২য় বিয়েঃ কেবলই আনন্দ নাকি শর্তযুক্ত দায়বদ্ধতা? (পর্ব -২)
লিখেছেন লিখেছেন সাফওয়ানা জেরিন ০১ জুলাই, ২০১৪, ১২:০৮:৩৯ দুপুর
আমাদের দেশের ছেলেরা কথায় কথায় বলে- সৌদি আরবের ছেলেরা বহুবিবাহ করতে পারলে আমরা কেন পারবো না ?
এই লেখাটা বহুবিবাহকে নিরুৎসাহিত করার ব্যাপারে লেখা হচ্ছে না। আরব দেশে বহুবিবাহ আসলে খুব অদ্ভুত, আজব কিংবা অযৌক্তিক কোন ব্যাপার না। এর কারন হিসেবে ৩ টা কারন আমার মনে হয়েছে
১- নারী অধিকার রক্ষা
২- শারীরিক সক্ষমতা
৩- সামাজিক ন্যায়নীতি
আরব দেশে কোন পুরুষ বহু বিবাহ করলে, যেহেতু দেশটি ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী চলে, সবাই সেই শরিয়াহ মানে সে ক্ষেত্রে নারী অধিকার খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা ও কম, আর কোনভাবে হলেও তার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। আর সবচেয়ে বড় কথা হোল, আরব পুরুষদের একাধিক স্ত্রীর ভরন পোষণের শারীরিক , আর্থিক সব ধরনের সক্ষমতা থাকে।
এখন আসা যাক আমাদের দেশের কথায়। এটা তৃতীয় বিশ্বের হতদরিদ্র একটি দেশ। এই দেশের আয়ের একটা বড় উৎস পোশাক শিল্প, যেখানে নারী শ্রমিকরাই বেশী কাজ করে। এই নারী শ্রমিকরা মোটামুটি ভাবে তাদের সংসার টেনে চলেন। আর যেসব পুরুষরা বউয়ের টাকার প্রতি একটু লোভী, তারা পোশাক শিল্পীদের বিয়ে করতে আগ্রহী হয়। এই আগ্রহের সংখ্যা এক থেকে ২ , ৩, ৪ , ৫ এও যেয়ে ঠেকে। ইসলামের নাম ব্যবহার করে এইসব পুরুষরা একের পর এক বিয়ে করেই যায়, অথচ সেই নারীর ছেলে মেয়ে সংসারের দায়িত্ব তার ঘাড়েই ছেড়ে দেওয়া হয়।
নারী নির্যাতনের তালিকার শীর্ষে আছে বাংলাদেশের নাম।নারীরা নিজের ঘরেই বেশি নির্যাতিত হচ্ছেন, এমন চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে। প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে করা এই জরিপে দেখা গেছে, নারীরা সারা জীবনে একবার হলেও স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, এর হার ৮৭.৭ শতাংশ। আর কর্মস্থলে নির্যাতনের হার ১৬.২ শতাংশ। ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভিএডব্লিউ সার্ভে ২০১১) প্রকাশিত হয় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর।
এই দেশে মেয়েরা বাহিরে যতোটা নির্যাতিত হয়, তারচেয়ে ঘরে বেশী নির্যাতিত। ছোটবেলা থেকেই ছেলেরা নারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে করেই বড় হতে শেখে। পরিবার থেকেই ছেলেরা শেখেনা সম্মান কীভাবে করতে হয় মায়ের জাতিকে। এই সমাজে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই একজন পুরুষ একজন নারীর প্রতিই ইহসান করতে পারে না, ২ অথবা ৩ জন তো পরের কথা। এর কারন কি? এখানে আপনি আরব দেশের উদাহরণ আনলে চলবে না। আরব দেশে মহিলাদের জন্য আলাদা কর্মক্ষেত্র আছে, সে দেশে একজন গর্ভবতী মহিলাকে সবাই অনেক বেশী সম্মান করেন, মার্কেটে সম্ভাব্য মা কে হাটতে দেখলে দোকানে বসে বিশ্রাম নিতে বলেন, সেখানে নারী মানেই কারো মা , কারো বোন , কারো বউ।
আপনার দেশে কি আপনি পেরেছেন নারীকে সেই সম্মান দিতে?
আমি জানি – অনেকেই বলবেন, বহু বিবাহ করে আরেক হতভাগ্য নারীর পাশে দাঁড়ানোই আপনাদের উদ্দেশ্য!
ভাই, একটু থামেন! আপনি সেই ব্যক্তিই, যে নিজের বউকে সময় দিতে পারেন না, সন্তানকে ভরন পোষণ দিতে পারেন না, তত্ত্বাবধায়ন করতে পারেন না! নিজের বাবা মা আর বউয়ের মধ্যে ইহসান প্রতিষ্ঠা করতেই আপনার তেলে বেতেল অবস্থা! কি করে ভাবেন আপনি আরেকটা নারীর প্রতি সমান আচরণ করতে পারবেন? যেখানে একটাতেই ব্যর্থ আপনি!
ইসলামে ৪ বিয়ের বিধান কেন আসলো, এটা আসলেই জানা খুব দরকার আজকের প্রজন্মের। একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী রাখার প্রচলন ইসলামের আগে প্রায় সকল ধর্মে বৈধ মনে করা হত। আরব, ভারতবর্ষ, ইরান, মিসর, গ্রীস, ব্যাবিলন ও অষ্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশের প্রতিটি সম্প্রদায়ে বহু বিবাহের প্রথা চালু ছিল।ইসলামের পূর্বে বহু বিবাহের প্রচলন ছিল। যতটুকু ধর্ম ও দেশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, কোন মাযহাব এবং কোন নিয়মই এ ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেনি। না ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু, আর্য এবং পারশীক প্রভৃতি। ইসলামের প্রথম দিকেও এ প্রথা পূর্বের মত চালু ছিল।যখন দেখা গেল যে, বহু বিবাহের ফলে মহিলাদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। মানুষ প্রথমে লোভ-লালসার বশীভূত হয়ে অনেক বিবাহ করে নিত। পরবর্তীতে স্ত্রীদের হক বা অধিকার যথাযথভাবে আদায় করতে পারত না। স্বভাবজাত প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে বহু বিবাহকে একেবারে হারাম করেনি। বরং তাতে যে অনিষ্ট ও অপকারিতা ছিল, একটি নতুন সংস্কারের মাধ্যমে তার সংশোধন করে দিয়েছে।যখন পঁচিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছেন, তখন খাদীজা (রা.) এর পক্ষ হতে বিয়ের প্রস্তাব পান, যিনি বিধবা ও সন্তান সম্পন্না হওয়ার সাথে সাথে তখন চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়ে বার্ধক্য জীবন যাপন করছিলেন। তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বেও দু‘জন স্বামীর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং দুই পুত্র ও তিন মেয়ের জননী ছিলেন। এতদসত্তেও নবীর দরবারে তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়নি এবং জীবনের বেশীর ভাগ সময় ঐ একটি বিবাহের উপরই অতিবাহিত করেছেন।রাসুল (সা.) এর যত সন্তান জন্মলাভ করেছিল তা সবই হযরত খাদীজার (রা.) গর্ভে হয়েছে। হযরত খাদীজা (রা.) এর ওফাতের পর নবীজীর বয়স যখন পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, ঠিক তখন একের পর এক বাকী বিবাহগুলো সম্পন্ন করেন। বিশেষ বিশেষ শরয়ী প্রয়োজনে একে একে দশটি বিবাহ করেন। আয়েশা (রা.) ব্যতীত যাদের সকলেই ছিলেন বিধবা। কারো কারো সন্তানও ছিল।
সুতরাং, কোন জৈবিক কামনা বাসনার তাড়নায় রাসুল (সা.) বহু বিবাহ করেছেন একথা কোন বিবেকবান মানুষের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
জাহেলি যুগে স্ত্রী গ্রহণ এবং ইচ্ছে হলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া ছিলো যেনো অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। নারীরা হয়ে উঠেছিলো পণ্যসামগ্রীর মতো। তাদের না ছিলো সম্মান, না ছিলো মর্যাদা, না ছিলো কোনোরূপ অধিকার। তিনি সুনির্দিষ্ট বিবাহ নীতিমালা ও তালাক বিধান প্রবর্তনের মাধ্যমে বহুবিবাহ প্রথার শেকড়ে কুঠারাঘাত করলেন এবং বিবাহবিচ্ছেদকে নিয়ন্ত্রিত করলেন। চারজন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি দেয়া হলেও সে ক্ষেত্রে জুড়ে দেয়া হলো কতকগুলো শর্ত। যার ফলে ইচ্ছে করলেই একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রবণতা রোধ হয়ে গেলো। এ ব্যাপারে কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে: তোমাদের পছন্দমতো বিবাহ করবে দুই, তিন অথবা চার নারীকে। আর যদি আশঙ্কা করো যে, সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে (সূরা নিসা : আয়াত ৩)। এই আয়াতে কারীমায় চারটি পর্যন্ত বিয়ে করার অনুমতি থাকলেও প্রত্যেক স্ত্রীর উপর সুবিচার (আদল) না করার আশঙ্কা থাকলে একটি বিয়ে করার জোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যাই হোক, প্রসঙ্গ আমাদের দেশে বহু বিবাহ ও এর সামাজিক প্রেক্ষাপট। আমাদের দেশের ৪০ ঊর্ধ্ব বেশীরভাগ ছেলেই শারীরিকভাবে অক্ষম। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে বহুবিবাহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একেবারে অসম্ভব। আবহাওয়াগত,কারণ ,ভৌগোলিক কারণ খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে আমাদের দেশের ছেলেরা ফিজিক্যালি ফিট না বেশীরভাগ ক্ষেত্রে। তার উপর ক্যারিয়ার করতে গিয়ে অনেকে দেরী করে বিয়ে করে। ততোদিনে প্রেশার ডায়াবেটিস এর কারণে তাদের ফিটনেস আরও কমে যায়। এক বউই সামলাতে পারেনা। ৪ বউ কিভাবে সামলাবে ? ঐগুলা আফগান দের পক্ষে সম্ভব !অবশ্য এই সম্পর্কে ওদের নিজের ই ধারণা নেই। নিজেকে বিরাট হিরো মনে করে। বিয়ের পর বউ এর কাছে জিরো হয়ে যায়। তখন দ্বিতীয় বিয়ের শখ মিটে যায়। বিড়াল এর. মতো মিউ মিউ করে । কথাটা কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ও মিথ্যে নয়। যদিও লেখাটা ইঁচড়ে পাকা হয়ে যাচ্ছে, তাও লেখলাম যেহেতু প্রমাণ সহই বলি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিজের সক্ষমতার পরীক্ষা নিতে বেশি কিছু ভাবতে হবে না। শুধুমাত্র নিজের ঘাড়ের আকারের দিকে খেয়াল করেই আপনি বুঝে নিতে পারবেন নিজের যৌন সক্ষমতা।
গবেষকরা বলছেন, যে সকল পুরুষের ঘাড়ের ব্যাস ১৬.৩ ইঞ্চির চেয়ে বড় তাদের যৌন অক্ষমতা, ‘ইরেকটাল ডিসফাংশনে’ ভোগার আশঙ্কা বেশি থাকে। নিজের যৌন জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন পুরুষদের অনেকেই নিজের ঘাড়ের আকারের সাথে যৌন ক্ষমতার এই সম্পর্ক নিয়ে সচেতন নন বলেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। মধ্যবয়স্ক পুরুষদের অন্যতম প্রধান যৌন সমস্যাই হচ্ছে ইরেকটাল ডিসিফাংশন। এই সমস্যায় আক্রান্ত পুরুষদের শরীর কোনভাবেই শারীরিক সম্পর্কের জন্য যথেষ্ট উদ্দীপ্ত হয় না। সারা বিশ্বের ৪০-৭০ বছর বয়সের পুরুষদের অর্ধেকের বেশি এই রোগে ভোগে। বিজ্ঞানীদের মতে, যাদের ঘাড়ের ব্যাস ১৬.৩ ইঞ্চি বা ৩৫ সেন্টিমিটার বা তার চেয়ে কম তাদের পরিপাক প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে ও শরীর সহজে যৌনউদ্দীপ্ত হবে। কিন্তু ঘাড়ের ব্যাস এর চেয়ে বেশি হয়ে গেলেই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই গেলো শারীরিক, সামাজিক, নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির দিক , যেসব কারনে বাংলাদেশে বহু বিবাহ করেও ইহসান প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এবার চলুন আজকের কেইস স্টাডি গুলোর দিকে।
কেস স্টাডি- ২
তিনি এলাকার নামকরা ডাক্তার । প্রচুর পয়সা কামিয়েছেন। ঢাকা শহরে তার আলিসান তিন খানা বাড়ি আছে। বয়স ৫৫ প্লাস। ভাড়া বাড়ির ভাড়া নিতে যান ডাক্তার সাহেব নিয়মিত। ম্যানেজার এর একটি কন্যা আছে। নাম সাবিনা। ভাড়া নিতে গেলেই সাবিনা এসে পা টিপে দেয়, সরবত বানিয়ে খাওয়ায়। সাবিনার আন্তরিকতা আর চপলায় মুগ্ধ ডাক্তার সাহেব!
কিন্তু, তার বাসায় ও বউ আছেন। আর তাকে তিনি ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন। তাদের ৪ টি কন্যা ও আছে। কন্যাদের মধ্যে ৩ জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের শ্বশুর বাড়িতেই বা কি বলবেন ডাক্তার সাহেব!
কিন্তু, ম্যানেজার ডাক্তারকে সাত পাচ বুঝিয়ে সাবিনাকে তার সাথে বিয়ে দিলেন। এরপর ডাক্তার ৩ বাড়ির এক বাড়ি সাবিনাকে লিখে দিলেন। আগের বউ আগের যায়গায়ই থাকলো। তার ও বয়স হয়েছে। সারা দিন একলা একলা লাগে। কিন্তু ডাক্তার সাহেব সপ্তাহে একদিন বাসায় আসেন। তাও নামকাওাস্তে। ঠিকভাবে কথা ও বলেন না। জরুরী কথা সেরে আবার ২য় বউয়ের কাছে ছুট। অবসরের সঙ্গী তার কেউ নয়। এই যৌবনহীন ভাটা তাকে নিঃসঙ্গ করে দিয়েছে। বসে বসে তিনি সতীনের প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করেন।
কেস স্টাডি- ৩
পাখি একজন পোশাক কর্মী। বয়স একদমই অল্প। অল্প বয়সে সেলিমের সাথে তার বিয়ে হয়। যদিও পাখি তখন জানতো না , সেলিমের আরেকটা বউ আছে। পাখির ঘরে সুন্দর একটা ফুটফুটে ছেলে হওয়া পর্যন্ত সেলিম তারই ছিল। এরপর সেলিমের কি জানি হয়! ধীরে ধীরে তার আগের বিয়ের কথা জানা যায়। সেলিম এখন আর তেমন আসেনা পাখির বস্তিতে। মাঝে মাঝে মেহমানের মতোই আসে খায় দ্বায় চলে যায়। পাখিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- কেন? তোমার জামাই ২ ঘরেই সমান জত্ন নিক না! ঐ ঘরেও একটা সন্তান, তোমার ও একটা সন্তান!
- আফা! কফালে না থাকলে কি আর সুখ অয়? হে আমার সতীনের লেইগাই পাগল! যদি জানতাম! ব্যাডার আরেকটা বউ আছে!
- তোমারে বিয়ে করছে কেন জিজ্ঞেস করতে পারো না?
- আমারে বিয়া না করলে হের সংসার চলবো ক্যামনে! আমার বেতনের অর্ধেক হেয় লইয়া যায় তো!
- তুমি কিছু বোলো না?
- কিছু কইলেই কয়! আমি কুনো গুনাহ করি নাই! ৪ টা করা জায়েজ আছে।
প্রথম জনের চেয়ে অধিক সুন্দর বা বিয়ের কয়দিন পরেই যাদের আর তাদের বউকে ভালো লাগেনা, আরও সুন্দর বিয়ে করার ইচ্ছা জাগে তাদের জন্য
সম্প্রতি স্পেনের ইউনিভার্সিটি অফ ভ্যালেন্সিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, কোন সুন্দরীর সঙ্গে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় কাটালেই ঘটতে পারে যেকোন দুর্ঘটনা। সুন্দরী নারীর সঙ্গে মাত্র ৫ মিনিট সময় কাটালে পুরুষের শরীর থেকে কর্টিসল নামের একটি হরমোন নির্গত হয়। শরীরে কর্টিসল তৈরী হয় কোন শারীরিক বা মানসিক চাপের ফলে। আর এর সঙ্গে সঙ্গে তৈরী হয় হার্টের সমস্যাও। এমনকি ডায়াবেটিক ও উচ্চরক্তচাপেরও কারণ হয় কর্টিসলের হঠাৎ মাত্রা বৃদ্ধি।
বহু বিবাহ জিনা ব্যভিচার রোধের এক উত্তম পন্থা। কিন্তু , বাংলাদেশের বেশীরভাগ ছেলেই উপরের কারনগুলোর ফলশ্রুতিতে ইহসান করার যোগ্য নয়। যে ব্যক্তি একের প্রতি ইহসান করতে পারে না, তার কোন অধিকার নেই আরেকজনকে জীবনে জড়িয়ে যন্ত্রণা দেওয়ার। ইসলাম একজনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে আরেকজনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ধর্ম নয়। ইসলাম সমতার ধর্ম, সাম্যের ধর্ম। ইসলামের নাম করে একজনকে অধিকার বঞ্চিত করে আরেকজনকে বিয়ে করে সমাজের বোঝা হালকা করতে ইসলাম আপনাকে বলেনি। সুতরাং, ২য় বিয়ে করার আগে আপনিই ভাবুন, আপনি নারীকে কতোটা সম্মানের চোখে দেখেন আপনার নিজের শারিরিক মানসিক, আত্মিক, আর্থিক সামর্থ্য কতোটা উপযোগী! আর উপযোগী না হলে নিজের স্ত্রীকেই ভালবাসুন। আল্লাহই তো বলেছেন, স্ত্রীকে অপছন্দ করলেও হয়তো তার মধ্যেই কোন কল্যাণ আছে, যা আপনি বুঝতে পারছেন না! তবে, যদি ইহসান করতে পারেন, ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম! যদিও এটা এই যুগের প্রেক্ষিতে একটু কঠিনই না দুঃসাধ্য!
বিষয়: বিবিধ
১৮৩২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করলাম না।
আপনার পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ। ভাল লিখেছেন।
০ বাংলাদেশের জনসংখ্যার দিকে লক্ষ্য না করেই মনে হয় এই ক্ষোভ ঝেড়েছেন ।
সৌদি পুরুষরা সবাই না , যারা শেখ গোত্রীয় তারা । আর ওরা তো সপ্তাহ দুয়েকের জন্য ভারতে বেড়াতে এসে মৌজ মাস্তি করতে কন্ট্রাক্ট বিয়ে করে । পরে তালাক ও টাকা দিয়ে চলে যায় ।
আরবদের সাফাই গাইতে গিয়ে এ কথাটা কেন এড়িয়ে গেলেন , সেটা আপনিই ভাল বলতে পারবেন আর অবশ্যই পারবে আল্লাহ ।
''এটা তৃতীয় বিশ্বের হতদরিদ্র একটি দেশ। এই দেশের আয়ের একটা বড় উৎস পোশাক শিল্প, যেখানে নারী শ্রমিকরাই বেশী কাজ করে। এই নারী শ্রমিকরা মোটামুটি ভাবে তাদের সংসার টেনে চলেন। আর যেসব পুরুষরা বউয়ের টাকার প্রতি একটু লোভী, তারা পোশাক শিল্পীদের বিয়ে করতে আগ্রহী হয়। ''
০ পোশাক শিল্পীদের দাবী তাহলে আদায় হয়ে গেছে ! কত স্যালারী এখন তাদের যে তাদের বেতনের টাকার প্রতি পুরুষের লোভ থাকে যার জন্য এদেরকেই বিয়ে করে ? বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা মেয়েরা নিশ্চয়ই লাইন লাগিয়েছে পোশাক শিল্পী হতে! কি পশ চাকরি আর কি বেতনরে বাবা ! ছেলেরা বিয়ে করতে এদেরকেই প্রায়রিটি দেয় !?
এই লোভ তো থাকে মেয়েদের । দেখা যায় যে সমবয়সী ছেলের সাথে প্রেম করে বিয়ে করে পয়সাওয়ালা মৃতপ্রায় এক বুড়োকে , স্রেফ বুড়ো মরে গেলে তার টাকার ভাগ সে পাবে বলে ।
যার টাকা বেশী মেয়েরা তাকেই চুজ করে ।
এটা ধ্রুব সত্য।
( অক্ষয়-কারিনা-প্রিয়াংকা - অমরেশ পুরি অভিনীত বলিউডিয়ান মুভি - এইতরাজ দেখে নিয়েন)
''প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে করা এই জরিপে দেখা গেছে, নারীরা সারা জীবনে একবার হলেও স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, এর হার ৮৭.৭ শতাংশ। আর কর্মস্থলে নির্যাতনের হার ১৬.২ শতাংশ। ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভিএডব্লিউ সার্ভে ২০১১) প্রকাশিত হয় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর।''
০ এটাকে মেনে না নেওয়ার কোন কারনই নেই । বাংলাদেশে ৯০% লোকই হচ্ছে মুসলমান । শরিয়তই তাকে দিয়েছে স্ত্রীকে প্রহার করার অনুমতি একটা বিশেষ পর্যায়ে গিয়ে । এটাকেই যারা ইসলামী শরিয়ত মানে না তারা নির্যাতনের কালার দেয় ।
জরিপগুলোতে মহিলাদের প্রশ্ন করা হয়েছে এবং তারা উত্তরও দিয়েছে তাদের মত করে । এখন আসিফ মহিউদ্দিনদেরকে যদি ইসলাম সম্পর্কে বলতে বলা হয় তখন তারা যা বলবে তাই মাথা পেতে নিতে হবে ?
এই জরিপে কেন তাদেরকে নির্যাতন(!) করা হয়েছিল তা কিন্তু বলা হয় নি ।
সূরা ইউসূফের ঘটনা আমাদের কিন্তু অন্য কিছুই বলে ।
''নারীদের ছলনা ভয়ংকর ''
আজিজ কিন্তু তার স্ত্রী জুলেখার কথাতেই গলে যান নি , সেটার ভেরিফাই করেছিলেন । এর ফলশ্রুতিতেই কথাটি এসেছে ।
''এই দেশে মেয়েরা বাহিরে যতোটা নির্যাতিত হয়, তারচেয়ে ঘরে বেশী নির্যাতিত। ছোটবেলা থেকেই ছেলেরা নারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে করেই বড় হতে শেখে। পরিবার থেকেই ছেলেরা শেখেনা সম্মান কীভাবে করতে হয় মায়ের জাতিকে।''
০ বাংলাদেশের পুরুষেরা নারীদের যে সন্মান করে সেটা দুনিয়াতে অনন্য । আরব পর্যন্ত যেতে হবে না , পাশের দেশ ভারতে খবর নেন সেখানে মেয়েদের কি হাল ।
এখানে একজন ছেলে কোন মেয়ে টিজ হলে জীবন দিয়ে তার প্রতিরোধ করার জন্য এগিয়ে আসে । ছিনতাই কারীদের হাত থেকে বাঁচাতে এসে নিজের জীবন দেয় । বাসে ট্রেনে মহিলাদের মা বোন জ্ঞান করে ছিট ছেড়ে দেয় ।
কোন মেয়ে কোন ছেলে তো দূরে থাক কোন বয়ষ্ক মুরুব্বীর জন্যও এমনকি নিজের স্বজাতির জন্যও এরকম করে না ।
ভাই যেমন তার বোনকে ইভ টিজারের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে , বোনকে কোন কালেও ভাবীর মানসিক নির্যাতনের হাত থেকে ভাই ও মাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসতে দেখা যায় না ।
পাড়ার কোন ছেলে টিজ করলে খুব প্রতিবাদ হয় , আর শাহরুখ এসে চুমু খেলে কিসের প্রতিবাদ , উল্টো মনটা খুশীতে ভরে উঠে - এটা ঘটেছে ।
এসব নারী নির্যাতন ভারতসহ আরো অনেক উন্নত বিশ্বে হরহামেশা হয় , বাংলাদেশের চেয়ে কয়েকগুন বেশী । সেখানে তো এত উচ্চ বাচ্য হয় না !
বাংলাদেশে তো নারীরা ক্ষমতায় আছে দুই যুগ ধরে । সেটা তো আমেরিকাতেও নেই ।
বাংলাদেশের মেয়েরা যে স্বাধীনতা পায় সেটার উদাহরন পৃথিবীর আর কোন দেশেই নেই ।
''আপনার দেশে কি আপনি পেরেছেন নারীকে সেই সম্মান দিতে?
আমি জানি – অনেকেই বলবেন, বহু বিবাহ করে আরেক হতভাগ্য নারীর পাশে দাঁড়ানোই আপনাদের উদ্দেশ্য!
ভাই, একটু থামেন! আপনি সেই ব্যক্তিই, যে নিজের বউকে সময় দিতে পারেন না, সন্তানকে ভরন পোষণ দিতে পারেন না, তত্ত্বাবধায়ন করতে পারেন না! নিজের বাবা মা আর বউয়ের মধ্যে ইহসান প্রতিষ্ঠা করতেই আপনার তেলে বেতেল অবস্থা! কি করে ভাবেন আপনি আরেকটা নারীর প্রতি সমান আচরণ করতে পারবেন? যেখানে একটাতেই ব্যর্থ আপনি! ''
০ সময় না দিতে পারার কারনই তো বউয়ের ভরনপোষনের জন্য টাকা কামানো , ছেলেমেয়েদের জন্যও ।
বসে বসে আরাম আয়েশ করলে কি দুনিয়া চলবে ? টাকা কি গাছে ধরে যে চাইলেও চলে আসবে ? এত যে ইচ্ছামত লাক্সারী হচ্ছে , কোথা থেকে টাকা আসে হুশ আছে ?
বেশী খাই খাই স্বভাবের না হয়ে যদি শরিয়ত মত অল্পতেই তুষ্ট মানসিকতার হয় বউয়েরা , তাহলে স্বামীর বউকে সময় দেওয়া কোন ব্যাপারই না আর সে শরিয়ত মোতাবেক ৪ টা বিয়ে খুব সহজেই করতে পারে যদিও অনেকে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা করে না ।
***************************************************************
নবীদের সাথে সাধারন মানুষের তুলনা করা ঠিক না । সাধারন মানুষের ওয়াইফরা বিভিন্ন বিলাসিতার জন্য তাদের স্বামীদের যে চাপে রাখে নবীদের জীবনে এরকম কিছু মোটেও শোনা যায় নি । আল্লাহ তায়ালা নবীদের দিয়ে ধর্ম প্রচার ঠিকভাবে চালানোর জন্য তাদের এই মহা ঝামেলা থেকে রেহাই দিয়েছিলেন ।
আর আমাদের মুসলিম সমাজে স্বামীর ২য় বিয়ে নিয়ে যে স্ত্রীর অনুমতির বিধান রাখা হয়েছে সেটা নবীদের আমলে ছিল না । এমন শোনা যায় না যে একাধিক বিয়ে করার কারণে নবীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার স্ত্রী । বরং ইব্রাহীম (আঃ)কে তার প্রথম স্ত্রী ২য় বিয়ে করার জন্য বলেছিলেন ।
**************************************************************
ছেলেদের ইরেকটাইল ডিসফাংশন নিয়ে যা বলছেন , এটা তো বুমেরাং হয়ে আপনাদের কাছেই আসবে ।
আপনাদের জৌলুশ থাকে বড় জোড় ৩৩-৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত । ৪৫ এর পর সন্তান জন্মদানে আর সক্ষম থাকেন না ।
একজন পুরুষের সেটা থাকে ৬০-৭০ বছর বয়স পর্যন্ত, আরও বেশী (এরশাদ)। আর পোটেন্ট তো ৯০ বছরেও থাকে ।
তাই ৪৫ বছর বয়সে একজন নারী যদি আর আকর্ষনীয় না থাকে এবং সন্তান জন্মদানেও সক্ষম না থাকে , তখন একজন একটিভ পুরুষ কি করবে ?
অনেক উদার মনের বলেই সে তার সঙ্গিনীর সাথে জীবন পার করে দেয় । তার জন্য সিংহাসনও ত্যাগ করতে পারে , বিশাল মনুমেন্ট বানাতে পারে ।
রোমানার কথা খেয়াল আছে । ৭ বছরের প্রেম আর ১১ বছরের সংসার কি পেরেছিল সাঈদের সংসারে রোমানাকে রাখতে যখন সাঈদ চোখের সমস্যার কারণে প্রায়ই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিল ? রোমানার জন্য সে যে তার সিএনজি বিক্রি করে দিয়েছিল সেটার মমত্ব কি রোমানা বুঝতে পেরেছিল?
মন্তব্য করতে লগইন করুন