শেখ যায়েদ মসজিদ , আবুধাবী : অভূতপূর্ব ইফতারের অভিজ্ঞতা
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ১৫ জুলাই, ২০১৪, ০৫:০২:৫৪ বিকাল
শেখ জায়েদ গ্রান্ড মস্ক, আবুধাবী। আয়তন, নির্মাণশৈলী, অভ্যন্তরিন এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ইত্যাদি বিবেচনায় একটি অনন্য স্থাপনা এটি।
রমজানে মাসে এ মসজিদে মুসল্লী এবং ভিসিটরদের জন্য ব্যাপক ইফতারের আয়োজন করা হয় শুনেছি। মুসলিম বিশ্বের প্রায় মসজিদেইতো ইফতারীর আয়োজন থাকে কম-বেশী। এখানে না হয় একটু বেশীই আয়োজন করা হয়, এই আর কি।
বেশ কয়েক বছর যাবত রমযান মাস দেশে অবস্থান করে আসছি। যে কারণে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি। এবার বিশেষ ব্যবসায়িক প্রয়োজনে পঞ্চম রমজানেই আবুধাবী চলে আসতে হলো। এই সুযোগে সরাসরি দেখতে গেলাম ইফতারী কেমনে কি।
আবিশ্বাস্য এক ইফতারীর আয়োজন। নিজের চোখে না দেখে কারো শোনা কথাকে নেহায়েত গাল-গল্পই মনে হতো। কয়েকশ বা দুয়েক হাজার নয়, ১৬ থেকে ২০ হাজার মানুষের জন্য ইফতারীর আয়োজন করা হয় দৈনিক।
এরকম শিতাপত নিয়ন্ত্রিত তাবু আছে চৌদ্দটি, যার প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা ১০০০ জন। লোকজন তাবুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে-
তাবুতে গিয়ে এভাবে বসে পরেন ইফতারের মেহমানগণ :
টেন্ট ছাড়া খোলা গার্ডেনেও বসানো হয়, টেন্ট হাউজফুল হয়ে যাওয়ার পর্।
মসজিদের নিচে এবং চথুর্দিকে রয়েছে অসংখ্য পার্কিং স্পেস।
বিভিন্ন লেভার কেম্প থেকে শ্রমিক বহন করে আনা গাড়ি দূরে পার্ক করা হয়েছে।
আমি পর পর দু’দিন ইফতার করেছি ওখানে। ইফতারি পরিবেশন এভাবে-
প্রথম দিনের পরিবেশন : এক বোতল মিনারেল ওয়াটার, একটি জুস, একটি লাবান আপ, সালাদ, খেজুর, প্রায় ১২০০ গ্রাম চিকেনের অর্ধেক দিয়ে বিরিয়ানী এবং এক বাটি সব্জী। আমি সবটুকু খেতে পারিনি আবার লজ্জার কারণে নিয়েও আসতে পারিনি। তাই অর্ধেক খেয়ে বাকীটা রেখে আসতে হয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের পরিবেশনা ছিল মাটন বিরিয়ানীর সাথে অন্য আইটেম প্রথম দিনের মতো।
মাটন বিরিয়ানী আমার খুব প্রিয়। তাছাড়া প্রথম দিন অর্ধেক রেখে দিয়ে অপচয় করার কারণে খারাপ লাগছিল। তাই লজ্জা না করে এইটুকু খেয়ে বাকীটা নিয়ে আসলাম।
লোকেরা এক বৈঠকে এতটা খাবার খেতে পারেন না। তাই প্রায় সকলেই নিয়ে যান। এ খাবারে ইফতার হয়ে সেহেরী ও খাওয়া যায়। এভাবে লোকেরা নিয়ে যান-
মসজিদের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে এসব বাহন।
সার্বক্ষণিক ফায়ার ব্রিগেড ইউনিট, এম্বুলেন্স ও ওয়েস্ট ম্যানেজম্যান্ট গাড়ী মওজুদ রাখা হয়।
এতসব আয়োজন দেখে আমার মনে প্রশ্ন জাগলো- তারাতো এই লক্ষ লক্ষ টাকা ইফতারির পিছনে না ঢেলে ফিলিস্তিন এবং বিশ্বের আরো আরো ক্ষতিগ্রস্ত মুসলমানদের জন্য খরছ করতে পারতো। যেখানে ফিলিস্তিনি মুসলিমরা বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা হচ্ছে সেখানে তাদের ইফতারী বিলাস অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি নয় কি?
মাগরিবের নামাজের পর মিশুক টাইপের একজন দায়িত্বশীল গোছের লোকের সাথে পরিচিত হয়ে সালাম দোয়া বিনিময়ের পর আমার উপরোক্ত দু’টো প্রশ্ন রেখেছিলাম তার নিকট।
জবাবে ভদ্রলোক বললেন, শেখ যায়েদের অর্থ সাহায্য পৌঁছেনি- দুনিয়াতে এমন মুসলিম জনপদ বিরল। তোমার নলেজে আছে কি না জানি না, তোমাদের বাংলাদেশও বাদ যায়নি। শেখের মৃত্যুর পর তাঁর নামে যে ফাউন্ডেশন তা থেকে নিয়মিত সাহায্য চলে যাচ্ছে যায়গামতো। ফিলিস্তিনে নির্যাতিতদের জন্য প্রত্যেক মুসলিমেরই দরদ আছে, তাই বলে কেউ কি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে? ফিলিস্তিন বাদ দাও- তুমি বা আমি যদি মরে যাই তা স্বাভাবিক হোক অথবা অস্বাভাবিক পন্থায় তখন আমাদের পরিবারের লোকজন কি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেবে? - এসব সমালোচনাকারীদের বেহুদা বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা মাত্র। ভেবে দেখলাম ভদ্র লোকের যুক্তি ফেলে দেয়ার মতো নয়।
বিষয়: বিবিধ
৩০৬৮ বার পঠিত, ৯১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শাহীন ভাই চলে আসেন একদিন!
লোকমান ভাই এবং আমার এখান থেকে খুব কাছেই শেখ যায়েদ মসজিদ।
আমি আগে একবার গিয়েছিলাম আপনি আসলে সবাই মিলে আরেকবার যাব!
যেখানে নবীজির সঃ অভুক্ত প্রতিবেশীর সাথে ওনার উন্মতের সম্পর্ক পরিষ্কার ভাবে বলেছেন - সেখানে অপচয় করার পর তার পক্ষে যুক্তি দেওয়া - নিতান্তই অভুক্ত থাকলে - ওনার উন্মত হতে পারেন না
এ্যানী ওয়ে আপনি কষ্ট করে শেয়ার করেছেন বলে আমরা ঐ দেশের মানুষ ও তাদের খাবার সম্পর্কে জানতে পারলাম। আশা করি আল্লাহ ওনাদের বুঝ/জ্ঞান দেবেন এবং ওনাদের ক্ষমা করবেন।
ধন্যবাদ।
এতসব আয়োজন দেখে আমার মনে প্রশ্ন জাগলো- তারাতো এই লক্ষ লক্ষ টাকা ইফতারির পিছনে না ঢেলে ফিলিস্তিন এবং বিশ্বের আরো আরো ক্ষতিগ্রস্ত মুসলমানদের জন্য খরছ করতে পারতো। যেখানে ফিলিস্তিনি মুসলিমরা বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা হচ্ছে সেখানে তাদের ইফতারী বিলাস অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি নয় কি?
কিন্তু ঐ ভদ্রলোক যে যুক্তিতে ডিফেন্ড করেছে - তা কি আপনার মনে হয়না ইভিল?
আপনি কি এই নিউজ পড়েন নি, খোদ মক্কার মেয়র বলছেন - মক্কাবাসীরা ইফতারে ২৫% খাবার অপচয় করছে?
একটি জিনিস খেয়াল করে দেখবেন, আরেকজনের প্রতি আঙ্গুলি নির্দেশ করার সময় একটি আঙ্গুল ওদিকে আর তিনটি আপনার দিকে নির্দেশ করে।
তাই বলছি অপচয়ের কারণে ওরা যাদ ইভিল হয়ে থাকে তাহলে আমরা ডাবল ইবিল। কেন, কিভাবে?
ওরা খাওয়াচ্ছে ঘোষণা দিয়ে তাই লোকেরা ওভাবে প্রস্তুতি নিয়ে (নিজেরা পাক না করে) যাচ্ছেন। আমাদের দেশের একটি উদাহরণ দেই? আমরা ঘরে ইফতারী তৈরী করে সাজিয়ে বসেছি, ঠিক সে মুহুর্তে এক আত্মীয় বেয়াইর বাড়ী থেকে পাঠানো অনেকগুলো ইফতারী নিয়ে হাজির। শেষ পর্যন্ত ডাস্টবিনে স্থান হয়ে এসবের। উদাহরন দিতে গেলে এভাবে অনেক দেয়া যাবে।
আমি জানিনা আপনি কোন দেশে আছেন। আমি বিগত দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে আরব দেশে আছি, আমাদের তুলনায় আমি তাদেরকে ‘িইভল’ বলবো না। ধন্যবাদ।
আপনি যথার্থই সঠিক বিচার ও বিশ্লেষন করেছেন।
রমজানুল মোবারক।
ফিলিস্তিন নিয়ে আপনার প্রশ্নের সত্যিই যেীক্তিক উত্তর দিয়েছেন তিনি। যতটুক জানি এই সময় আরব দেশে অনেক শ্রমিক ভাই এই ধরনে মসজিদে ইফতারি করে কিছু টাকা সাশ্রয় করেন যা তারা ঈদের জন্য নিজেদের বাড়িতে পাঠান। এটাও তো একটি উপকার্।
ভালো লাগলো। সুন্দর শেয়ার।
"হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর ও অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।" (আল-কুরআন-৭, আয়াত-৩১)
ওরা দানও করে আবার অপচয়ও করে।
আমরা দান করি কম কিন্তু অপচয় করি সে তুলনায় বেশী।
গোপনে অনেকেই দান করে কিন্তু কাউকে বলে না। এরাই সবথেকে ভালো মানুষ।
যেখানে আপনার সরকার আপনার প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করার তালে আছে সেখানে শেখ জায়েদ ফাউন্ডেশন কি করেছে একটু খোঁজ-খবর নিয়ে দেখুন।(বিশেষ কারণে এখানে লিঙ্ক দিলাম না)এভাবে বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম জনপদে এরা সহযোগীতা করে যাচ্ছেন। আমরা জানি না বলেই হয়ত সমালোচনা বেশী করে ফেলি।
ওরা শুধু এই মসজিদ ভিত্তিক নয়, সব শেখরাই রমজান এবং অন্য সময়ও বেশী বেশী খাবার দান করেন। এতে গরীব শ্রমিকদের বেশ উপকার হয়। আমিতো প্রাক্টিক্যল সাক্ষি। ধন্যবাদ।
আপনি ব্যাবসায়ী মানুষ কাছে থেকেও অনেক দুরে।
লোকমান ভাই অবসর পেলে চলে আসেন একদিন ইফতার করি আপনার সাথে।
আপনার ডিউটি কয়টা থেকে কয়টা?
চমৎকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শেষ দিকে ভদ্রলোকের যুক্তিটি আমারও যুক্তি। যারা এসব প্রশ্ন উত্থাপন করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটা উদ্দেশ্যমূলক, মুসলিমদের প্রতি আন্তরিকতার কারণে নয়। রোজাদারদের উত্তমরূপে ইফতার করানো নিঃসন্দেহে অতি সাওয়াবের কাজ।
ওনারে লোকজনকে খাওয়াচ্ছেন, তাতে যারা উদ্দেশ্যমূলকভাকে বেজার, না খাওয়ালেও তারা এজন্য বেজার হতেন যে, ‘এমন ধনী দেশের লোকেরা ভীষণ কৃপন, রমজান মাসেও মানুষকে খাওয়া না’।
তাদের অপচয়, ভালো-মন্দ ইত্যাদির জন্য তারাই জবাব দিহি করবেন।
মুসলিম মিলম মেলা সবসময় ভাল লাগে, তাই আপনার পোষ্ট অনেক ভাল লাগল ।
যদি আপনার কম থাকে বা না থাকে তখনই প্রশ্ন দেখা দেয় না খেয়ে বা কম খেয়ে দান করার। আর যখন আপনার নিকট পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে তখন না খেয়ে দান করার কোন প্রয়োজন হয় না।
দান করা শুধু নয়, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম বলেছেন নিজেন পরিবার পরিজনকে যা খাওয়ানো পরানো হয় তাও ছাদাকা স্বরূপ। তিনি এটি বুঝাতে গিয়ে বলেছেন, মসুলমানেরা মূসা’র(আঃ) মায়ের মতো। অর্থাৎ মূসা’র(আঃ) মা নিজ সন্তানকে দুধ পান করিয়ে ফেরাউনের নিকট থেকে ভাতা পেয়েছিলেন ঠিক তেমনি মুসলমানেরা তাদের অধিনস্তদেরকে খাওয়া পারা দিয়েও সাদাকার সওয়াব পায়, যদিও তা তাদের কর্তব্য ছিল।
দোয়া করবেন যেন আপনার কাঙ্খিত দাতা হতে পারি।
আমার বাচ্চার পিড়াপিড়ীতে দুবার সেখানে সস্ত্রীক ইফতার করার সুযোগ হয়েছিল! ইফতারী গুলো পাঁচ তারা হোটেল থেকে আনা হয়েছিল। অবশ্যই এসব ইফতারীর বাজার মূল্য অনেক বেশী। উৎকৃষ্ট, উন্নত মান সম্পন্ন ও সুস্বাধু এসব ইফতারী প্রতিবছর হাজার হাজার, মাস শেষে তা কয়েক লক্ষ রোজাদারকে খাওয়ানো হয়।
ওদিকে সাধারণ মসজিদ গুলোতেও আরবী বসবাস কারীরা ও দামী ইফতারী পাঠিয়ে থাকে। তারা ইফতারী সরবরাহে মোটেও কার্পন্য করেনা। তবে যেসব এলাকাতে ব্যাচেলর থাকে সেখানে ইফতারীর স্বল্পতা লেগেই থাকে। আর যেসব এলাকায় ব্যাচেলর বসবাস করে সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষ কমই থাকে।
যে ধরনের ইফতারী পরিবেশন করা হয়, বাংলাদেশের মেজবান কিংবা জাতীয় নেতাদের কাঙ্গালী ভোজের খাদ্যের চেয়ে এসবের পরিমান অনেক বেশী। ইফতারীর অর্থ এভাবে উদর পুর্তি করে, পেটকে ডোল বানানো নয়। পরিমানে কম হউক, সবাই যদি এসব ইফতারীর ভাগিদার হত, তবে অনেক কল্যাণকর হত।
ক্বাবার ইমাম জনাব সুদাইসের এক লাইভ টিভি সাক্ষাৎকারে আফ্রিকা থেকে একজন রোজাদারের ফোন আসে। তিনি প্রশ্ন করেন, তাদের এলাকাতে পানি ও খাদ্য নাই। যে সব পানি পাওয়া যায় সেসব বিস্বাদ। দুই তিন দিন পর হয়ত এক বেলা সামান্য খাবার জুঠে। তার প্রশ্ন ছিল, খাদ্যের অভাবে তারা সেহেরীতে কিছু না খেয়ে অবিরত রোজা রাখে, এই উপোষ রোজা কবুল হবে কিনা?
সুদাইস কান্নার জ্বালায় কথার উত্তর দিতে পারছিলেন না। কেননা দর্শকেরা বুঝে গিয়েছে তিনি কেন কান্না করছেন।
রোজার অর্থ শুধু ইফতারীতেই রোজাদারকে ভাল করে খানা খাওয়ানোর মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, পুরো জীবনভর এটাকে অব্যাহত রাখতে হয়, তাহলেই কল্যান। সে জন্য দরদী কবি কাজি নজরুল ইসলাম তার সেই ঐতিহাসিক গানের শেষ চরণে তা তুলে এনেছিলেন এভাবে,
'যারা সারা জীবন রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী
সে গরীব ইয়াতিম মিসকিনে দে যা কিছু মফিদ'
ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।
আমাদের মুসলিম সমাজে রমাদ্বানকে ‘ইটিং কনটেন্ট’বানানো হয়েছে। এখান থেকে উত্তোরণের কোন পথই খোলা দেখছি না, একমাত্র দুর্ভিক্ষ ছাড়া- যা আবার কামনাই করতে পারছি না ৭৪ স্বচক্ষে দেখার কারণে।
আর যাই হোক, ওনারা খাওয়াচ্ছেন বলে কিছু লোক অবশ্যই উপকৃত হচ্ছেন। আর না খাওয়ালেও সমালোচনা হতো ’ধনী কৃপণ’ বলে।
ভালো থাকুন এবং বেড়াতে আসুন একবার।
দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকার ইফতারী খাওয়ানো তাদের বদান্যতা, আমি মনে করি। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
যে প্রশ্ন তুলেছেন এবং আপনি যুক্ত বলছেন - আমি মানতে পারছিনা।
ফিলিস্তিন সমস্যাটা কারা তৈরী করেছে? মধ্যপ্রাচ্যের রাজারা কি তাদের দ্বায় এড়াতে পারবে।
যাই হউক আমার বিশ্বাস আপনার মন্তব্য আরো পরিস্কার হত। যদি মন্তব্য করেন নি। মোবারকবাদ।
্আসলে প্রশ্নাটা ছিল ইফতারিতে এত টাকা খরচ না করে তা ওখানে দান করা উচিৎ কি না? জবাবটা ছিল- ইফতারী যাদেরকে খাওয়ানো হচ্ছে তারাওতো মানুষ এবং এখানে দরিদ্রও আছে। সেখানেতো অন্য ফান্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে, এদের রিজিক ওদেরকে দেব কেন? (আপনি অবশ্যই অবগত আছেন অনেক প্রবাসী শ্রমিক দু’চার টাকা বাঁচানোর জন্য টোকাইর মতো পেপসির ডাব্বা টোকায় আরবের রাস্তায় রাস্তায়। ইফতারী এবং সেহেরী যদি এসব শ্রমিকরা বেলাশ পায় তা তাদের জন্য লাভ নয় কি?
এখন আসুন ফিলিস্তিন সমস্যা নিয়ে। আমি বলবো ফিলিস্তিন সমস্যা ফিলিস্তিনিরা নিজেরাই তৈরী করেছে- চড়া দামে ইহুদিদের নিকট যায়াগা বিক্রয় করে। পরে তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মতো জেঁকে বসেছে।
মুসলমানদের মধ্যে আরব অনারব বলে কোন পার্টিশন নেই। অর্থাৎ আরব মুসলিমের জন্য শরীয়তের যে হুকুম অনারব মুসলিমের জন্যও সে হুকুম। তাহলে এখন বলুন- ফিলিস্তিন সমস্যার জন্য শুধু আরবরা দায়ি হবেন আর আমরা হবো না, কেন?
তবে হ্যাঁ যেহেতু ফিলিস্তিন আরবের অংশ সে হিসেবে আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদেরকে যথেষ্ট আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছেন। তার মজা বুঝেছিল কুয়েত, যখন সাদ্দাম কুয়েত আক্রমন করে তখন সে আশ্রিত ফিলিস্তিনিরা নিমকহারামী করে সাদ্দামের পক্ষ নেয়। বিষয়টি কত অমানবিক একটু ভেবে দেখুন।
ফিলিস্তিনে হামাসের উত্তানের পরেই অভ্যন্তরীন আন্দোলনে জোয়ার আসে। আরবরা কিন্তু হামাসকে সুবিধা দিতে নারাজ, যেহেত হামাস ইসলামী হুকুমত চায়, শেখ এবং বাদশাহ শাসিত দেশগুলো ইসলামী শাসনের পক্ষে নয়, তাই তারা হামাস বিরোধীদের সাথে যোগাযোগ রেখে সাহায্য করছেন।
বাস্তবতা হলো- মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যদি ইসলামের পক্ষে থাকতো তাহলে এতদিনে ফিলিস্তিন মুক্ত হয়ে যেত হয়ত। ধন্যবাদ।
খাওয়া আর অপচয় এক নয়,আল্লাহ খেতে বলেছেন সাথে অপচয় করতে নিষেধও করেছেন৷ খাদ্যের অপচয় এই সব আরব দেশেই সব চাইতে বেশী৷৷
মামু বাড়ীর আগুন যদি স্বল্প সময়ের জন্য হয় তো, আগুন নিবানোর আগে আন্য কাম চালানো যাবেই না। তবে যদি দীর্ঘ মেয়াদী আগুন হয় তাহলে....
ােআরব অনারব নির্বিশেষে বিশ্বে যথেষ্ট পরিমানে অপচয় হচ্ছে। আরবদেরটা একটু বেশী চোখে পড়ার কারণ হলো- নাস্তিক এবং ইসলাম বিদ্বেষীরা মনে করে আরব মানেই ইসলাম। তাই ইসলামের দেহে কালি লেপনের নিয়্যতে তারা আরবদের সমালোচনায় পঞ্চমুখ। যেহেতু মিডিয়া তাদের দখলে সেহেতু এসব সমালোচনা ছাড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুত। তাই আমরা ওখান থেকে সংক্রামিত হয়ে অতি বানোয়াট কথা বেশী শুনে শুনে বলতে থাকি ‘আরবরা বেশী অপচয় করে’। এখানে যা হচ্ছে তা অপচয় তো নয়ই বরং গরীব ও ভ্রমনকারীদের উপকার হচ্ছে। তাদের দু’বেলোর উপাদেয় খাবার জুটছে একদম ফ্রি।
াআমেরিকার ডাস্টবিনগুলো কত কত উন্নত খাবারে ভরে যায় তার হিসেব রাখে কয়জন? প্রত্যক্ষদর্শী মুখে শুনেছি ওসব ডাস্টবিন থেকে খাদ্য সংগ্রহের জন্য এশিয়া আফ্রিকার প্রবাসীদের মেধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। উৎপাদন বেশী হলে সেদেশের উৎপাদিত গম কাউকে না দিয়ে সাগরে ফেলে দেয়া হয়।
আমাদের গরীব দেশের দু’য়েকটা উদাহরণ দিচ্ছি, যা আপনি স্বয়ং দেখছেন : আমরা ঘরে ইফতারী তৈরী করে সাজিয়ে বসেছি, ঠিক সে মুহুর্তে এক আত্মীয় বেয়াইর বাড়ী থেকে পাঠানো অনেকগুলো ইফতারী নিয়ে হাজির। শেষ পর্যন্ত ডাস্টবিনে স্থান হয়ে এসবের।
প্রতিদিন বিনা নোটিশে এঘর ওঘর থেকে আসা ইফতারীর অকেকটাই ফেলে দিতে হয়। কাজের বুয়ারাও তা নিতে চায়না। কারণ তাদের নিকট ফ্রিজ নেই সংরক্ষণের জন্য।
তারাপরও কি সব দোষ নন্দ ঘোষের হবে?
আশাকরি কিছু মনে করবেন না। আমি বাস্তব স্বাক্ষী হয়ে একটি অপপ্রচারের সঠিক জবাব দেয়াটা ঈমানের দাবী মনে করেই কথাগুলো বলেছি, আপনাকে কাউন্টার করার জন্য নয়।
ধন্যবাদ, ফি আমানিল্লাহ্!
একটা কথা ভুললে চলবেনা যে মুসলমানেরা পবিত্র কোরআনের ধারক ও বাহক৷সেমত অন্যের, যাদের পরকালের বিশ্বাসই নেই তাদের সমালোচনা না করাই ভাল৷ মিডিল ইস্টকে দুনিয়ার মুসলীম ইসলামের আইডল ভাবে৷৷ তাই তাদের সে মত আচরণ হওয়াই বাঞ্ছনীয়৷ধন্যবাদ৷
সিরিয়ান এবং লেবানিজ মুসলমানরা মসজিদটার দায়িত্বে রয়েছে। তাই সব আয়োজন আ্যারাবিয়ান ষ্টাইলে। পাশে রয়েছে একটা সিরিয়ান রেষ্টুরেন্ট সেখানে আবার এইটা পাওয়া যেত "কুচকুচ প্যালেশিয়া" নামে। এখনো জিভে লেগে আছে। কিভাবে যে মাংস এমন মোমের মত করে রান্না করে!
।
ভালো লাগলো আপনার সুন্দর কমেন্ট। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
যারা চুরি করে তাদেরও কিছু যুক্তি থাকে। দোকানে এক লোক কাল করে এবং কেশ থেকে চুরি করে। কেউ একজন জিজ্ঞাসা করলে বলে, আসলে আমার বেতন হওয়া উচিত ছিল আমার বেতনের চারগুন। মালিক তো বাতন বাড়ায় না। তাই চুরি করে পুষিয়ে নেই। এটা আমার পাওনা।
কি বলেন, যুক্তি ঠিক না?
কোন কোন যুক্তি বিবেচনা যোগ্য হলেও সব যুক্তিতো আর ধোপে টিকে না।
আপনি ঠিকই বলেছেন চোর ও কোন না কোন যুক্তি খাড়া করে চুরিটাকে যায়েজ করার চেষ্টা করে।
তাহলে নিশ্চয়ই এখানে '' বড় বাপের পোলারা খায় '' '' বড় লোকের মায়েরা খায় '' এই খাবার গুলো আছে ! এগুলো না হলে একটা ইফতারীকে কিভাবে অভূতপূর্ব বলা যায় ?!
খাবারের ছবি দিয়েছেন , খাবার নিয়ে ইফতারীর অপেক্ষায় বসে থাকা মানুষের ছবি দিয়েছেন । সেই সব মানুষের খাবার খাওয়ার ছবি থাকলে ভাল হত ,পূর্ণতা পেত , বিশেষ করে বাংলাদেশী ভাইদের ।
আমাদের এক স্থানীয় কলিগ এর সহায়তায় এ জাতির নৈতিক চরিত্র অধঃপতনের আর এক নমূনা দেখারও দূর্ভাগ্য হয়েছিল এক সময়। আমার বাসার পেছনের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে তিনি নিজের গাড়ী চালিয়ে নিয়ে এক আপাদমস্তক হিজাবধারিনীর পাশে গিয়ে ব্রেক করলেন। কি ইশারা করলেন বুঝলাম না। হিজাবধারী সুন্দরী (ফেস খোলা ছিল) একটানে গাড়ীর দরজা খূলে গাড়িতে বসে পড়লো। কলীগ কিছুদূরে নিয়ে গিয়ে আবার গাড়ী থামালেন, মহিলা এবার নেমে পড়লো। পরে তিনি আমাকে বললেন, এরা হলো এদেশের হাই সোসাইটির কলগার্ল। হোটেলে হোটেলে চলে এদের অভিসার.....
আশা করি আপনিও ভালোই বলতে পারবেন এদের চারিত্রিক এ দিকটি সম্পর্কে।
আপনি যেমন দেখেছেন অতি নিকট থেকে তেমনি আমিও দেখেছি এবং দেখেই চলেছি।
উক্ত অপচয় এবং চারিত্রিক ত্রুটি থেকে আমরা কি মুক্ত? বরং আমাদের অপচয় আর চারিত্রিক অধঃপতন এদের চেয়ে ঢের বেশী।
আমার তুলনামূলক পর্যবেক্ষণ হচ্ছে- এখনো তারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে। যেমন:- বড় অফিসার এখনো অফিসে প্রবেশ করার সময় ছোটদেরকে সালাম করেন। আমাদের দেশে কি কল্পনা করতে পারবেন? এখনো তারা আল্লাহর শোকর করে প্রতিটি বাক্যে,প্রতিটি পদে। আমাদের দেশের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং কিছু ওলামা ছাড়া তা কি কখনো দেখেছেন? এরা এখনো শিরক মুক্ত। আমাদের আমরা কি শিরক মুক্ত?
আমাদের দেশে মায়ের সামনে মেয়েকে যেভাবে বেইজ্জত করা হয় এখনো কি ওরা এভাবে করছেন?
আপনার কাউন্টার এবং ওদের পক্ষে বলার জন্য বলা নয়, শুধুমাত্র বাস্তবতাটাই তুলে ধরলাম।
ইসলামী শরীয়তে আরব আর অনারবের জন্য কোন আলাদা সিস্টেম নেই। সকলেই সমান সুবিদা প্রাপ্ত এবং দায়ী। তাহলে তাদের দোষকে বড় করে দেখব আর আমাদেরটা গোপন রাখব বা কিছুইনা মনে করবো কেন?
এখনো তারা দান যথেষ্ট করছে, সে তুলনায় আমরা যথেষ্ট পিছিয়ে।
এখানে মসজিদে মসজিদে এবং শেখের বাড়ী থেকে যে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে তাদে কিছুটা অপচয় হয়, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু গরীব শ্রমিক শ্রেনীর যথেষ্ট উপকারও হচ্ছে।
আপনার পর্যবেক্ষণ কি আমি জানিনা। আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে- দুনিয়াতে এখনো আরবর অনেক সভ্য অন্যদের তুলনায়।
আমাদের মুসলিম ভাই-বোন হিসেবে এবং খোদ নবীর দেশের মানুষ হিসেবে আমার ওনাদেরকে আরো উন্নত চরিত্রের দেখতে চাই। আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুন এবং আমাদের প্রতিও।
মা-আসসালামা।
আপনার লেখাও মাশাআল্লাহ্ অনেক মানের।
একটা কমন সমস্যা আমি বেশ উপলব্ধি করেছি, আপনিও বিষয়টি নিয়ে একটু ভাববেন আশা করি।
বিষয়টি হচ্ছে- দুনিয়ার ইসলাম বিরোধীরা ‘ইসলাম এবং আরব’ একাকার করে ফেলেছেন। যে কারণে তারা আরবদের সমালোচনা করতে পারলেই ধরে নেয় ইসলামকে ঘায়েল করা হয়েছে। আপনিই বলুন এখনো আরবরা তুলনামূলক অন্যদের চেয়ে সভ্য নয় কি?
মন্তব্য করতে লগইন করুন