নারী ------------- সেলিম জাহাঙ্গী *****************
লিখেছেন লিখেছেন সেলিম জাহাঙ্গীর ০২ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৪:২৯:১৬ বিকাল
যে নারী, আজ জন্মালো এদেশে
তার ভাগ্যের সুপ্রসন্ন পথভ্রষ্টতা শুরু হলো আজ থেকে।
তোমার বেড়ে উঠায় প্রতি পদে পদে সামজ
তোমাকে আষ্টেপুষ্টে বাঁধবে;
তোমার প্রতিবাদের প্রভব স্থানগুলো
মুর্জমান করা হবে,
পর্দার নামে তোমাকে নিক্ষেপ করা হবে
চার দেয়ালের মাঝে,
গায়ে পরিধান করানো হবে আপদ মস্তক
প্রতিরোধ বেড়ি।
তোমার কন্ঠস্বর যেন সোচ্চার না হয়
সে জন্য তোমার কথার আওয়াজ পুরুষের মাঝে
বের হতে দিবে না ----
সমাজ ধর্মের দোহায় দিয়ে তোমার পথ চলায়
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হবে।
নারী, একটি কথা মনে রেখো তোমার পিতা-মাতা
তোমার ভাইয়ের চেয়ে তোমার অধিকারের প্রতি
বিমাতাসুলভ---
ছেলেকে সম্পদের পুরো ভাগ দিলে তোমার বেলা ছয় নয়
খাওয়ার বেলা মাছের মাথা কিংবা গোটা ডিম
তোমাকে দেবে না, কারণ তুমি নারী।
তোমার অধিকার তোমাকেই আদায় করতে হবে?
নারী তোমার অধিকার এতোই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে,
তুমি ইচছা করলেই নিশ্চিন্তে একা পথ চলতে পারবে না।
এতে তোমার ধর্ষিতা হবার আশংকা
একশোতে এক’শ।
তোমার অধিকার সম্বন্ধে ভাষাবিদরা
ধর্ষণ হলে ধর্ষিতা বাংলা শব্দ বের করেছে
শুধু তোমাদের জন্য,
বিপরীত শব্দ তারা করেনি;
কারণ নারীকে কুলুশিত করতে
আদি যুগ থেকে তৈরী হয়েছে
রসাত্মক কথা মালা।
নারী,তুমি মনে রেখো
কোথাও তুমি একা বসবাসের জন্য
বাড়ী ভাড়া নিতে গেলে সমাজ তোমাকে দিবে না নারী বলে;
বলবে সঙ্গে কোন পুরুষ অভিভাবক আছে কি না?
তবে নারী, তুমি পুরুষ ছাড়া কোন অধিকার পাবে না?
সমাজ তোমার মূল্য দেবে না?
নারী,বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে সমাজ,
তোমাকে পৃথক জাতিতে রূপান্তর করেছে
ঠিক বিকলাঙ্গ বধিরদের মত;
তোমাদের অসহায় ভেবে মটরগাড়ীতে
তোমাদের জন্য আলাদা মহিলা আসন করা হয়েছে,
কারণ তোমরা দুর্বল, তোমরা অথর্ব
তোমাদের যেন হাত-পা নেই,
তোমরা যেন দাঁড়িয়ে যেতে পারো না।
ধিক্ তোমাদের, তোমরা কেন অসহায়?
আসলে তোমাদের বুকের মধ্যে
প্রতিবাদের আগুন নাই।
পুরুষরা তাদের বিভিন্ন অধিকারে প্রতিবাদে লড়াই করে
জ্বালাও পোড়াও করে;
তোমরা অধিকার আদায়ে নির্বোধ শিশু কেন?
তোমাদের শরীরে উদ্যোমতা নেই?
নারী জেনে রেখো ধর্ম তোমাদের প্রতি
সম-অধিকারের কথা বললেও পুরুষদেরকে প্রাধান্য দিয়েছে বেশী
নারীর অক্ষমতায় পুরুষ একাধিক বিয়ে করতে পারে,
কিন্তু পুরুষের অক্ষমতায় নারী একাধিক বিয়ে করতে পারবে না কেন?
ধর্ম মতে নারী-পুরুষ যদি সমান হয়
পুরুষরা যদি নেতা হতে পারে
তবে নারীদের বেলায় নিষেধ করা হয়েছে কেন?
নারী তুমি চিরদিনই কৃতদাসের মতো থাকবে?
নারী-পুরুষ উভয়েই চাকুরী করে ঘরে ফিরে
অথচ, ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছেলে-পিলে লালন-পালন থেকে শুরু করে
সব কর্ম তোমাকে করতে হবে কেন?
এত কিছুর পরও তুমি নিঘৃহীত নির্যাতিত কেন?
এই নারী, তোমার স্বামী চাকুরী করে
আর তুমি গৃহিনী বলে স্বামীর ঘাড়ে বসে গিলছো
পঙ্গু ব্যক্তির মতো?
বেকার মহিলা শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠো
অধিকার আদায় করে নাও
আর নয় লাঞ্ছনা, আর নয় নির্যাতন, আর নয় আত্মহত্য
এখন প্রতিরোধ গড়ো তোমার অধিকার আদায়ে;
নিজের পায়ে দাঁড়াও মরতে নয় লড়তে, লড়তে তোমায় হবে
এটা'ই সুষ্ঠু সময় তুমি জাগবে কি?
#
বিষয়: বিবিধ
১৫৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন