আবেগী সার্থপরতা
লিখেছেন লিখেছেন বিনতে আইয়্যুব ২৯ আগস্ট, ২০১৭, ১১:৪৩:১৯ সকাল
আল্লাহ্ সুবহান ওয়া তায়'লা আমাদের অনেক দায়ীত্ব দিয়েছেন দুনিয়ার জীবনে। তার মধ্যে "আদ-দাওয়াতু ইলাল্লাহ" বা "আল্লাহর দিকে আহ্বান"
একটি কাজ যা করা উপরের স্তরের স্কলার হতে শুরু করে নিচু স্তরের মানুষেরও দায়িত্ব। একেকজনের জ্ঞান অনুযায়ী একেকজনের দাওয়াতের পন্থা ও লেবেলও ভিন্ন ভিন্ন। সে যাই হোক, এটা করা যে সবার কর্তব্য তা মোটামোটি সবারই হয়ত জানা।
কিন্তু এই দাওয়াতী কাজ করতে যেয়ে নানা ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় একজন দা'য়ী ইলাল্লাহ-কে।
বাহিরের মানুষ থেকে প্রতিকূলতা আসাটা তেমন বড় কষ্টের না কারণ ওটা স্বাভাবিক। কিন্তু তা যদি হয় নিজ পরিবারের আপন কারো দ্বারা তবে সেটা মেনে নেয়া একজন দা'য়ী ইলাল্লাহর জন্যে খুবিই বেদনাদায়ক।
একটা মানুষকে পরিবারের সাপোর্টের মাধ্যমে অনেকদূর নিয়ে যাওয়া যায়, অনেক সাফল্য অর্জন করতে পারে, জান্নাতের সন্নিকটে চলে আসতে পারে।
অন্যথায় দায়ীর অন্তরটা মরে যায়, কাজে স্প্রিহা জাগে না, সফলতা কম হতে থাকে এমনকি কখনও কখনও কষ্টের চোটে জাহান্নামীর মতও কাজ শুরু করতে পারে.......
দায়ীরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে দাওয়াত দেয় যেমন- ওয়াজ, রেকর্ডিং প্রোগ্রাম, লেখালেখি ইত্যাদি।
এগুলোকে আন্জাম দিতে আবার কিছু উপকরনের প্রয়োজন হয় যেমন- প্রচুর জ্ঞান, প্রচুর বই, কলম, খাতা, রেকর্ডার ইত্যাদি ইত্যাদি।
অনেকে হাসতে পারেন আর বলতে পারেন - হেহ! এ আবার বলতে হয় নাকি
এতো স্বাধারণ লাগবেই।
তখন আমিও মুচকি হাসি দিয়ে বলব- সাধারণ দেখেইতো বলা। এই সাধারণ জিনিসিই যে অসাধারণ কাজ করে।
যদিও আমার আগে ধারনা ছিল অদ্বীনদার ফেমিলিগুলোতে একে অপরকে সাপোর্ট করে না ইসলামিক প্রচার-প্রসার কাজে।
কিন্তু আমার সেই ধারণা প্রায় কয়েকমাস আগে থেকে হুট করেই পাল্টে গেছে। ইদানিং এই সমস্যাটা দ্রুতবেগে দ্বীনদার ফেমিলিগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে। এসবের মূল ভিত্তি কোন জায়গায় বা কেন হচ্ছে আমার আদৌ জানা নেই। তবে-
বিভিন্ন মানুষের কথাবার্তা শুনে ও কিছু জিনিস বাস্তবে দেখে যা মনে হল তা মিমাংসার উদ্দেশ্যে এখন আমার লিখতে বসা।
আমি লক্ষ করে দেখলাম স্বামী এবং স্ত্রীর "আবেগী সার্থপরতা" হয়তোবা এর কারন।
উদাহরণস্বরূপ:
একজনের স্ত্রী খুব রান্নায় এক্সপার্ট। তার স্বামী তাকে বলল-" শুন ময়না পাখি আমি চাই তুমি এ দেশের সেরা রাধুনী হও।"
সেই সুবাদে স্ত্রী বিভিন্ন ধরনের রান্না করতে যেয়ে সময় যাচ্ছে এ কাজে একটু বেশি। এখন স্বামী তাকে কাছে না পেয়ে রেগে একদম ফায়ার। চটজলদি হুমড়ি-দুমড়ি খেয়ে সব পাতিল দিল একদম ভেঙ্গে।
এখানে, হাড়ি-পাতিল হল উপকরণ যা না থাকলে রান্না করা যাবে না অন্যশত উপকরন তার থাকলেও। আর সেরা রাধুনী হওয়াতো বহত দূর কী বাত।
এখানে স্বামীর উচিৎ ছিল স্ত্রীকে কিছু সময় দেয়া। কারন অনেক বড় কিছু হতে হলে সেখানে একটু সময়েরও খুব প্রয়োজন হয়। স্বামীটি যদি তার আবেগকে একটু নিয়ন্ত্রন রেখে তাকে কিছু সময় দিত তবেই সাফল্যের জন্য তা যথেষ্ট হত। কিন্তু তিনি তা না করে নিজের স্বার্থের জন্য মেইন উপকরনই ভেঙ্গে দিলেন। এর দরুন স্ত্রিটি আর বেশিদূর আগাতে সক্ষম হয় নি।
যদিও উদাহরনটা একটা দুনিয়াবী উদাহরণ। কিন্তু এখান থেকে কিছু বুঝাতে চেয়েছি।
আমি বোঝাতে চাচ্ছি আপনাদের স্বামী বা স্ত্রী যারাই দ্বীনের কাজ করেন তাদের উচিৎ সময়কে ভাগাভাগী করে নেয়া। নিজের পাশে থাকার সময়ের কিছু সময় থেকে দ্বায়ীকে দিয়ে দিন এবং দ্বীনীকাজে একে অপরের সহায়তা করুন একে অপরকে সাপোর্ট দিন ছায়ার মত করে।
আবেগের কারণে কলম ভেঙ্গে দিবেন না লেখকের
আবেগের বশবর্তী হয়ে বই ছিড়ে দিবেন না পাঠকের
আবেগের কারণে রেকর্ডার ভেঙ্গে দিবেন না বক্তার।
এগুলো আবেগ তো নয় যেন আবেগী সার্থপরতা।
আপনার একটু ধৈর্য ও সাপোর্ট আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে নিয়ে যেতে পারে অনেকদূর। জান্নাতের উঁচু স্থান অর্জন কারীদের মধ্যে হয়েও যেতে পারে আপনার ও আপনার সাথীর স্থান।
আর সেই উঁচু জান্নাতে যেতে হলে যে প্রচুর ধৈর্য ও একটু সাপোর্টের খুব প্রয়োজন.........
আল্লাহ্ সুবহান ওয়া তায়'লা সবাইকে ধৈর্য, সহনশীলতা ও একে অপরকে সাপোর্ট করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন