হঠাৎ তরুণ তরুণীদের মাঝে নাস্তিকের সত্বা

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ০৫ জুন, ২০১৩, ০৯:০৯:৩৩ রাত

আমি যখন ছোট ছিলাম আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাছলিমা নাসরিন এর বিরুদ্ধে মিছিল করতে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখনো জানি না যে, তাছলিমা নাসরিন কে? তার অপরাধ কি? তার পরেও তাছলিমার বিরোদ্ধে সবার সাথে সমস্বরে বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছি। যখন বড় হয়েছে, তার সর্ম্পকে বুঝতে শুরু করেছি, তার কি অপরাধ তা জেনেছি। মনে মনে অনেক অনেক ক্ষেপেছি। আমার এক সহপাঠি কলেজের গন্ডি পেরিয়ে আমাদের সাথে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে। কলেজে পড়া কালিন বাম দল করতো।ইংরেজিতে দক্ষ ছিল। আমার সাথে তার খুব ভাব ছিল।তার সাথে থেকে টুটাফুটা ইংরেজী শিখেছি। অবশ্য সে ছাত্রাবস্থায় বিয়ের কাজটি সেরে পেলেছে। একদিন তার বাড়ীতে যাওয়ার সুযোগ হয়। তার বুকসেল্পে তাছলিমা নাসরিনের লিখিত অনেক কালেকশন আছে। প্রথমে ভ্রু কুচকিয়েছি। অসম্বব আগ্রহে কয়েকটি বই চাইলাম। বন্ধু বললো, ওগুলো আমার ওয়াইফের। দেয়া যাবে না। অগত্যা একটি কলম নিয়ে বইগুলোর নাম লিখে নিলাম। চট্টগ্রামের একটি লাইব্রেরীতে গিয়ে দেখি তাছলিমা নাসরিন রচিত বইয়ের অভাব নাই।প্রথমে চার পাঁচটা কিনে নিলাম। কয়েকটি বই পড়ার পর আমি তাছলিমার প্রেমে পড়ে যাই। সরি তাছলিমা নাসরিনের লেখার প্রেমে পড়ে যাই। লেখার সুন্দর্য্য, শব্দ চয়ন, অংকন অপূর্ব! লেখার মজা লাগার অন্য কারন হলো তিনি একজন নারী, একজন নারী যৌন ভোগ উপলব্ধি কেমন হয় একজন পুরুষের জানার কথা নয়, তার লেখায় পাওয়া যায়। নারীদেহের বিশদ ব্যাখ্যা বিভিন্ন ভাষায়, শব্দে লুপে নেয়া যায়।তার লেখাগুলো পড়ার সময় আমি তার নীতি কথার সাথে অনেক সময় একমত হই। কিন্তু যেখানে যেখানে ধর্মীয় বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন সেখানে আমি তার ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব অনুভক করেছি। বুঝেছি তিনি ইসলাম সর্ম্পেকে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন না। ভাসা ভাসা আয়াতের হাদীসের অর্থ পড়েছেন, ব্যাখ্যা জানেন না এবং পড়েননি। ইসলামের আকায়েদ সম্পর্কে তার কোন ধারনাই নাই। কোরআনে আল্লাই তো বলেছেন, এই কোরআন দ্বারা কতক মানুষ হিদায়েত পারে কতক পথ ভ্রষ্ট হবে। যারা কোরআনের ক্ষুত খুঁজেন তারা ভাসা ভাসা কোরআনের আয়াত পড়েতো গুমরাহ দিকভ্রান্ত হবেনই। আমি মনে করতাম, বাংলাদেশে নাস্তিকের অস্তিত্ব তেমন একটা নাই। যারা গুটিকয়েক আছেন তারা তথাকথিত শিক্ষিত দিকভ্রান্ত কিছু মানুষ যাদের সবাই অপেন সেক্স ও বহুবিধ সেক্সের জন্য খ্যাত। তাদের নাস্তিক হওয়ার পেছনে কারন, বুহুবিধ সেক্স ও বুহুগামিতা। ইসলামসহ বিশ্বের অন্যান্য ধর্মে বিবাহ বর্হিবুত সেক্স নিষিদ্ধ। অপেন সেক্স ও বুহুগামিতা নাস্তিকতায় সিদ্ধ। আপনি যদি তাদের একজন একজন করে বিশ্লেষন করেন তার প্রমান পাবেন। যেমন তাছলিমা নাসরিন, শাহরিয়ার কবির, হুমায়ুন আজাদ, কবির চৌধুরী, সদ্য মৃত রাজীব হায়দার অনেকেই। তারা কেউ পারিবারিক ভাবে সুখি নন। বর্তমানে সরকার কর্তৃক শাহবাগ নাটকরে সময় থেকে নাস্তিকদের লম্পজম্প প্রচন্ড ভাল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদেরকে যথেষ্ট শক্তিশালী মনে হচ্ছে এবং বিশাল সংখ্যায়ও দেখা যাচ্ছে। ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া বিশেষ করে স্যোসাল মিডিয়া গুলোতে বিশাল একটা এলাকা জুড়ে আছে এরা। এরা হরহামিশাই ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ইসলাম ও মহানবী (স.) সহ অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে কটুক্তি, ব্যঙ্গচিত্র ও অশালীন বক্তব্য প্রচার করে জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে প্রচ- আঘাত করে আসছে। ধর্মকে বিশেষ করে ইসলামীকে হেয় ও বিষোধাগার করে চলছে। আগে মনে করতাম নাস্তিক মানে তথাকথিত শিক্ষিত টাক মাথাওয়া। কিন্তু স্যোসাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজম্নের বাম মনা তরুন তরুণীদের বড় একটি অংশ নাস্তিক। তারাই ইসলামকে গাল মন্দ করে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে সাদিয়া সুমি নামক এক স্বঘোষিত নাস্তিক তরুণী ফেসবুকে ইসলাম তথা ধর্মকে গালমন্দ ও রাসুল (সঃ) এর কুৎসা না রটালে তার ঘুম হয় না। সে সুরায়ে নূহ এর লাত মানাত ও উজ্জা নামক মূর্তির নাম দিয়ে অনেকগুলো ফেসবুক আইডি করেছে যেমনঃ sadia shumi lat, sadia shumi manat, sadia shumi uzza, sadia shumi Al ilah, Sadia shumi rasulin ইত্যাদি নামে তার এ হীন কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার সাথে তার আইডিগুলোতে ফ্রেন্ডে থাকা শ'খানেক কুলাঙ্গার কুলাঙ্গীনী এই হীন কাজ করে যাচ্ছে। এই মেয়েটি সাথে আরো হাজার খানিক থাকলেও নেত্রী হল এই সুমি। আমি বলি তোমাদের কাছে ধর্ম ভাল লাগে না, মানছ না, তাতে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নাই। তবে আমরা যারা ধার্মিক যারা ধর্মে, আল্লাহতে ও রাসুলে বিশ্বাসী তাদের হৃদয়ে আঘাত করছ কেন?

বাস্তবতঃ এরা যে সংখ্যায় আছে সরলপ্রাণ তরুণ তরুণীদের ভূল বুঝিয়ে একটি ইজম খাড়া করতে চাচ্ছে। হেফাজতে ইসলাম কিছু নাস্তিক ব্লগারদের বিরোদ্ধে আন্দোলন করছে। ব্লগ তো একটি ছোট পরিসর। এতে রেজিষ্ট্রার্ড আনরেজিষ্ট্রার্ড কিছু মানুষ যারা ইচ্ছে করলে পড়াতে পারেন। অন্যথা পড়তে পারেন না। কিন্তু স্যোসাল মিডিয়া ফেসবুক, টুইটারে শুধু একবার শেয়ার করলে হলো মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ মানুষ শেয়ারে শেয়ারে পড়তে পারেন এবং ছড়িয়ে পড়ে। যেটি ব্লগের ক্ষেত্রে হয় না। আমি মনে করি সরকার আইওয়াশ করার জন্য যে চারজন ব্লগার নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন, মশিউর রহমান বিপ্লব, রাসেল পারভেজ ও সুব্রত অধিকারী শুভ গ্রেফতার করেছে তাদের সাথে ফেসবুকে থাকা সাদিয়া সুমির মত নাস্তিকদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত।তাদেরকে গ্রেফতার করে মৃতদন্ড দেয়া উচিত।

বিষয়: বিবিধ

৩৪৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File