ইয়াজু'জ-মাজুজ বিশ্ব ব্যবস্থাপনা ও আমাদের পৃথিবী।
লিখেছেন লিখেছেন সাদাচোখে ১৬ জুন, ২০১৫, ০৫:১৫:১২ সকাল
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম
আসসালামুআলাইকুম।
এই লিখাটি একটানে লিখা। ইয়াজুজ ও মাজুজকে যারা টিপিক্যাল হাদীসের ওয়ার্ডিং এর আলোকে দেখেন, কিন্তু ওয়ার্ডিং গুলো বুঝার জন্য কোরান ও হাদীস সমূহকে একসাথে একজায়গায় এনে একটা প্যাটার্ন বানিয়ে কখনো ভাবেন নি - তাদের অনেকের কাছেই অস্বস্তিকর লাগতে পারে।
কোরানিক ভাষায় বিশেষজ্ঞ ডঃ তাম্মাম আদি - ইয়াজুজ-মাজুজ শব্দদ্বয়ের উৎপত্তি ও ব্যাকরন গত বিভিন্ন আংগিক বিচার বিশ্লেষন করেছিলেন। ঐ বিচার বিশ্লেষনের একাংশে উনি যা বলেছেন কিংবা অন্যভাবে বললে আমি যা বুঝেছি তা হলঃ
'ইয়া'জুজ ও মা'জুজ' শব্দদুটির উৎপত্তি মূলতঃ আরবী 'জুজ' ধাতু কিংবা ভিত্তি হতে। যার মূল অনুবাদ ক্রিয়া কিংবা এ্যাকশান। কোন একটি এ্যাকশানকে যখন কেউ এ্যাকটিভ ফর্মে উপস্থাপন করে - তখন সেই উপস্থাপক তার কর্ম সহযোগে কিংবা ইন্ডিফেন্ডেন্টলী 'ইয়া'জুজ' বলে সম্ভোধিত হতে পারে। আবার ঐ একই এ্যাকশানটিকে অন্য একজন যখন প্যাসিভ ফর্মে উপস্থাপন করে - তখন সেই উপস্থাপক তার কর্ম সহযোগে কিংবা ইন্ডিফেন্ডেন্টলী 'মা'জুজ' বলে সম্ভোধিত হতে পারে।
অদ্ভুত ব্যাপার হল এই যে মানব ইতিহাসের পুরোনো বই পুস্তুকে, সিনেমা নাটকে - অন্যায়কারী, জুলুম কারী কিংবা নির্যাতনকারীর এমন কোন চরিত্র পাওয়া যায় না - যেখানে জুলুমকারী গনহারে মানুষ যার উপর জুলুম নির্যাতন করেছে - আর তারপর পর নির্যাতনের শিকার ঐ ব্যাক্তিকে নির্যাতনকারী বানিয়েছে, অপরাধী বানিয়েছে। এটা রিসেন্ট সময়ের নাটক সিনেমা ও মানুষের ইতিহাসে অদ্ভুত রকমভাবে অতিরিক্ত দেখা যায়।
বিষয়টি বুঝার জন্য বেশ কিছু উদাহরন সেট করি। আশা করি পাঠক ভাইবোনরা আমার লিখার লিমিটেশান স্বত্তেও - একটা প্যাটার্ন তৈরী করতে পারবেন।
উদাহরন - ১ঃ বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী সালাহউদ্দীন সাহেব হঠাৎ করে উত্তরা হতে নিখোঁজ হলেন। সচেতন মানুষ মাত্রই তা সে সরকারী কিংবা বিরোধী কিংবা নিরপেক্ষ হোক, জানেন যে বাংলাদেশ এ্যাফেয়ার্স এর নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে - ইন্ফ্লুয়েন্স করার অধিকারী কোন ব্যাক্তি কিংবা ব্যাক্তি সমষ্টির নির্দেশে তিনি গুম হয়েছেন এবং হয়তো খুন ও হয়ে গিয়ে থাকবেন। তারপর ও একজন মানুষ ও মুখ ফুটে ঐ 'গুম হয়ে যাওয়া' এ্যাকশানটিকে - স্ট্রংগলী, পাবলিক ডোমেইনে কাউকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেয়নি। যা কিছু বক্তব্য পাবলিকলী এসেছে - তা ডিপ্লোমেসীর প্রলেপ মাখানো। কেন? মানুষ কি বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রনকারী প্রভুদের ভয় পায়? না কি সরকার কে ভয় পায়? না কি মানুষ আওয়ামীলীগকে ভয় পায়? না কি শেখ হাসিনাকে ভয় পায়? নিশ্চয়ই কাউকে না কাউকে ভয় পায় বলেই এত লক্ষ লক্ষ সচেতন মানুষের কেউ ই - স্ট্রংগলী ও স্কোয়ারলী কাউকে ব্লেইম করলো না। এ পয়েন্ট টি মনের মধ্যে ধারন করে (ভুলে না যেয়ে) আসুন এখন আমরা মূল ইয়াজুজ ও মাজুজ এর এ্যাকশানটিকে কেন্দ্র করে - এর এ্যাকটিভ ও প্যাসিভ ফরম দুটি পর্যালোচনা করি।
এ্যাকটিভ ফর্ম এঃ ইয়াজুজ তথা গুম কারী / গুম চক্র পাবলিকলী (যেহেতু স্বাক্ষী-সাবুদ আছে) সালাহ উদ্দীন সাহেবকে তুলে নিল। এবং এ এ্যাকশান এর রিএ্যাকশান স্বরূপ রাষ্ট্রের অন্যান্য এ্যাকটিভ অর্গান তথা পুলিশ, থানা, মিডিয়া, জুডিশিয়ারী, বুদ্ধিজীবী, রাইটস অর্গানাইজেশান সবাইকে ইনএ্যাকটিভ তথা অবশ কিংবা অকার্যকর করে দিল। তার মানে ইয়াজুজ এর এ্যাকশান এর বিপরীতে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন - তা মিইয়ে যেতে বাধ্য এবং আমরা এ ক্ষেত্রে তাই হতে দেখলাম। রাষ্ট্র ও এর পুরো অর্গান ঐ এ্যাকশান এর ব্যাপারে জড়বৎ হয়ে গেল।
প্যাসিভ ফর্ম এঃ ঐ একই গোষ্ঠীই মা'জুজ হয়ে গিয়ে তথা গুম নেগেট-কারী / গুম নেগেট-চক্র সেজে - পাবলিকলী একের পর এক বলতে লাগলো - সালাহ উদ্দীন সাহেব নিজেকে নিজে গুম করে রেখেছেন, হাইড আউট এ গিয়েছেন। এর পর বলতে লাগলো তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর ষঢ়যন্ত্র করছেন, এর পর বলতে লাগলো তিনি মূলতঃ দেশকে অস্থিতিশীল ও বিপদে ফেলে দিতে যাচ্ছিলেন, এর পর বললো তিনি দেশের সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন, এমনি তর বলতে বলতে ওনাকে ক্রিমিনাল হতে বড় ক্রিমিনাল করলেন এবং তারপর ঘৃন্য, অস্পৃশ্য ও নগন্য এক মানুষে পরিনত করলেন এবং সবশেষে ওনার পরিবার, দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ওনাকে এমন জায়গায় নিয়ে পৌছালেন যে - যেন বা তিনি মশার চেয়েও নগন্য। তাকে নিয়ে চিন্তা করা, মাথা ঘামানো - লিটারেলী সময়ের অপচয় ই শুধু নয় - এটা আসলে কোন বিষয় ই নয়।
সিমিলার প্যাটার্নটি আপনি চাইলে ম্যাচ করে দেখতে পারেন সালাহউদ্দীনকে ইন্ডিয়ায় ফেলে যাবার পরের ঘটনাগুলোতে। যেখানে তাকে অবৈধভাবে ইন্ডিয়ায় প্রবেশ করেছে বলে স্টাবলিশ করেছে কিন্তু বিডিআর বিএসএফ বিষয় সামনে আনতেই দিল না।
ইলিয়াস আলি সহ শত শত গুম কেইস এর ক্ষেত্রে - যেখানে তাদেরকে হাইড আউটে থেকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অভিযোগ তুলে রাখা হয়েছে।
র্যাব এর গুলিতে করে পা হারানো লিমন ও অন্যান্য ছেলে দেরকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকদেরকে আক্রমনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান সহ তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী কিংবা মানবাধিকার হরনকারীদের বিচারের ক্ষেত্রে আইনকে ইচ্ছামত চালানো স্বত্তেও বার বার বলছিল ঐ লোকদের জামিন দেওয়া যাবেনা কারন তারা আইনকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে দেবে না।
হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির মিছিল মিটিং বানচাল করছিল, আক্রমন করছিল এবং জানমাল এর ক্ষতি করে বলছিল ঐ সব সংগঠন মতিঝিল সহ সারাদেশে আক্রমন করে জানমাল এর ক্ষতি করেছে।
দেখবেন প্রতিটি বিশৃংখলা, প্রতিটি ফ্যাসাদ, প্রতিটি ফেতনা, প্রতিটি ইনজাস্টিস এর জন্ম দিয়েছেন যারা, এ্যাকশান এর জন্ম দিয়েছেন যারা - তথা ইয়াজুজ - ঠিক তারাই পরবর্তীতে মাজুজ সেজেছেন। নিজেদেরকে ভিকটিম সাজিয়েছেন এবং সেই অন্যায়ের, বিশৃংখলা, ফ্যাসাদ ও ফেতনার শিকার ট্রু ভিকটিমকে ভিকটিমাইজ করে ভিলেন বানিয়েছেন, জংগী সাব্যস্থ করে ছেড়েছেন, দোষী করেছেন, ইনসিগনিফিকেন্ট করেছেন এবং সবশেষে এ্যানিহিলেশান করেছেন, দূর্বল, নিঃস্ব করে ছেড়েছেন।
এই ধারাটিই - এখন আপনি ব্যাক্তি মানুষের মধ্যে ও ছড়িয়ে পড়েছে দেখতে পাবেন। বিশেষ করে ইন্ডিভিজ্যুয়াল ক্রাইম গুলোকে দেখুন, এমনকি ছোটখাট ক্রাইমগুলো পর্যালোচনা করুন। দেখবেন যে বা যিনি একটু আগে একজন রিক্সাওয়ালাকে চড় দিল, কিংবা সব্জিওয়ালাকে চটকনা দিল কিংবা কোন দোকানদারের পাওনা দ্রব্য মূল্য দিল না - সেই তিনিই পাবলিকলী ঐ রিক্সাওয়ালাকে সত্য মিথ্যার আচ্ছাদনে ডাউন করতে শুরু করলো, ঐ সব্জীওয়ালাকে ভিকটিম বানিয়ে ফেললো আর দোকানদারকে সরি বলতে বাধ্য করে ফেলছে। এমনকি আপনি দেখবেন যে লোকটি ফরমালিন দিয়ে ফল বিক্রি করছে সে একটু পর যিনি ফল কিনলেন ওনাকে দুষছেন এই বলে যে স্বস্তায় ফল চায় আবার ফরমালিন আছে কিনা জিজ্ঞাসা করে। এমনি হাজারো উদাহরন দেওয়া যাবে।
এবার চোখ দেই বিশ্বের প্রভু রূপী আমেরিকার দিকে। সিআইএ, মোসাদ ও সৌদী আরবের ইন্টেলিজেন্স এ্যাজেন্সীর সহায়তায় হোয়াইট হাউজ ও তার এ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ উইংস 'ইয়াজুজ' হয়ে নিউইয়র্কে একদিনেই ৩টি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টাওয়ার ধ্বশিয়ে দিয়ে ৩০০০ মানুষ হত্যা করলো। আর মাজুজ সেজে ফ্যাক্টস ও ফিগার কেই শুধু আড়াল করলো না, নিরাপরাধ প্রতিপক্ষ আফগানিস্থান, ইরাক কে প্রথমে সন্ত্রাসী লালন করার অপরাধে অপরাধী করলো, তারপর সন্ত্রাসী পালন, তারপর আক্রমন করার অপরাধে, এবং তারপর শক্তি শালী অস্ত্র ও মনোবল থাকার অপরাধে এবং সবশেষে আগামীর কোন একসময় আমেরিকা আক্রমন করে বসতে পারে (এমন গাঁজাখুরী) বক্তব্য দিয়ে - এই ধারনা মানুষের সামনে আনলো যে - ঐ দেশ দুটির মানুষকে অমানুষের লেভেল এর ইনসিগনিফিকেন্স এ পৌছিয়ে ২ হতে ৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করে ফেললো। কিন্তু বিশ্ব ব্যবস্থাপনার প্রতিটি অংগ প্রত্যংগ মুক বধির ও ডাম্ব ইতর এর মত হয়ে রইল। ভাব যেন এমন ই যে ইরাক ও আফগানিস্থানের মানুষেরই দোষ ছিল, তারা আসলেই হত্যার যোগ্য ছিল। আমেরিকার সামনে হত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না, আসলে ঐ দেশ দুটি আমেরিকাকে বাধ্য করেছে তাদেরকে মারতে, পুড়তে ও পুংগু করতে।
সবশেষে আগামী দিনের বিশ্ব রুলিং কান্ট্রি, মসীহউদদজ্জাল এর দেশ, ঈসা আঃ এর দরবার এর দেশ - বিশ্ব মোড়ল, চাঁদাবাজ ধনকুবের ইসরাইল নিয়ে না বললেই নয়। কারন ইয়াজুজ মাজুজ নিয়ে যা কয়টা সহীহ হাদীস আছে তাতে জেরুজালেম ছাড়া পৃথিবীর আর কোন শহরের নাম ও গন্ধ ও নেই। সেই জেরুজালেম দখলকারী ইসরাইল, ইয়াজুজ এর রোল এ গিয়ে প্রতি ২/৩ বছর পর পর মাছ ধরার মত করে প্যালেস্টাইনীদের হত্যা করছে, বন্ধী করছে, আহত করছে এবং গন হারে গ্যাস, বুলেট, দারিদ্রতা ইত্যাদি দিয়ে সিস্টেমেটিক্যালী ধ্বংশ করে চলেছে। অথচ প্রতিটি নির্যাতন, নিষ্পেষন, ফ্যাসাদ ও ফেতনার পর পর নিজেকে ভিকটিম হিসাবে উপস্থাপন করে বলে কাসেম রকেট তাদের মরুভূমিতে এসে আচঁড়ে পড়ছে, যা যে কোন সময় রক্তক্ষরন করতে পারতো - তাই বাধ্য হয়ে আক্রমন করতে হচ্ছে, কেয়ারফুলী পিক এন্ড চ্যুজ এর আওতায় শুধু সন্ত্রাসী মারছে যা সপ্তাহ বয়সী শিশু হতে ৭০ বছরাধিক বৃদ্ধ হলেও কিছু করার নেই - কারন তা খুন সবাধানে টারগেট পিক করছে লিটারেলী একটা বদ্ধ জেলখানায় ক্লাসটার বোমা মারা প্রাকটিস করছে। অথচ মাজুজ হয়ে সারা পৃথিবীর সিমপ্যাথী যেন তার কোলে আচঁড়ে পড়ে আছে।
----------------------
আশা করি পাঠক ভাই ও বোনেরা নিজেদের আচার ও আচরনে কিংবা নিজের পরিচিত আত্মিয় স্বজনের মধ্যে এই ইয়াজুজ মাজুজিয় গুনাবলীর হদীস পাবেন না। মনের অগোচরে যদি এই কারেক্টারস্টিক্স পাওয়া যায় তবে সংশোধনের নিমিত্তে কাজ শুরু করতে হবে ও আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে - এ হতে বের হবার জন্য। আল্লাহ আমাদের অমন ফ্যাসাদ পূর্ন, বিশ্রী ও শঠতা পূর্ন কারেক্টারস্টিক্স হতে বের হয়ে আসার তৌফিক দিন এবং ঐ কারেকটারস্টিক্স রপ্ত করা হতে বাঁচিয়ে রাখুন।
মনে রাখতে হবে ইনসান যেমন শয়তানের গুনাবলী ধারন করলে শয়তান এ পর্যবসীত হয় (সুরা নাস দ্রষ্টব্য) ঠিক তেমনি ইনসান যদি ইয়াজুজ ও মাজুজের গুনাবলী ধারন করে তখন ইয়াজুজ ও মাজুজ এ পর্যবসিত হতে পারে। আর ভয়াবহ ব্যাপার হল ঐ হাদীসটি, যেখানে রাসুলুল্লাহ সঃ আমাদের সাবধান হবার জন্য জানিয়েছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ আদম আঃ কে অর্ডার দেবেন মানুষদের মধ্য হতে ৯৯৯ জনকে দোযখে ফেলতে। যারা হবে (মানুষরূপী!) ইয়াজুজ ও মাজুজ। আল্লাহ ভাল জানেন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইয়াজুজ মাজুজ সম্মন্ধে সবগুলো হাদাস দিন
আর কোরআনের আয়াতগুলোর তাফসির দিন সাহাবা (রা) দের সনদে
অবশ্যই এ ব্যাখ্যাটি দাঁড় করানোর চেষ্টা আমার ব্যাক্তিগত আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর আলোকে। এবং এ ব্যাখ্যা শুধু মাত্র ইয়াজুজ ও মাজুজ নামের উৎপত্তিগত অর্থের আলোকে। এ লিখায় আমি কোন কনক্লুশান টানিনি কিংবা বলিনি যে মুসলিম কে এ লিখা বিশ্বাস করতে হবে। বরং এ লিখায় আমি ঐ শব্দদুটির যে বৈশিষ্ট্য, যে ইনহেরেন্ট মিনিং - তা যে আজকের যুগের মানুষের মধ্যে তা দায়িত্বশীল হোক কিংবা অর্ডিনারী মানুষের মধ্যে হোক ইন্ডিভিজ্যুয়ালী অতিরিক্ত রকমের বিরাজমান তা বুঝাতে চেয়েছি, সে সাথে বলতে চেয়েছি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থা ইয়াজুজ মাজুজ এর কারেক্টার ধারন করে - মজলুম এর উপর মিথ্যা দায় চাপিয়ে দিচ্ছে। ভিকটিমকে অত্যাচারী বানাচ্ছে।
এবং সেই সাথে বলতে চেয়েছি - ৪০/৪৫ বছর আগেও এ ট্রেন্ডটির খোঁজ পাওয়া যাবে না। ৯০ পূর্ববর্তী বাংলাদেশী সিনেমা নাটকে এর হদীস প্রায় পাওয়া যাবে না কিন্তু এখনকার সিনেমা নাটকের পরতে পরতে এটার খোঁজ পাওয়া যাবে।
আপনি হিস্টিরিক্যালী যুদ্ধ সমূহের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখুন কোথাও পাবে না আক্রমনকারী অপর পক্ষকে এই বলে মিথ্যা ভাবে দুষছে যে - তারা আসলে ফ্যাতনা ও ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী। একটু আগে এই ম্যাগাজিন এ মাহমুদুর রহমান এর চিঠি পড়ছিলাম - বলুন আপনি কোথাও কোন কালে দেখেছেন অমন একজন ১০০% মজলুমকে - কোন দেশের জুলুম কারী সরকার বলছে যে - সে মজলুম আসলে গাড়িঘোড়া ভাংছে, দেশ দ্রোহী ইত্যাদি ইত্যাদি। আর হিস্টরীতে দেখেছেন কোথাও কোন দিন অমন নির্যাতন এর সময় এমন অবাধ ফ্রি ও রাইটস থাকা স্বত্তেও পুরো বিবেক অমন করে মিইয়ে ছিল।
আমি শুধুই এ দিকটি এ লিখায় আনতে চেয়েছি।
ব্যাক্তিগতভাবে ইয়াজুজ ও মাজুজ নিয়ে কোরান ও হাদীসের আলোকে আমার একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং অবশ্যই হয়েছে - নিশ্চয়ই আমি গ্রাজুয়ালী সময় করে তা শেয়ার করবো। কিন্তু এটা এতটাই বিরাট এতটাই ব্যাপক যে - আমার মত লিখার সীমাবদ্ধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের জন্য তা ঘুছিয়ে উপস্থাপন টা কঠিন।
সে জন্য আমার আহ্বান থাকবে আপনাদের মত যারা দ্বীন জানেন ও বুঝেন, আলেম ও ওলামা আছেন এ ব্লগে তারা এ ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা রাখবেন - যাতে মিম্বার থেকে, ব্লগ থেকে, ওয়াজ থেকে মুসলিমরা আখেরী জামানা নিয়ে অধিক অধিক বক্তব্য শুনতে পায়।
ধন্যবাদ।
উপরে ছালছাবিল ভাইর কমেন্টের প্রতিউত্তরে যা লিখেছি তার একাংশে আপনার মন্তব্যের উত্তরে আমার অবস্থান এর ব্যাখ্যা রয়েছে।
কোরানের ইয়াজুজ ও মাজুস সংশ্লিষ্ট দুটো আয়াতের কয়েকজন ভিন্ন ভিন্ন অনুবাদকের অনুবাদ পড়লে, কয়েকজন তাফসীর কারকের তাফসীর পড়লে এবং সবগুলো হাদীসকে একজায়াগায় এনে পুনঃ পড়ার পর এক কলামে রাখুন। এর পর যদি আপনি পৃথিবীর ইতিহাসের গত ১৪০০ বছরকে পূনঃ পর্যালোচনা করেন এবং এই ইতিহাসের ঐ সব এ্যাক্টর ও ঘটনাকে - যা যা সংশ্লিষ্ট হাদীস ও কোরানের সাথে সামন্জস্যপূর্ন - তাকে অন্য কলাম এ আনেন এবং গবেষনা করেন তথা রি এ্যাক্সামিন করেন বিচার বিশ্লেষন করেন - নিঃসন্দেহে আপনি সত্যের একটা চেহারা পাবেন ইনশাল্লাহ্।
এ ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে
১। যথাযথ ইতিহাসের মাইলস্টোনগুলোকে একজায়গায় আনতে না পারা।
২। তাফসীর কারকদের ব্যাক্তিগত অভিমতকে অতিরিক্ত ও অযোক্তিকভাবে বেশী প্রাধান্য দিয়ে - শুধু মাত্র ঐ একটি মতকে রিজিডলী আকঁড়ে ধরা এ্যাজ ইফ তা আকিদা মনে করা।
৩। আন্তরিক না হওয়া।
মজার ব্যাপার হল, যে সব মুসলিম ভাইরা বার্মা, প্যালেস্টাইন, সিরিয়া, ইয়েমেন তথা আরব উপদ্বীপ ইজিপ্ট এমনকি বাংলাদেশের ইসলামী এ্যাক্টিভিটি ইত্যাকার ঘটনা সমূহ নিয়ে অসম্ভব কষ্ট পান তারা আখেরী জামানা সংশ্লিষ্ট কোরান ও হাদীসের শিক্ষা নিয়ে জ্ঞান চর্চা করলে অদ্ভুত সব মৌলিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং পেতে থাকবেন। যা আমার কাছে মনে হয় এখন সময়ের দাবী ও বটে।
Matrix Returns
হয়তো আপনি ঠিক বলেছেন।
কিন্তু তাই বলে ইয়াজুজ মাজুজ মানেই এরা, এমন কথায় বিশ্বাস করলে তো কুরআন ও অনেক সহীহ হাদীস অস্বীকার করা হবে।
যেমনটি কিছুদিন আগে বায়েজিদ খান পন্নিরা ইহুদি নাসারা সভ্যতাকে কিছু হাদিসের ভাবার্থ দিয়ে সাজিয়ে দাজ্জাল বানিয়ে ছাড়লো। এমনটি হলে অনেক সহীহ হাদীস অস্বীকার করা হবে।
বলা যেতে পারেঃ বর্তমান দুনিয়াতে এমন চরিত্রগুলো ইয়াজুজ মাজুজ বা দাজ্জালের প্রতিচ্ছবি। ইয়াজুজ মাজুজ বা দাজ্জালের গুণ সম্পন্ন কিছু নমুনা।
এগুলোকেই একমাত্র কুরআন হাদীসে বর্ণিত ঘটনা আখ্যা দেওয়া যাবে না। ধন্যবাদ
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আমার লিখার সীমাবদ্ধতা সমূহের তথা মিসিং লিন্ক গুলোর অবতারনা করার জন্য শোকরিয়া জানাচ্ছি। এবং এ নিয়ে আমার পজিশনটি ছালছাবিল ভাইয়ের কমেন্ট এ দেবার চেষ্টা করেছি।
যে মানুষেরা ইয়াজুজ ও মাজুজ এর কারেক্টারস্টিক্স ধারন করে এবং প্রয়োগ করে তারা যুলকারনাইন আঃ এর দেয়ালের ওপাড়ের ইয়াজুজ মাজুজ তা আমি বলিনি কিংবা অমন ধারনা আমি দিতে চাই নি। লিখায় অমন ধারনা এসে পড়লে আমি দুঃখিত।
বায়েজিদ খান পন্নির বইটি আমি পড়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে - তিনি সত্য এক্সপ্লোর করার চেষ্টা করেছেন, এবং কিছু কিছু বিষয় ঐ বই য়ে আছে যা পরবর্তী সত্য অনুসন্ধানী আলেম ওলামারা রিভিউ করতে পারেন, ওটা দোষের হবে না - বলে আমার ধারনা - কিন্তু একেবারে ফেলে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
আপনার এ মন্তব্যটির সাথে আমি পুরোপুরি একমতঃ
'বলা যেতে পারেঃ বর্তমান দুনিয়াতে এমন চরিত্রগুলো ইয়াজুজ মাজুজ বা দাজ্জালের প্রতিচ্ছবি। ইয়াজুজ মাজুজ বা দাজ্জালের গুণ সম্পন্ন কিছু নমুনা'।
এরা অবশ্যই কুরআন হাদীসে বর্ণিত এক্সেক্টলী সেই ইয়াজুজ মাজুজ নয়।
ব্যাক্তিগতভাবে আমার ধারনা বা বলতে পারেন এখন প্রায় বিশ্বাস - ১০০০ এ ৯৯৯ জন দোযখীর হাদীসটিতে শুধুমাত্র দেয়ালের ঐ পাড়ের মানুষগুলো হবে তা নয়। বরং এ পাড়ের মানুষগুলো যারা ওদের কারেক্টারস্টিক্স অনুযায়ী চলবে ফ্যাতনা ও ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবে, জুলুম ও নির্যাতন চালাবে - তারা ঐ ৯৯৯ জনের মধ্যে হবে। আল্লাহ ভাল জানেন।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন