উচ্চ আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের ভূমিকাকে ‘দাসসুলভ’ !!!!
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তি পেতে চাই এই অসহায়ত্ব থেকে ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:২৩:৫৮ দুপুর
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের বিবৃতি : মাহবুবে আলমের আচরণ দাসসুলভ তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পদের যোগ্য নন
উচ্চ আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের ভূমিকাকে ‘দাসসুলভ’ মন্তব্য করে হংকংভিত্তিক খ্যাতনামা মানবাধিকার সংগঠন এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) বলেছে, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থাকা তো দূরের কথা, কোনো আইনি পদেই থাকার যোগ্য নন।
গতকাল এক বিবৃতিতে এএইচআরসি একথা বলেছে। হাইকোর্টে মাহমুদুর রহমানের রিমান্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদের দায়ের করা রিটের বৈধতা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল প্রশ্ন তোলায় তার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে বিবৃতিতে। মাহমুদুর রহমানের রিমান্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানিতে গত ১৯ এপ্রিল হাইকোর্টে মাহবুবে আলম বলেন, বন্দির স্ত্রী এই রিট দায়ের করতে পারে না। তিনি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মধ্যে পড়েন না।
এএইচআরসি বিবৃতিতে বলা হয়, বন্দি ব্যক্তি নিজে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না। একজন বন্দির নিকটাত্মীয় তার অধিকার রক্ষার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হবেন এটাই বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। নিকটাত্মীয়ের মধ্যে স্বামী ও স্ত্রীই তো সবচেয়ে আপনজন। বন্দির অধিকার রক্ষায় যদি তার পরিবারের সদস্যরা লড়াই করতে না পারেন তাতে বন্দি ও তার পরিবারের স্বাধীনতাকে অপমান করা হয়। এটা পরিবারের ধারণার ওপরই সরাসরি আঘাত।
বিবৃতিতে মাহবুবে আলমের আচরণকে দাসসুলভ মন্তব্য করে বলা হয়, আইনি পদে একটি শ্রেণীই বেআইনি (অযোগ্য) আর তারা হলেন দাসরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, এটা বিশ্বাস করা কঠিন, মাহবুবে আলম এই মৌলিক নীতি সম্পর্কে অবগত নয়। যেখানে আইনের শাসনের প্রতি কিছুটা হলেও শ্রদ্ধা আছে সেখানে এই নীতিকে সম্মান দেখানো হয়। যে ব্যক্তি আদালতে দাঁড়িয়ে একথা বলতে পারেন যে স্ত্রীর রিট পিটিশন দায়ের করার অনুমতি নেই তার আইন বিষয়ক কোনো পদে থাকার অধিকারই নেই। অ্যাটর্নি জেনালের পদের কথা তো বলাই বাহুল্য।
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল যদি এ সম্পর্কে জেনেশুনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আদালতকে বিভ্রান্ত করে থাকেন তবে সেটা আরও খারাপ। অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজ আদালতকে বিভ্রান্ত করা নয়, বরং সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আদালতে সাহায্য করা। অ্যাটর্নি জেনারেল যদি বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী হন তবে তিনি পুরো বিচারিক কাঠামোরই ক্ষতি করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, এটা হতে পারে, আজকে তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও আনুগত্য আইন ও আইনগত বাধ্যবাধকতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল নেয়ায়েতই ক্ষমতাধর রাজনীতিকদের হাতের ঘুঁটিতে পরিণত হয়েছেন এবং এর মাধ্যমে নিজেকে তিনি আদালতে বিচারিক পদাধিকারী হিসেবে উপস্থাপনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। বিবৃতিতে প্রশ্ন করা হয়, রাজনৈতিক আনগুত্য কি তাকে মিথ্যা বলতে এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করতে বাধ্য করেছে?
বিবৃতিতে বলা হয়, মামলাটি মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে হওয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূমিকা আরও গভীর উদ্বেগের। তাকে নির্যাতন করা রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, যেখানে কোনো ব্যক্তির নির্যাতিত হওয়ার পরিস্থিতি বিদ্যমান সেখানে ভিকটিমের শত্রু হিসেবে দাঁড়ানো অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজ নয়। তার কাজ হচ্ছে আইনের সত্যিকার নীতির সর্বোচ্চ কর্মকর্তার ভূমিকা পালন করা। অ্যাটর্নি জেনারেল যদি নিজেকে কোনো নাগরিকের শত্রু হিসেবে মনে করেন তাহলে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকতে পারেন না।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দাসগিরি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে একজন বন্দির স্ত্রীর রিট পিটিশন দায়ের করার অধিকারকেও চ্যালেঞ্জ করা হয় এবং একাজটি শুধু ক্ষমতাসীন করছে না, করছেন দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট মাহমুদুর রহমানের রিট খারিজ করে দেয়। এক্ষেত্রে আদালত যদি বন্দির স্ত্রী আবেদন করতে পারবে না মর্মে অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তিকে গ্রহণ করে থাকে তাহলে বলতে হবে, এক্ষেত্রে চিরাচরিত আইনে বন্দির অধিকারের যে মৌলিক নীতি রয়েছে তা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৯১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন