এ কে খন্দকারের স্মৃতিচারণ মূলক বই এবং কিছু কথা

লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:৩৮:০১ সন্ধ্যা





এ কে খন্দকারের স্মৃতিচারণ মূলক বই এবং কিছু কথা


বাঙ্গালী জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে অনিবার্য্য ভাবেই সশস্র যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় । আর এই যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমেই বাঙ্গালী জাতি পাক বর্বরদের শাসন শোষনের যাতাকল থেকে মুক্ত হয়, অর্জন করে রক্ত খচিত লাল সবুজের পাতাকার স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ।

আর এই স্বাধীনতার এই ৪৩ বছরের বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে গিয়ে বা স্মৃতি কথা লিখতে গিয়ে গুটিকয়েক লেখক জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে বাঙ্গালী জাতি-গোষ্টীর এই মহান অর্জনকে খন্ডিত আকারে উপস্থাপন করেছেন, বিতর্ক ছড়িয়েছেন সমাজে । মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্য করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন । দুঃখজনক হলেও সত্য, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারীদের দ্বারাই এই কাজটি বেশী হয়েছে ।

সম্প্রতি এই সশস্র যুদ্ধের একজন অন্যতম প্রধান সমর নায়ক একটি স্মৃতিচারণ মূলক বই লিখে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন । উনার লিখাকে কেউই পুরোপুরি সমর্থন করছেন না, সমর্থন করছেন সেইটুকু, যেটুকু যার পক্ষে যাচ্ছে অথবা যেটুকুতে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর বিব্রত হওয়ার উপাদান আছে । তাতে এতোটুকু বলা যায় বইটিতে আংশিক সত্য ওঠে এসেছে, পুরোপুরি সত্য বইটিতে প্রকাশ পায়নি । বইটি যদি পুরোপরি স্মৃতিকথার বই হতো, এতে ক্ষুব্ধতা প্রকাশের জায়গা থাকতো না । সমস্যা হচ্ছে উনি এই বইটিতে ইতিহাসের অনেক বিতর্কিত তথ্য তুলে ধরেছেন এবং কিছু প্রতিষ্ঠিত সত্য তথ্যের বিকৃতি ঘটিয়েছেন, কিন্তু উনি এসব তথ্যের অনুকূলে ইতিহাস অনুসৃত যথোপযুক্ত তথ্য-উপাত্তের সন্নিবেশ ঘটাননি । কোথাও বলেছেন শুনেছেন, কিন্তু কার কাছে কোথায় শুনেছেন তা নেই, আবার কোথাও বলেছেন উনি মনে করেন । যাহোক শুনা কথা, কান কথা বা উনি মনে করেন এমন যুক্তি দিয়ে ইতিহাসের বিতর্কিত তথ্য উপস্থাপন ঠিক না ।

ইতিহাসের অন্যতম সমর নায়ক, মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান এ কে খন্দকার (বীর উত্তম) সাহেবের এই ধরনের স্পর্শকাতর ইতিহাস চর্চা, তথ্য উপস্থাপনে খামখেয়ালীপনা এবং মনগড়া তথ্য উপস্থাপনে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন । এই বইটি উনাকে বর্তমানে বিতর্কিত অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে সত্য । কিন্তু এজন্য উনার অতীত বীরত্বপূর্ন অবদানকে খাটো করে দেখাও ঠিক হবে না, যারা খাটো করে দেখার চেষ্টা করছেন, তারা অন্যায় করছেন । ইতিহাসকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় ছেড়ে দেয়া উচিত । ইতিহাস নগ্নসত্য বা অমোঘ সত্য বা অবধারিত সত্যকেই স্বীকৃতি দেয় । অসত্য তথ্য সম্বলিত ইতিহাস একদিন না একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেই ।

এ কে খন্দকারের ১৯৭১ ভেতরে বাহিরে স্মৃতিচারন মূলক বইটি ইন্টারন্যাটের মাধ্যমে ডাউনলোড করে পড়েছি । মোদ্দাকথায় বলতে গেলে বইটিতে উনি যে শুধু কিছু বিতর্কিত তথ্যকে পুনরায় টেনে এনেছেন তা নয়, উনি কিছু নতুন বিতর্কও জন্ম দিয়েছেন । উনি বলেছেন সশস্র যুদ্ধের পরিকল্পনা রাজনীতিকদের ছিলনা, রাজনৈতিক নেতারা পাকিস্তান সরকারের দুরভিসন্ধিকে বুঝতে পারেননি এবং রাজনৈতিক নেতাদের অদূরদর্শীতা এবং যুদ্ধ ঘোষনা করতে ব্যর্থতার কারনে দেশের অনেক ধ্বংসযজ্ঞ ও অধীক সংখ্যক প্রাণহানী ঘটেছে, ৭ মার্চ যুদ্ধ ঘোষনা করলে কম ক্ষয়ক্ষতি ও অল্প সময়ের ব্যবধানে আমাদের স্বাধীনতা আসতো । তাছাড়া ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাসায় থেকে স্বেচ্ছায় এ্যারেষ্ট হওয়া ঠিক হয়নি, আত্মগোপনে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করা উচিত ছিল । বইটির বিভিন্ন অংশে সমালোচনার তীর্যক তীড় বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য রাজনীতিকদের ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে ।

সশস্র যুদ্ধের সেনা উপ-প্রধান বীর উত্তম এ কে খন্দকারের মত একজন শ্রদ্ধাভাজন প্রবীন ব্যক্তির লিখার সাথে দ্বিমত করার মত দৃষ্টতা আমার নেই । কারন যে সময়টাতে উনারা জীবনবাজী রেখে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে আমাদেরকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন সেই সময়ে আমার বয়স এক বৎসর পূর্ণ হয়নি । তারপরও লিখছি এই জন্য উনার লিখা নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক ভাবে লিখা-লিখি হচ্ছে । স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি বিরোধীতাকারী দল সমূহের বর্তমান সময়ের কর্মী সমর্থকদের উচ্ছাসের অন্ত নেই, এসব দেখে বিস্ময় লাগে, উনার লিখুনীর কোন অংশে ওদের জন্য প্রশংসাসূচক বক্তব্য নেই । অথচ ওরা বগল বাজিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করছে এবং মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী সরকার, বঙ্গবন্ধু এমনকী মহান মুক্তিযুদ্ধের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার মত মন্তব্য ছুঁড়ে দিচ্ছে ।

যাহোক, ইতিহাসের সত্যতা ঝাচাই বাছাই ঐতিহাসিকরাই করবেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জয় বাংলার পরে জয় পাকিস্তান বলেছিলেন কী বলেননি, সেই বিতর্কের সমাধান হয়তঃ বক্তব্যের রেকর্ড অর্থাৎ তৎকালিন পাকিস্তান রেডিওর আর্কাইভে খুঁজলে পাওয়া যেতে পারে । তবে ঐ সময়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে মঞ্চে থাকা আ স ম আবদুর রব, তোফায়েল আহমেদ ও নূরে আলম সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজন টিভি টকশো এবং পত্রিকায় লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন । তাছাড়া বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনের নিকট কেন স্বাধীনতার ঘোষনা রেকর্ডে সম্মতি দেননি এবং না পালিয়ে গিয়ে বাসায় থেকে এ্যারেষ্ট হওয়াতে স্বাধীনতা যুদ্ধের কী লাভ-ক্ষতি হয়েছে, তা ইতিহাসের বিশ্লেষকদের উপর ছেড়ে দিয়ে সাধারণ দৃষ্টিতে যে অসংগতি ও স্ববিরোধী বক্তব্যগুলো দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তা সামান্য আলোকপাত করবো । এক) ভূমিকাতেই লিখেছেন মার্চ মাসের দিকেই বুঝা যাচ্ছিল বাংলাদেশ স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, অথচ উনিই অন্য জায়গায় লিখলেন রাজনীতিবিদদের স্বাধীনতার পরিকল্পনা ছিলনা । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে তাহলে কারা দেশকে স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর করছিলো ? দুই) উনি লিখেছেন ফেব্রয়ারী-মার্চ মাসের দিকে পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তারা বাঙ্গালী সৈনিক অফিসারদের বিশেষ নজরে রাখছিলেন, তাই উনি ভয়ে অপরিচিত বাঙ্গালী সদস্যদের সাথেও আন্দোলন সম্পর্কে কোন কথা বলতেন না । আবার অন্য জায়গায় লিখেছেন উনাদের সাথে রাজনৈতিক নেতারা যোগাযোগ রাখলে সেনা সদস্যদের সংগঠিত করে অল্প সময়ে দেশকে স্বাধীন করতে পারতেন । প্রশ্ন আসে, যিনি অপরিচিত বাঙ্গালী সেনা সদস্যদের সাথে ভয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে কথাই বলতেন না, উনি কিভাবে অপরাপর বাঙ্গালী সেনা সদস্যদের যুদ্ধের জন্য সংগঠিত করতেন !

তাছাড়া উনি বলেছেন রাজনৈতিক নেতাদের স্বাধীনতার প্রস্তুতি ছিলনা, তাহলে প্রশ্ন জাগে, তৎকালিন ছাত্রনেতারা যে ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন, জাতীয় সংগীত গাইলেন এবং ৩রা মার্চ পল্টনে বিশাল ছাত্র সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠ করলেন, ২৩ মার্চ পল্টন ময়দানে তৎকালিন ছাত্রনেতারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং বাঙ্গালী জাতির জনক হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সামরিক ঢংয়ে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে অভিবাদন জানালেন এবং বঙ্গবন্ধুর হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিলেন, তারও অনেক আগে ৫৮ সালে সিরাজুল আলম খান, শেখ মনি, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমদদের নেতৃত্বে স্বাধীনতার লক্ষ্যে সশস্র প্রস্তুতির জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের নিউক্লিয়াস ও বি এল এফ গঠন করে অস্র সংগ্রহ ও অস্র প্রশিক্ষন দিচ্ছিলো, তাছাড়া ৬৯ সালে কম বয়সী তরুনদের দিয়ে ভিত্তি ফৌজ নামক বাহিনী গঠন করে আগরতলায় অস্র প্রশিক্ষন দিচ্ছিলো, এসব কী স্বাধীনতার প্রস্তুতী ছিল না !

তাছাড়া পাকিস্তানীরা যে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়েছিল, তার কী কোন বাস্তবতাই ছিলনা ! ৭০ এ নির্বাচনে বিশাল জয়ের পর বঙ্গবন্ধু এম এ জী ওসমানীকে উনার সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তাতে কী কোন ইঙ্গিত ছিলনা ! মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে তোফায়েল আহমেদ ও আবদুর রাজ্জাক ও আ স ম আবদুর রবদের বঙ্গবন্ধু কলকাতার একটি ঠিকানা মুখস্ত করিয়ে বলেছিলেন- সব ঠিক করা আছে, তোরা সময় মত ঐখানে গেলেই সব পাবি । এই সব কী স্বাধীনতার প্রস্তুতীর অর্থ বহন করে না !

বাস্তবতা হচ্ছে, খন্দকার সাহেব বিমান কর্মকর্তা হিসেবে ৫১ থেকে ৬৯ পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানে স্বপরিবারে থেকেছেন । উনার বইতে উনি পাকিস্তানে থাকাকালিন সময়ে পাকিস্তানীদের আন্তরিকতায় মুগ্ধতার কথা উল্লেখ করেছেন । উনি পশ্চিম পাকিস্তানে বিমান কর্মকর্তা হিসেবে আয়েশী জীবন এবং ওদের আতিথেয়তার মুগ্ধতায় মোহাবিষ্ট থাকলেও ঠিক একই সময়ে যে পূর্ববাংলার জনগন বাংলার জন-মানুষের অধিকার আদায়ে ৫২ ৬২ ৬৬ ৬৯ এ বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল, সেই মর্মস্পর্শী হৃদয় বিদারক কষ্টের দিনগুলির ছোঁয়া উনার বইয়ে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত । তাই স্বভাবতঃই বলা যায় বিমান বাহিনীর ব্যারাকে থাকার কারনে শ্রদ্ধাভাজন এ কে খন্দকার সাহেব ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গতি প্রকৃতি ও যুদ্ধের প্রস্তুতীকে ভালো ভাবে উপলব্ধিতে আনতে পারেননি । তাই উনার কাছে মুক্তিযুদ্ধকে প্রস্তুতীহীন যুদ্ধ মনে হয়েছে এবং এর দায়ভার রাজনীতিবিদ ও সর্বোপরি বঙ্গন্ধুর উপর চাপিয়েছেন । তবে উনার মতামতটা ঠিক না, রাজনীতিবিদরাই জাতিকে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করিয়েছে । তারই অংশ হিসেবে উনি নিজেও যুদ্ধ প্রক্রীয়ায় যুক্ত হতে পেরেছিলেন এবং অধীকতর বাস্তবতা হচ্ছে উনি নিজেও রাজনীতিবিদদের দ্বারা গঠিত মুজিব নগর সরকারের অধীনে সেনা উপ-প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে । অধিকন্ত আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যে একটা জনযুদ্ধ ছিল, তা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন ।

এছাড়াও উনি মুজিব বাহিনীর সরাসরি সম্মূখ যুদ্ধে অংশ গ্রহন নিয়েও সন্দেহ পোষন করেছেন এবং মুজিব বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর বিভিন্ন গন্ডগোল ও গোলাগুলির কথাও লিখেছেন এবং মুজিব বাহিনীকে লুটপাটকারী হিসেবে তুলে ধরেছেন । মুজিব বাহিনীর স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি স্বীকার করেই বলছি উনি বইটিতে পাক হানাদার ও ওদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদের নৃশংসতাকে পুরোপুরি এড়িয়ে গেছেন । এ কেমন স্মৃতিচারণ ! যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন, ওরাই আপনার স্মৃতিতে ধরা পড়ছেনা, ওদেরকে নিরাপদে রাখলেন, ওদের কোন নৃশংসতাই তুলে ধরলেন না অথচ কলমের খোঁচায় আহত করলেন স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান প্রানপুরুষ বঙ্গবন্ধুকে ।

বিষয়: রাজনীতি

২০০৩ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

265519
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো । লিখে যান
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৬
209193
মহি১১মাসুম লিখেছেন : সুশীল প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল আপনার প্রতি।
265528
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১০
শেখের পোলা লিখেছেন : যার যতটুকু ভাল লেগেছে সে ততটুকুই নিয়েছে৷ আমি আপনিও ব্যাতিক্রম নই৷
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৯
209194
মহি১১মাসুম লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন। আমি কিন্তু কোন বিশেষ ঘটনাকে প্রাধান্য না দিয়ে সার্বিক বিষয়টাকে সমালোচনায় এনেছিলাম।
ধন্যবাদ।।
265529
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১২
ষষ্ঠেন্দ্রিয় লিখেছেন : খন্দকারের বই লেখা বিষয়টা পুরোপুরি রাজনৈতিক।
কিন্তু তাই বলে ঘটনাগুলোকে তো আর রাজনৈতিক বক্তব্যের মত উড়িয়ে দেয়া যায় না।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:২৩
209196
মহি১১মাসুম লিখেছেন : উনি ইতিহাসের বিতর্কিত ঘটনা গুলিকে খুবই দূর্বলভাবে উল্লেখ করেছেন, পর্যাপ্ত যৌক্তিক রেফারেন্স ছাড়াই।
তাই হৈ চৈ বেশী হচ্ছে।
ধন্যবাদ।
265539
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৩৯
ফেরারী মন লিখেছেন : উনি আ'লীগের সত্য ফাঁস করেছেন এদিকে মওদুদ বিএনপির সত্য ফাঁস করেছেন। কি চমৎকার দেখা গেলো। তবে উনারা মারা যাওয়ার পর সকলের শ্রদ্ধা পাবেন।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:২১
209206
মহি১১মাসুম লিখেছেন : মতামতের জন্য ধন্যবাদ। দুঃখিত, আপনি বলবেন কী,কোন সত্য্ ফাঁস করেছে। আর যেই সব তথ্য দিয়েছেন। তার ভিত্তি খুবই দূর্বল এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। দয়া করে উনার বইটা পড়বেন। তা সম্ভব না হলে আমার পোষ্টটি আপনার সুন্দর নয়নটা বুলাবেন প্লীজ।
ধন্যবাদ সুনয়না ফেরারীকে।
265559
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:০০
মামুন লিখেছেন : এই বইটি এ,কে, খন্দকার সাহেব পরিকল্পনা মন্ত্রী থাকাকালীন কেন লিখলেন না? তখন লিখতে কি সমস্যা হচ্ছিল? এখন মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়াতেই কি লেখায় উৎসাহী হয়ে পড়লেন?
এরা সবাইই আসলে একই গোয়ালের গরু।
স্বার্থপর, ধান্দাবাজ টাইপের। '৭১ এ অবশ্যই তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। কিন্তু তাদের থেকে ঐ সকল সাধারণ বাংগালীরাও কম প্রশংসনীয় ছিলেন না- যারা যুদ্ধও করেছেন, স্বজন হারিয়েছেন এবং নিজেদের প্রাণ দিয়েছেন। এ,কে, খন্দকারেরা কেবলি পেয়েছেন- হারিয়েছেন কি টা শুনি?
লেখাটি ভালো লেগেছে।
অনেক শুভেচ্ছা। Rose Rose Rose Good Luck
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৮
209272
মহি১১মাসুম লিখেছেন : ধন্যবাদ মামুন ভাই। আপনার ক্ষুব্ধতার সাথে একমত পোষন করেই বলছি-স্বার্থকেন্দ্রিক অসত্য তথ্য উপস্থাপন একজন মানুষকে অনেক ছোট করে,যা উনাকেও করছে।
একাত্তরে কিছু না হারালেও রাজনীতির মাঠে মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন,এর বেশী কিছু জানা নেই।
আবারো ধন্যবাদ।
265579
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৫০
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) লিখেছেন : একাত্তরে আমি ছিলাম না। তবে আমার মনে হয় ম্যাক্সিমাম মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন চাকরি বাঁচানোর জন্য, পেট বাঁচানোর জন্য এবং সরকারী চাপে। হয়তো এ কে খন্দকার তেমন একজনই ছিলেন। যাইহোক দেশ এখন স্বাধীন না পরাধীন সে প্রশ্নটির উত্তর তিনি যদি রেখে যেতেন তাঁর বইয়ে তাহলে ভাল হত।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৫৫
209282
মহি১১মাসুম লিখেছেন : মিজান সাহেব আপনার ধারনা সমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যথোপযুক্ত নয়,বরং তৎকালিন পাক সরকারতো ভাতা দিত রাজাকারদের। মুক্তিযোদ্ধা চাপ প্রয়োগ করে বানানো সম্ভব নয়,মনের মধ্যে দেশ প্রেম না থাকলে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
265656
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:২৬
সাদাচোখে লিখেছেন : আমি দুঃখিত বইটি নিয়ে আপনার আলোচনা আমার কাছে খুব একটা এ্যাপিলিং মনে হয়নি - এর জন্য আপনি দায়ী নন।

এর মূল কারন সম্ভবতঃ এ বইয়ের উপজীব্য তথা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা শব্দ দুটি আমার কাছে লিটারেলী একটা অলীক, বায়বীয়, মরিচিকাতুল্য।

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা - এ নিয়ে যখনই আমি পক্ষে কিংবা বিপক্ষে চিন্তা করেছি - তখনই ব্যাক্তিগতভাবে আমার কাছে - শব্দদুটিকে - জনগনের সাথে রাজনৈতিক নেতাদের - বুঝে কিংবা না বুঝে করা - নিকৃষ্টতম, ঘৃন্য এক রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি ও প্রতারনা ভিন্ন অন্য কিছু মনে হয়নি।

এ প্রতারনা এমন বিভৎস্য, এমন সাইক্রিয়াটিক ডিসাঅর্ডারের মত - যাকে একবার শব্দ দুটো পেয়ে বসেছে - তার এ হতে উদ্ধার পাওয়া দুষ্কর বলে ইতিহাসে প্রতিপন্ন হয়েছে। সে মরতে প্রস্তুত হয় (মার্টিন লুথার কিং কিংবা গাঁজাবাসী দ্রষ্টব্য), যাকে তাকে মারতে উদ্দ্যত হয় (আইরিশ আর্মি, এলটিটিই, আল আকসা ব্রিগেড দ্রষ্টব্য), শত্রুর সাথে কোলাবরেশান তথা দেশদ্রোহিতা, ষঢ়যন্ত্র করতে মোরালি কোন বাধাঁ ই পায় না (আগরতলা, মোশাররফ দ্রষ্টব্য)।

শব্দদুটি মূলতঃ মানুষের মনে ও কানে এমন করে ইকো করতে থাকে - ঠিক যেমন 'জোচ্চর ব্যবসায়ী নারী কিংবা পুরুষ' সাধারন ক্লায়েন্ট এর কাছে 'সুখ' বিক্রি করে, সাধারন ক্লায়েন্ট সুখের জন্য সব উজাড় করে হারিয়ে হোমলেস নাম ধারন করে রাস্তায় ঘুমায়।

কথার মেশিন দিয়ে উৎপাদিত 'মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা' - গত ২ যুগ ধরে পৃথিবীতে নিরবচ্ছিন্নভাবে আমেরিকা ও এর মিত্র পশ্চিম ইউরোপ দেশে বিদেশে বিক্রি করে চলেছে - যার পরিনতি হিসাবে আমরা ইতোমধ্যে ক্লায়েন্ট হিসাবে আফগানিস্থানে খারজাই এন্ড কোং পেয়েছি, ইরাকে নুরি আল মালিকি পেয়েছি, লিবিয়া সিরিয়া, আলজেরিয়া ও ইয়েমেনে এখনো পেয়ে চলেছি। পুরো পশ্চিমা মানুষকে সাদা চামড়া ছাড়া আর বাকি দুনিয়াকে খুন করতে উদ্দ্যত করা হয়েছে এই দুটি শব্দের মাধ্যমে। আর ইদানিং মনে হচ্ছে পশ্চিমা মানুষজন আর সব মানুষের রক্ত বইয়ে দিতে তথা খুন করতে দিনকে দিন পাগল হয়ে উঠছে অনেক টা হিস্টারিয়াগ্রস্থ রোগীর ন্যায়।

সো মাহি ভাই - আপনাদের মত সু লেখক রা যদি চোখের আচ্ছাদন একটু সরাতেন, নিতান্তই পাইপের মধ্য দিয়ে সব না দেখতেন, খোলা মনে দেশ বিদেশ নিয়ে লিখতেন - তবে কে জানে আপনাদের কলমের আচঁড়ে অগনিত মানুষ হয়তো বেঁচে যেত, কেনা গোলাম হয়ে জড়ের ন্যায় জীবন ধারন করতে হত না, হেসে খেলে মানুষের মত কলকলিয়ে, খিলখিলিয়ে জীবনটা পাড়া প্রতিবেশী নিয়ে কাটাতে পারতো।

আবারো দুঃখ প্রকাশ করছি আপনার টপিকস এর বাহিরে গিয়ে কথা বলার জন্য।
265832
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : বিষয়টা এমন ভাবে উপস্থাপন হচ্ছে তাতে একমুখী আলোচনা হচ্ছে।
আমার মতে -
বামপন্থী এবং আওয়ামীলীগের মধ্যে কিছু বামপন্থী ও ভারতের অর্থে পালিত কিছু নেতা যাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।এর মধ্যে শেখ মুজিব ও ছিলেন। তিনি গাছেরটার সাথে তলারটাও কুড়াতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু সামগ্রিক দলীয়ভাবে আওয়ামীলগের কোন পরিকল্পনা ছিল না। এটা নতুন বা বিতর্কিত ইতিহাস নয়। বরং তা ই সত্য ইতিহাস।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩১
209693
মহি১১মাসুম লিখেছেন : ইবনে ভাই একি বললেন !-(বামপন্থী এবং আওয়ামীলীগের মধ্যে কিছু বামপন্থী ও ভারতের অর্থে পালিত কিছু নেতা যাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।এর মধ্যে শেখ মুজিব ও ছিলেন।)
ঐ সময়ে বামপন্থী বলতে কমিউনিষ্ট পার্টি,তাও তাদের চীনপন্থী অংশ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেননি আর সোভিয়েতপন্থীরাও দ্বিতীয় ধাপে সশস্রযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিল।
যাহোক আপনি শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগকে ৭১ এ নিয়ে ভাবছেন বোধহয়।
আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ ঠিকই সশস্র যুদ্ধের প্রস্তুতী নিচ্ছিলো।-(তৎকালিন ছাত্রনেতারা যে ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন, জাতীয় সংগীত গাইলেন এবং ৩রা মার্চ পল্টনে বিশাল ছাত্র সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠ করলেন, ২৩ মার্চ পল্টন ময়দানে তৎকালিন ছাত্রনেতারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং বাঙ্গালী জাতির জনক হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সামরিক ঢংয়ে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে অভিবাদন জানালেন এবং বঙ্গবন্ধুর হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিলেন, তারও অনেক আগে ৫৮ সালে সিরাজুল আলম খান, শেখ মনি, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমদদের নেতৃত্বে স্বাধীনতার লক্ষ্যে সশস্র প্রস্তুতির জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের নিউক্লিয়াস ও বি এল এফ গঠন করে অস্র সংগ্রহ ও অস্র প্রশিক্ষন দিচ্ছিলো, তাছাড়া ৬৯ সালে কম বয়সী তরুনদের দিয়ে ভিত্তি ফৌজ নামক বাহিনী গঠন করে আগরতলায় অস্র প্রশিক্ষন দিচ্ছিলো, এসব কী স্বাধীনতার প্রস্তুতী ছিল না ! )
ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File