সমকামীতা !!!

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৯ জুন, ২০১৫, ০১:৫৭:৪৯ দুপুর



সেদিন কাজের বিরতিতে পত্রিকা পড়ছিলাম। হঠাৎ চোখ আটকে গেল প্রথম পৃষ্ঠার এক পাশের খবরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত দেশটির সকল স্থানের জন্যে সমকামিতাকে বৈধ করেছে। আমি চিন্তা করছিলাম এ বিষয়টাকে কারা এত প্রমোট করে ? এর ভেতর কি স্বার্থ লুকিয়ে আছে ? নিশ্চয়ই এর পেছনে এক সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে। কারন যারা সমকামী নয়,এমনকি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থনও করেনা,তাদের মধ্যে ক্ষমতাশালী একটি অংশ এটায় উৎসাহ দিচ্ছে। ব্লগে সমকামিতা নিয়ে প্রচুর লেখা দেখলাম। বেশীরভাগই প্রচন্ড ক্ষোভের বহি:প্রকাশ।

মূলত: সমকামীতাকে একটি নীতি আওতায় এনে তার বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। সেটা হল এই যে-একজন মানুষের প্রতি আরেকজন মানুষের আকর্ষণ স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। সে আকর্ষণটি স্বাভাবিকভাবে বিপরীতলিঙ্গের প্রতি বেশী(সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে),কিন্তু এই আকর্ষন সমলিঙ্গের প্রতিও থাকতে পারে, এটিও প্রাকৃতিক। তাই মানুষের এই স্বাভাবিক প্রকৃতিকে বাধা প্রদান করা মানে হল প্রাকৃতিক আইনের বিরোধীতা করা। আর প্রাকৃতিক অধিকার হল জন্মগত অধিকার। এর বিরোধীতা কেউ করতে পারেনা। তাছাড়া এটি ব্যক্তি স্বাধীনতার আওতায় পড়ে। একজন ব্যক্তি তার যৌন সঙ্গী হিসেবে স্বাধীনভাবে যাকে খুশি তাকে বেছে নিতে পারে।

কিন্তু এখানে যে বিষয়টি উচ্চারিত হচ্ছেনা তা হল-কোনো বিষয় প্রাকৃতিক হলেই সেটি সঠিক বা সুস্থ্যতা হবে এর কি মানে ? প্রাকৃতিকভাবে বহু মানুষ অন্ধ হয়ে জন্মায় বা শারিরীক, মানুষিক প্রতিবন্দী হয়, তাহলে কি সেসব মানুষও সুস্থ্য ও সঠিক অবস্থায় রয়েছে ? তাদের চিকিৎস্যা প্রয়োজন নেই ?

মানব সভ্যতার সূচনাতেই নারী-পুরুষের মিলনে মানুষের জন্মধারা সূচীত হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। নারী পুরুষের মেলামেশায় কেউ কেউ নিয়ন্ত্রিত হয়েছে,কেউ হয়নি। কেউ যৌনাচারে নতুনত্ব খোজার চেষ্টা করেছে,আর সেখান থেকেই অতিরিক্ততা অথবা বিকৃত যৌনাচার বা সমকামিতার জন্ম। কিন্তু এটি অনেকের ক্ষেত্রে আরোপিত অভ্যাস নয় বরং জন্মগতভাবে তারা সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষন বোধ করে। যারা স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে সমকামী করে গড়ে তুলেছে তাদের মানুষিক বিকারগ্রস্থতা রয়েছে। আর যারা প্রাকৃতিকভাবে এটি প্রাপ্ত হয়েছে,তাদের ক্ষেত্রে এটি হল একটি রোগ। এই উভয় অবস্থারই(আরোপিত এবং প্রাকৃতিক) বৈজ্ঞানিক চিকিৎস্যা রয়েছে। এটি একটি মানুষিক রোগ। সমকামিতা মানুষের ক্ষেত্রে মনুষ্যত্ব অথবা পশূর ক্ষেত্রে পশুত্যের মধ্যেও পড়েনা। এটি মানুষ অথবা পশু কারো ক্ষেত্রেই স্বাভাবিকতার মধ্যে পড়েনা। এটি প্রাকৃতিক হলে,সেটি হবে একটি প্রাকৃতিক রোগ। রোগ-ব্যাধীর অধিকার মানুষের জন্মগত অধিকার হতে পারেনা। এই রোগকে বাড়তে দেওয়াই মূলত: প্রাকৃতিক আইনের বিরোধীতা করা।

সমকামিতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা , সমালোচনা শুরু হয়েছে মার্কিন আদালতে এর বৈধতা দেয়ার পর। আপাতত বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে এর কি ব্যবস্থা আছে একটু দেখা যাক। অন্যসব সেকুলার রাষ্ট্রের মত মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ এইদেশেও নর-নারীর স্বেচ্ছাকৃত শারিরীক সম্পর্ক একেবারেই বৈধ। এমনকি স্বামীর অনুমতি নিয়ে অপর পুরুষের সাথে স্ত্রীর শারিরীক সম্পর্ক করার মত ঘৃণ্য কাজও বৈধ। তবে অনুমতি না নিলে হালকা শাস্তির বিধান আছে ।

বাংলাদেশ দন্ড বিধির ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাকৃতভাবে কোন পুরুষ,নারী বা জন্তুর সহিত,প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সহবাস করে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ডে–যার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত হতে পারে-দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবে।

লক্ষ্য করুন: এই ধারায় অস্বাভাবিক অপরাধের শাস্তির বিধান করা হয়েছে এবং তা অবশ্য প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধভাবে হতে হবে। যদিও প্রাকৃতিক নিয়ম বিরুদ্ধ যৌন সহবাসের সর্বজনীন স্বীকৃত সংজ্ঞা এখনো নির্ণীত হয়নি। বুঝাই যাচ্ছে এই আইন কেবলমাত্র মুসলিম জনগোষ্ঠীকে শান্ত রাখার প্রয়াস মাত্র। আদতে এর অধীনে শাস্তির বিধান হবার খুব বেশি নজির নেই। নিয়ম বিরুদ্ধ আচরন কি তার সংজ্ঞাই তো ঠিকমত নেই।

অন্যদিকে মানবতাবাদী নামক গোষ্ঠী তো রীতিমত এই আইন সংবিধান পরিপন্থী বলে এটাকে পরিবর্তনে উঠে পড়ে লেগেছে। যদিও তাদের দাবী মোটেই মিথ্যা নয়। সংবিধানের ব্যক্তি স্বাধীনতা নামক অনুচ্ছেদ মেনে চলতে গেলে তো আসলেই ব্যক্তির এসব কর্মকাণ্ডে বাঁধা দেয়ার অধিকার সেকুলার সরকারের নেই। এর মাঝে একজন তো বলেই দিয়েছে যে, ‘’বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা আমাদের পবিত্র মহান সংবিধানের প্রস্তাবনা,৭(২),৭(খ),১৯(১),ও ২৭ অনুচ্ছেদে বর্নিত সমঅধিকার,সমসুযোগ,আইনের শাসন,মৌলিক মানবাধিকার, ন্যাচারাল জাস্টিস ও আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন এবং উক্ত ধারা সংবিধানের ৭(২),৭(খ) ও ২৬(১)(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধায় আপনা আপনি বাতিল বলে গন্য।‘’

আর যে শাস্তির বিধান আছে তাতে সমকামীদের জেলে আটকে রাখার বিধান আছে। মজার ব্যাপার হল দীর্ঘদিন স্ত্রী সঙ্গ থেকে দূরে থাকা জেলের কয়েদী যাদের নৈতিক অবস্থান নড়বড়ে বা যারা ইসলামিক আদর্শের সংস্পর্শে নাই তারা কখনও বিকল্প উপায় খুঁজতে গিয়ে সমকামী হয়ে যায়। তার উপর সমকামীদের জেলে ঢুকিয়ে দেয়া মানে পুরাই পীরিতের বৃন্দাবনে কৃষ্ণ রাধা ......দু:খিত কৃষ্ণ আর নারায়ণ !

মূল কথা হল আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এই মানব জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই আল্লাহর বিধানের দিকেই ফিরতে হবে। নইলে বহু চিন্তা ভাবনার ফলে সৃষ্ট এসব তথাকথিত উর্বর আইনের ফাদে পড়ে মর্মান্তিক জীবন কাটাতে হবে।

উল্লেখ্য: হাজার তিনেক বছর আগে হযরত লুত(আঃ)এর কাওম ই প্রথম সমকামিতা শুরু করে এবং গজবে পতিত হয়ে ধ্বংস হয়। ইহুদী অথবা খ্রিষ্ট ধর্ম এটাকে কোনোভাবেই সমর্থন করেনা,আর ইসলাম তো সর্মন করেই না বরং এটার জন্যে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখেছে। আমার জানা মতে ওল্ড টেস্টামেন্টেও এটার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। পৃথিবীর অন্য কোনো ধর্ম পাওয়া যায় না,যে ধর্ম সমকামীতাকে সমর্থন করে। কিন্তু বাংলাদেশী নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দীন সমকামীতাকে সমর্থন করতে গিয়ে কেন মুসলিমদের পবিত্র ক্কাবাকে আক্রমন করল,তা ঠিক বুঝলাম না। কারো মাথায় কৃমি থাকলেও তো এরকম করার কথা নয় !!

বিষয়: বিবিধ

১২৬২ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

327923
২৯ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:৩০
জ্ঞানের কথা লিখেছেন :
আসিফের কাজ দেখলাম। আর আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইলাম। এহেন লোকদের কোনদিন ভালোহবেনা এটা জানাকথা। তবে আফসোস এরা কখন বুঝবে না। তবে খুশির একটা দিকহচ্ছে এরা জাহান্নামে গেলেইতো আমাদের লাভ।

ফেরআউন মরার সময় ডুবে ডুবে জল খাওয়া অবস্থায় তওবা করেছিলো।তবে তার তওবা কবুল হয় নি। এই আসিফের তো তওবারো চান্সহবে বলে মনে হয় না।


২৯ জুন ২০১৫ রাত ১০:১৯
270282
দ্য স্লেভ লিখেছেন : তবুও চাই তারা তওবা করুক। নইলে ধ্বংস হোক..
327941
২৯ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৬
আকবার১ লিখেছেন : একমত।এটি একটি মানুষিক রোগ। এর একমাএ ঔষধ দাওয়া। লাঠি পিটা করা।
২৯ জুন ২০১৫ রাত ১০:১৭
270281
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আবার জিগস.....Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
327969
২৯ জুন ২০১৫ রাত ১০:৪২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার যুক্তিপুর্ন পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মার্কিন আদালত সমকামিতা কে বৈধ করেনি। সেটা আগে থেকেই ছিল। সমকামিদের দম্পতি হিসেবে বসবাস করার অনুমতি দিয়েছে। সেটাও কিন্তু সমকামিতা স্বাভাবিক এই যুক্তিতে নয় বরং নাগরিক অধিকার এর যুক্তিতে।
৩০ জুন ২০১৫ সকাল ০৭:১০
270302
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান। সঠিক বলেছেন। ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে মূল্যান করে এটা করেছে। তবে কনজারভেটিভদের চাপ ছিল এতকাল। চার্চ এগুলোর বিরোধীতা করত। কিন্তু এখন এসবকে তারা কম মূল্যায়ন করছে।
328013
৩০ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:২৩
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : একটা কুকুর তার যৌন চাহিদা মিটানোর জন্য সমলিঙ্গের কাছে না গিয়ে তার বিপরীত লিঙ্গের কাছে যায়। তাহলে সমকামীরা কুত্তার চেয়েও নিকৃষ্ট জানোয়ার নয় কি?
আপনার লিখাটা খুব ভাল লাগলো
০৪ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:০৬
270736
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ ভাই,অঅপনি একেবারে সঠিক বলেছেন।
328017
৩০ জুন ২০১৫ দুপুর ০১:৫৪
আহমদ মুসা লিখেছেন : ক্বাউমে লুতকে ধ্বংশ করেছিল তাদের পাপাচারের চুড়ান্ত শিখড়ে পৌচার কারণে। হয়তো আধুনিক সভ্যতার আড়ালে যে অসভ্যতাকে পৃথিবীর বুকে গালেব করার আয়োজন চলছে তার ভয়াবহ পরিণতির জন্য এসব উপসর্গগুলো অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে।
০১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:১৬
270413
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি সঠিক বলেছেন।
328069
৩০ জুন ২০১৫ রাত ০৯:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : লুত (আঃ) এর কওমের কথা ক্বুরআন শরীফে পড়েছি । সেটার লেটেস্ট ভার্সন এখন আমেরিকাতে ।

ভাই সাহেব , সাবধানে থাইকেন । আল্লাহ আপনার হেফাজত করুন - আমিন ।
০১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:১৬
270414
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আমার স্টেটে এদের সংখ্যা কম Happy আর দোয়া করেন
328167
০১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:২০
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন :
সমকামিতা এখন দেশে দেশে
আছে বাংলাদেশে।
০৪ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:০৬
270737
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি সামনে গজবও আছে...Happy
328308
০২ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৫:৩২
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : মানুষ পশুর চেয়ে নিচে নামতে পারে, এটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
০৪ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:০৬
270738
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি পশুও বোঝে কোনটা সঠিক
328372
০৩ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:০৫
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : কিয়ামত অতি নিকটবর্তী!
ধন্যবাদ।
০৪ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:০৭
270739
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এগুলো কিয়ামতের আলামত। আরও অনেক কিছু দেখতে হবে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File