তৎপর থাকবে।

আর এই কামনা ও আকাক্সক্ষা থেকেই ১৯৭১ সালে নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল মানুষ রক্ত দিয়ে তাদের মাতৃভূমিকে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেছিল।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে স্বাধীনতার মাত্র ৪ বছরেরও কম সময়ে তৎকালীন শেখ মুজিব সরকার একদলীয় বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করে। একই সঙ্গে বাকস্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়।

এরপর শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়। কারণ, তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর মারাত্মক ও ভুল একটি পদক্ষেপ নেন শেখ মুজিব সরকার। সরকারি এজেন্ডা বা¯ত্মবায়ন ও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য গৃহীত ওই সব পদক্ষেপে সেনাবাহিনীর মর্যাদা ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়। তখন সম্পূর্ণরূপে সরকারের আজ্ঞাবহ একটি বাহিনীর জন্ম দেয়া হয়। সেটির নাম দেয়া রক্ষী বাহিনী। ওই বাহিনী অপহরণ, গুপ্ত হত্যা, ধর্ষণ এবং বিরোধী রাজনীতিকদের গণহারে নির্যাতন করতে শুরু করে। শুরু হয় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো গর্হিত কাজ।

শেখ মুজিবুর রহমান রক্ষী বাহিনীর উচ্চ পদে সামরিক ও বেসামরিক এমন কিছু লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন যারা ব্যক্তিগতভাবে শেখ মুজিব ও ভারতের অনুগত ছিলেন। এক্ষেত্রে মেধা ও পেশাগত দক্ষতা ছিল গৌণ। কেবল ভারতপ্রীতি ও মুজিবের মনতুষ্টি ছাড়া আর কোনো কিছুর দরকার পড়েনি। মুজিব সরকারের এ ধরনের পদেক্ষপ সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে চরম অনিশ্চয়তা ও ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেয়।

এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের অনুগত হিসেবে পরিচিত একদল সেনা কর্মকর্তা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে এবং নয়া দিল্লির অধীনে শাসন পরিচালনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

কিন্তু দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দেশের বিপুল সংখ্যক জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশবিরোধী ও স্বার্থপর এসব সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলে। এতে ভারত সরকারের অনুগত ওই সেনা কর্মকর্তাদের দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়।

এরপর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কঠোর পদক্ষেপের ফলে শেখ মুজিবের একদলীয় বাকশাল বিলুপ্ত হয়। সূচনা হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের।

১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় শেখ মুজিবের কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার ভুল কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চান। তিনি (হাসিনা) সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির কাছে একটি বারের জন্য মেন্ডেট চান।

এরপর বর্তমান যুদ্ধাপরাধ খ্যাত সংগঠন জামায়াতে ইসলামের সমর্থনে দ্রততম সময়ের মধ্যে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারা ওই জামায়াতের সমর্থনেই সরকার গঠন করে। এর মাধ্যমে সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়। কিন্তু এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সাবেক এ সরকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ে। গোটা দেশকে একটি সন্ত্রাসী রাজ্যে পরিণত করে ফেলে। এভাবে দেশকে একটি দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করে তৎকালীন সরকার।

এরপর ২০০১ সাল। আবার আসে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে দেশের জনগণ আওয়ামী দুঃশাসনের থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে ভোট দেয়। বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে।

এর আগে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদের এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। যদিও তখন শেখ হাসিনার অনুগত তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান লে. জে. নাসিম ‘ক্যু’ করে সরকার পতনের অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যত্ম তা সফল হয়নি।

এরপর ২০০৬ সালে বাংলাদেশে একটি জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচন বর্জন করে। দেশব্যাপী ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি হয়। প্রায় অচল হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। আর এই সুযোগে তৎকালীন সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ রক্তপাতবিহীন ‘ক্যু’ এর মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নেয়। দীর্ঘ দুই বছর ধরে এই অঘোষিত সেনা শাসন চলতে থাকে।

জেনারেল মঈনের এই অবৈধ শাসনের মূল লক্ষ্য ছিল ঢালাওভাবে রাজনীতিকদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা।

আর এই লক্ষ্য নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রধান দুই নেত্রী হাসিনা-খালেদাসহ দেশের রাজনীতিকদের গণহারে গ্রেপ্তার শুরু করে। এ সময় অনেক রাজনীতিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে দেশ ছেড়ে পালাতে থাকেন।

জেনারেল মঈনের সেনা সমর্থিত এই অপশাসনের আরেকটি প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশের রপ্তানি ও উৎপাদন খাতকে ধ্বংস করা। আর এর মাধ্যমে লাভবান হয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো। এভাবে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলেন জেনারেল মঈনের অঘোষিত সেনাশাসন।

আশ্চর্যের বিষয় হলো তৎকালীন ভারত সরকার ও বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বক্তব্যে জেনারেল মঈনের এই অবৈধ শাসনের প্রতি জোরালো সমর্থন ছিল।

এই অবৈধ শাসনভার যেদিন ন্যাস্ত করা হয় সেই দিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে বিএনপি বর্জন করলেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আনন্দের সঙ্গে তাতে অংশগ্রহণ করেন এবং বলেন, জেনারেল মঈনের সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনেরই ফসল।

আর আওয়ামী লীগ ও জেনারেল মঈনের এই গোপন যোগসূত্র পুরোপুরি ফাঁস হয় ২০০৮ সালে। যখন ওই অঘোষিত সেনা শাসক পরিচালিত নির্বাচনে শেখ হাসিনা বিজয়ী হয়

আর এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে আবারো ব্যাপক দুর্নীতি, হত্যা ও গণহত্যাসহ নানা ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। সরকার নীল নকশা অনুযায়ী আবারো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে উঠে পড়ে লাগে।

এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। দুই দিনব্যাপী এই রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহ চলতে থাকে। এতে প্রাণ হারান ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তা। এ সময় বিপথগামী ওই বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন থেকে ওই সব সেনা সদস্যের পরিবারের সদস্যরাও রেহাই পায়নি। তাদের ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। যে নির্যাতনে নারী-শিশু কেউ রেহাই পায়নি।

এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অপশাসন এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে শেখ হাসিনা আর ক্ষমতা ছাড়ার মতো সাহস পেলেন না। পরবর্তীতে সরকারের বিচার থেকে বাঁচার জন্য শেখ হাসিনা ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার পরিকল্পনা নেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ইতোমধ্যে জনসমর্থন পুরোপুরি আওয়ামী লীগে বিপক্ষে চলে গেছে।

শেখ হাসিনা ও তার সরকারের এই চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনার জন্য উঠে পড়ে লাগে ভারতের জন সমর্থনহীন ও দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেস সরকার। তারা শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় দেখতে কূটনীতিকভাবে ব্যাপক তৎপরতা চালাতে শুরু করে এবং বাংলাদেশে তাদের গোয়েন্দা বাহিনীকে সক্রিয় করে তোলে। দেশটির পররাষ্ট্র সচিবসহ প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের সমর্থনে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেন।

বাংলাদেশে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করা হয়। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, জনপ্রশাসন এমনকি সেনাবাহিনীর প্রধান প্রধান পদে অনুগতদের নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর সরকার পশ্চিমা মতবাদ বিরোধী নানা বক্তব্য দিতে থাকেন। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের একদলীয় অপশাসন ব্যবস্থা কোনোভাবেই সমর্থন করবে না। এজন্য সরকারি দলের নেতাকর্মীরা পশ্চিমা মতবাদ বিরোধী বক্তব্যে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। কিন্তু সরকারও সকল বাধা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে। এরপর বিরোধী জোট সরকারের এই সিদ্ধাত্মর ব্যাপক সমালোচনা শুরু করে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সকল দলের জন্য সমান অধিকার (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরির জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানায়। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপনেরও দাবি জানায় বিরোধী এ জোট। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তাদের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। তারা তাদের রাজনৈতিক ‘সুইটহার্ট’ সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টির সহযোগিতায় বিএনপিসহ বিরোধী জোটকে বাধ দিয়ে একতরফা নির্বাচনের পথে অগ্রসর হয়।

জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানায়। কিন্তু শেখ হাসিনা যেহেতু ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আগে থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন, তাই তিনি একটু ভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিলেন। এ পর্যায়ে শেখ হাসিনা সংলাপের নামে খুব সহজেই বিশ্ববাসীকে বোকা বানালেন। তিনি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে এদলীয় নির্বাচনের পথেই অগ্রসর হলেন।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের জানতেন যে, এই মুহূর্তে বিএনপি কোনোভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে তা শেখ হাসিনা ও তার দলের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। কারণ, ইতোমধ্যে দেশের জনসমর্থন পুরোপুরি ক্ষমতাসীনদের বিপক্ষে চলে গেছে।

এবার শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে বিএনপি যে আচরণ করেছিলেন তার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন। নির্বাচন কমিশন ও সামরিক বাহিনীসহ প্রশাসনের সব জায়গায় নিজ অনুগতদের বসালেন। এভাবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সামান্যতম সুযোগও রাখলেন না তিনি। একই সঙ্গে ২০০৮ সালে জেনারেল মঈন বিএনপির সঙ্গে যে আচরণ করেছিলেন এমন আচরণ যেন কেউ করতে না পারেন সে ব্যাপারেও বিচক্ষণতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিলেন তিনি।

এভাবে তিনি এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করলেন যে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশও নেয়, তাহলে ২০০৮ সালে মঈন ইউ আহমেদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত নির্বাচনের ফলাফলের মত এবারের ফলাফলেও যেন কোনো পরিবর্তন না হয়, তার সব ব্যবস্থাই তিনি করে ফেললেন।

এফলে বাংলাদেশের মানুষের মতামত উপেক্ষিত হল, কিন্তু সরকার তার সিদ্ধাত্ম অটল থাকলে দেশে জনবিরোধী একতরফা নির্বাচন হয়। তবে আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানত যে, এই ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন বিশ্বের কোনো সভ্য জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর চরম নির্যাতন নেমে আসে। দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার শুরু হয়। হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। বিরোধী নেতাকর্মীদের অপহরণ, গুম, গুপ্ত হত্যা, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র সরকারদলীয় ক্যাডারদের নগ্ন হামলা ও সংঘর্ষ, বিরোধীরা যাতে সঠিক বিচার না পায় সে জন্য বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং সামরিক ও বেসমারিকসহ প্রশাসনিক বিভাগগুলোতে বহুসংখ্যক কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়, মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নতুন নতুন নিয়ম ও আইন তৈরি করা, বিএনএফ নামে একটি ভূঁইফোর রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি করা সহ বিভিন্ন ধরনের স্বেচ্ছাচারী আচরণ ঘটে। আর এসবই করা হয় কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।

এভাবে বাংলাদেশে একটি তামাশা ও প্রহসনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধী মতামতকে পায়ে দলে পুনরায় ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার।

৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে চরমভাবে হতাশ করে আবারও সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসানো হয় তাদের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে। সরকারের মন্ত্রিসভাতেও রাখা হয় তাদের কাউকে কাউকে।

এভাবে সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে আবার শুরু হয় বাকস্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ, মানুষের মৌলিক অধিকার হরণসহ জনস্বার্থ বিরোধী নানা কর্মকাণ্ড।

এভাবে সরকার পশ্চিমা বিরোধী নীতি ও দেউলিয়া কূটনীতির মাধ্যমে দেশকে আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন করার পথে অগ্রসর হয় আওয়ামী লীগ সরকার। ফের বাংলাদেশ লুটপাটতন্ত্রের দেশে পরিণত হয়। মাথা চাড়া দিয়ে উঠে বিভিন্ন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী বাহিনী।

সূত্র: টাইমস অব আসাম

Click this link

বিষয়: রাজনীতি

১৩৮৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

191218
১২ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৩
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : ওরা যে ভাবে সত্য কথা লিখতে পারে, বাংলার কুলাঙ্গার বুদ্ধিজীবিরা মুখেও তা বলতে পারে না। বললে যদি সরকারী ভাল পজিশন না পাওয়া যায়?
গতকাল মর্মাহত হয়েছি সাবেক গভর্ণর ফরাস উদ্দিন এর কথায়। এ লোকটার সাথে পরিচিত সেই ছোট কাল থেকেই টাকার উপরে তার signature সুবাদে। এই লোকটা যে পরিমান মিথ্যাচার করল ইতিহাস ও চেতনা নিয়ে, কোন এক সামবেশে, তাতে ভদ্রবেশী এই সব সুবিদাবাদীদের মাথা নেড়ে ঘোল ঢেলে গাঁধায় চড়িয়ে দেশ থেকে দিল্লি পাঠিয়ে দেয়া উচিত!
191257
১২ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৬
সজল আহমেদ লিখেছেন : ভারত তো আউলীগের পবিত্রস্থান।
১২ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৯
142243
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : ভারতকে কেন ওরা ওদের পবিত্রস্থা ন বানিয়েছেন জানেন?
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিচয়ে দিয়ে যারা আছেন তাদের বিশান একটা অংশ বাংলাদেশের আস্তিত্বে নিরাপদ মনে করে না নিজেদের জন্য। তাই তারা সুকৌশলে প্রগতির নাম দিয়ে, সংস্কৃতির নামে আওয়ামীলীগ নামক দলের সাথে ওতোপ্রতো ভাবে নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে। আর আওয়ামীলীগের মুসলিম নাম ধারীরা দল ভারী করার নামে ওদেরকে এমনভাবে নিজেদের করে নিয়েছে যে আওয়ামীলীগকে কেউ যদি হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বলে পরিচয়ে করিয়ে দেয় তাহলে অবাক হবেন না নিশ্চই। -----বাকীটা বুঝে নিন!!
191337
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:২৬
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : যা কিছু করেছি রেন্ডিয়ার জন্য করেছি, ভবিষ্যতে যা কিছু করবো রেন্ডিয়ার দাদাদের জন্য করবো, তবুও বাংলাদেশ থেকে ইসলাম নির্মুল করবো।
১৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৩৯
142400
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : এই আর্টিকেলে খুবই আশংকাপূর্ণ একটা কথা আছে, আর তা হল, সেনাবাহিনীতে আওয়ামী মনোভাবাপন্ন ও ভারতের অনূগত একটা গ্রুপ আছে, যারা কিনা দিল্লির অধীনে দেশ শাসন করতে চাইছিল ৭৫ এ।
আমার কথা হইল ঐ গ্রুপের ধারাবাহিকতায় ওদেরই শীষ্যরা যে এখন সেনাবাহীনিতে একই মনোভাবাপন্ন সদস্য নাই-এ কথা আমরা বলতে পারি না।
191408
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:৫৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ওরা ভারতিয় শাসনের জাতাকলে মরছে। আর আমাদের মিডিয়া বোম্বের চলচ্চিত্রের রংচংকেই বিশাল ভারতের রংচং বলে মনে করছে।
১৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৪১
142401
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : ভারত তখনই বাংলাকে তাদের অঙ্গরাজ্য করবে, যখন দেখবে বাংলার অধিকাংশ লোক ভারতীয় কালচারকে নিজেদের করে নিয়েছে। টিভি ও সিনেমায় ভারতীয় আগ্রাসন এ প্রক্রিয়ারই অংশ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File