*****ব্লগিং করে আমি সফল, আপনি ?*****
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:১২:৩২ বিকাল
ব্লগের সাথে কোন পরিচয় ছিলোনা সেদিন। ফেবুর কল্যাণে প্রায়ই দেখি আধা শিক্ষিত মানুষ নামে আমার এক প্রিয় ভাই ও দায়িত্বশীল তার ব্যাক্তিগত আইডি থেকে কিছু লিংক পাঠাচ্ছেন। লিংকে ঢুকে বুঝতে পারি ঐ ভাই উল্লেখিত নিকে সোনারবাংলা ব্লগে লিখছেন এবং তার লেখাগুলো আমাকে শেয়ার করছেন পড়ার জন্য। আমি পড়তে থাকি,মজা লাগে এবং মন্তব্যগুলো বেশি মজা পাই। কত সুন্দর করে পক্ষে বিপক্ষে মন্তব্য করা হচ্ছে এবং জবাবও দেয়া হচ্ছে, সবই যুক্তিনির্ভর। ব্লগে লেখার প্রতি আমার সখ জাগে। ফোন দেই উনাকে। উনি শিখিয়ে দেন কিভাবে কি করতে হবে। সেই থেকে শুরু।
আমার লেখার শুরুতেই সোনা ব্লগ সরকার বাহাদুরের খড়গহস্তের শিকার হয়। আমারও লেখা বন্ধ হয়ে যায়।মনে খুব কষ্ট পাই। অল্পদিনের ভেতরে ঐ ভাইই আবার ফোন করে বিডিটুডের কথা জানান। শুনামাত্র দেরী করিনি বিডিতে একাউন্ট খুলতে। আল্লাহর রহমতে তারপর থেকে অদ্যাবদি ব্লগে টুকিটাকি লিখে যাচ্ছি। মাঝখানে জীবনের উপর বয়ে যাওয়া একটি ঝড়ের কারনে সাড়ে সাত মাস ব্লগে আসতে পারিনি। এই আসতে না পারায় বুকে ব্যাথা অনুভুত হয়েছে ; তবে ব্লগের লেখাগুলো খাতায় লিখে রেখেছি যা ব্লগে আসতে না পারার মলম হিসাবে কাজে লেগেছে।
এই ব্লগে লিখে আমি সফল হয়েছি। আসলে সফলতাটা হচ্ছে একটা আপেক্ষিক বিষয়। সফলতার মানদন্ড একেক জনের কাছে একেক রকম। আমি যেটাকে সফলতার জন্য বিবেচ্য মনে করছি অপরের কাছে সেটা বিবেচ্য না ও হতে পারে। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মনমানসিকতার উপর নির্ভর করছে তার সফলতা। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে যে বিষয়গুলোকে আমার সফলতার মানদন্ড হিসাবে বিবেচনা করেছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। হয়তো অনেকেরই বিবেচ্য হতে পারে বিষয়গুলো ।
শিক্ষা অর্জন
আমি ব্লগিং করিনা শুধু নিজে লিখার জন্য। আমি অন্যের লিখা থেকে শিখতে চাই। আমি শিখছি অবিরত। বলবেন, বই পড়ে শিখা যায়। হা, বই পড়ে শিখা যায়।তবে এখানে পক্ষে বিপক্ষে যে মন্তব্য আসে তা থেকে আসল সত্যটা বের করা সহজ হয়। তাছাড়া সমসাময়িক বিষয়গুলো জানতে পারি। আমাদের পরিবারে, সমাজে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো কতজনে নানান আংগিকে এখানে তুলে ধরেন, সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনা করেন, তা পড়ে আমি শিখি। লিখতে হয় কিভাবে তা অন্যের লেখা পড়ে শিখছি, নতুন নতুন শব্দ শিখছি, বাংলা বানানরীতি শিখছি। কুরআন হাদীস পড়ছি ও আমল করার চেষ্টা করছি।
চিন্তার শেয়ার
এই ব্লগে লিখে আমি আমার চিন্তা ভাবনাকে অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আমার চিন্তার ভুলগুলো যখন অন্যেরা তুলে ধরে তখন আমি শুধরানোর চেষ্টা করি। আর সঠিক চিন্তা থেকে অন্যে উপকৃত হচ্ছে বলেও বিশ্বাস করি।
লেখালেখি ও আনন্দ
ব্লগে না লিখলে আমি কালেভদ্রেও লিখতাম কি না কে জানে । অনেকেই ব্লগে লিখে তার লেখার মান উন্নত করেছেন,করছেন। আমি নিজেও এটা উপলব্দি করি যে, আমার শুরুর দিকের লেখা ও বর্তমানের লেখার মধ্যে বিস্তর প্রার্থক্য। আমি যদি না লিখতাম তাহলে সম্ভব হতনা এই উন্নতির। এখানে পাওয়া যায় কুরআন হাদীস, গল্প,কবিতা, রম্য, রাজনীতিক লেখা। আমিও লিখছি,পড়ছি আর আনন্দ উপভোগ করছি।
ভাই-বোন বন্ধু পেয়েছি
ব্লগে লিখে আমি কিছু ভাই,বোন ও বন্ধুকে পেয়েছি যাদেরকে আমি কোনদিন চিনতামনা,জানতামনা।তাদের সাথে কোনদিন দেখা হবে তারও নিশ্চয়তা নেই। তারা আমার এমন অকৃত্রিম ভাই,বোন ও বন্ধু হয়েছেন যে আজ আমার সমস্যায় তারা কাঁদেন, আমার সফলতায় তারা হাসেন। এমনও ভাই বোনদের পেয়েছি যারা আমার জন্য একটি সন্তান চেয়ে জন্য আল্লাহর ঘরের গিলাফে ধরে কান্নাকাটি করেছেন। অনেকেই তাদের প্রতি দোয়াতে আমাদেরকে স্মরণ করেছেন। আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করে আমাকে সন্তানের মত নেয়ামত দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি
সর্বোপরি আমরা ( অনেকেই) লিখি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। সদা সর্বদা চেষ্টা করি আমার লেখা যেন হয় মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, ইসলামের জন্য।
এই বিষয়গুলো সামনে রাখলে আমি দেখি ব্লগিং করে সফল হয়েছি,হচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও হব ইনশা আল্লাহ। আপনি ???
বিষয়: বিবিধ
১৭৯২ বার পঠিত, ৯২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি কি লেখা শিখছেন না ?
আপনার লেখা কি বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখবেনা ?
সমাজ বিনির্মানে আপনার লেখা কি ভুমিকা রাখবেনা ?
আল্লাহর সন্তুষ্টি আপনার কি কাম্য নয় ?
যদি এগুলোর উত্তর হা হয় তবে আপনি সফল।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে
দারুন অনুভূতি, সত্যিই সফল হওয়া বা না হওয়া সবই ব্যক্তিগত বিবেচনার বিষয়।
অর্থাৎ আমি ব্লগে আসার প্রথম সময়গুলোতে কেমন লিখতে জানতাম, বর্তমান কেমন জানি। পরমত সহ্য করার মানসিকতা আগের তুলনায় কেমন হয়েছে। ব্যক্তি মানসিকতা থেকে সমগ্র জাতি নিয়ে ভাবনার এক বিশেষ সুযোগ এই ব্লগেই মাধ্যমেই অর্জন হয়েছে। নিজে সম্মান পেতে হলে অন্যকে সম্মান দিতে হয়, একথা আগে জানা থাকলেও ব্লগে এসে এনেকটা পরিস্কার হয়েছে।
যারা সফল বলতে নিজের পোষ্ট স্টিকি হওয়া বুঝে, তাদের আত্মা অতৃপ্তিতে ভূগতেই থাকবে বলে আমার মনে হয়।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর লেখা,
যেন আমারই মনের কথা!!
তার সাথে জ্ঞানীগুণীজন অনেক সুন্দর মন্তব্য করে এটাকে আরো সমৃদ্ধ করেছেন!!
জাযাকুমুল্লাহ..
ব্লগিং হোক জ্ঞানচর্চা, সুন্দর চিন্তা ও মননের প্রশিক্ষণ ও লালনক্ষেত্র!!
ধন্যবাদ।
আর যা লিখেছেন ওগুলো আমারই কথা তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
1. চিন্তার শেয়ার।
2. লেখালেখি ও আনন্দ।
3. ভাই-বোন বন্ধু পেয়েছি।
4. আল্লাহর সন্তুষ্টি।
সহমত। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সহমতের জন্য।
ব্লগিংয়ে হারাবার কিছুই নেই, ব্লগিং মানুষকে মানুষ হতে শেখায়, ব্লগিং জগতে কিছু নর্দমার কিটও তৈরি করে যারা ধর্ম বিশ্বাস ও সুপথে চলা মানুষকে অকারণে আক্রমণ করে।
ব্লগিং বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় পাবলিক মিড়িয়া হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে, ব্লগারেরা মানুষের মনে আগামীর ভাবনা তৈরি করে দিতে পারছে এটাই বড় কথা.....!
বাংলা ব্লগ গুলোর মধ্যে সুস্থ সাহিত্য চর্চাকারি ব্লগ হিসেবে টুডে ব্লগ সাধারণ পাঠকের মন জয় করে নিচ্ছে সময়ের পরিক্রমায়।
ব্লগারদের মাঝে তৈরি হচ্ছে সুস্থ চিন্তা প্রকাশের সেতুবন্ধন! প্রতিটি ব্লগার তার অবস্থান থেকে সফল, হয়তো দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা থাকতে পারে।
ব্যর্থ মনে করলে পরীক্ষা করে দেখা উত্তম। আগের দিনে একটি লেখা প্রকাশ করার জন্য পত্রিকা সম্পাদক সমিপে বিনয়ী পত্র লিখতে হত! ! তাও প্রকাশিত হবেকি হবেনা এ ধন্ধের মাঝে নিজেকে রেখে।
ভাগ্যক্রমে একটি লেখা প্রকাশিত হলেও তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেতোনা...... ব্লগিংএ ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে যা একজন লেখকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা মনে করি প্রতিটি ব্লগারই সফল নিজের প্রকাশ ভঙ্গির উপর। শুভ ব্লগিং......
ভালো লাগলো পড়ে! আসলে ব্লগের শুরু থেকে যে কয় জন ভাই বোন আছেন আপনি তাদের একজন! আপনার পদচারণা আরো সফল হোক!
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন!
ধন্যবাদ
আমারও সেইম দশা!
মন্তব্য হচ্ছে ব্লগের প্রাণ! লেখকের লেখার মান নির্নয়ে মন্তব্যের ভূমিকা অপরিসীম।
আশা করি বিবেচনা করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
তবে ব্লগ হতে তেমনই কযেকজন বন্ধুর দীর্ঘ অনুপস্থিতি আমার মনোবেদনার কারণও বটে। তাঁরা কেন ব্লগে আসছেন না, সেটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা, হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা যেখানেই থাকেন ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন। এবং আবারো যেন আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। আমীন
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার সুন্দর পোষ্টের জন্য জাজাকাল্লাহু খায়রান।
ধন্যবাদ।
আপনার হিসাবের খাতাটা আমার হিসাবের বাইরে নয়। অনুভূতি সৃষ্টিকারি লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ নিন
ধন্যবাদ আপনাকে অন্যকে প্রেরণা দেবার মত পোষ্ট দিয়ে উতসাহিত করার জন্য।
সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ!
ব্লগে নিজের যে মতামত দেওয়া হয় তার ভিন্নমতও যে আছে সেটা মানুষ ভালভাবে বুঝতে শেখে । যুক্তি পাল্টা যুক্তি (গঠনমূলক) যেসব পোস্টে আসে সেই পোস্ট হয়ে ওঠে প্রানবন্ত । এরকম পোস্টে কমেন্ট করতে ও প্রতিমন্তব্য পেতে মজাই লাগে ।
ব্লগে কিছু কিছু ব্লগার আছে তারা পোস্ট করেন ভালই কিন্তু বেমক্কা কমেন্ট পেলে হতোদম্য হয়ে ওঠেন । কিছু কিছু ব্লগার লেখকে রুপান্তরিত হবার ফলে উনারা প্রতি মন্তব্য করতে খুব একটা তাগাদা বোধ করেন না ।
প্যারিস ভাইকে জাজাক আল্লাহু খাইরান সুন্দর পোস্টের জন্য
আপনার মন্তব্যগুলো আমি বেশ উপভোগ করি।
যারা ব্লগে লিখে লেখক হয়েছেন নতুনদের একটা মন্তব্য করলে একজন নতুন ব্লগার লেখার প্রতি কতটা উৎসাহিত হয় সেটা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
----------------------------
ব্লগের লিখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী যারা উৎসাহিত করেন, তারা হলেন সহযোগী ব্লগাররা। একটা লেখাতে পক্ষে হোক আর বিপক্ষে হোক, মন্তব্য যখন করা হয়-তখন লেখক পুলকিত হোন, উৎসাহিত হোন। আর লেখাটা যখন স্টিকি হয়, তখন লেখকের লেখার আগ্রহ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়।
মীর কাশেম আলীকে লিখা আমার একটি লিখা “এক বোতল পানির জন্য জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলী কি না করলেন” যখন উনার ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর অনলাইন মিডিয়াতে বিভিন্ন স্থানে কপির পর কপি হতে থাকলো এবং নিমিশে তার পাঠক হাজার হাজার ছড়িয়ে গেলো, তখন কি যে ভাল লেগেছিল, তা বুঝানোর ভাষা আধা শিক্ষিত মানুষের নাই।
উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করছি।
ভালো আছেন তো ভাইজান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন