আওয়ামীলীগে কি একজন কামারুজ্জান পাওয়া যাবে..? হে বিশাল আকাশের মালিক..! তোমার গোলামকে রক্ষা করো মাবুদ..।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১০ এপ্রিল, ২০১৫, ১২:৩৬:৫২ রাত
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান একটি আন্দোলন ও একটি বিষ্ময়কর প্রতিভার নাম, যা যুগ নয়, শতাব্দীর ক্ষনজন্মা ইসলামী আন্দোলনের এক অগ্রসেনানী নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। যিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসাবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সেরা মেধাবী ছাত্র।
যিনি একাধারে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন। মেধাবী সাহসী শহীদি কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের মত একটি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ঐতিহাসিক অবদান কারীদের একজন তিনি। তাঁর ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে এদেশের মানুষ সমাজ, সভ্যতা ও পাশ্চাত্যের নানা অসঙ্গতির ইতিহাস জানতে সক্ষম হয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুনগত পরিবর্তন, ও জবাবদিহিতার লড়াইয়ে তিনি অন্যতম সৈনিক। দেশে-বিদেশে সভা-সেমিনারে তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী উপস্থাপনা সেক্যুলার ও বামপন্থীদের ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে জিঘাংসা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সেখান থেকেই শুরু হয় হত্যার পরিকল্পনা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শীতা অর্জনে খুব অল্প সময়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে তাঁর। মূলত যারা আদর্শের লড়াইয়ে পরাজিত তারাই ইসলামী আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চায়। হত্যা, গুম, অপহরণ এবং বিচারের নামে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যার ভিন্ন অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছে।
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মেধা, যোগ্যতা, নেতৃত্বের গুণাবলী ও নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়েই প্রতিপক্ষরা তৈরি করছে তাঁকে হত্যার গভীর নীল নকশা ।
পৃথিবীর সকল নীতি-নৈতিকতা, মানবাধিকারকে উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যার পর আবার জনাব কামারুজ্জামানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, লেখক, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, সদালোপী প্রাণপুরুষ।
আজকের এই মূহূর্তে বিশ্বের কোটি-কোটি মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর অশ্রুশিক্ত চোখে জায়নামাজ ভাসাচ্ছে এই প্রিয় মানুষটির জন্য। আজ যেন হত্যা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে মানবাধিকার, সত্যপন্থা, কল্যাণ, সুন্দর আর ন্যায়ের প্রতিককে।
কুলষিত করা হচ্ছে সত্য, সুন্দর, বিনয়, আর ভদ্রতাকে। জনাব কামারুজ্জামান নিজেই তাঁর দীর্ঘ সাফল্যমন্ডীত কর্ম, বুদ্ধিদীপ্ত পথের আবিষ্কারক। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৫২ সালের ৪ জুলাই শেরপুর জেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মুদিপাড়া গ্রামে এক ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তাহার শিক্ষাজীবন, কামারুজ্জামান অত্যন্ত মেধাবী । কুমরী কালিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনায় হাতেখড়ি। ১৯৬৭ সালে জিকেএম ইন্সটিটিউশন থেকে ৪টি বিষয়ে লেটারসহ এসএসসি, মোমেনশাহী নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৩ (১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত) সালে ঢাকা আইডিয়াল কলেজ থেকে ডিস্ট্রিংশনসহ বিএ পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবৃত্তি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে কৃতিত্বের সাথে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক ময়দান, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রাম, গণমাধ্যম তথা সাংবাদিকতা ও কূটনৈতিক মহলসহ দেশের সর্বত্র একটি আলোচিত নেতৃত্ব। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আজ কামারুজ্জামান একটি উল্লেখযোগ্য নাম।
একজন রাজনীতিবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। বাংলাদেশে আদর্শ ও ইসলামী রাজনৈতিক ধারা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বিগত চার দশক ধরে তাঁর মেধা বুদ্ধি দিয়ে নিরলস পরিশ্রম ও আন্দোলন সংগ্রামে আত্মনিবেদিত এক প্রাণ।
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি, কেন্দ্রিয় সেক্রেটারী জেনারেল ও ১৯৭৮-৮৯ সালেও শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে পুন:নির্বাচিত হন। এই প্রতিভাধর মানুষটি আন্তজার্তিক আঙ্গনেও অনেক অবদান রেখেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের যুব মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ১৯৭৯ সালে মৌচাক স্কাউট ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক ইসলামী যুব সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে তিনি প্রধান সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় যুব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন শেরপুরের আরেক কৃতী সন্তান মরহুম খন্দকার আব্দুল হামিদ।এই সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন।
ছাত্রজীবন পরিসমাপ্তির পর জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলা মাসিক ‘ঢাকা ডাইজেস্ট’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও ১৯৮১ সালে তাঁকে সাপ্তাহিক ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোনার বাংলায় ক্ষুরধার লেখনির কারণে এরশাদের শাসনামলে পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ হয়। ‘সোনার বাংলা’ রাজনৈতিক কলাম ও বিশ্লেষণে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দশ বছর দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের একজন সদস্য এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য। ১৯৮৫-৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে তিনি ছিলেন প্রথম কাতারে। রাজপথে এবং অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তিনি ছিলেন সদা তৎপর।
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৭৯ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।
১৯৮১-৮২ সালে তিনি কিছুদিনের জন্য ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারী, ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯২ সাল কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এবং ১৯৯২ সাল থেকে তিনি জামায়াতের অন্যতম সহকারী সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসাবে বিগত স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ১৯৮৩-৯০ পর্যন্ত তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৩-৯৫ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে তিনি জামায়াতের কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটি, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও বিভিন্ন কমিটির সদস্য এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সেক্রেটারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। চারদলের কেন্দ্রীয় লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসাবে তাঁর অবদান উলেখযোগ্য।
ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য প্রচেষ্টায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এজন্য দলীয় রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন ফোরামে সভা-সমাবেশ, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি সকল মহলে সাড়া জাগিয়েছে।
রাজনৈতিক ময়দানে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের রাজনীতি, ইসলামী সংগঠন ও আন্দোলন, গণতন্ত্র ও তার বিকাশ, নির্বাচন, গণমাধ্যম, সমাজ সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রচুর চিন্তা ও গবেষণা করে চলেছেন।
তিনি বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও তার কৌশল নিয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং সেই বইগুলো পাঠকমহলে বেশ সমাদৃত হয়েছে। তাঁর সর্বশেষ বই ‘সাঈদ বদিউজ্জামান নুসরী’ সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় বিগত কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে যা পাঠক মহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান যেমন একদিকে সফল রাজনীতিবিদ ও সংগঠক অন্যদিকে একজন সফল সাংবাদিক ও সম্পাদক। তাঁরই সফল সম্পাদনায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক সোনার বাংলা আজ বাংলাদেশের শীর্ষে অবস্থানকারী সাপ্তাহিক পত্রিকা।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মুহাম্মদ কামারুজ্জামান তাই আজ সরকার ও ইসলাম বিরোধী রাজনৈতিক মহলের মারাত্মক অপপ্রচারের শিকার। সরকারের রোষানলে পড়ে দেশপ্রেমিক এই রাজনীতিবিদ আজ রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ডের মুখোমুখি দন্ডায়মান।
যে কথিত অভিযোগে কামারুজ্জামানকে আজ কারাগারে আটক রাখা হয়েছে সে অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী ও আদর্শিক চেতনার সমন্বয় ঘটিয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে অবদান রেখে চলেছেন। রাজনৈতিক ময়দানে তাঁর অবদান দেশের ইসলাম বিরোধী শক্তির সহ্য হচ্ছে না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে আজ যুদ্ধাপরাধের কথিত অভিযোগ।
হে আল্লাহ! তুমি ইসলামী আন্দোলনের খেদমতের জন্য তোমার প্রিয় গোলাম, আমাদের প্রিয় নেতা কামারুজ্জামান ভাইকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দাও হে বিশাল আরশের মালিক।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মানুষ মানুষের জন্য করবে ঠিক এত কিছু করবে কেন তার জীবন সংকটাপন্ন হয়?!
ওনার উচিত ছিলো আওয়ামী লীগের আন্দোলন করা...... কিন্তু তিনি....!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন