দিঘি ভাঙ্গন রোধ না হওয়ার অন্তরালে (Golpo)
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ১৮ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:৫৫:২৩ দুপুর
মির্জা সাহেবের ভীষণ মন খারাপ। ভারাক্রান্ত মন নিযে় মনের বিরুদ্ধে জোর করেই এলেন দিঘির পারে। সেই দুঘন্টা ধরে বসে আছেন। অবশ্য দিঘির পারে তার আসার কথা ছিলো না। কেননা এখানে এলেই তার কেনো জানি খারাপ লাগে। নিজেকে চোর চোর মনে হয়।
আবু সাহেবের আসার কথা ছিলো আজ বিকেলে। তিনি এখানো এসে পৌছান নি। এই ফাকে ভাবনার জগতে চলে গেলেন মির্জা সাহেব। ভাবতে থাকলেন এই এলাকার কথা গতো দুটি সেশন তিনি এখানের মেম্বার হযে়ছেন। প্রত্যেকবারই তিনি অনেক প্রতিশ্রুতি দিযে়ছেন। রক্ষা করতে পারেন নি কোনটাও। এ যেমন দিঘিটার উত্তর পাড়টা ভীষন ভাঙ্গছে। কিছুই করতে পারেন নি তিনি চাইলে কিছু একটা করতে পারতেন কিন্তু মন থেকে চান নি বলে পারেননি।
কি ব্যাপার মির্জা ভাই আপনী এ অসমযে় দিঘির পাডে়? অনেকটা জোরে প্রশ্ন করলেন, মনা সাহেব। তিনি আবার বড় ব্যবসায়ী। এলাকার অনেককেই সেলাই মেশিন দিযে়ছেন। জামা কাপড় সেলাই করে অনেকেই জীবন ধারন করে। পুরা দেশে তার ব্যাপক নাম ঢাক।
- মির্জা ভাই আপানী? এখানে?
- আবু ভাই আসার কথা। এক সাথে সময় কাটানোর কথা।
- আমাকেও তো আসতে বলেছিলো। তাই আসা আর কি।
- তো কেমন যাচ্ছে দিন কাল? প্রশ্ন করলেন মির্জা সাহেব।
- আর বলবেন না ভাই। আপনাদের এলাকায় এলাম। জনগনের জন্য এই করলাম, সেই করলাম তারা তো আমাকে বুঝল না। তাই ভাবছি কিভাবে এসব লোকের উচিত শিক্ষা দেয়া যায়। দিলাম ছোট খাটো একটা কারখানা খুলে। যা ব্যাটারা এবার করে খা। পড়ালেখা করে আর কি হবে।
- আমার কথা বইলেন না ভাই। ছিলাম ব্যবসায়ী। এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। কিছ¦ুই করতে হয়নি। আসলে টাকা থাকলে সবই সম্ভব।
এই মাত্র এলেন জাদরেল রবি ভাই। এসেই দুজনের পিঠে থাপ্পড় মারলেন কানিকটা জোরে। খেই ছুটলেন, আমি তো ভাবছি আপনারা আসবেন না। তো কেমন আছেন?
- আমাদের আর থাকা। ক্ষমতায় তো আমরাও নেই, আপনীও নেই। হাক ছাড়লেন মির্জা ভাই।
- রবি সাহেবের দীর্ঘশ্বাস। এভাবে বলেন কেন মির্জা ভাই। কেমনে যে একবার মেম্বার হলাম নিজেও জানি না। নিজের জন্য কিছু না করতেই সময়টা আবার শেষও হযে় গেলো।
এতোক্ষন নিশ্চুপ থাকার পর কথা বললেন মনা সাহেব। আপনী চাইলে তো এই এলাকা স্বর্নে পরিনত করতে পারতেন রবি ভাই:
- তা অবশ্য পারতাম না কিন্তু কিছু একটা তো অন্তত করতে পারতাম। কিন্তু করিনি ইচ্ছে করেই। জনগনকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে তো।
- মনা সাহেবের সপ্রভিত নাক গলানো। আমি আর আপনী তো একই নৌকার মাঝি।
হন্ত দন্ত হযে় ছুটে এলেন সিপি সাহেব। এসেই দারুন বিনীত ভাষায় ক্ষমা চাইলেন লেট করার কারনে। কারো কোন তোয়াক্কা না করেই ক্রমাগত বলতে থাকলেন নিজে নিজেই: আজীবন এলাকার বিচার আচারে সাহায্য করেছি। ছেলে মেযে়কে বাহিরে রেখেছি। দুই দুইবার এ এলাকার মেম্বার হযে়ছি। ঠিক যতো টা পারতাম ততোটা সেবা আমি জনগনকে দিই নি। আর কখনো দিবোও না।
: সিপি সাহেবের কথা থামিযে় দিলেন আবু সাহেব। তার আসার কথা ছিলো সবার আগে। কিন্তু এলেন সবার পরে। চুপিসারে এসেই এতোক্ষন শুনছিলেন সিপি সাহেবের কথা মালা।
সবার অনুমতি নিযে় বলতে থাকলেন আবু সাহেব: আপনারা সবাই কথা রেখেছেন। আমাকে এ এলাকার মেম্বার করার সুযোগ করে দিযে়ছেন সে জন্য আপনাদেও ধন্যবাদ। আমার সামান্য কয় টাকা খরচ হলেও আমি কিছু মনে করিনি। আমার তো কেবল নাম দরকার। জাস্ট নাম।
বিরতিহীন বলে যাচ্ছেন আবু সাহেব। চোখে মুখে বিশ্ব জযে়র হাসি।
আমিও আপনাদের কে দেয়া কথা রাখবো বলে সপথ করলাম। ইতিপূর্বে আপনার যে গুলো কাজ করেন নি সেগুলো আমিও করবোনা। বোধাই জনগনকে উচিত শিক্ষা দেবো।
আপনারা যেমম দিঘি ভাঙ্গা রোধের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেন নি। আমিও সেই পথে হাটবো। এই বিশাল এলাকাটা দিঘির জলে গেলে যাক। আমাদের তো কোন ক্ষতি হবেনা। শুধু দিঘি না কোন উন্নয়নই আমি করবোনা।
অবশেষে এলো সেই কাংক্ষিত লগন। এরই মাঝে উপস্থিত হলেন একে চৌধুরী। সবাই মিলে একতাবদ্ধ হযে় হাতে হাত রেখে স্বপথ নিলেন। সবাই পাঠ করলেন সেই মহা পাঠ। যাতে লেখা ছিলো:
আমরা সকলে মিলে একত্রে সপথ করছি যে আমাদের মধ্যে যে বা যাহারা যদি কখনো এ এলাকার মেম্বার নির্বাচিত হই তবে এলাকার উন্নয়নের জন্য বিন্দুমাত্রও কাজ করবনা। দিঘি ভাঙ্গা প্রতিরোধ নিযে় তো নয়ই। এমনকি এ এলাকার স্বার্থে আমরা কখনোই একই মঞ্চে আসবনা। ক্ষমতা আমাদের হাতেই কুক্ষিগত থাকবে। কেবলই মুলা ঝুলিযে় যাবো পাবলিক কে।
(এটি একটি অলস মস্তিষ্কের বিচলস প্রসব। কান্ড জ্ঞানহীন কাহিনীর ধারাবাহিকতা মাত্র। কেউ কোন কিছু খুজতে গেলে নিজ দাযি়ত্বে খুজবেন। কারো সাথে এ কাহিনী মিলে গেলে তা অনপ্রভিত কাকতাল মাত্র। এই গল্পের কোন অংশ বা সংলাপের জন্য কেহ দায়ী নয়। লেখক বা প্রকাশক তো নয়ই।
বিষয়: বিবিধ
১০২০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তার মানে?? আপনি কি মনে করেন পাঠক-ই শুধু দায়ী? ]
বাক্যটি এভাবে সংশোধন করে দিন-
তা না হলে কিন্তু "ক্রসফায়ার" হতে পারে!
যেনে লাভ কি!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন