বাংলাদেশে রাজতান্ত্রিক গনতন্ত্র

লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ২২ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৩৯:৫২ দুপুর

ইদানিং ফেইস বুকে ৩জন যুবকের ছবি দিয়ে মতামত চাওয়া হচ্ছে যে, কে বেশী যোগ্য। তারা হলেনঃ ১. তারেক রাহমান। ২. সজিব ওয়াজেদ জয়। ৩. মাসুদ সাঈদী। মাঝে মাঝে আবার মাসুদ সাঈদীর জায়গায় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ছবি দেয়া হচ্ছে।

প্রথমোক্ত ৩জন যুবকের পরিচয় যদি কারো কাছে জানতে চাওয়া হয়। তাহলে উত্তর আসবে এই ভাবেঃ ১. প্রেসিডেন্ট জিয়া বা বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র। ২. শেখ মুজিবের নাতি বা শেখ হাসিনার পুত্র। ৩. আল্লামা দেলাওয়ার হুসাঈন সাঈদীর পুত্র। ৩জনের ক্ষেত্রেই একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, উনারা নিজের পরিচয়ে পরিচিত নন, পরিচিত উনাদের বাবা বা মায়ের পরিচয়ে। বাবা মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হওয়া খুবই ভাল জিনিস। কিন্তু যোগ্যতা প্রমাণের জন্য বাবা মায়ের পরিচয় হচ্ছে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় খুবই গুরুত্ব পূর্ণ।

আমরা যদি উপরোক্ত ব্যক্তিদের পরিচয় থেকে উনাদের বাবা মায়ের নাম বাদ দিয়ে উনাদের পরিচয় নেই, তাহলে আমরা উনাদের যে পরিচয় পাবো-সে পরিচয় আর যোগ্যতায় ভরপুর ব্যক্তিবর্গের তালিকা যদি করা হয়, তাহলে কত হাজার ক্রমিকের পর উনাদের নাম বসবে তা মালুম করা খুবই অসাধ্য।

অথচ নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আমরা লাইক বা মতামত চাই উনাদের নামে। তাহলে কি দাড়ায়?

আমরা যদি বলিঃ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, উনার ছেলেই হিসাবে এখন তারেক রাহমান প্রধানমন্ত্রী হোক-নির্বাচনের কি দরকার। অথবা যদি বলিঃ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী, বিধায় উনার ছেলে হিসাবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সজিব ওয়াজেদ জয়কে করা হোক। তখন কিন্তু সাথে সাথে উত্তর আসবেঃ ছি,ছি, এটা কেমন করে হয়। আমরা গনতন্ত্র চাই, জনগনের মতামতের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী হবেন।

জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্নঃ তা-ই যদি সত্য হয়, তাহলে অঁজো পাড়া গায়ের স্কুল থেকে ফাঁস করা আতিউর রাহমানেরা কেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেনা? কেন একজন চাষার ছেলে কেবলমাত্র যোগ্যতার কারণে প্রধানমন্ত্র হতে পারবেনা? আওয়ামীলীগের পরবর্তী কর্ণধার হিসাবে কেন সজিব ওয়াজেদ জয়কে চিন্থা করে এখন থেকে তার চাটুকারী করা হবে? কেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন তারেক রাহমান এবং তাকেই বিএনপির পরবর্তী কর্ণধার হিসাবে বিবেচনা করে তার চাটুকারী করা হবে? কেন মাসুদ সাঈদীর ছবি ব্যবহার করে তাকে হাইলাইট করা হবে। উনারা কারা? উনারা কি যোগ্যতায় এই মতামতের কাতারে আসবেন?

তাহলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গনতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণের আগে কি জরুরী নয় যে, আওয়ামীলীগ বিএনপি এবং জামায়াত জাতীয় পাটিতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

প্রসংগক্রমে একটি কথা উল্লেখ্য যে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। উনি কে? উনি কোন রাজনৈতিক দলের লিডারের পুত্র নন। কিন্তু নিজ যোগ্যতা বলে অঁজো পাড়া গায় থেকে উঠে আসা এক যোগ্যতা সম্পন্ন তরুন। যিনি একটি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বপালন করার সময়েই ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। যার নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে আছে কিনা আমার জানা নেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ এই শফিকুল ইসলাম মাসুদদের শত যোগ্যতা থাকর পরও তারা কেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেনা।

আমরা যারা গনতন্ত্রের জন্য চিৎকার করি। তাদের মাইন্ড কিন্তু রাজতান্ত্রিক। তাই আমরা জয় আর তারেকের গোলামী ছাড়া চিন্থা করতে পরিনা। তারই ফলে আমরা চাটুকারতে ব্যস্ত। আর সেজন্য বাংলাদেশে নতুন তরিকার গনতন্ত্র আছে থাকবে। আর তা হলো রাজতান্ত্রিক গনতন্ত্র।

বিষয়: বিবিধ

১২৫৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

257091
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:৫১
মামুন লিখেছেন : কথা কিন্তু সত্য। তবে আমাদেরকে দীর্ঘদিনের গোলামীর এবং চাটুকারিতার বেড়ি থেকে বের হয়ে আসতে সময় লাগবে। লেখাটি ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
257096
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : গণতন্ত্র নামক হারাম প্রোডাক্টের পেছনে আর কতদিন?
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৪
200777
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : তাহলে আপনি কোন তন্ত্র চান সেটা যদি একটু বলতেন তাহলে আমরা উপকৃত হতাম।
257098
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৫
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আমাদের দেশের গণতন্ত্র (!!!)
257099
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৬
বুড়া মিয়া লিখেছেন : এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে থাকা প্রায় সমস্ত মানুষেরই সাধারণ চরিত্র, এ ধরনের মানুষের সংখ্যাও সমাজে অনেক, এ ধরনের পজিশনে যারা যায় – ঐ শ্রেণীর মানুষদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারাও একই রকম হয়ে যায় ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়
257122
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৮
কাজি সাকিব লিখেছেন : এখানে খুবই গুরুত্বপুর্ণ একটি বিষয়ের অবতারনা আপনি করেছেন যে যোগ্যতার চাইতে উত্তরাধীকারই যখন বড় তখন আর তাকে রাজতন্ত্র না বলে গণতন্ত্র কেন বলা হচ্ছে?

তবে একটি বিষয় এখানে মিসইন্টারপ্রিটেশন হচ্ছে আর তা হচ্ছে জনাব মাসুদ সাঈদী!

জামায়াতে অতীতেও শুধুমাত্র নেতার পুত্র হওয়ার কারণে যেমন কাউকে হাইলাইট করা হয়নি ভবিষ্যতেও আশা করা যায় যে তা করা হবে না,তবে জনাব মাসুদ সাঈদীকে হাইলাইট করা যে কারণে তা হচ্ছে
একটি বিশাল লুকায়িত সত্যকে উদঘাটন করা আর তা হচ্ছে যদি আল্লামা সাঈদী সাহেব সত্যিকারার্থেই যুদ্ধাপরাধী হয়ে থাকেন তবে এতদিন নাহয় বুঝলাম যে এলাকাবাসী কিছু বলেনি কিন্তু এখন সব জানার পরেও কি করে সাঈদী পুত্র বিপুল জনপ্রিয়তার সাথে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়?

এখন যদি সেটা প্রমাণের জন্য ফাঁসির আসামী থাকা অবস্থাতে আল্লামা সাঈদী সাহেবের দ্বারাই করার আইনি সুযোগ থাকতো কিংবা অন্য কাউকে হাইলাইট করলে চলমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে কি চলছে তাতে বিশাল প্রশনবোধক চিহ্ন দেয়ার সুযোগ থাকতো তবে নিশ্চয় সাঈদী পুত্রকে হাইলাইট করা হত না!
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৮
200820
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : আমি মাসুদ সাঈদী সম্পর্কে খুব কমই জানি। কারণ জামায়াতে ইসলামীর সাথে উনি কোন ধরণের জড়িত, তা আমার জানা নেই।
আমি তারেক, জয়-এ পাশে উনার ছবিটা ব্যবহার করাতে উনার প্রসংগটা এনেছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File