যখন তুমি বনভোজনে আনন্দে মাতোয়ারা,আমি তখন আখিরাতের ভয়ে কেঁদে সারা।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:০৯:৩১ রাত
যখন তুমি বনভোজনে আনন্দে মাতোয়ারা,আমি তখন আখিরাতের ভয়ে কেঁদে সারা।
"চলো,সব ভাই ভাবীরা তোমাকে আজকের পিকিনিকে নিয়ে যেতে বলেছেন।তুমি না গেলে নাকি মজাই হবে না।তুনি না গেলে আমারও মন খারাপ লাগবে, আনন্দই পাব না।তুমি দাওয়াতি কাজও করতে পারবে "
অনেক চেষ্টা করেছি মনকে বুঝাতে কিন্তু বিবেকের সাড়া পেলাম না।কয়েকবার এই রকম সোনামনি ,পারুমনি শুনে গলে গিয়ে দেখি সব পর্দানশীলরাও বেপর্দা হয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে।প্রাইজের জন্য মহিলারা কোন খেলাই বাদ দিচ্ছেন না।যাদের (পুরুষ) চোখে যাদের (মহিলা/যুবতী) ভাল লাগছে তারাই রং ডং সং সাজা ছবি সেলফি তুলার সাথে সাথে তাদের মাঝে আনন্দের প্লাবন আর খুশির তুফান নিরবে বহে যায়।ইচ্ছাকৃত এই সব গুনাহের জন্য বিবেকের ধ্বংসনে কয়েকদিন অসুস্থ্য হয়ে থাকি। যা ক্ষমা পাবার জন্য আজো প্রভুর কাছে ক্ষমাভিক্ষা চাই ।
কমিটির সাহেব ভাইসপ্রেসিডেন্ট তাই তাঁর যাওয়া বাধ্যতা মুলক।আমার জন্য তো বাধ্যতা মুলক নয়।আমার কাছে শুক্রবার টা একটা বিশেষ ইবাদতের ও নিজের আখিরাতের জন্য আলাদা করে কিছু চাওয়া পাওয়ার দিন।আমার বাবা নাকি এই দিনকে খুব গুরুত্ব সহ কারে পালন করতেন তাই আল্লাহ উনাকেএই দিনে উনার কাছে নিয়েছেন।আমার মাকে নিজেই দেখেছি জুম্মার দিনকে ঈদ এর মত পরিস্কার পরিছন্ন হয়ে ইবাদাতের মাধ্যমে কাটাতেন।আল্লাহ আমার মাকেও এই দিনেই উনার কাছে যাবার জন্য ডাক দিয়ে নিয়েছেন।একই আশা আমার প্রভু আমাকেও জুম্মার দিনে উনার সান্নিধ্যে যাবার ডাক দিবেন।আমিন।
যখন তুমি বনভোজনে আনন্দে মাতোয়ারা,আমি তখন আখিরাতের ভয়ে কেঁদে সারা।
যখন তুমি বনভোজনে আনন্দে মাতোয়ারা,আমি তখন আখিরাতের ভয়ে কেঁদে সারা আর জান্নাতে যাবার আনন্দে বিভোর আলহামদুলিল্লাহ।আমি রুটিন মাফিক আমার দুনিয়া্বী ও আল্লাহর ফরজ কাজ গুলো সেরে ফেললাম।সুরা কাহাফ শেষ করার সময় শেষের দশ আয়াত পড়ে জাহান্নাম আর জান্নাতুল ফেরদাউসের আল্লাহর মুল্যবান কথা গুলো ভাবলাম। আর বুঝলাম আমার বিবেক আমাকে উত্তম পন্থার দিকেই সায় দিয়েছে।দুনিয়ার সব কিছুই আমার জন্য পরীক্ষার সামগ্রী।আর এই নগন্য দুনিয়ার আনন্দ আর পার্থিব ভোগ বিলাস সব কিছুই আখিরাতের তুলনায় একদম ক্ষন স্থায়ী। এর চেয়ে উত্তম পুরুস্কার আল্লাহ আমাদের জন্য আখিরাতেই রেখেছেন।দুনিয়ার যত মুল্যবান কিছুই দেখছি তা আখিরাতের তুলনায় অকিঞ্চিতকর।
"তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য থাকবে ফেরদৌসের বাগান।" সুরা কাহাফ ১০৭
চাইনা আমি গাড়িবাড়ি মনিহার,সব বস্তুই যে দুনিয়াবী পরীক্ষার।
"মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা-রূপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া, গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র। প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহর কাছে।
বলো, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেবো, ওগুলোর চাইতে ভালো জিনিস কি? যারা তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বাগান, তার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরন্তন জীবন লাভ করবে। পবিত্র স্ত্রীরা হবে তাদের সঙ্গিনী এবং তারা লাভ করবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তার বান্দাদের কর্মনীতির ওপর গভীর ও প্রখর দৃষ্টি রাখেন"।সুরা আলে ইমরানঃ১৪-১৫
জীবনের কোন একটি আকৃতিও এখানে স্থায়ী ও চিরন্তন নয়। যে যে অবস্থায়ই আছে সাময়িকভাবে একটি সীমিত সময়কালের জন্যই আছে। মাত্র কয়েকদিনের জীবনের সাফল্যের জন্য যারা প্রাণপাত করে এবং এরই জন্য বিবেক ও ঈমান বিকিয়ে দিয়ে সামান্য কিছু আয়েশ আরামের উপকরণ ও শক্তি-প্রতিপত্তির জৌলুস করায়ত্ত করে নেয়,এ সমস্ত কাজ মন ভুলানো ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব খেলনার সাহায্যে তারা যদি দশ, বিশ বা ষাট সত্তর বছর মন ভুলানোর কাজ করে থাকে এবং তারপর শূন্য হাতে মৃত্যুর দরোজা অতিক্রম করে ভ্রমণ জগতে পৌঁছে যায় সেখানকার স্থায়ী ও চিরন্তন জীবনে তাদের এ খেলা এক প্রতিপত্তিহীন রোগে পরিণত হয়, তাহলে এ ছেলে ভুলানোর লাভ কি?
খেল তামাশা আছি মজে,এই দুনিয়ার রঙ মঞ্চেঃ
"আর এ দুনিয়ার জীবন একটি খেলা ও মন ভুলানোর সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।"
আনকাবুত ৬৪
"দুনিয়ার জীবন তো একটি খেল-তামাসার ব্যাপার।২০ আসলে যারা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে চায় তাদের জন্য আখেরাতের আবাসই ভালো। তবে কি তোমরা বুদ্ধি-বিবেচনাকে কাজে লাগাবে না?" আনয়াম ৩২
দুনিয়ার জীবনটি নেহাত হাল্কা ও গুরুত্বহীন বিষয়, এর মধ্যে কোন গাম্ভীর্য নেই এবং নিছক খেল-তামাসা করার জন্য এ জীবনটি তৈরী করা হয়েছে। আখেরাতের যথার্থ ও চিরন্তন জীবনের তুলনায় দুনিয়ার এ জীবনটি ঠিক তেমনি যেমন কোন ব্যক্তি কিছুক্ষণ খেলাধূলা করে চিত্তবিনোদন করে তারপর তার আসল ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ কারবারে মনোনিবেশ করে।
তাছাড়া একে খেলাধূলার সাথে তুলনা করার কারণ হচ্ছে এই যে, এখানে প্রকৃত সত্য গোপন থাকার ফলে যারা ভেতরে দৃষ্টি না দিয়ে শুধুমাত্র বাইরেরটুকু দেখতে অভ্যস্ত তাদের জন্য বিভ্রান্তির শিকার হবার বহুতর কারণ বিদ্যমান। এসব বিভ্রান্তির শিকার হয়ে মানুষ প্রকৃত সত্যের বিরুদ্ধে এমন সব অদ্ভুত ধরনের কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করে যার ফলশ্রুতিতে তাদের জীবন নিছক একটি খেলা ও তামাসার বস্তুতে পরিণত হয়।
র বাস্তবতা শুধুমাত্র এতটুকুই যেমন ছোট ছেলেরা কিছুক্ষণের জন্য নেচে গেয়ে আমোদ করে এবং তারপর যার যার ঘরে চলে যায়। এখানে যে রাজা হয়ে গেছে সে আসলে রাজা হয়ে যায়নি বরং শুধুমাত্র রাজার অভিনয় করছে।যে ব্যক্তি এ পৃথিবীতে বাদশাহের আসনে বসে তার মর্যাদা আসলে নাট্যমঞ্চের সেই কৃত্রিম বাদশাহর চাইতে মোটেই ভিন্নতর নয় যে, সোনার মুকুট মাথায় দিয়ে সিংহাসনে বসে এবং এমনভাবে হুকুম চালাতে থাকে যেন সে সত্যিকারের একজন বাদশাহ। অথচ প্রকৃত বাদশাহীর সামান্যতম নামগন্ধও তার মধ্যে নেই। পরিচালকের সামান্য ইঙ্গিতেই তার বরখাস্ত, বন্দী ও হত্যার সিদ্ধান্তও হয়ে যেতে পারে। এমাত্র কয়েকদিনের জীবনে দুনিয়ার সর্বত্র এ ধরনের অভিনয়ই চলছে।
মৃত্যুর মুহূর্ত আসার সাথে সাথেই এক মূহূর্তের মধ্যেই এসব কিছুই বন্ধ হয়ে যাবে। এ জীবনের সীমান্ত পার হবার সাথে সাথেই মানুষ এমন এক জগতে পৌঁছে যাবে যেখানে সবকিছুই হবে প্রকৃত সত্যের অনুরূপ এবং যেখানে এ দুনিয়ার জীবনের সমস্ত বিভ্রান্তির আবরণ খুলে ফেলে দিয়ে মানুষকে দেখিয়ে দেয়া হবে কি পরিমাণ সত্য ামরা সাথে করে এনেছি। সত্যের মীযান তথা ভারসাম্যপূর্ণ তুলাদণ্ডে পরিমাপ করে তার মূল্য ও মান নির্ধারণ করা হবে।
দুনিয়ার জীবনে উল্লসিত ও আত্মহারা হবার কিছুই নেই
"আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রিযিক সম্প্রসারিত করেন এবং যাকে চান মাপাজোকা রিযিক দান করেন। এরা দুনিয়ার জীবনে উল্লসিত, অথচ দুনিয়ার জীবন আখেরাতের তুলনায় সামান্য সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়"।
দুনিয়ার জীবনে উল্লসিত ও আত্মহারা হবার কিছুই নেই।আমরা যারা বিশ্বাস ও কর্মের সৌন্দর্য বা কদর্যতা দেখার পরিবর্তে ধনাঢ্যতা বা দারিদ্রের দৃষ্টিতে মানুষের মূল্য ও মর্যাদা নিরূপণ করছি।আমাদের ধারণা, যারা দুনিয়ায় প্রচুর পরিমাণ আরাম আয়েশের সামগ্রী লাভ করছে তারা যতই পথভ্রষ্ট ও অসৎকর্মশীল হোক না কেন তারা আল্লাহর প্রিয়। আর অভাবী ও দারিদ্র পীড়িতরা যতই সৎ হোক না কেন তারা আল্লাহর অভিশপ্ত।
এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, রিযিক কমবেশী হবার ব্যাপারটা আল্লাহর অন্য আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট। সেখানে অন্যান্য অসংখ্য প্রয়োজন ও কল্যাণ-অকল্যাণের প্রেক্ষিতে কাউকে বেশী ও কাউকে কম দেয়া হয়। এটা এমন কোন মানদণ্ড নয় যার ভিত্তিতে মানুষের নৈতিক ও মানসিক সৌন্দর্য ও কদর্যতার ফায়সালা করা যেতে পারে। মানুষের মধ্যে কে চিন্তা ও কর্মের সঠিক পথ অবলম্বন করেছে এবং কে ভুল পথ, কে উন্নত ও সৎগুণাবলী অর্জন করেছে এবং কে অসৎগুণাবলী-এরি ভিত্তিতে মানুষে মানুষে মর্যাদার মূল পার্থক্য নির্ণীত হয় এবং তাদের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের আসল মানদণ্ডও এটিই। কিন্তু মূর্খরা এর পরিবর্তে দেখে, কাকে ধন-দৌলত বেশী এবং কাকে কম দেয়া হয়েছে।
"তোমাদের যা কিছুই দেয়া হয়েছে তা নিছক দুনিয়ার জীবনের সাজ-সরঞ্জাম এবং তার সৌন্দর্য-শোভা আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে তা হচ্ছে তার চেয়ে ভালো এবং অধিকতর স্থায়ী। তোমার কি বিবেচনা করবে না?" সুরা কাসাস৬০
হে আল্লাহ আমাদের চক্ষুদ্বয়কে কখনও দুনিয়ার ঝাকঝমকের প্রতি প্রসারিত করো না।যা তুমি পরীক্ষা স্বরূপ জীবনের সৌন্দর্য উপভোগ ও উপকরন হিসাবে দিয়েছ।হে প্রভু তুমি দেওয়া জীবন উপকরন অনেক উৎকৃষ্ট এর প্রতি সন্তুষ্ট চিত্তে সবরকারী হিসাবে রেখো ।
বিষয়: বিবিধ
২০৫১ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকিল্লাহ, দোয়া করি..
আল্লাহ আপনাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আপনার নেক ইচ্ছা পূর্ণ করুন। আপনার পরিবার,স্বামী,সন্তান সকলের উপর রহম করুন। আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়
চালিয়ে যান। অন্য আপুরা হারিয়ে গেছে।
আশা করি আপনি লেখা চালিয়ে যাবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন