জঙ্গি!!! ছাত্র লীগ না ছাত্র শিবির?
লিখেছেন লিখেছেন ইকুইকবাল ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:২০:৪০ রাত
সময় তো দাড়িয়ে থাকে না- সে গড়িয়ে চলে মাড়িয়ে যায় এবং কালের আবর্তে হারিয়ে যায়। এই হারানোর ইতিহাস লেখার জন্য কেউ কাউকে নির্দেশ দেয়নি। সে আপনা থেকেই কলম তুলে নিয়ে লিখতে থাকে চলার কথা, বলার কথা, সুখ-দুঃখ, কান্না-হাসি, জুলুম-নির্যাত আর দন্ডমুন্ড-চন্ডনীতির কথা। আমার সেই কথা বলার আগে আব্রাহাম লিঙ্কনের অমোঘ-অমর বাণীটি শুনাতে চাই, ‘কিছু লোককে চিরদিন বোকা বানিয়ে রাখা যায়, সবাইকে কিছুদিনের জন্য বোকা বানানো যায়, কিন্তু সবাইকে চিরদিনের জন্য বোকা বানানো যায় না’। শুনে রাখুন সরকারের যশস্বী, ডাকসাইটে, দোর্দন্ড-প্রতাপশালী মন্ত্রী-এমপিরা! বাতাবরণ-বাগাড়ম্বর আর আস্ফালন করে বুক চিতিয়ে কেল্লা ফতে ভেবে লাভ নেই। বর্তমান সরকারের ভাগ্যে জুটা বিশ্ব দুর্নীতিবাজ, অবাধ লুটপাট, ব্যর্থতা, অপচয়, অদক্ষতা, অপশাসন, জিঘাংসা, প্রতিহিংসা, জালিয়াতি, দস্যুতা, নাম পরিবর্তনের খেলা, পঞ্চম সংশোধনী বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিল, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, বিডিয়ার বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা, একদিনে ৭০ জনকে গণহত্যা, হেফাজতের উপর ক্রাকডাউন, সাতক্ষিরার উপর সরকারি তান্ডব, একদিনে ১৫১ নেতাকর্মীকে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ও অধিকাংশ নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পড়িয়ে আদালতে হাজির, শাহবাগ নাটন, ওলামায়ে ছু নাটক, তৌফিক এলাহী ও জয়ের ৫ মিলিয়ন ঘুষ কেলেঙ্কারীর এবং হালে-সাবেকী তকমা জাতি কখনোই ভুলবেনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এমনিতেই নাটক আর চটক ছাড়া কথা বলতে পারেন না। তাই তিনি ইনডিয়ার অর্থায়নে, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী আয়োজিত, স্বৈরাচার-খুনি হাসিনার নিজ পরিচালনায়, ছাত্রলীগের প্রযোজনায়, আওয়ামী ঘরানার ব্লগার ইমরানের পরিবেষণায়, নাস্তিকদের উপস্থিতিতে, বাম-রাম-কমিউনিস্টদের যোগসাজসে শাহবাগের নাস্তিক জাগরণের নাটক মঞ্চস্থ করেছেন।
জঙ্গি বিষয় নিয়েই আমার যত কথা। কোনো পুরস্কারের লোভে নয়, কোনো তিরস্কারে লাঞ্ছিত হয়ে নয়, নিরেট বিকেকের তাড়নায় অর্থাৎ মানবিক গুণে জণতার ভ্রান্ত ধারণাকে ভাঙ্গা ও সংবিৎ ফিরানোর অভিপ্রায়ে। জঙ্গি সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির না ছাত্র লীগ? দুই সংগঠনের চেলা-চামুন্ডাদের কার্যক্রম, সংবিধান, কর্মপদ্ধতি ও কর্মকৌশল দেখেই বোঝা যায় কে সাধারণ ছাত্রদের প্রিয় সঙ্গী আর অপ্রিয় জঙ্গি। বিষয়টির ব্যাখ্যা শুরু করতে চাই। শুরুটি ঠিক বুকের ভেতর দুরু দুরু শব্দে সঙ্গীতের ধ্বনির মতো বেজে উঠে। প্রথমে আসি ছাত্র শিবিরের কর্মকান্ডের ফিরিস্তি নিয়ে। তার আগে শিবিরের উপর হলুদ সাংবাদিকতা, সুশিল সমাজের বক্রুক্তি, মানবাধিকার সংগঠনের অমানবিকতা, বিচার বিভাগের অবিচার, সরকারের দন্ডমুন্ড, পুলিশের খরগহস্ত, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের তান্ডবসহ আওয়ামী লীগের কুশিলব-তল্পীবাহকদের হীন রাজনীতির অপব্যাখ্যার শিকার। যেমন- নাস্তিক ব্লগার রাজীব হায়দার ওরফে থাবা বাবাকে কে বা কারা তার বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে। সাথে সাথে খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী মিডিয়া দল পাকিয়ে আওয়াজ করেছে এই অপকর্মটি জামাত-শিবির করেছে। সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ৫৫ বছর বয়সী ছোট ভাই মিরাজকে খুন করেছে কে বা কারা রেল লাইনের পাশে ফেলে রেখে গেছে। সাথে সাথে দোষারোপ করা হল জামাত-শিবিরকে। নারায়নগঞ্জের ১৫ বছরের মেধাবী কিশোর ত্বকিকে কে বা কারা খুন করেছে, সাথে সথে দায়ী করা হয়েছে জামাত-শিবিরকে। হিন্দুদের মন্দির ও শহীদ মিনার ভাংচুর করেছে, তো সেই অপকর্মটি করেছে জামাত-শিবির। কক্সবাজারের রামু এবং উখিয়ার বৌদ্ধ মন্দির ভেঙ্গেছে, তো সেই অপকর্মটি করেছে জামাত-শিবির। শাহবাগে বোমা ফাটিয়েছে কে বা কারা, দোষারোপ করা হল জামাত-শিবিরকে। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে কোনো লাভ নেই। জনগণকে আর বোকা বানানো যাবে না। যাবে কি? শিবিরের প্রতি অপবাদ, অপমান, যন্ত্র-ষড়যন্ত্র, তথ্য সন্ত্রাস ও মিডিয়া সন্ত্রাসের দ্বারা অভিনব কায়দায় জঙ্গি সাজানো হচ্ছে। এই জঙ্গির টাইটেলই হচ্ছে সরকারের জন্য একটি চাড়া স্বরূপ। এই চাড়া দ্বারা ঠ্যাক-ঠুকা দিয়ে হেফাজতে ইসলামসহ বিরোধী দলের আন্দোলনে নড়বড়ে সরকারকে বেশিদিন খাড়া রাখা যাবে না। যাবে কি? তবে কথা হল অবিমৃষ্যকারিত্ব, স্বার্থন্বেষী ও মিথ্যার চাঁদর দিয়ে সত্যকে সাময়িকভাবে হয়তো ঢেকে রাখা যাবে, কিন্তু চিরদিনের জন্য যাবেনা। এদের টার্গেট শুধু জামাত-শিবিরই যে নয় আইনমন্ত্রীর ভাষায়ই তা স্পষ্ট বুঝা যায়। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন- ‘কওমি মাদরাসাগুলো এখন জঙ্গিদের প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কওমি মাদরাসাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তার লাভ করেছে। এসব কওমি মাদরাসায় যে শিক্ষা দেয়া হয়, তা কূপমন্ডুকতার সৃষ্টি করেছে’। এতো কিছুর পরও শিবির অস্ত্র হাতে নিয়েছে এমন কোনো রেকর্ড নেই। বরং তারা মার খাচ্ছে আর নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। সন্ত্রাস করে ছাত্রলীগ আর নিষিদ্ধের দাবি উঠে ছাত্র শিবিরের। এ কোন রাজ্যে বাস করছি। আব্দুল হাই শিকদারের ভাষায় আমরা ডাকাতের রাজ্যে বাস করছি।
মনে করে দেখুন স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশে ঘুষ-দুর্নীতি, কম্বল লুট, ব্যাংক লুট, চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, মোরগচুরি, হাঁসচুরি, গরুচুরি, মুজিব হত্যা, জিয়া হত্যা, লগি বৈঠার নিষ্ঠুরতা, কথামত কাজ না করলে ডিসি, এসপি ও ওসিদেরকে নাজেহাল করা, ধর্মকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা, বিশ্বজিতের নির্মম হত্যাকান্ড এবং শিক্ষাঙ্গনে হত্যার সূত্রকারী সেভেন মার্ডারসহ যত অপকর্ম হয়েছে, তার একটির সাথেও জামাত-শিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে না। সুতরাং দিনের আলোর মত পরিষ্কার সরাকার ও সরকারের চেলা-চামুন্ডা ছাত্রলীগই দেশের ভেতর পাপাচার এবং অন্যায়, জুলুম ও অবিচারের সয়লাব সৃষ্টি করে দেশকে কলঙ্কিত করে ফেলেছে অথচ উল্টো বলছে জাতিকে পাপমুক্ত ও কলঙ্কমুক্ত করার জন্য জামাত-শিবিরকে নির্মূল করতে হবে। একেই বলে চোরের মার বড় গলা। জামাত-শিবিরের বড় অপরাধ তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে শ্রেষ্ঠ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় বিনিয়োগ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা। জনগণের সেবায় হাজার হাজার মক্তব, মাদরাসা, মসজিদ, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও কারিগরী শিক্ষা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করে সুনাগরিক তৈরি এবং লক্ষ লক্ষ লোকের কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে দেয়া। তাদের আরো বড় অপরাধ উন্নতমানের অগণিত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবাকে সহজলভ্য করে দেয়া।
জঙ্গি রূপে শিবির:- পুলিশ-ছাত্রলীগের গুলি, বোমাসহ সশস্ত্র হামলার বিপরীতে আত্মরক্ষার জন্য ছাত্রশিবির ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করলে সেটাকে উস্কানিদাতা মিডিয়াগুলোতে বলা হয় জঙ্গি আক্রমণ। শিবির রাত জেগে শববেদারী, আত্ম সংশোধনের জন্য আত্ম-সমালোচনাসহ যে কোনো মিটিং-সভা করলেই নাশকতার অযুহাতে মিডিয়ার কল্যাণে আমারা জানতে পাই জঙ্গি তৎপড়তায় শিবির ধরা পরছে। এ যুগের সংবাদপত্রের এক আদর্শ পিতা মাহমুদুর রহমানের ভাষায়, ‘টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রে প্রচারণার মাত্রজ্ঞান দর্শণে দেশবাসীর ভিরমি লাগার জোগার হয়েছে’।
কথায় আছে হামানদিস্তা বা বুলডোজার দিয়ে অনেক কিছুই গুঁড়িয়ে দেয়া যায়, কিন্তু মানুষের বিশ্বাসকে টলানো যায় না। ড. মাহবুব উল্লাহর ভাষায় , ‘জামাত-শিবির সম্পর্কে তার প্রতিপক্ষরা নিরবচ্ছিন্নভাবে কথা বলেছে। তৎসত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রজন্মের একটি অংশ কেন জামাতের আদর্শের দিকে ধাবিত হলো সেই প্রশ্নও ওঠা অত্যন্ত স্বাভাবিক। এই আত্মজিজ্ঞাসা না থাকলে শুধু কতিপয় নেতাকে মৃত্যুদন্ড দিলে সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ মানুষকে হত্যা করা যায়, কিন্তু তার আদর্শকে হত্যা করা যায় না। মিশরের সৈয়দ কতুবসহ অনেক মুসলীম ব্রাদারহুড নেতাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! আজ তারাই মিসরের রাষ্ট্রক্ষমতায়’। এতো কিছুর পরও জামাত-শিবিরের পক্ষে আশার বাণী শুনে এলাম ২৫ কিলোমিটার পথ হেটে ৫০ লক্ষ তৌহিদি জনতার লংমার্চ মহা সমাবেশে। তা হল মহা গুরুত্বপূর্ণ কথা জামাত-শিবির, ইসলামী আন্দোলন-সংগঠন ও জাতির জন্য। খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান দিপ্ত কণ্ঠে বলেন, ‘এ সমাবেশে জামাত-শিবির থাকলে নাস্তিক-মুরতাদদের বিদায় করতে ২৪ ঘন্টাও সময় লাগতনা’। অপর এক জবরদস্ত আলেম বলেন, ‘আমাদের রক্ত তীতুমিরের, সৈয়দ আবুল আলা মওদূদীর...’। বিশিষ্ট কলামিস্ট সিরাজুর রহমানের ভাষায়, ‘জামাতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করতে যাবেন না, ছাত্র শিবিরকে বেশি ঘাটবেনন না, তাদের প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দেবেন না, তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। নির্যাতন দিয়ে রাজনীতিকে নিস্তব্ধ করে দেয়া যায় না’। ছাত্রশিবিরের এক কর্মীর ভাষায়, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা বুলেটকে পুষ্পমাল্যের মতো বুকে ধারণ করে এবং জীবনমৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য মনে করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ও ইসলামী আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ছেন। এই কাফেলা ও সংগ্রাম কেউ রুখতে পারবেনা।
এদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশরা ‘আইনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়’ মুক্তি পেয়ে যাবে। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতিকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হবে। ২২ জন ফাঁসির আসামি ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামীলীগ কর্মীদের রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা পাবে। শিবির দেখামাত্র গুলির হুকুম করা হবে! ছাত্রলীগ, যুবলীগের হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অথবা জামাত-শিবির ঠেঙ্গার দায়িত্ব দিবে। আরও কত কী! সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যে রাহুর করালগ্রাস জামাত-শিবিরসহ সমগ্র জাতিকে গ্রাস করতে চলেছে, সেটি হল ভয়। গুপ্তহত্যার ভয়, গুম হওয়ার ভয়, পুলিশের নির্যাতনের ভয়, গুলির ভয়, পিপার স্প্রের ভয়, লাঠি চার্জের ভয়, মরিচের গুড়ার ভয়, গরম পানির ভয়, টিয়ার গ্যাসের ভয়, স্প্রিং লাঠির ভয়, আদালতে সুবিচার না পাওয়ার ভয়, চাকুরি হারানোর ভয়, উটকো মামলায় জড়ানোর ভয়, বাড়ি-ঘর জালানোর ভয়, সমাজ-রাষ্ট্রে বিভেদের বিষবাষ্প সৃষ্টির ভয়, ষড়যন্ত্রের ভয়, ক্ষমতাসীনদের রোষাণলের ভয়। এক কথায় আমাদের বর্তমান সরকারের আমলের জীবন হল ভয়ময়। বলতে হয় সব ঘটনার একটা পরিসমাপ্তি আছে। আজ যারা অসহায়, একদিন তারাই বিচারক হয়ে এসব অন্যায়ের বিচার করবে।
এত কিছুর পরও ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মত বিদ্বজ্জন ব্যক্তি জঙ্গি ভাষায় উস্কানি দিয়ে বলেন, শিবিরকে প্রতিহত করতে আমাদের রাস্তায় লাঠিসোটা নিয়ে নামতে হবে। ড. প্রাণ গোপাল বলেন, এদেশের মাটিতে জামাত-শিবির ক্যানসার। একে প্রতিহত করতে না পারলে কেউ নিরাপদ থাকবেনা। তাই এদের প্রতিহত করতে হবে। তাদের উস্কানির জবাব পাঠকের বিবেকের উপর রাখলাম।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বক্তৃতা, সভা-বিবৃতি, মানববন্ধন, শোক সভা, আনন্দ সভা, র্যালি, শোভাযাত্রা, মিছিল-মিটিং, সিম্পোজিয়াম-সেমিনার, ওয়ার্কশপ, রোডমার্চ, লংমার্চ, পথসভা, পদযাত্রা, বিক্ষোভ মিছিল, গণমিছিল, গণঅনশন, গণসংযোগ, হরতাল, ঘেরাও, অবরোধ, অবস্থান ধর্মঘট, অবস্থান কর্মসূচী, গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান ইত্যাদি ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার। সে অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা গণতন্তবিরোধী। প্রশ্ন হলো, গণতান্ত্রিক কর্মসূচী পালনের মৌলিক অধিকার বাধাগ্রস্ত করার অধিকার কি সরকারের আছে? পুলিশের আছে? সরকার সমর্থক ছাত্র নেতাদের আছে? যদি সেই অধিকার তাদের না থাকে, তাহলে শিবিরসহ বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোল দমনে তাদের এই অগণতান্ত্রিক আচরণ কেন? কেনো! গণগেফতার, গণহামলা, গণমামলা, গণরিমা-, গণহত্যা???
আওয়ামী গণতন্ত্র মানে ‘Unparalleled democracy` (?) ; যেখানে হাসিনাতন্ত্র ছাড়া আর কোনো তন্ত্র নেই, আর কারও রাজনৈতিক অধিকার নেই, মিছিল করা-হারাম, মিটিং করা-জঙ্গি তৎপরতা, লেখালেখি করা-উসকানি দেয়া, মতপ্রকাশ করা-রাষ্ট্রদ্রোহ, মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করা জনগনকে উত্তেজিত করা, রাস্তায় বের হওয়া-অবৈধ কাজ, হরতাল ডাকা-অনধিকার চর্চা/অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করা, মানববন্ধন করা-পুলিশের কাজে বাধা/পথচারীদের হাঁটার পথ রুদ্ধ করা, রোডমার্চ করা-জ্বালানি তেল পোড়ার কারণে জাতীয় সম্পদের অপচয় ঘটা, গণমিছিল করা-রাস্তায় জানজটের সৃষ্টি করা, মোটকথা সব তৎপরতাই রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী, শিবির জঙ্গিদের রক্ষার চেষ্টা করা। জামাত নেতা মকবুল আহমেদ বলেছিলেন, একি গণতন্ত্র (!), আমারা কাঁদতেও পারব না। আসলে বিমূঢ় জনগণের সংবিৎ ফিরে পেতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে এখন মার্জিত রুচিবোধ ও বাংলা ভাষার সঠিক প্রয়োগের বড়ই অভাব। আমাদের রাজনীতিতে নেই কারও প্রতি কোনোরকম শ্রদ্ধাবোধ। রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি নারায়ণ (অতিথি) ডেকে এনে সম্মাননা দিতে পারলেও, দেশিয় গুণীজনদের অসভ্য ও অরুচিকর মন্তব্যের শিকার হতে হয় এখানে। বর্তমান বাংলাদেশের সিপাহসালার মাওলানা আহমদ শফী, ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম, আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও দেশবরেণ্য আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রবীণ যশস্বী কলামিস্ট এবিএম মূসা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবীদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, আমারদেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, দার্শনিক, কবি, বুদ্ধিজীবী ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, পরিবেশবিদ ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সম্পাদক নূরুল কবির, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ড. পিয়াস করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুলের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অপমানিত হতে হয় এই দেশে। আর শিবিরের বিষয়টি তো নস্যি!
জঙ্গি রূপে ছাত্রলীগ:- সরকারের সোনার ছেলে অর্থাৎ ছাত্রলীগ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রদের অকল্যাণ সাধিত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাদের জঙ্গিপনার জন্য আজ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা দিশেহারা ও বীতশ্রদ্ধ। সাহিত্য, সংস্কৃতি, নাটক, সিনেমা, মিডিয়াসহ আধুনিক যুগের সব প্রযুক্তি ওদের দখলে। রাষ্ট্রশক্তিও এদের করায়ত্ত হয়েছে। সব বোধের এরা টুটি চেপে ধরেছে। একটা বড় ধরনের সাংস্কৃকিত জাগরণ ছাড়া এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাদের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, গুম-খুন, গুপ্তহত্যা, বোমাবাজী, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, জবরদখল, ভর্তিবাণিজ্য, ইভটিজিং, নারী-শিশু-সাংবাদিক নির্যাতন, ধর্ষণ, রাহাজানি, শ্লিলতাহানী, শিক্ষকের উপর হামলা, এসিড নিক্ষেপ, সন্ত্রাসী, অগ্নিকান্ড, ব্যাংক-বীমা অফিস ভাংচুর, শহীদ মিনার-মন্দির ভাংচুরসহ মারাত্মক দেশি-বিদেশি ধারাল অস্ত্র মজুদ-প্রয়োগের তকমা লেগে আছে তাদের ললাটে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আসলেই তারা বাংলাদেশের প্রকৃত জঙ্গি। সংবাদপত্রের তথ্য মতে, ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় পহেলা বৈশাখ উৎসবে ছাত্রলীগের হাতে ২০ তরুণী ও সাংবাদিক লাঞ্চিত, ৬ মে পুলিশ ঢাকা কলেজের আবাসিক হলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার, ১২ মে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও এক ছাত্রীর মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাই, ২৭ মে মোমেনশাহীর গৌরীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম কর্তৃক ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষীত, ২৮ জুন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সংবাদ ছাপায় নোয়াখালীতে যুগান্তর প্রতিনিধির ওপর ছাত্র লীগের পৈশাচিক হামলা, ৯ জুলাই সিলেটের ১২০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ, ৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামীপন্থী এক প্রকৌশলীকে প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগে বাধ্য করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে তারা ভিসিকে ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ, ১৫ নভেম্বর কোমরে পিস্তল নিয়ে পরীক্ষা দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো ছাত্রলীগ ক্যাডার জুবায়ের ইবনে তানিম, ১৯ নভেম্বর শিক্ষাঙ্গনে অন্যতম আলোচিত ঘটনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকশ শিক্ষকের আন্দোলন কর্মসূচিতে অতর্কিত বর্বর হামলায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষক আহত, ১৫ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টেন্ডারবাজি নিয়ে ছাত্র লীগের হামলায় স্থানীয় ১২ জন আহত, একই দিনে খুলনায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন কলেজে ছাত্রলীগ ভাংচুর চালালে কলেজের অধ্যক্ষসহ ৫ শিক্ষক আহত হন। হালে হেফাজতে ইসলামের মিছিল থেকে ধরে নিয়ে ঝিনাইদহের মসজিদের ইমাম মোঃ আবদুস সালামকে পুলিশের উপস্থিতিতে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের দুলাল গ্রুপের হামলায় সিলেট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জগত জোতি তালুকদার খুনের শিকার হন। সংবাদ পত্রের পাতা থেকে, ঢাবির বঙ্গবন্ধু হলে অনৈতিক কাজ : ছাত্রলীগ নেতা পাকরাও- নয়াদিগন্ত। ছাত্রলীগ নেতার বালু-বাণিজ্যে গৌরনদীতে ৫০ পুকুর উধাও- প্রথমআলো। নানা অপরাধে জড়িয়ে বেসামাল ছাত্রলীগ দায় সরকারের- সংবাদ। নিয়ন্ত্রনহীন সিলেট ছাত্রলীগ- যায়যায়দিন। পিরোজপুরে স্কুলছাত্রীর ধর্ষণ দৃশ্যের সিডি ব্যবসা তিন ভিডিও ব্যবসায়ী গ্রেফতার : ঘটনার নায়ক ছাত্রলীগ নেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে- ইনকিলাব।
ছাত্রলীগ ও সরকারের এ জাতিয় কসরত গোটা জাতিকে শঙ্কিত করে তুলেছে এ জন্য যে, এর ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হয়তো ভয়াবহ জটিলতার আবর্তে নিমজ্জিত হতে পারে; সেখান থেকে সহজ পথে বে হওয়ার সুযোগ নাও থাকতে পারে। প্রথম আলোর ভাষায় বেপরোয়া-বেসামাল-লাগামহীন ছাত্রলীগ। মতিউর রহমানের মন্তব্য প্রতিবেদন, ‘প্রধানমন্ত্রী, ছাত্রলীগকে সামলান’। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মন্তব্য এখনই ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরুন। ২০০৯ সালের কথাগুলো এখনও ছাত্রলীগের জন্য প্রযোজ্য।
ছাত্রলীগের হেন কর্মকান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং বলেন, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে ছাত্রলীগের নাম দেখলে খুব কষ্ট পাই। গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান বলেন, ছাত্রলীগের টেন্ডার ও চাঁদাবাজির খবরে মাথানত হয়ে যায়। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের অপকর্ম আমাদের মাধা নিচু করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকেরা শহীদ মিনার ভাঙচুর করছে সরকার দায়িত্ব পালন করতে না পারায় লজ্জায় আমাদের মাথা নত হয়ে যাচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু চার বছরের সাফল্যের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পদ্মা এবং ছাত্রলীগ সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
সত্যিকার অর্থে প্রশ্ন জাগে আমরা আছি কোথায়? যাচ্ছি কোথায়? দা-কিরিচ, চাইনিজ কুড়াল, রড, হকিস্টিক, ধারাল অস্ত্র নিয়ে হুন্ডা মিছিল যেভাবে শহর বা গ্রামে শুরু হয়েছে প্রশ্ন জাগে কার বিরুদ্ধে এই মহড়া? কাকে খুন করার মহড়া দেশব্যাপী? চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে দেশের সাধারণ মানুষ।
গবেষণা করে উদঘাটন করতে হবে, কেন ছাত্রলীগ নরপশুতে পরিণত হয়েছে। এতে হাসিনার ভূমিকা কী? সুশিল সমাজের ভূমিকা কী? আওয়ামী মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা কী? কলেজ-ভার্সিটির ছাত্রলীগের গডফাদার শিক্ষক-ভিসিদের ভূমিকা কী? তাদের কর্মকৌশল-কর্মপদ্ধতী ও সংবিধানের ভূমিকা কী? সমাজের ভূমিকা কী? জীবনযাপনের ভূমিকা কী? কিংবা প্রযুক্তির ভূমিকা কী? ব্যক্তি, পারিবারিক ও দলীয় সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধে উঠে সবাইকে দূরদর্শিতার পরিচয় ও সিদ্ধান্ত দিতে হবে ছাত্রলীগের ব্যাপারে।
ডিজিটাল এই যুগে বিশ্ববাসীকে অন্ধকারে রাখার যুযোগ নেই। সরকারের মাথামোটারা যখন দম্ভ করে বলে, জামাত-শিবির যেখানে পাবে, সেখানে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু রংপুর ও কুষ্টিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গায়ে এসিড ছুড়লে-পেটালে, বরিশাল বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. ননী গোপাল দাসকে পিটিয়ে গলাধাক্কা দিয়ে বের করলে, হালে নারায়নগঞ্জের মেধাবী ছাত্র ত্বকী, সাবেকি ঢাবির আবু বকরসহ বুয়েট-রাবিতে, বগুরায়-চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতা খুন হলে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি উঠেনি। অর্থাৎ ছাত্রলীগ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। আর এর পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে সরকার ও সরকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ মহল থেকে। কমিউনিস্ট শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলামা নাহিদ পাঠ্য বইতে ‘জবাই’ ও ‘বলি’কে একাকার করে ফেলেছেন। অত্যন্ত ভদ্র এই শিক্ষামন্ত্রীর আমলে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি প্রাণ, রক্ত ঝরেছিল। হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি, হলদখলসহ সন্ত্রাসী তান্ডব সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ক্লাশ সবচেয়ে বেশিদিন বন্ধ থেকেছে এবং অনির্বাচিত ভিসির রাজত্ব করে গেছেন। সবই ছাত্রলীগের ক্যারিশমা। সাধারণ এক ছাত্রের ধারণা শিবিরই সত্যের পথে আছে। আর সত্যকে বিলুপ্ত করতে গেলে তারা নিজেরাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অতএব ছাত্রলীগ আসলে জঙ্গি না শিবির জঙ্গি সেই বিচার-বিশ্লেষণ ও বিবেচনার ভার দেশপ্রেমিক নাগরিকদের আদালতে রাখলাম।
আমার ফেইসবুক: Eque Iqbal
বিষয়: বিবিধ
১৮২১ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর ছাত্রলীগ মানে চোর, ড়াকাত, গুন্ড়া,
তবে আপনার লেখাটা আমার কাছে মন্দ লাগেনি।
কমেন্টস শুধু করতেই থাকমু
দেখেছি 'দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার' বিশ্বজিতের হত্যা। অপরাধীরা কেউই নাকি ছাত্রলীগের কেউ না।
দেখেছি ত্বকীর খুন। সব দোষ শিবিরের। শাহবাগের নারায়নগঞ্জ শাখার মূল উদ্যোক্তা রাফির ছেলে হওয়াতেই নাকি তাকে খুন করা হয়েছে। এরপর? শামীম উসমানের দিকে আঙ্গুল উঠার পর সবাই চুপ।
দেখেছি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ভাই মেরাজ খুন। এইখানেও আঙ্গুল প্রথমে জামাত শিবিরের দিকে। তারপর? ছিনতাই কারীর হাতে খুন হওয়ার বিষয় জানার পরে, এইখানেও সবাই চুপ।
এইরকম আলোচিত প্রায় সব হত্যাকাণ্ডের দোষ প্রথমে জামাত শিবিরের ঘাড়ে। আসল ঘটনা বের হলে সবাই চুপ। মানবাধিকার ব্যবসায়ীরা বসে থাকেন জামাত শিবিরের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য।
এইসব থেকেই প্রমাণিত হয়, আসলে কারা কি করছে। কারো কারো কাছে নাকি তথ্য আছে। কি তথ্য আছে, এই তথ্যের উৎস কি, তা নিয়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।
এসকল সঙ্গত প্রশ্নের জবাব চেতনা ব্যাবসায়ীরা কখনোই দিবেনা। এড়িয়ে যাবে
এভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বাস্তবতাকে বিশ্লেষন করার জন্যে অনেক মোবারকবাদ। বিভ্রান্ত প্রজন্মের একটি অংশ আপনার লেখা পড়ে আশাকরি তাদের ভুল শুধরে নিতে পারবে
আমিও কিছু সাম্প্রতিক রেফারেনস্ তুলে ধরলাম। সবার উপরে ছাত্রলীগ সত্য--
শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে প্রাণনাশের হুমকি জাবি ছাত্রলীগ নেতার
http://www.atntimes.com/archives/69277
সহকারী রেজিস্ট্রারকে পেটাল ছাত্রলীগ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/29892/সহকারী_রেজিস্ট্রারকে_পেটাল_ছাত্রলীগ
শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ
http://www.sheershanews.com/2014/01/21/22948
পুলিশের সামনেই “নিজ পিতাকে খুন” করলেন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক !
http://www.sorejominbarta.com/national/article/5533
বিচারপতি ও সংখ্যালঘুদের বাড়িতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা, আটক ৪
http://bangla.irib.ir/2010-04-21-08-29-09/item/56586-বিচারপতি-ও-সংখ্যালঘুদের-বাড়িতে-আওয়ামী-লীগ-কর্মীদের-হামলা,-আটক-৪
রায়পুরে টেন্ডারবাক্স ছিনিয়ে নিয়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ
http://www.jugantor.com/current-news/2014/01/21/60989
ছাত্রলীগ কর্মীর রগ কেটেছে ছাত্রলীগ !
http://www.a1news24.com/details.php?a1news=MTcxNzM=
লালমোহনে ছাত্রলীগের হাতে পৌরসভার কর্মকর্তারা লাঞ্ছিত
http://www.jugantor.com/bangla-face/2013/09/23/30039
দাগনভূঞায় সংখ্যালঘু কিশোরী অপহরণ ॥ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার
http://www.fenirshomoy.com/index.php?option=com_content&view=article&id=4388:দাগনভূঞায়-সংখ্যালঘু-কিশোরী-অপহরণ-॥-ছাত্রলীগ-কর্মী-গ্রেফতার&catid=8:2012-12-11-06-14-22&Itemid=102#.UuHTUNLxLIU
অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ কর্মী আটক
http://www.newsevent24.com/2013/12/03/অস্ত্রসহ-ছাত্রলীগ-কর্মী/
ঢাবিতে ভর্তিচ্ছু দুই শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ
http://www.sheershanews.com/2014/01/16/22203
ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়েছে ছাত্রলীগ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/127810/ছাত্রলীগ_কর্মীকে_কুপিয়েছে_ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগ-যুবলীগের টেন্ডার সন্ত্রাসে জিম্মি বরিশাল : সরকারের প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রশাসন নীরব
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/01/23/233188#.UuHYJNLxLIU
ব্যবসায়ী অপহরণে পাঁচ ছাত্রলীগ নেতা আটক
http://www.bd-pratidin.com/2014/01/23/39476
নাটোরে যুবলীগ কর্মীর রগ কেটে দিল ছাত্রলীগ কর্মীরা
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/46301/নাটোরে_যুবলীগ_কর্মীর_রগ_কেটে_দিল_ছাত্রলীগ_কর্মীরা
ব্যবসায়ীকে পেটালেন ছাত্রলীগ সভাপতি
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/129385/ব্যবসায়ীকে_পেটালেন_ছাত্রলীগ_সভাপতি
দেবহাটায় হিন্দু বাড়িতে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের আগুন
http://loksamaj.com/index.php?action=page&categoryid=21&postid=33401#.UswQAtIW1ZE
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে ৩ পিস্তলের ব্যবহার
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/18806/চট্টগ্রামে_ছাত্রলীগ_যুবলীগের_সংঘর্ষে_৩_পিস্তলের
ছাত্রলীগ-যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পথচারী এক শিশুসহ দুজন নিহত
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/14346/চট্টগ্রামে_ছাত্রলীগ_ও_যুবলীগের_গোলাগুলিতে_নিহত_২
সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝোলাল ছাত্রলীগ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/27536/সাংবাদিক_সমিতির_কার্যালয়ে_তালা_ঝোলাল_ছাত্রলীগ
বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/100747/বিএনপিপন্থী_শিক্ষকদের_ওপর_ছাত্রলীগের_হামলা
ধর্মপাশার মধ্যনগরে সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা!
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/01/24/233315#.UuHlhdLxLIU
নাজিরপুরে ছাত্রী উত্ত্যক্ত : ছাত্রলীগ নেতার গলায় জুতার মালা
http://www.somewhereinblog.net/blog/ming/29395445
পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতার গুলি
http://bangla.bdnews.com/news/27300
শিক্ষককে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি, ক্লাস বর্জন
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/54175/শিক্ষককে_ছাত্রলীগ_নেতার_হুমকি_ক্লাস_বর্জন
দাগনভূঞায় সাংবাদিক পেটাল ছাত্রলীগ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/88768/দাগনভূঞায়_সাংবাদিক_পেটাল_ছাত্রলীগ
নাটোরে সংখ্যালঘুর দোকান ভেঙ্গে নিলো ছাত্রলীগ
http://www.jugantor.com/current-news/2014/01/15/59127
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ দিল ছাত্রলীগ
http://protimuhurto.com/index.php/education2/66-education-2/13455-2014-01-20-13-20-20
সিলেটে পশুর অবৈধ হাট বসিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/55325/সিলেটে_পশুর_অবৈধ_হাট_বসিয়েছে_ছাত্রলীগ_যুবলীগ
সহকারী কমিশনারকে ছাত্রলীগ নেতার হত্যার হুমকি!
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/364/সহকারী_কমিশনারকে_ছাত্রলীগ_নেতার_হত্যার_হুমকি_
সরকারি জায়গা দখল করে ছাত্রলীগের মার্কেট নির্মাণ
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/2239/সরকারি_জায়গা_দখল_করে_ছাত্রলীগের_মার্কেট_নির্মাণ
ছিনতাই করতে গিয়ে চবিতে ছাত্রলীগ কর্মী আটক
http://www.sheershanews.com/2013/11/16/12449
খুনোখুনিই কি তবে কাজ পাওয়ার পথ? যুবলীগের দরপত্র-সাফল্য
http://www.prothom-alo.com/opinion/article/39114/যুবলীগের_দরপত্র_সাফল্য
“যেহেতু এই সব কাজ শিবির করেছে, তাই শিবির নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি।"
এবং সর্বপরি বাংলাদেশের শান্তি সম্মৃদ্ধি ও উন্নয়নের খাতিরে দেশের একমাত্র জঙ্গি দল আওয়ামিলিগ , ছাত্রলীগ কে নিষিদ্ধ করার জন্য সবাই কে একযোগে প্রতিবাদী হতে হবে।
সবকথার এককথা
এত কিছুর পরেও ছাত্রলীগ নয় ছাত্র শিবিরই জঙ্গী
হলুদগনমাধ্যম এভাবেই সত্য অাড়াল করে যেতে থাকবে। সুশীলীয় বৈষম্য আর মিথ্যা আভিযোগের স্বীকার হতে থাকবে নীপিড়িত জনতার পক্ষে কথাবলার বজ্রকণ্ঠগুলো। এভাবেই আবর্তিত হতে থাকবে শান্তিকামী মানুষের ভাগ্যের চাকা। ইতিহাস হতে থাকবে বিকৃত।
সত্যের জন্যে আসমান-জমীন ও
সত্যের জন্যে কুল মাখলুক
একদিন সত্যের জয় হবে নিশ্চিত
উজ্জল হবে মহা সত্যের মুখ
মন্তব্য করতে লগইন করুন