শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম
লিখেছেন লিখেছেন শান্তিপ্রিয় ০৬ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:২৪:০০ রাত
শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম দুনিয়াতে শান্তি স্থাপন এবং বন্দী মানবতার মুক্তি কল্পেই পবিত্র ইসলাম ধর্মের আগমন। এই ইসলাম ধর্মের মিশন নিয়েই সাহাবায়ে কিরাম দৃঢ় মনোবলের সাথে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। রোম, পারস্য ও স্পেনের অহংকার ধূলোয় মিশিয়ে দিয়ে বিশ্বে স্থাপন করেছিলেন শান্তি ও মানবতার অনুপম আদর্শ ও নজীরবিহীন ইতিহাস। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, সেই দিনকার কায়সার কিসরার অবার্চীন উত্তর-পুরুষরা আজ শান্তির বার্তাবাহকদের উপর একের পর এক আঘাত হেনেই চলছে, গালি-গালাজ করছে মৌলবাদী ও ধর্মান্ধ বলে।
কাফের আল্লাহদ্রোহী ও জালেমরা আজ মহাশক্তিধর। জালিমের জুলুম-নির্যাতন ক্রমশ বেড়েই চলছে। মজলুম কাফেলার আহাজারী আজ পাষাণ হৃদয়কেও প্রভাবিত করছে। শান্তির নামধারীদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে অশান্ত হয়ে উঠেছে সারা মুসলিম বিশ্ব। বুলেটের আঘাতে প্রায় নিশ্চল হয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান, ইরাক, চেচনিয়া, বসনিয়া, আরাকান ও কসভোর শান্তিকামী মুসলমানরা। রেহাই পাচ্ছেনা ওদের হাত থেকে নাবালক ও নবজাতক শিশুসহ বৃদ্ধরাও।
মুসলিম উম্মাহর প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা আজ ইহুদী হায়নাদের দখলে। পবিত্র মক্কা-মদীনার বুকে বিধর্মীরা আজ মুক্ত বিহঙ্গের ন্যায় বিচরণ করছে। পক্ষান্তরে হেজাজের কোন কাফেলা তৈরী হচ্ছে না, ওদের উচিত শিক্ষা ও দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে। ফিলিস্তীনিরা আমাদের কালিমা পড়ুয়া মুসলান ভাই। তারা শরণার্থী হয়ে আছে অর্ধশতাব্দীকাল ধরে। ইরাক, আফগান আজ বিরাণ ভূমি। অথচ সৌদী আরবের তেল আর ভূমি ব্যবহার করে মার্কিন-বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা মুসলিম স্বাধীনতাকামীদের উপর ফেলছে বোমা।
মুসলিম নামধারী জালেমদের ও ইহুদী-খ্রিস্টানদের নির্যাতন আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম ভালোভাবেই জানেন। হালের বড় জালেম আমেরিকার ভূমিকা জানেন না, এমন কোন দ্বীনদার বান্দা আছে কি? যদি থাকে তাহলে প্রশ্ন জাগবে, তাদের দ্বীন কি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দ্বীন?
পবিত্র ইসলাম ধর্মের বয়স প্রায় দেড় হাজার বৎসর। প্রথম এক হাজার বৎসরের প্রতিটি শতাব্দীতে এবং প্রত্যেক শতাব্দীর প্রত্যেকটি দেশকে ইসলাম ও মুসলমানরা নানাবিধ ষড়পন্ত্রের শিকার হয়েছিল। রাসূল (সা.)-এর মক্কার ১৩ বৎসরের পয়গাম্বরী জীবনের অসংখ্য দুঃখ-যাতনা ও মদীনার দশ বৎসরের নবুওয়াতী জীবনের অগণিত যুদ্ধ-জেহাদ খুলাফায়ে রাশেদীনের প্রতিটি যুগে অসংখ্য চক্রান্ত এবং সাহাবা তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনদের সোনালী যুগে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণ, পরবর্তীতে বাগদাদে বিশাল শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আবার অন্যদিকে ইউরোপের বুকে স্পেনের মাটিতে উড্ডীয়মান ৭০০ বৎসরের ইসলামী ঝাণ্ডাকে পদদলিত করার বহুমুখী কূটচালের মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহর বয়স যখন প্রায় ১০০০ সাল, তখনই অভিশপ্ত ইহুদীরা পথভ্রষ্ট বোকা খ্রিস্টানদেরকে সাথে নিয়ে প্রথমে তাওরাত, পরে বাইবেলের সম্পূর্ণ বিকৃতি ঘটিয়ে মহান ইসলাম ধর্ম বিকৃত করার ভয়ঙ্কর অভিযান পরিচালনা করে।
বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, যে নামধারী মুসলিম আচরণে নাস্তিকদের হাতে সর্বত্র সাধারণ মুসলিমগণ নির্যাতিত হচ্ছে। একের পর এক হত্যা, গুম, নির্যাতিত হচ্ছে অগণিত সাধারণ মুসলিম। সদ্য ঘটে যাওয়া সিলেটের কিশোর সামিউল আলম রাজন হত্যার মামলা নিয়ে নাটক চলছে। এসব হত্যার যদি সঠিকভাবে তদন্ত করে উচিত বিচার করা হতো, তবে ভবিষ্যতে এমন হত্যা-কাণ্ড দেশের মানুষ হতে পরিত্রাণ পেত।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পেছনে ঘটে যাওয়া অনেকগুলো অপরাধের দিবলোকের ন্যায় উজ্জ্বল প্রমাণ থাকার পরও তাদের বিচার না হওয়ায়, ক্রমশ এই হত্যাযঙ্গ সংগঠিত হচ্ছে। বিচার হয়নি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার, বিচার এখনো হয়নি লগি বৈঠা দিয়ে সাপের মত পিটিয়ে মানুষ হত্যার- বিচার হয়নি, ধর্ষণে সেঞ্চুরী হাকানো ছেলেদের, বর্ষবরণে বস্ত্রহরণকারীদের বিচার হয়নি, ধর্ষক পরিমলের বিচার হয়নি, নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যার বিচার হয়নি! বিচার হয়নি বিশ্বজিতের খুনীদের। টেলিভিশন কিংবা পত্র-পত্রিকা খুললে দেখা হত্যা গুম খুনের মহোৎসব চলছে। উপর্যুক্ত প্রায় সবগুলো ঘটনার চাক্ষুষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচার হয়নি। এসব খুনীদের উচিত বিচার হলে, ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেত।
মানবজাতিকে অপরাধের জগত হতে ফিরিয়ে আনতে পারে ইসলামী শিষ্টাচার। মানবজাতির ভেতরে জাগ্রত করতে হবে পরকালের ভয়, মানবজাতিকে তরবিয়ত দিতে হবে উত্তম চরিত্রের। সকলকে আসতে ইসলামী ছায়াতলে, তবেই আশা করা যায়, পৃথিবীর মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। কারণ প্রকৃত শান্তি নিহিত রয়েছে ইসলামেই।
বিষয়: বিবিধ
১৯৭৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সারা পৃথিবীতে ইসলামের শত্রুরাই এই হীন কাজে লিপ্ত রয়েছে।
মুসলামন নামধারী, মুনাফিক ও ইহুদীদের গোলামরা এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। যাদের ভিতর ইসলামের লেশ মাত্র উজ্জীবিত আছে, তারা এমন হীন কাজ করতে পারে না।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনেক নামধারী মুসলামন তাদের আসল পরিচয় ভুলে গিয়ে অমুসলিমদের চরিত্র লালন করছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাযত করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন