ঐতিহাসিক ফটিকছড়ির সেইদিনের রহস্যঃ গনপ্রতিরোধ
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তি পেতে চাই এই অসহায়ত্ব থেকে ১৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:০০:৪৪ রাত
সেই দিন ফটিকছড়িতে কতজন নিহত হয়েছিল?
বিভিন্ন মিড়িয়া বিভিন্ন রকম নিউজ করেছেন। কেউ বলেছেন একজন, কেউ তিনজন, কেউ সতের জন, কেউ উনত্রিশ জন। আসলে সেদিন কতজন মারা গিয়েছিল? কোন খবর সঠিক কিনা তা যাচাই করার জন্য উপস্থিতের সাক্ষী যতেষ্ট। নিশ্চিত ধরে নিন সেদিন যা হয়েছিল যা আমাকে আপনাকে মিড়িয়া জানতে দেয়নি।
সেদিন ছিল হরতাল, আওয়ামিলীগ কর্মীরা বের হয়েছিল তাদের শক্তি প্রর্দশনের জন্য। তাদের সাথে ছিল ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী গ্রুপ তায়্যুব বাহিনী, আর সন্ত্রাসী বাহিণীর কাছে কি তাকে সেটা আপনাকে হয়তো বুঝানো লাগবেনা। পূর্বে এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে পুলিশের একাধিক বার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল, পুলিশ প্রতিবার ব্যার্থ হয়েছিল। তাদের সাথে ছিল ২০০ টা মোটর সাইকেল, ৫ টি মিনি ট্রাক, ৩ টি মাইক্রোবাস, ২ টি কার। এইবার আপনিই হিসেব করুন কত জন লোক ছিল, কি করে ২০০ টা মোটর সাইকেল নিয়ে আসে? মিনি ট্রাকগুলিতে কতজন ছিল আর মাইক্রোবাস ও কারে কতজন? যাই হোক, প্রত্যেকটা মোটরে ২ জন, ট্রাকবর্তী কর্মী এবং মাইক্রো বাসে নেতারা সহ প্রায় ৩০০ জনের উপরে বর্তমান এবং সাবেক ছাত্রলীগের নেতা গিয়েছিলো হেফাজতে ইসলামীর উপর আক্রমন করবে বলে, কিন্তু তাদের একজনও ফিরে এলেন না।
তারা তাদের শক্তি প্রর্দশন করতে গিয়ে প্রথম ভুল করে মসজিদে হামলা করে, দ্বিতীয় ভুল ছিল হরতালে গাড়ি বের করে, তৃতীয় উন্মুক্ত ময়দানে ও মসজিদকে লক্ষ করে ফাকা গুলি করে। এতে মানুষের বিবেক একটু নাড়া দিয়ে ওঠে, এরা কারা, কি হচ্ছে এখানে? ইতিমধ্যো মসজিদ থেকে ঘোষণা এল যার যা আছে সবাই এই সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করো। ডাকে আবালবৃদ্ধাবনিতা ঝাপিয়ে পড়লে বীরের বেশে। এরপর শুরু মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত মাইর, লগে ভিটামিনও। ভুজপুর থানা পুলিশ সংখ্যা ৫-৬ জন, কারণ এটি নতুন থানা। ফটিকছড়ি থানা থেকে এটাকে পৃথক করা হয়েছে। তাদের পক্ষে লক্ষাধিক মানুষ সামাল দেয়া সম্ভব ছিল না। তাদের সাথে যোগ দিল ফটিকছড়ি থানার ২৫-৩০জন পুলিশ। না, তারা্ও ব্যার্থ। পাবলিক তাদের হালকা পাতলা মাইর দিয়ে ভাগায়। পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল হতাহত মানুষগুলোরে চিকিত্সা দিতে, কিন্তু জনগণ নাছোড় বান্দা, তাদের জীবিত ছাড়তে রাজি নন। অবশেষে বিজিবি আসলে তাদের পরিস্থিতি কিছুটা শীতল হয়। ততক্ষণে পাবলিক তার কাম বুঝায় দিছে, বাকি রইলো মাইর খাওয়ার মত কেও।
প্রশাসনের ব্যর্থতা ঢাকতে লাশ গুম করা হল। সংঘর্ষের তিনদিন পরও লাশ মিলে খালে বিলে ডোবায়। গণপিটুনীতে অংশগ্রহণকারীদের কারো কারো মতে মৃতের সংখ্যা ১০০ এরও অধিক। তাছাড়া এই সংবাদ প্রচার হলে সারা দেশে ছাত্রলীগের মনোবল ঠিক রাখা যাবে না । ছাত্রলীগ নেতা -কর্মীরা পালিয়ে যাবে, যা আগামী নির্বাচনের জন্য হুমকি হয়ে যাবে। তাই মাইর খেয়েও চিৎকার করতে পারছে না আবার সহ্যও করতে পারছে না। এই প্রতিরোধ যদি সবসময় সবস্থানে করা যেত তবে দেশটা হয়তো আজ ৫৪ হাজার বর্গমাইলের কারাগারে পরিনত হতোনা। তবে এটাও ঠিক যে, আমাদের মুক্তির আর হয়তো খুব বেশি দেরি নাই। আর সেজন্য আমাদেরকে এক হতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন