ইতিহাস : পাতিহাস নাকি বিজ্ঞান (১)
লিখেছেন লিখেছেন ফারুক হোসেন ২২ মার্চ, ২০১৪, ০৯:৫৮:৫৬ রাত
"মোহাম্মদ" নামক একজন নবী আরবে আবদুল্লাহ ও আমেনার ঘরে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্মাইয়াছিলেন,তিনি ৪০ বছরের সময় নবুয়তি প্রাপ্ত হয়েছিলেন, কোরানের কোন আয়াত দ্বারা প্রমান করিবেন? সেই আয়াত টা একটু উল্লেখ করতে পারবেন?
কোরানে "মোহাম্মদ" নামক একজন নবীর জন্ম বৃত্তান্ত নেই। থাকা কি উচিৎ ছিল? অবশ্যই না। কারন "মোহাম্মদ" নামক একজন নবীর জন্ম বৃত্তান্ত জানা না জানার উপরে পরকালে আমাদের মুক্তি নির্ভর করে না।
কোরানে না থাকুক , বাস্তবে "মোহাম্মদ" নামক একজন নবী আদৌ ছিল কিনা ইতিহাসে তার খোজ করতে যেয়ে চমৎকৃত হওয়ার মতো কিছু তথ্য পাওয়া গেল। এতদিন আমরা ইতিহাস থেকে যা কিছু জেনে এসেছি সব ভুল। পুরো ইতিহাসের সময় রেখা বা Chronology ভুল , ১০০০ সালের পূর্বের ঘটনা ও ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো সব কাল্পনিক। সক্রেটিস , প্লেটো ,এরিস্টোটল বলে কেউ ছিল না বা তাদের নামে প্রচারিত বইগুলো সব ভূয়া। এসকলই রেনেসা যূগের (১৩০০-১৬০০ খৃঃ) কবি সাহিত্যিক ঐতিহাসিকদের উর্বর মস্তিষ্কের ফসল।
৪র্থ শতক থেকে পঞ্চদশ শতকের ইউরোপ জ্ঞান বিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক ভাবে এতটাই পশ্চাদপদ ছিল যে এটাকে অন্ধকার যূগ /Dark Ages বলা হয়। এর পরে শুরু হয় রেনেসা যূগ। এই রেনেসা যূগেই প্রাচীন যত পান্ডুলিপি , মুদ্রা , তৈযসপত্র , অলঙ্কার , আর্টিফ্যাক্ট আবিষ্কৃত হয় বা বলা যায় এখানে ওখানে টুপ টাপ ভেসে উঠতে থাকে।
১৮৭৮ সালে দুই বিখ্যাত ঐতিহাসিক হকার্ট ও রস (Hochart and Ross) তাদের গবেষনা পত্র প্রকাশ করেন , যার মাধ্যমে তারা প্রমান করেন যে কর্ণেলিয়াস ট্যাসিটাসের ( Cornelius Tacitus) লেখা বিখ্যাত 'রোমের ইতিহাস' আদতে ট্যাসিটাসের লেখা নয় , এটা লিখেছিলেন ইটালিয়ান পগিও ব্রাসিওলিনি (Poggio Bracciolini February 11, 1380 – October 30, 1459)। এই পগিও ট্যাসিটাসের বই ছাড়াও আরো অনেক প্রাচীন রোমান কবি সাহিত্যিক দার্শনিকের বই /পান্ডুলিপি আবিষ্কার ও প্রকাশ করেন। তার প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য - কুইন্টিলিয়ানের অপুসেস, ভ্যালেরিয়াস ফ্লাক্কুস , এসোনিয়াস পেডিয়ানুস, ননিয়াস মার্সেলুস, সিসেরোর ট্রাক্টেট ইত্যাদি। এই আবিষ্কারগুলো তিনি কখন কোথায় কিভাবে করেছিলেন তার বিস্তারিত বিবরন পাওয়া যায় না।
পঞ্চদশ শতকের বিখ্যাত স্কলারগণ যেমন ম্যানুয়েল ক্রাইসোলোরাস , গেমিস্তো প্লেটোন (নামটি মনে রাখুন , এর সাথে প্লেটোর পান্ডুলিপি জড়িত), নীসের বেসারিওন এবং আরো অনেকে ইটালিতে এসেছিলেন। এরাই তারা যাদের মাধ্যমে ইউরোপ প্রথমবারের মতো প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক চিন্তা সম্পর্কে জানতে পারে। বাইজান্টাইনরা পশ্চিমকে প্রায় সকল প্রাচীন গ্রীক পান্ডুলিপি সরবরাহ করে। অষ্ট্রীয় আমেরিকান গনিতশাস্ত্রবীদ ও ঐতিহাসিক Otto E. Neugebauer লিখেছেন - যে সকল পান্ডুলিপির উপরে ভিত্তি করে আমাদের প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক জ্ঞান , তার প্রায় সবগুলোই বাইজান্টাইন প্রতিলিপি/কপি , দাবীকৃত আদি লেখকের মৃত্যুর ৫০০ থেকে ১০০০ বছর পরে লেখা।
বর্তমানের স্কালিগেরিয়ান ইতিহাসের সুত্র অনুযায়ী ক্লাসিকাল প্রাচীন সমগ্র সাহিত্যকর্ম আলোর মুখ দেখে রেনেসা যূগে। ধারনা করা হয় চীনে ২য় শতকে কাগজের আবিষ্কার হয় এবং ইউরোপে প্রথম কাগজের প্রচলন শুরু হয় দ্বাদশ শতকে। এর আগে প্রাচীন গ্রীস মিশর ও মেসোপটেমিয়ায় লেখা হত ট্যবলেট , পাথর , গাছের ছাল বাকল , সিল্কের কাপড় ইত্যাদির উপরে। এগুলো জোগাড় করা , লেখা ও সংরক্ষন করা ছিল ব্যায়বহুল ও কষ্টসাধ্য। ইতিহাস থেকে জানতে পারি থুসিডাইডস (জন্ম ৪৬০ খৃঃপূঃ) আড়াই হাজার বছর আগে ২৭ বছর ব্যাপী পেলোপনেসিয়াস যুদ্ধের যে বর্ননা লিখে গেছেন , তা বর্তমানে কাগজে ছেপে যে বই ছাপা হয়েছে তার পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮০০। অন্ধকার যূগ পার হয়ে শত শত বা হাজার বছর পরে কিভাবে এগুলো রেনেসা যূগে পাওয়া গেল , তা পুংখানুপুংখ বিচার করে অনেক ঐতিহাসিকের রায় হলো - রেনেসা যূগের আগে এই সকল প্রাচীন পান্ডুলিপির কোন অস্তিত্বই ছিল না।
চলবে--
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৮ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এর সাথে রাসূল স. এর কি যোগসূত্র আবিষ্কার করলেন কিছুই বুঝলামনা,লেজে গোবরে পাকিয়ে ফেললেন নাকি ?
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন : ইসলাম অতি সাম্প্রতিক ধর্ম। আদি উৎসের নিবেদিতপ্রাণ ইসলাম বিশ্বাসী Commentator ইবনে ইশাক, ইবনে হিশাম, আল যালালিন, আল কুরতুবি, আল তাবরি প্রমুখের বর্ণনা(আদি পান্ডুলিপি)থেকে ইসলামের আদি-অন্ত সব কিছুই জানা যায়। তারা আসলে নবী মোহাম্মদ এবং ইসলামের কোন কিছুই বাদ দেন্নি। কিন্তু আজকের সুচতুর মুসলিমদের অনেকেই চক্ষু লজ্জার কারনে ইসলামের ঐসব নিবেদিতপ্রান আদি Commentator দের অমানবিক, সাম্প্রদায়িক, শিক্ষা-প্রগতি বিরোধী, বর্বর, নারী নির্যাতনমুলক সত্য লিখল গুলো অস্বীকার করে। শুধু তাই না, চতুর ইসলামবাজদের অনেকেই এখন বেছেবেছে বহু যুগ ধরে চলে আসা মূল ইসলামের মানবতাবিরোধী সহিহ হাদীসগুলোও অস্বীকার করে। আবার আরেক দল এখন পয়দা হয়েছে "Quran Only" নামে।এ ভাবে কি ইসলামের জগাখিচুড়ি সামাল দেয়া যাবে?
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন : আপনি সঠিক ইসলামের লাইসেন্স কোথায় পেলেন ভাই?http://www.amarblog.com/boiragi/posts/150687
http://www.amarblog.com/boiragi/posts/150853
http://www.amarblog.com/boiragi/posts/151785
http://www.somewhereinblog.net/blog/tarifblog/28779728
http://www.somewhereinblog.net/blog/tarifblog/28780491
http://www.somewhereinblog.net/blog/tarifblog/28780573
http://www.shodalap.org/m_ahmed/14621
http://www.shodalap.org/m_ahmed/14336
http://www.shodalap.org/zubayer-ahmed/14429
http://www.shodalap.org/mohi/14432
http://www.shodalap.org/mohi/14559
http://www.shodalap.org/mohi/14862
http://www.shodalap.org/m_ahmed/9821
http://www.shodalap.org/munim/10626
http://www.shodalap.org/munim/10665
http://www.shodalap.org/munim/11003
রিপোর্ট করুন
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন : আপনি তো ইসলামের উপর রিতিমত মুদি দোকান খুলে বসেছেন।A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন : ইসলাম নিয়ে ইসলামপন্থীরাই ভন্ডামি করে। কে আসল, কে নকল বুঝা দায়। খেলা জমে উঠেছে।প্রথমে লিখলেন মাহম্মদ (সাঃ) এর ইতিহাস এর কোন ভিত্তি নেই। এর পরে লিখলেন সক্রেটিস , প্লেটো ,এরিস্টোটল এগুলো সব ভুয়া। এর পরে বিভিন্ন পন্ডিতদের রেফারেন্স দিলেন। - আপনি আসলে কি বলতে চাইছেন সেটাই বুঝিয়ে বললেন না।
রাসুল (সাঃ) এর ইতিহাসের সন তারিখ, স্থান কাল পাত্র ইত্যাদিকে যদি ভুল বলেন তবে তেমন কোন অসুবিধা নেই। তবে প্রতিস্টিত একটি ইতিহাসের বাইরে কথা বলতে হলে সেটা অকাট্য প্রমান করতে হবে নইলে আপনার কথা মানুষ প্রলাপ হিসাবেই নিবে।
আপনি স্পস্ট করে না বললেও আপনার লেখা যেটা ইঙ্গিত করছে তা হল - ওই সক্রেটিস , প্লেটো এর মতন মুহাম্মাদ বলে কেউ ছিল না। এটাও ইঙ্গিত করছে যে কোরআন মানব রচিত।
আপনার ধারনার পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলব না। শুধু এটুকু বলব যে, আপনি যদি মুসলমান হন এবং ওই দুটি ধারনা মনে মনে পোষন করেন তবে সেটা আপনাকে অমুসলিম/কাফের বানানোর জন্য যথেস্ট। না, এটা মোটেও আমার কথা না। এটা ইসলামের নিয়ম। তবে, আপনি যদি অন্য কোন ধর্মাবলম্বী বা নাস্তিক হন - তবে কোন সমস্যা নেই।
কি বলতে চান সেটা স্পস্ট করে বলুন। নইলে মানুষ আপনাকে নিয়ে ভুল ধারনা পোষন করবে। সবার আগে নিজের কাছেই নিজের পরিচয় নিশ্চিত করুন।
- আপনি একদিকে বলছেন মুহম্মদ (সাঃ) বলে কেউ ছিল না।
- আবার আর এক দিকে বলছেন কোরআন মানব রচিত নয়।
আপনার এ দুটি কথা একটি অপরটির বিপরীত দিকে যায়। আপনি যদি কোরআনকে মানব রচিত মনে করতেন তবে আপনার দুটি কথা সামঞ্জস্যপুর্ন হতো। কারন কোরআন মানব রচিত না হয়ে আল্লাহ রচিত হলে এর প্রতিটি কথাই সত্য। আর এই কোরআনেই তো মুহম্মদ (সাঃ) এর কথা অনেকবার বলা হয়েছে। কোরাআন মানছেন ওদিকে কোরাআনের কথা অবিশ্বাস করছেন।
ও আচ্ছা। "মুহাম্মদ বলে কেউ ছিল না" এটা তো আপনার কথা নয়। এটা অমুসলিমদের ইতিহাস।
তো, আপনি ওদের ইতিহাসের বিজ্ঞাপন করছেন কেন?
এজন্যই বলেছিলাম - প্রথমে, নিজেই নিজের কাছে পরিচয় নিশ্চিত করুন।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
এ ভাবে কি ইসলামের জগাখিচুড়ি সামাল দেয়া যাবে?
তা ভাই সেই রাসূল কি আপনি নিজে নাকি আপনার গরু মগা চীপ এর তালত ভাই মগা বাসার ?
পন্ডিতদের মতে দার্শনিক ইবনে সীনা ও রুশদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসাবিদ এবং বিশ্বের সকল যুগের চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাযী ব্যাতিত অন্য কোন মুসলিম মনীষীই মধ্যযুগীয় শিক্ষা ও রেনেসায় অসামান্য প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন না্ই।
প্রচ্যের সুধী সমাজে এ্যরিষ্টটলকে মুয়াল্লিমুল আউয়াল বা আদি গুরু ও মুয়াল্লিমুস সানী বা দ্বিতীয় গুরা বলা হয় মুহাম্মদ আল-ফারাবীকে। মুসলিম শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের পিরামিডে তার নাম সবার প্রথম, তার পরই তার মন্ত্র শিষ্য ইবনে সীনা ও ইবনে রুশদের নাম।
মুসলিম হিসেবে ফারাবী এ্যারিষ্টটলের পরামাত্মা তত্ত্বরে দ্বৈতবাদকে একেশ্বরবাদে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ইলাহীতত্ত্বে মর্মবাদের সন্ধান করেন। এবং দর্শনে মর্মবাদ বা মিষ্টিসিজমের স্থান নির্দেশ করেন। তারই অনুসরনে পরবর্তীকালে ইখওয়ানুস সাফা, দার্শনিকবৃন্দ এবং ইবনে সীনা, আবু নাসির তুসী, সুলামী, আবু সাইদ, আবুল খায়ের ও ইমাম গাযালী ইসলামে তাসাউফ তত্ত্বের পূর্ণরুপ দান করেন। তার ফলে ইসলামে ৩টি দার্শনিক-মর্মবাদী প্রধান মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে- ইশরাকী, আখবারী ও মুজাদ্দেদী।
ইসলামী ধর্মতত্ত্বের আলোচনায় তিনি দর্শনের সংগে ধর্মের তুলনামূলক বিচারকালে ইসলাম-ধর্মীয় শব্দ ওহী, তাসবীহ, আরশ-কুরসী, তকদীর, তাকলীদ প্রভৃতি শব্দের বিশেষ ব্যাখ্যা দান করেন। এদিক দিয়ে তিনি ইসলামের ধর্মীয়- দর্শনেরও জন্মদাতা।
এ রকম অনেক মুসলিম দার্শনিকগণের পরিচয় দিতে পারব. যারা গ্রীকদেরকে ইউরোপের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এ নিয়ে আমি একটি পোষ্ট লিখতেছি, কিছুদিন পর ব্লগে দিব ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন