দু'ই ছাত্রশিবির নেতার করুণ আর্তনাদের কথা মিডিয়া প্রকাশ করেনি...
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৩:০৫:৪৯ দুপুর
ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের পরিদশর্ক বিকাশ চন্দ্রের উপর পুলিশি নির্যাতনের খবর মিডিয়ায় তোলপাড় উঠেছে। পুলিশের রক্ষকের পরিবর্তে ভক্ষকের এহেন ভূমিকাকে সবাই নিন্দাবাদ করছে,কারণ মিডিয়া সরবতা। কিন্তু কোন মিডিয়া সম্প্রতি রাজধানীর আব্দুল্লাহ পুর থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জয়পুরহাটের দু'ই ছাত্রশিবির নেতার করুণ আর্তনাদের কথা মিডিয়া প্রকাশ করেনি। যাদের গ্রেপ্তারের পর জয়পুর হাটে নিয়ে হাটুতে (পেছন থেকে) গুলি করে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে বগুড়া মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুলিবিদ্ধ পা রক্ষার জন্য ক্ষত স্থানে তাৎক্ষণিক অপারেশন করা খুব জরুরী ছিল। কিন্তু কর্তব্যরত ডাক্তার (সাচিপ নেতা) চিকিৎসা করতে অপারগতা পদর্শন করেন, যা আওয়ামী অমানবিকতার আরেক নিষ্টুর উদাহারণ। যা কোন সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারেনা।
পরবর্তী তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। সর্বশেষ জেলা সভাপতি আবুজর গিফারী ও সেক্রেটারী ওমর আলী ভাইয়ের জীবন রক্ষার্থে ১টি করে পা কেটে ফেলতে হয়। কত নিষ্টুরতা! কত নির্মমতা! কই এসব খবরতো কোন মিডিয়া ছাপানি! এ ভাবে আরো কত নাম না জানা আবুজার গিফারী বা ওমর আলীর আর্তনাদ গুমরে মরছে, তার ইয়াত্বা কেবা রাখে? এক চোখা না হয়ে প্রতিটি নিষ্টুরতার বিরুদ্ধে সচেতন মহল সমান ভাবে প্রতিবাদ না করলে অসুররা দুর্বলদের উপর অন্যায় ভাবে চেপে বসবে, পদপিষ্ট করে আহলাদে আরো নব নৃশংসতায় মেতে উঠবে। সবার মনে রাখা প্রয়োজন হয়তবা আজ অন্য কারো উপর কোন জালিম/রাষ্ট্র/ক্ষমতান্ধ অন্যায় ভাবে আচরণ করছে। কাল হতে পারে আপনি বা আমিও এমন নৃশংসতার শিকার।
পুলিশ নৃশংস বর্বরতা চালিয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দিল নিরাপরাধ তিন শিবির নেতাকে। তারা হলেন ছাত্রশিবির জয়পুরহাট জেলা সভাপতি আবু যর গিফরী, সেক্রেটারী ওমর আলী ও আল আমিন। গত ৮ই ডিসেম্বর ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আসার পথে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে বাস থেকে নামিয়ে ছাত্রশিবির জয়পুরহাট জেলা সভাপতি আবু যর গিফরী ও সেক্রেটারী ওমর আলী আটক করে আইন শৃংখলা বাহিনী। কিন্তু বেআইনি ভাবে তাদের গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার কলে পুলিশ। এ নিয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ছাত্রশিবির দেশব্যাপি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। ৯ দিন পর ১৭ ডিসেম্বর ছাত্রশিবিরের নিখোঁজ দুই নেতাকে আটক করার কথা জানায় র্যাব। র্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, শিবিরের এই ২ নেতাসহ আরো একজনকে ভোররাতে জয়পুরহাটের পাচবিবি উপজেলার কদমতলী আটক করা হয়। এর সাথে কথিত অস্ত্র উদ্ধারের নাটকও সাজায় র্যাব। ওই দিন দুই ছাত্রনেতাকেই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির করা হয়। তারা তখন তারা স্বাভাবিকভাবে হেটে সকলের সামনে আসেন। র্যাব তাদের আটকের কথা জানানোর পরই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ তাদের পাওয়ার পরই কথিত বন্ধুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদের পায়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের প্রথমে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাদের অবস্থা অবনতি হওয়ায় বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এরপর তাদের ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু তাদের পায়ের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পরে তাদের তিনজনেরই গুলিবিদ্ধ পা হাটু থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। ভাইদের নির্বাক, নিষ্পাপ চেহারার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি আটকাতে পারিনি। কিছু করতে না পারার বেদনায় নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে।
হে অল্লাহ! আমার ভাইগুলোকে তাদের নাম অনুযায়ী কবুল করে নিও।
(সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
১৮৫৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন