মানুষের অসহায়ত্ব ও আল্লাহর অস্তিত্ব এবং আমি একটি লাল গোলাপ দেখেছি
লিখেছেন লিখেছেন ওসমান গনি ০৬ জুলাই, ২০১৫, ০৫:৪৯:৪৬ বিকাল
মানুষ একটি মশকের কাছে পর্যন্ত অসহায় । একটি ক্ষুদ্র মশা কিংবা একটি মাছি একজন মানুষকে অস্থির করে তুলতে পারে। একটি সদ্য প্রসুত ছারপোকার বাচ্চা আপনার আরামের ঘুমকে হারাম করে দিতে পারে। চোখে একটি ক্ষুদ্র বালি কিংবা অন্য কিছু পড়লে কচলাতে কচলাতে চোখের কি দশা হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুটো চোখের সামনে একটি হাত রেখে দিলেই দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যায়। দেয়ালের ওপারে কি আছে দেখি না, বুঝি না কিছুই । মানুষ অতীত ভুলে যায়,ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আন্দাজ অনুমানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় এবং বর্তমান নিয়েও সিদ্ধান্তহীনতা অথবা বিবিধ জটিলতায় বিপর্যস্ত। এ রকম হাজারো সীমাবদ্ধতা নিয়েই মানুষ। তাহলে এত বাহাদুরি কিসের? এত বাড়াবাড়ি চলছে কেন?
একটি মানব শিশু জন্ম নেয়ার পর কত অসহায় হয়ে জন্মগ্রহণ করে একটু চিন্তা করে দেখুন। পেশাব খাইয়ে দিলে খেয়ে নেয়,পায়খানা ভুলক্রমে মুখে গেলে নির্বিঘ্নে খেয়ে ফেলে। এভাবে একটি নবজাতকের অসহায়ত্ব দেখে বিস্মিত হতে হয় । আবার সে শিশুটি যখন পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত হয় এবং মৃত্যুকালীন সময় উপস্থিত হয় তখন একটু চিন্তা করে দেখুন,কত অসহায় অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে? বিচিত্র ব্যাপার হলো অসহায় হয়ে জন্ম নেয়া এ শিশুটি যখন মহান সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট শস্য,ফল-ফলাদি খেয়ে খেয়ে রিষ্টপুষ্ট হয়ে অথবা তার দুনিয়ার আলো বাতাস পেয়ে পেয়ে যখন তরু তাজা হয়ে উঠলো তখন এদের মধ্যে কিছু অকৃতজ্ঞ, বেহায়া বলে উঠলো কে আবার সৃষ্টিকর্তা? এসব বুঝি না ,মানি না । যা দেখি না তা মানি না। কি চমৎকার যুক্তি! যা দেখি না তা মানবো কেন?
মানুষ আয়নার সাহায্য ছাড়া তার কপালটি কিংবা চোখ দুটো কোনোটিই দেখতে পায় না। পুরুষ মানুষের চুল মেয়েলোকের মত লম্বা না হলে তাও আয়নার সাহায্য ছাড়া দেখতে পাওয়া যায় না । তাই বলে কি চোখ,কপাল ও চুলের অস্তিত্ব মানুষের মধ্যে নেই? বাতাস কি আমরা দেখি? তবে বাতাসের অস্তিত্ব কি বুঝতে পারি না অনায়াসেই? গোলাপ ফুলের মন মাতানো সৌরভ কি দেখতে পাওয়া যায় ? তবে তার মাতিয়ে তোলা সুগন্ধ গোলাপের অস্তিত্বের জন্য যথেষ্ট নয় কি? তাহলে ওরা অহেতুক আল্লাহ ও তাঁর নবী (স)কে নিয়ে কুতর্ক করছে কেন? বিশ্ব জাহানের বিশালত্ব ও চমৎকার সৃষ্টি শৈলী দেখে কি মহান আল্লাহর অস্বিত্ব অনুধাবন করা যায় না ?
বর্তমান সময়ে মহান আল্লাহ, তাঁর নবী (স), ইসলাম ও মুসলিম সমাজ নিয়ে যার যা ইচ্ছা আজে বাজে লিখছে ও বলছে। এরা এর মাধ্যমে সমাজে একটি পেনিক সিসোয়েশন তৈরি করতে চাইছে। সারা দুনিয়ায় এ রকম লোকের সংখ্যা তত বেশী না হলেও এদের উপদ্রব চোখে পড়ার মত। তাদের লম্ফ ঝম্ফ ও হাম্বি তম্বি ধার্মিক মানুষের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সুরা বাকারার ১৮ নং আয়াতে আল্লাহ সঠিক কথাটি বলেছেন “এরা কালা এরা বোবা ও এরা অন্ধ। এরা আর কখনও ফিরে আসবে না”। বস্তুত: এরা সত্যকে দেখেও মিথা প্রতিপন্ন করে। এরা সত্য জানার পরও সত্যের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । আর এরা সত্য শুনেও না শুনার ভান করে।
আসল কথা হলো মুসলমানের খাতায় নাম লেখিয়ে যারা এসব নাস্তিকদের দিব্বি সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে তারা কি প্রকারান্তরে নাস্তিকদের সহযোগি হিসেবে নিজেদের চিত্রিত ও পরিচিহ্নিত করছে না? সে যেই হোন পদবি নির্বিশেষে জনগণ তাদের লুকানো মনোবৃত্তি সহজেই বুঝতে পারছে না? সুতরাং ভণ্ডামি বণ্ধ করে প্রত্যেকের অবস্থান পরিস্কার করা উচিত। মৃত্যুর ভয় কিংবা পরকালীন শাস্তির ভয় কি এদের এতটুকু বিচলিত করছে না? আমরা জানি সত্য এক ও অভিন্ন আর মহাসত্য হলো আল্লাহর অস্তিত্ব ও মানুষ তারই সৃষ্টি । মনে রাখতে হবে মৃত্যু অবধারিত । আল্লাহ বলেন” আমি ভাল মন্দের জররা জররা হিসাব নেব “। সতরাং ছলচাতুরি ও বাজে কথা বলা বন্ধ করে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টির প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য এবং সময় থাকতে সঠিক পথে ফিরে আসার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। আল্লাহ বলেন সত্য সমাগত মিথ্যা হোক অপসৃত বস্তুত মিথ্যা অপসৃত হবেই।
আমি একটি গোলাপ দেখেছি
রক্ত গোলাপ, লাল টুকটুকে,
তার সুগন্ধ অথবা রক্তিম রঙ
যেন এক বিচিত্র অব্যক্ত মর্মকথা।
আঘাতে শব্দ, বিজলীতে আলো
হৃদয়ে স্পন্দন প্রাণের সঞ্চার,
দেখেনি তারা সুউচ্চ পাহাড়
কিংবা সমুদ্রের বিশালতা ?
বিচিত্র যত সব কীট পতঙ্গ ,
রাত দিনের আবর্তন ?
আমি কিন্তু একটি কারখানা দেখেছি
এমনিতেই চলে, চালকবিহীন।
আরও কি বিরতিহীন, বছরের পর বছর
বিশ্বাস হয় না ?
তাহলে এত ছন্দময় বিশ্ব চরাচর
এমনিতেই সৃষ্টি হলো কেমনে সম্ভব ?
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন