পেটের দায়ে পতিতাবৃত্তি
লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:০২:১৮ সকাল
পেশা হিসেবে পতিতাবৃত্তি!! নারী হিসেবে একশ্রেণী আছেন যারা নেতা গত্রীয় তাদের শ্লোগান হল-- আমার দেহ আমার অধিকার--। অবশ্যই কেন নয়। আবার আমাদের মাঝেও একশ্রেণী আছেন যারা সব সময়ই এদের পক্ষেই বলে থাকেন বা লিখে থাকেন হয়তো বা কিছু জেনে আর না হয়তো কিছু না জেনে শুধুই আবেগের বশবর্তী হয়ে। তাদের মতামত হচ্ছে দুর্দশায় পড়ে বা প্রতারিত হয়ে এই পথে আশা। অধিকাংশই কথাটি মানলে আমি মানতে নারাজ অনন্ত আমার সাথে একমত হবেন আরো অনেকেই যারা কিনা আমার মত পোষাক শিল্পে কামলা খেটে থাকনে। আসলে এই পেশায় যারা জরিত তাদের একদিকে যেমন বহুগামিতা নেশা অন্যদিকে ৫মিনিটে ৫০০টাকা আসলে সারাটা মাস জুরে পরিশ্রম করতে যাবে কে? প্রথম ঘটনাটি অতিসাম্প্রীতি-
কাস্টস থেকে একটি ফোন কল এল- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পর্যায় থেকে; ব্যাক্তিটি আমার এলাকার এবং বেশ ভাল সম্পর্ক। কুশল বিনিময়ের পর সবিনয়ে অনুরোধ জানালো একটি মেয়ের চাকুরীর জন্য হেলপার পদে। যাদের বেতন এখন ইপিজেড এলাকায় অবস্থিত কারখানা গুলোতে ৪৭০০/= ৮ঘন্টার জন্য প্রথম তিন মাস আর তিনমাস পর থেকে ৫৩০০/= প্রতি ৮ঘন্টার জন্য। এ পদে সচারচর মেয়ে আসলেই নেয়া হয় যদি তার আচার আচরণ ভাবভঙ্গী কাজ করবে বলে মনে হয়। এইচআর এর নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করে আসতে বললাম। কদিন বাদে আসলে তাকে কিছু দিক নির্দেশনা দিয়ে বলা হল যদি তিনি এগুলি বাদ দিতে পারেন তা হলেই আসতে পারেন। যেগুলি বাদ দিতে বলা হয়েছিল সেগুলি হল-
যেহেতু আমার হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্ট তৈরী করি আর এগুলার দামও অনেক বেশী তাই
# লিপিষ্টিক
# মেকাপ
# অতিরিক্ত পাওডার
# বড় নখ
# বিষ্কিট ব্যাতিত অন্য সকল খাবার (কারখানা থেকে খাবার বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা হয়)
# তৈলাক্ত ভর্তা
# আচার
# তেতুল ইত্যাতি।
যা হউক ফাইনালি মেডিকেলে গিয়ে আটকে গেল কিছু কারনে- তারপরও লোকের দরকার আর যেহেতু সুপারিশ তাই নিয়ে নেয়া হল। যেহেতু আমারা লোক নিয়োগ বা উৎপাদন সংক্রান্ত কোন বিষেয় কাজ করি না তাই আর খোজ নেয়াও হয় নাই। মাস দুয়েক পর এইচআর থেকে জানালো আপনার পরিচয় সূত্রের মেয়েটি মাঝে মাঝেই অনুপস্থিত থাকে; আমিবিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বললাম। যাহউক তাকে শতর্ক করা হল। তার কিছুদিন পরই ফোন সেই মেয়েটি বলল ভাই আমার ভাই দুর্ঘটনা কবলিত আমার ৫০০/=টাকা ধার দেন। নিজে না দিয়ে এইচআরকে বলে একাউন্ট থেকে দিয়ে দিতে বললাম।
ফোন আসল তার মাস দেড়েক পর- সেই মেয়েটি আবারো ফোন করল স্যার আমিতো গত ১০দিন যায় না আমি গেলে কি আবার ঢুকতে দিবে? আমি বললাম আপনি এইচআরের সঙ্গে কথা বলেন, আমাকে অনুরোধ করল একটু কথা বলে জানাতে বললে আমি কথা বলতে অস্বীকার করলে কিছু সময় পর দেখি আবার ফোন করল সেই কাসটমস কর্মকর্তা। উত্তরে বললাম পরে জানাব। পরের দিন এইচআরকে বললে এইচআর তার হিস্টোরী প্রিন্ট করে নিয়ে আসল যেখানে দেখা গেল ২.৫মাসের মধ্যে ৯দিন অনুপস্থিত ১৩দিন লেট। ১টা শোকস লেটার। ঘটনা জানালে তারপরও কাস্টমস কর্মকর্তা অনুরোধ করলে মাসখানেক পরে আবার আসতে বললাম। মাসখাকেন পরে আবারও মেয়েটি আসলে নিয়োগ দেয়া হয় আগের পদেই। কিন্তু তার ১দিন পরথেকেই আর আসে নাই। এবার এইচআর থেকে বেশ খারাপ ভাবেই বলা হল- দেখেন এই সব রেফারেন্সের মেয়েদের কি হয়।
সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিলাম সেই কাস্টমস সহকারী কর্মকর্তাকে। উদিন বলল ভাই আমার কাছে এসেছিল মেয়েটি গরিব মানুষ, স্বামী নাই দুটি বাচ্চা নিয়ে বাপের বাড়ী থাকে আর তাতে আমি আপনাকে অনুরোধ করি। তার সঙ্গে কথা বলে রেখে দিলাম।
তার ঠিক দুদিন পরই এইচআর এসে টেবিলের সামনে হাজরি- মিতা (এইচআর ম্যানেজার আর আমার নাম এক সেই সুবাদে মিতা ডাকে) ঘটনাতো বেশ বেগতিক। বিস্তারিত জানতে চাইলে জানাল গতরাতেতাকে ফোন করেছিল ডিবি থেকে আপনার রেফারেন্সের সেই মেয়ে তো পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল অসামাজি কাজে গিয়ে।
ঘটনা জানালাম সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে সেই কর্মকর্তাকে। শুনে কিছুটা হতাশই হল মনে হয়।
ঘটনা ২#
ঢাকা ইপিজেড থেকে বাসে আসতে পাশের পেছনের ছিটে থাকা একটি মেয়ে নামল সাথে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে। সামনে এসে বলল ভাইয়া আপনি ______ ফ্যাক্টরীতে চাকরী করেন না। বললাম হ্যাঁ। তারপর জানাল সে পাশের একটি ফ্যাক্টরীত চাকুরী করত তাকে বের করে দিয়েছে। তার একটি চাকরী দরকার, কিছুদিন প্রিন্টিং কারখানায়ও চাকুরী করেছে। সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পরিচিতি মুন্সীগঞ্জের এক রুমমেটকে ফোন দিলাম যে কিনা তখন প্রিন্টিং এন্ড এ্যাম্বডারি কারখানা দিয়িছিল খিলগাঁয়ে। মোবাইল নাম্বার দিয়ে পাঠিয়ে দিতে বলল। মোবাইল নাম্বার দিয়ে যেতে বললাম। কিদিন বাদেই ফোন দিল মাহবুব ভাই- বলল ভাই আপনি আসলেই বোকাচোদা টাইপের এই মেয়ে যে খারাপ মেয়ে সেটি কি আপনি তার কথাবার্তায় বোঝেন নাই। আসতে না আসতেই তো আমার এখানে ছেলেদের সাথে থাকা শুরু করেছে। এরে রাখলে তো আমার কারখানা বন্ধ করতে হবে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম আমার ব্যবসায়িক স্বার্থে যে কোন ধরনের সিদ্ধন্ত আপনার হাতে।
এরকম অনেক ঘটনা এই ট্রেডে দেখতে পাওয়া যায় যারা পেটের দায়ে নয় স্বভাবেই আর অল্প পরিশ্রমে বেশী টাকা আসে তা হলে ক্ষতি কিসে।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন