ছাত্র রাজনীতির গৌরবগাথাঃ চট্টগ্রামে টেন্ডারবাজিতে যুবলীগ কর্মী ও শিশু খুন
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ২৪ জুন, ২০১৩, ১১:১৫:৫৪ রাত
মারহাবা মারহাবা, বড়ই সুখবর (!) এই না হলে কি আর সরকারী লীগ?
খবরে প্রকাশ - চট্টগ্রাম নগরীর কোতয়ালী থানার সিআরবি এলাকায় সাত রাস্তার মোড়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশুসহ দু’জন নিহত হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের একজন যুবলীগ কর্মী সাজু (২৮) অপরজন রিকশা চালক মোঃ সিদ্দিকের ৮ বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে মো.আরমান হোসেন। সকালে সাত রাস্তার মোড়ে নানার বাসায় যাবার পথে আরমান গোলাগুলির মাঝে পড়ে ঘটনা স্থলেই মারা যায়।
তথ্য সূত্রঃ http://www.nowbdnews.com/2013/06/24/196711.htm
আ হা হা, সোনার ছেলেরা চালিয়ে যাও; সময় তো শেষ হয়ে আসছে। আর সুযোগ পাবে না, যা করার এখনই সময়। জোরে-সোরে চালাও তাতে খুন গুম রাহাজানি লুটপাট ধর্ষণ যা কিছু শখ হয় স-ব করে নাও। এরা আবার স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি বলে দাবিও করে(!) ধীক্ এদের রাজনীতি আর তথাকথিত দেশ প্রেমের! এমন অবাধ স্বাধীন ভাবে লুটপাট আর রাহাজানি করার জন্যই তো স্বাধীনতা (?)
ক্ষমতাশীন দল থেকে সব সময়ই বলা হয়; “সন্ত্রাসীর কোন দল নেই। এরা যে দলেরই হোক (যদি আমাদের দলেরও হয়) কারো ছাড় নেই, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচার হবেই”। কিন্তু দুঃখের বিষয়; সেই প্রচলিত আইনটা যে কোথায় কতটুকু সচল কি অচল – দেশের মানুষ আজো তা বুঝে উঠতে পারছে না! নিজ দলের ওসব জল্লাদদের আর কোন ভাবে বাঁচাতে না পারলে শেষমেষ বলবে; দুই পাগলে ঝগড়া করে গোলাগুলি করেছিল। ব্যস সব ফায়সালা - পাগলের বিচার করার ক্ষমতা তো আর আদালতের নেই ???
এরা আবার স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির দল। স্বাধীনতার একমাত্র এজেন্টদের উত্তরসুরী। এরা ‘দাদা’ ‘নানা’ হলেও চীর সবুজ ছাত্র ও যুবক। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের মত অসাংবিধানিক কথা এদের বিরুদ্ধে বলা যাবে না। ওরা যে কোন যুগে ছাত্র ছিল সে ইতিহাস তাদের নিজেরও মনে নেই, অথচ এরা ছাত্র সংগঠনের নেতা!
সুশীল নামধারী গনতন্ত্রের ধ্বজাধারী কিছু গুণী মানুষকে প্রায়ই টকশো-তে ছাত্র আন্দোলনের বড় বড় অর্জনের কথা বলতে শুনি। কাজেই ছাত্র রাজনীতি থাকতেই হবে। বেশ তো, সত্যিকারের ছাত্ররা না হয় ছাত্র কল্যানের জন্য রাজনীতি করুক কিন্তু লেজুর বৃত্তি কেন? গুণীজনরা কিন্তু একবারও সে কথা বলেন না! আর কখনোই বলেন না যে, একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্ররাই ছাত্র সংগঠনের নেতা হতে বা নির্বাচন করতে পারবে এবং যথারীতি কোন দলীয় অনুকম্পা ও সমর্থণ ছাড়াই প্রতি বছর নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। যে ছাত্র এক বছরও ছাত্রত্বে সময় ক্ষেপন করেছে, অকৃতকার্য হয়েছে বা কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্ক আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যাবে সে সংগঠনের নেতা হওয়ার যোগ্যতা হারাবে - অর্থাৎ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হবে। তাদের কর্মকান্ড একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতর ছাত্র স্বার্থ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডেই সীমবদ্ধ থাকবে।
এছাড়া কোন দলেরই ‘যুব সংগঠন’ বলে কোন সংগঠনই থাকতে পারবে না। কেননা ছাত্রত্ব শেষ হলেই একজন যুবক কোন না কোন পেশায় জড়িত হয়। হোক না সে হকার; তাদেরও তো একটা সংগঠন আছে? আর যেহেতু সেটা কোন না কোন রাজনৈতিক দলেরই অঙ্গ সংগঠন সে সূত্রে কারো রাজনীতি করার ক্ষমতা বা গুণ থাকলে সে তার পেশা সংশ্লিষ্ট সংগঠন করুক। তাহলে অনেকাংশেই দলগোলোর লেজুর বৃত্তির অবসানও হয়।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে কোন গনতন্ত্র তো নেইই বরং সব দলই ‘লেজ’ পছন্দ করে। বলদ বা হনুমানের মত লেজ না থাকলে আর দল কিসের? তবে মুশকিল হল - মাঝে মাঝে 'লেজে গোবরে' হয়ে যায়! তাদের হয়ে মাস্তানী ভন্ডামী করার জন্য ভাড়াটিয়া খুনী পোষতে হয় আর তা না হলে নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা কমে যায়। কাজেই লেজুরবৃত্তিতে যে যত পটু অর্থাৎ খুন গুম রাহাজানি টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি মাস্তানী মারামারী লুটপাট ধর্ষণ ইত্যাদিতে সিদ্ধহস্ত - সে ই ওই সব রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠনের যোগ্য নেতা। তাতে সে যে কোন বয়েস বা পেশারই হোক না কেন। সে হোক ছিঁচকে চোর বা কষাই, বয়েসগুণে হোক না সে ‘নানা’ কিংবা ‘দাদা’ তাতে কিছু আসে যায় না, সে ই ‘ছাত্র’ বা ‘যুব’ সংগঠনের যোগ্য নেতা (!)
সব সময়ই দেখা যায়; ভন্ড রাজনীতিকরা ইনিয়ে বিনিয়ে কেমন গনতন্ত্রের কথা বলেন? কিন্তু এদের নিজ দলের কোথাও এতটুকু গনতন্ত্রের ছিঁটে-ফোটা তো নেইই ওদিকে আবার ছাত্র রাজনীতিও চালু আছে। অথচ ছাত্র সংসদের নির্বাচন নেই সেই কত বছর – সে ইতিহাস আর কারো মনে নেই। ওদের যত ভাবনা জনগনের জন্য - তাদের নিজের জন্য মোটেও না। ছাত্র রাজনীতির নামে যে সব 'নানা' 'দাদা' পান্ডারা রাজনীতি করছে তারা তখন কী করবে - যদি ওরা সত্যি ছাত্রদের কথা ভেবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিয়ে বসে? সে কথা ভেবে সব দলই ছাত্র সংসদ নির্বাচনও বন্ধ করে রেখেছে! অথচ সত্যিকারের ছাত্র সংগঠন থাকলে আর তা যদি কোন দলের লেজ বা অনুসারী না হয় তা হলে ছাত্রত্বের নামে এতসব কলঙ্কও সংগঠিত হবার সুযোগ থাকে না।
ছাত্রদের যত গৌরবোজ্জল অর্জন ও মহিমাই থাকুক না কেন বর্তমান ধারার ছাত্র রাজনীতি সে সবকে শুধু ম্লানই করে দেয়নি কলঙ্কিতও করছে - সে কথা কেউ ভেবে দেখেছেন কি? রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে যত দ্রুত ভেবে একটা কল্যানকর কার্যকরী ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা প্রণয়ন করবেন ও কার্যকর করবেন – ছাত্র তথা দেশ ও জাতির জন্য তত মঙ্গলজনক হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন