বিবি আয়শার বিয়ের বয়স নিয়ে খোদ মুসলিমরা লজ্জিত, বিব্রত...... ??
লিখেছেন লিখেছেন বন্যা ইসলাম ১৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৩৯:১২ সকাল
আজকের প্রতিটি Common Forum এ ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে আলোচিত, সমলচিত, বিতর্কিত বিষয়টি হচ্ছে নবীজী মোহাম্মদের শিশুকামিতা। প্রোঢ় বয়সে ৬ বছরের শিশু বালিকা বিবি আয়শাকে তিনি বিয়ে করেন। সমাজের অনেকেই নবীর এই বিয়েটি ভাল চোখে দখে না। গোলমেল বেঁধেছে এখানেই।
অবশ্য আমাদের মুসলমানদের অনেকেই নবীজীর এই বিয়েকে নানা ভাবে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেন। তাদের দাবি্- ৬ বছর বয়সেই বিবি আয়শা নাকি গায়েপাতে বড় ছিলেন। অনেকে আবার এ কথাও বলেন যে ৯ বছর বয়সে বিবি আয়শা ঋতুবতী ছিলেন। তবে তাদের এই দাবির পক্ষে কোরান-হাদীস-সিরাত এর কোন রেফারেন্স নেই। বিষয়টি নিছক মনগড়া বলেই মনে হয়। বলা বাহুল্য- আধুনিক মনবিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে ৬-৯ বছরের শিশু বালিকার বিয়ে, যৌনতা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুকির কারন হতে পারে।
ইদাানিং আবার মুসলমানদের আরেক দল আবির্ভুত হয়েছেন যারা ছল চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে বিবি আয়শার বিয়ের বয়স ১৮ বছর প্রমান করার যারপর নেই চেষ্টা করছে। এরা এতটাই বেপড়োয়া(Desperate) সহিহ হাদীসনামার বয়ান পর্যন্ত তারা অস্বীকার করে। As if, চক্ষু লজ্জার কারনে, নানান তাল বাহানা দেখিয়ে একটি ধুম্রজাল সৃষ্টির পায়তারা করছে।
অথচ নিচের সহিহ হাদীসগুলোই বিয়ের সময় বিবি আয়শার বয়স নিশ্চিত করেছে।
আয়শা হতে বর্নিত- যখন নবী আমাকে বিয়ে করেন তখন আমার বয়স ছয় বছর , আর আমার বয়স যখন নয় বছর তখন আমি স্ত্রী হিসাবে তার গৃহে গমন করি। সহি মুসলিম, বই -০৮, হাদিস-৩৩১০
আয়শা হতে বর্নিত- যখন আল্লাহর নবী তাকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছয় বছর, যখন তার বয়স নয় বছর তখন তিনি তার সাথে স্বামী হিসাবে বসবাস শুরু করেন ও তিনি তার সাথে মোট নয় বছর অতিবাহিত করেন( নবীর মৃত্যু পর্যন্ত)। সহি বুখারী, বই -৬২, হাদিস-৬৪
আয়শা থেকে বর্নিত – যখন আল্লাহর নবী তাকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল ছয়, তার নয় বছর বয়েসে তারা স্বামী স্ত্রী হিসাবে বসবাস শুরু করেন। হিসাম বর্ননা করেন- আমি জ্ঞাত আছি যে আয়শা নবীর সাথে নয় বছর ঘর সংসার করেন। সহি বুখারী, বই – ৬২, হাদিস- ৬৫
উর্সা হতে বর্নিত- নবী তার বিয়ের কাবিন নামাতে লিখেছিলেন যে আয়শার বয়স যখন ছয় তখন তিনি তাকে বিয়ে করেন , যখন তার বয়স নয় বছর হয় তখন তার সাথে সংসার শুরু করেন। সহি বুখারী, বই- ৬২, হাদিস-৮৮
হিসামের পিতা হতে বর্নিত- খাদিজা মারা যাওয়ার তিন বছর পর নবী মদিনাতে হিযরত করেন। তার মারা যাওয়ার প্রায় দুই বছর পর নবী আয়শাকে বিয়ে করেন যখন তার বয়স ছিল ছয় বছর আর তার বয়স নয় বছর হলে তার সাথে ঘর সংসার শুরু করেন। সহি বুখারী, বই -৫৮, হাদিস- ২৩৬
আয়শা থেকে বর্নিত- আমার বয়স যখন ছয় কি সাত আল্লাহর নবী তখন আমাকে বিয়ে করেন। আমরা মদিনা গমন করলাম ও কিছু মহিলা আসল। বিশর’র বর্ননা মতে- যখন আমি খেলছিলাম তখন উম রূমান আমার কাছে আসল। তারা আমাকে নিয়ে সজ্জিত করল। অত:পর আমাকে আল্লাহর নবীর নিকট সমর্পন করা হলো আর আমার বয়স তখন নয় বছর। সুনান আবু দাউদ, বই- ৪১, হাদিস-৪৯১৫
আয়শা বর্ননা করেন যে – যখন আল্লাহর নবীর সাথে তার বিয়ে হয় তখন তার বয়স ছিল ছয়, আর যখন তার বয়স নয় বছর তখন নবী তাকে স্ত্রী হিসাবে ঘরে তোলেন আর তখন আয়শা তার সাথে তার খেলার পুতুল গুলিও নিয়ে যান। আর যখন নবী মারা যান তখন তার বয়স আঠার। সহি মুসলিম, বই-০০৮, হাদিস – ৩৩১১
বিষয়: বিবিধ
৯৪১১ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
http://www.shodalap.org/munim/15499/
আধুনিক মনবিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে ৬-৯ বছরের শিশু বালিকার বিয়ে, যৌনতা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুকির কারন হতে পারে।
ইতিহাসে প্রমানিত হয়েছে যে, আয়েশা (রাঃ) আনহা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানি তো দুরের কথা সামান্য ধরনেরও স্বাস্থ্য হানি ঘটেনি। আপনি বিজ্ঞানের কথা বিশ্বাস করে তথ্য দিয়েছেন, আমি আয়েশা (রা) এর জীবন দিয়ে প্রমান করলাম যে, যে ধারনা পোষন করতেন তা ভুল মস্তবড় ভুল।
সর্বোপরি কথা হল, আয়েশা (রা) রাসুল (সাঃ) ইন্তেকালের পরেও বহু বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি স্বাধীনভাবে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। শিশুকালে তাঁর বিয়ে নিয়ে যদি, মারাত্মক কোন সমস্যা, দুর্ঘটনা ঘটে থাকত তিনি তা অবশ্যই বলতেন।
পারিবারিক, ঘরোয়া, ব্যক্তিগত সবকিছুই নিয়ে আয়েশা (রা) কথা বলেছেন কিন্তু শিশুকালের বিয়েকে নিজের উপর জুলুম বলেন নি! তাহলে বিজ্ঞানের কাঁধে চড়ে, কিছু মানুষের এত চুলকানি উপভোগের কারণ কি?
মেয়ে শিশুরা বয়ঃসন্ধিকালেই নারী হয়ে যায়। নারি মানেই তিনি মা হবার যোগ্য হয়েছেন। আল্লাহ বহু শিশুকে পাঁচ বছর বয়সেও নারী হবার যোগ্যতা দিয়েছে। আপনি আইন ও বিজ্ঞান দিয়ে বয়সন্ধি ধরে রাখতে পারবেন না। সম্ভব হলে বিজ্ঞান দিয়ে বিয়ের বয়স নির্ধারণের আগে তাদের বয়সন্ধির কালটাকে আগে আটকে রাখুন!
বয়ঃসন্ধি হলেই বালক বালিকারা তাদের এই পরিবর্তনের হেতু কি বুঝতে পারে। তখন তারা বালক বালিকা থাকেনা। পৃথিবীর ইতিহাসের শুরু থেকে এই পর্যন্ত প্রত্যেক দেশে প্রত্যেক জাতির কাছে, কম বয়সে নারীদের বিয়ের প্রথা চালু ছিল। আজোও আছে! হাজার বছরের ইতিহাস অনুধাবন করেছে যে, বয়সন্ধি হলেই নারীকে বিয়ে দেওয়া যায় এবং সেটা করা কর্তব্য। আর বর্তমানের জ্ঞান দিয়ে আপনারা বলছেন সেটা খারাপ। আগামী কিছু বছর পরে বলা হবে, বর্তমানের জ্ঞান খারাপ কিন্তু সত্যটা টিকে থাকবে যে, শিশুরা বয়সন্ধি হলে নারী হয়ে যায়, তখন তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে। এই নিতী ও চিন্তার পরিবর্তন হবেনা।
পৃথবীর ইতিহাসে শুধুমাত্র ভারতেই লক্ষ লক্ষ বাল্য বিয়ে হয়, কিন্তু আপনাদের বক্তব্য রাসুলের জীবনকে ঘিরে। অথচ তদানিন্তন সামাজিক বিচারে রাসুল (সাঃ) এই সিন্ধান্তকে ভুল বলেন নি। আপনি বলেছেন, কেননা আপনার নিকট পরিপূর্ন তথ্য নাই, তাছাড়া আপনার কু-মতলব হল এই বিষয়টা নিয়ে বাজার গরম করা।
বহুবিবাহ বা শিশু বিবাহ সেই আরব সমাজের ঐতিহ্য ছিল, সেকারনে মোহাম্মদের এসব কর্মকান্ডকে নিন্দনীয় বলা যাবে না , তাহলে প্রশ্ন হলো- তার জীবনাদর্শ কিভাবে সকল সময়ের জন্য সব মানুষের জন্য আদর্শ হয় ? একজন মানুষের আচার আচরন সকল সময়ের জন্য অনুসরনীয় হতে পারে যদি তার আচার আচরন সকল যুগের ঐতিহ্যের পরীক্ষায় পাশ করে তাহলে। বর্তমান ঐতিহ্য হলো- এক স্বামী ও এক স্ত্রী এবং শিশু বিয়ে করে তাদেরকে বলৎকার না করা।শুধু তাই নয়, শিশু বিয়ে করা বর্তমানে প্রতিটি সভ্য দেশে একটি মারাত্মক দন্ডনীয় অপরাধ, আর শিশুকে বিয়ে করে তাকে বলৎকার করা তো প্রায় মৃত্যু দন্ডতূল্য অপরাধ। বর্তমান এ ঐতিহ্য যদি আদর্শ না হয় তাহলে বলতে হবে- সর্বকালীন আদর্শ ঐতিহ্য হলো- বহু বিবাহ ও শিশু বিয়ে করে তাদেরকে বলৎকার করা আর যেটা স্বয়ং নবী তার জীবনে বাস্তবায়ন করে গেছেন।
এ বিষয়ে একজন ইসলামী পন্ডিতের সাথে আলাপ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। তিনি বললেন- সেই নয় বছর বয়েসে আয়শার নাকি মাসিক রজস্রাব শুরু হয়। আর তাই তখন মোহাম্মদের সাথে তার ঘর করার বিষয়ে কোন আপত্তি থাকতে পারে না।কোথা থেকে এ পন্ডিত এ তথ্য অবগত হলেন তা অবশ্য জ্ঞাত করেন নি। যদিও আমরা জানি ১৩/১৪ বছর হলো মেয়েদের মাসিক রজস্রাব হওয়ার সাধারন সময়। ব্যাতিক্রম হিসাবে কোন কোন মেয়ের ৭/৮ বছরেও হতে পারে যা নিতান্ত অস্বাভাবিক।এখন আয়েশার ৯ বছরে রজস্রাব হলেও সে মানসিক বা দৈহিক ভাবে একজন ৫৪ বছরের প্রৌঢ়ের সাথে স্ত্রী হিসাবে ঘর করার যোগ্য ছিল কি না তা এসব পন্ডিতদের কাছে গুরুত্বপূর্ন নয় কারন মোহাম্মদের সব কাজ কারবারই তাদের কাছে আল্লাহর নির্দেশ হিসাবে বিশ্বাস্য। তাই তা আদর্শ ।এমন কি এটাও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ন না যে , অন্য সাধারন মানুষরা যা করবে একজন আল্লাহর নবীর পক্ষে তা করা মানানসই কিনা।পুতুল হাতে নিয়ে শিশু আয়শা ৫৪ বছরের প্রৌঢ় মোহাম্মদের ঘরে তার বিছানায় যাচ্ছে স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে তাও তাদের কাছে দৃষ্টি কটু লাগে না। খোদ মোহাম্মদের মনেও এ নিয়ে কোন বিকার নেই। বেশ খুশী ও ফুর্তি নিয়েই তিনি আয়শার সাথে সহবত করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।এ হেন নবীর আদর্শ অনুসরন করতে গিয়ে সকল মুমিন মুসলমানের উচিত ৬/৭ বছরের মেয়েকে বিয়ে করা।আয়েশাকে বিয়ে করে মোহাম্মদ প্রমান করতে চেয়েছিলেন যে বন্ধুর কন্যাকেও বিয়ে করা যায়।তাই এখন থেকে মুমিন বান্দাদের উচিত তাদের সমবয়স্ক বন্ধুদের বাড়ীতে গিয়ে তাদের শিশু মেয়েদেরকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়া কারন সেটাই আদর্শ , স্বয়ং মহানবী তা নিজ জীবনে প্রদর্শন করে গিয়েছেন।মুমিন বান্দারা কতটা মানসিক প্রতি বন্ধি হলে তারা এ বিষয়টাতে বিন্দু মাত্র খারাপ কিছু দেখে না তা বিশেষ বিবেচ্য।
দয়া করে আপনার আসল পরিচয় বলবেন? মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ফলস নামে এসেছেন কেন?
অমুসলিম ইসলাম বিদ্বেষীগণ কিশোরী আয়েশা রাঃ-কে বিয়ে করার জন্য মুহাম্মদ সাঃ-কে নানাভাবে অভিযুক্ত ও আক্রমণ করে। এসব আক্রমণাত্মক অভিযোগের মধ্যে শিশু নির্যাতন ও একটি। তাদের অভিযোগ যে মুহাম্মদ (সা কালের সীমাবদ্ধতা উত্তীর্ণ হতে পারেন নি, তিনি সর্বকালের আদর্শ হতে পারেননি। আমরা এখানে তাদের অভিযোগগুলো যাচাই করতে যাচ্ছি।
প্রথমে দেখি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটেনিকায় Child Abuse বা বাচ্চাদের সাথে কুকর্মের সংজ্ঞা কী দিয়েছে-
শিশুদের সাথে কুকর্ম করা, যাকে শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতাও বলা হয়, এইটি হচ্ছে ইচ্ছাকৃত ভাবে শিশুদেরকে অন্যায় ভাবে আঘাত দেয়া এবং ভোগান্তি আরোপ করা। এই পরিভাষা যে সব অর্থ বহন করে তা হল এই: অসংযত/অপরিমিত শারীরিক নির্যাতন করা;অসঙ্গত অশ্লীলতা ভাষা ব্যবহার করা, দুর্ব্যবহার; উপযুক্ত নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থতা,খাদ্য, চিকিৎসা ও মানসিক সমর্থ দানে ব্যর্থতা; অবৈধ যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা; যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণ;এবং শিশুদের নিয়ে অশ্লীল ছবি তৈরি করা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা প্রায়ই “ শিশু আঘাত জনিত লক্ষণ” বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। শিশুদের সাথে অপমানজনক কুকর্ম/দুর্ব্যবহার পৃথিবীর প্রায় সব দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত এবং ফৌজদারি সংবিধিমালায় দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। শিশুদের সাথে দুর্ব্যবহার তার ভবিষ্যৎ জীবনে গভীর পরিণতি বা প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া শারীরিক বিকাশে বিলম্ব, ভাষার ব্যবহার ও অর্থ অনুধাবনে বৈকল্য, ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন, শিক্ষা ও ব্যবহারে সমস্যা –এগুলো হচ্ছে কিছু সাধারণ বিষয় যা নাবালক দুর্ব্যবহার, অযত্ন ও অবহেলা থেকে উদ্ভূত হয়। (এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ১৯৯৮)
মন্তব্যঃ- উপরে উল্লেখিত নির্ণায়ক গুলোর মধ্যে কোন নির্ণায়ক মুহাম্মদ সাঃ জীবনের ইতিহাসে পাওয়া যায়নি । আয়েশা রাঃ অথবা অন্য কোন মানুষকে এই ধরণের আঘাত এবং যন্ত্রণা মুহাম্মদ সাঃ দেবার কোন একটি ঘটনা পাওয়া যায়না। আয়েশা রাঃ বা মুহাম্মদ সাঃ অন্য কোন স্ত্রী বা উপপত্নীর সাথে মুহাম্মদ সাঃ মৌখিক ভাবে হোক আর শারীরিক ভাবে যৌন নিপীড়নের কোন ন্যুনতম উদাহরণ দেখা যায়নি। ইতিহাসে আয়েশা রাঃ উনার নিজের এবং আশেপাশের অনেক মানুষের, এমনকি মুহাম্মদ সাঃ এর মত ব্যক্তিত্বের অনেক ঘটনা রাখঢাক না করেই বর্ণনা করে গিয়েছেন – কিন্তু তিনি নিজে কখনও মুহাম্মদের সাঃ স্ত্রীর দায়িত্ব পালন কালে কোন ধরণের যন্ত্রণা বা কষ্ট ভোগ করেছিলেন তাঁর কোন বর্ণনা উল্লেখ করে যাননি। বরং যখনই মুহাম্মদ সাঃ ভিন্ন কারণ বশতঃ অন্য মহিলাদেরকে বিয়ে করে এনেছিলেন তখন আমরা উনাকে অনেকসময় ঈর্ষান্বিত হতে দেখছি। এবং কোন এক ঘটনার কারণে মুহাম্মদ সাঃ স্ত্রীদের থেকে ১ মাস দূরে থাকার প্রতিজ্ঞা করে দূরে থেকে মাস পূর্ণ হবার পর স্ত্রীদের হুজরায় গিয়েছিলেন সেই সময় আয়েশা রাঃ বলে উঠেছিলেন- ইয়া রাসুলাল্লাহ, আজ তো ২৯ দিন মাস পূর্ণ হয় নাই!!! যে স্ত্রী হিসেব করে অপেক্ষার প্রহর গুনতেন এবং সতীনদের প্রতি ঈর্ষা বোধ করতেন – এই বাস্তবতাই বলে দেয় দেয় যে তিনি কি পরিমাণ ভালবাসতেন মুহাম্মদ সাঃ কে।.
“শিশুদের সাথে দুর্ব্যবহার তার ভবিষ্যৎ জীবনে গভীর পরিণতি বা প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া শারীরিক বিকাশে বিলম্ব,ভাষার ব্যবহার ও অর্থ অনুধাবনে বৈকল্য,ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন,শিক্ষা ও ব্যবহারে সমস্যা –এগুলো হচ্ছে কিছু সাধারণ বিষয় যা নাবালক দুর্ব্যবহার,অযত্ন ও অবহেলা থেকে উদ্ভূত হয়”।
উপরে উল্লেখিত কোন একটি সমস্যার কথা আয়েশা রাঃ জীবনী থেকে জানতে পাই না,যা পাই বরং তার উল্টা প্রতিচ্ছবি-আয়েশা রাঃ কে বাস্তব জীবনে আমার দেখে পাই – তাঁর ব্যক্তিত্ব, শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক সর্ব দিক দিয়ে তিনি অনন্যা ছিলেন তাঁর প্রখর স্মৃতি শক্তির বাস্তব স্বাক্ষর আমরা হাদিসের মাধ্যমে জানতে পারি। তিনি মুহাম্মদ সাঃ ওফাতের পর দীর্ঘ ৫০ বছর মানুষকে কোরআন হাদিস শিক্ষা দান করেছিলেন শুধু তাই নয় মুহাম্মদ সাঃ পরবর্তী তিন তিন জন খলিফাকে পরামর্শ সহায়তা দিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে,আয়েশা রাঃ মুহাম্মদ সাঃ কে বিয়ে করে উনার অভিভাবকত্ব লাভ করে তিনি নির্যাতিত শিশু হিসাবে নয় বরং আশীর্বাদ প্রাপ্ত শিশু ছিলেন।
মুহম্মদ সাঃ এর বিরুদ্ধে অভিযোগকে বিশ্লেষণ এবং খণ্ডন করার পর আমাদের কাছে বিকল্প টেকসই যা বলার আছে তা হচ্ছে- আয়েশা রাঃ সাথে মুহাম্মদ সাঃ বিয়ে দ্বারা মানবতা এবং ইসলামের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হয়েছিল। আসুন আমরা আমাদের দাবী বিশ্লেষণ করে দেখি-
মুহাম্মদ সাঃ আয়েশা রাঃ কে প্রাথমিক যে তিন কারণের জন্য বিয়ে করেছিলেনঃ
আবু বকর রাঃ সাথের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার মজবুত বাঁধনে পর্যবেশিত করে রাখা।
আয়েশা রাঃ ইসলামের বিধি বিধান শিক্ষা এবং তৈরী করা যাতে তিনি ইসলামের বিধি বিধানকে সংরক্ষণ, (বিশেষ করে নারীদের জন্য একান্ত বিষয়াদি) রাসুল সাঃ জীবন ইতিহাস, আল কোরআনের আয়াতের নাজিলের কারণ এবং মানুষকে তাঁর সঠিক শিক্ষাদান করতে পারেন।
উনাকে সে ভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল যাতে তিনি উনার সম্পূর্ণ সক্ষমতাকে ইসলামের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
আয়েশা রাঃ কে বিয়ে করা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা যা ওহির মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
মুহাম্মদ সাঃ থেকে সে সম্পর্কে যে বর্ণনা তিনি জেনে ছিলেন সেই কথা আয়েশা রাঃ নিজেই বর্ণনা করে গিয়েছেন-তিনি বলেছেন-“তোমাকে বিয়ে করার আগে আমাকে ২ বার স্বপ্ন দেখান হয়েছিল। আমি দেখেছি একজন ফেরেশতা তোমাকে এক টুকরো রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে আসছেন। আমি বললাম- আপনি নিকাব উন্মোচন করুন! যখন তিনি নিকাব উন্মোচন করলেন তখন আমি দেখতে পেলাম যে ঐ মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম –এইটি যদি আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা অবশ্য বাস্তবায়ন করবেন। তারপর আবার আমাকে দেখানো হলো যে, একজন ফেরেশতা তোমাকে এক টুকরো রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে আসছেন। আমি বললাম- আপনি নিকাব উন্মোচন করুন! যখন তিনি নিকাব উন্মোচন করলেন তখন আমি দেখতে পেলাম যে ঐ মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম –এইটি যদি আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা অবশ্য বাস্তবায়ন করবেন। (সহি বুখারী ২৪১৮)
আয়েশা রাঃ জন্ম লাভ করেন মুহাম্মদ সাঃ এর নবুয়ত লাভের পর এবং উনার পিতা মাতার ইসলাম গ্রহণের পর, সম্পূর্ণ ইসলামী আক্বিদা ও পরিবেশে তাঁর জন্মের সময় তাদের পরিবারে প্রাক ইসলামী মুশরিকদের সংস্কার, আচার আচরণ কোনটাই তাঁর মগজে স্থান লাভ করতে পারে নাই। তিনিই জন্মগত ভাবে মুসলিম শিশু হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ইসলাম অবিকৃত ভাবে তাঁর ভিতর রূপ গ্রহণ করতে পেরেছিল। কাজেই উনার চিন্তা চেতনায় খাঁটি ইসলামী বিশ্বাস বিরাজমান ছিল।
আয়েশা রাঃ প্রাথমিক ভাবে সাফা বিনতে আব্দুল্লাহ নাম্নীয় মহিলার তত্বাবধানে শিক্ষা লাভ করেন। তারপর সে যুগের সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী উনার পিতা আবু বকর রাঃ কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। অসাধারণ ধীশক্তি সম্পন্না ও জিজ্ঞাসু স্বভাবী আয়েশা রাঃ পক্ষে উপযুক্ত শিক্ষকই জুটেছিল। তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তি সম্পন্না ছিলেন। একবার যা শুনতেন তা অন্তরে গেঁথে রাখতে পারতেন। এই কারণে তিনি বাল্য থেকেই লক্ষণীয় সৌন্দর্য্য ও প্রখর স্মৃতিশক্তির কারণে সবার কাছে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি মুহাম্মদ সাঃ স্নেহময় যত্ন এবং সতর্ক পরিচর্যায় চলে আসার কারণে এবং স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিসাবে তিনিই এক মাত্র অতি কাছ থেকে মুহাম্মদ সাঃ এর কাছ থেকে ইসলামী জ্ঞান এবং সূক্ষ্মদর্শিতা লাভ করেছিলেন যা অন্য কোন নারীর পক্ষে সেই রূপ জ্ঞান এবং সূক্ষ্মদর্শিতা লাভ করা সম্ভব হয়নি। .
মুহাম্মদ সাঃ এর ওফাতের পর ৫০ বছর তিনি নবীর কাছ প্রাপ্ত ইসলামী শিক্ষার শিক্ষকতা করেছিলেন। উম্মতের কাছে ব্যাপক ভাবে রাসুলের হাদিস পৌঁছে দেবার জন্য এমন বয়সের স্ত্রীর প্রয়োজন ছিল। তাই এই বিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশে যে হয়েছিল তা কোন মুসলিমদের স্বীকার করতে দ্বিধা থাকা উচিত নয়। হাফসা রাঃ সালমা রাঃ এর মত আয়েশা রাঃ এর পুরো কোরআন মুখস্থ ছিল। এমন কি মুহাম্মদ সাঃ ওফাতের পর উনার কাছে উনার নিজস্ব কোরআনের একটি সংকলন ছিল।
হাদিস বর্ণনাকারীদের অন্যতম চারজনের ( আবু হুরাইয়াহ রাঃ, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ, আনাস ইবনে মালিক রাঃ) মধ্যে আয়েশা রাঃ একজন ছিলেন। যিনি একাই ২০০০ হাজারের বেশি হাদিস বর্ণনা করে গেছেন। উনার ২২১০টি হাদিসের মধ্যে থেকে ১৭৪টি হাদিস বুখারী আর মুসলিমে স্থান পেয়েছে। তাঁর বর্ণনা কৃত হাদিসে মধ্যে এমন কিছু হাদিস আছে যা নারীদের একান্ত বিষয় যা আয়েশা রাঃ ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া যায় নাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে, উনার ভাগনা হযরত উরুওয়া ইবনে যোবায়র (রা সহ কমপক্ষে তিন জন হাদিস বিশারদ হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদিসসমূহ সহীফাকারে লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সাহাবিয়ে কেরাম পরবর্তী যুগে উরুওয়াহ ছিলেন একজন প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ। ইসলামী হাদিস বিশারদগণ বলে থাকেন- আয়েশা রাঃ না থাকলে ইলমে হাদিসের অর্ধেকই বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়ে যেত।
নিচের হাদিস থেকে বুঝা যেতে পারে যে, অনেক সাহাবিয়ে কেরাম আয়েশা রাঃ এর কাছ থেকে জ্ঞান লাভ করেছিলেন-
আবু মুসা (রাঃ)হতে বর্ণিতঃ এক দল মুহাজির এবং এক দল আনসারের মধ্যে একবার মতবিরোধ দেখা দেয়। জনৈক আনসার বলেছিলেন- গোসল ফরজ হবে কেবলমাত্র তখনই যদি বীর্য বেরিয়ে আসে। কিন্তু মুহাজিরগণ বলেন যে, মেয়ে লোকের সাথে সঙ্গমে মিলিত হলেই গোসল ফরজ হয়ে যায় । আবু মুসা রাঃ বললেন- ঠিক আছে, আমি তোমাদেরকে এ বিষয়ে সঠিক নিয়ম বাৎলে দেব। তিনি (আবু মুসা) বলেনঃ আমি সেখান থেকে উঠে আয়েশা রাঃ নিকট গেলাম এবং তার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থনা করলাম। অনুমতি মিলল এবং আমি তাকে প্রশ্ন করলামঃ উম্মুল মোমেনীন,আমি আপনাকে এমন একটি বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই যা বলতে আমারই লজ্জা লাগছে। তিনি বললেন, যে কথা তুমি তোমার জন্মদাত্রী মাকে জিজ্ঞেস করতে লজ্জা পেতে না, আমাকেও তুমি তা জিজ্ঞেস করতে পার। আমি তোমার মায়ের মতোই। এ কথার পর আমি তাকে বললাম- একজন পুরুষের উপর গোসল ফরজ হয় কখন?উত্তরে তিনি বললেন- তুমি ঠিক জায়গায়ই এসেছ। রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন- কোন ব্যক্তি যদি (স্ত্রীলোকের) চারটি প্রত্যঙ্গের উপর সওয়ার হয় এবং খৎনা করা অঙ্গটি পরস্পর স্পর্শ করে, তখনই গোসল করা ফরজ হয়ে দাড়ায়। সহি মুসলিম, বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৮৪
উরওয়া বিন জুবায়ের বলেছেন-“ আমি কখনও কাউকে পাই নাই যিনি আল কোরআন, হালাল এবং হারামের আদেশ নিষেধ, ইলমুল আনসাব বা নসব-শাস্ত্র এবং আরবি কবিতায় আয়েশা রাঃ এর চেয়ে বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। সেই কারণে অনেক বয়োজৈষ্ঠ সাহাবিয়ে কেরামগণ জটিল কোন বিষয় নিরসনে আয়েশা নিরসনে সাহায্য গ্রহণ করতেন। দেখুন- ইবনে কাইম ও ইবনে সা’দ কর্তৃক জালা-উল- আফহাম ভল্যুম ২ এর ২৬ পৃষ্ঠা।
আবু মুসা আল আশারী রাঃ বলেনঃ- আয়েশা রাঃ নিকট নিয়ে যাওয়া কোন সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের কখনো কোন অসুবিধা হয় নাই। দেখুনঃ- সীরাত-ই-আয়েশা, তিরমিজি পৃঃ ১৬৩
একজন শিক্ষক হিসাবে ছাত্রদেরকে অনুপ্রাণিত করার সুস্পষ্ট ভাষণ রীতি আয়েশা রাঃ আয়ত্তে ছিল। সমকালীন মানুষের মধ্যে বাগ্মিতার বাগ্মিতায় তিনি ছিলেন সেরা একজন। এই বিষয়ে আল আনাফ রাঃ এর বর্ণনা পাওয়া যায়, তিনি জানান যে, তিনি আবুবরক রাঃ থেকে উমর রাঃ, উসমান রাঃ, আলী রাঃ সহ সমকালীন খলিফার দেওয়া ভাষণ শুনেছেন কিন্তু আয়েশা রাঃ মুখ থেকে যে আকর্ষণীয় ভাবে অনুপ্রেরণা মূলক ভাষণ শোনা যেতে সেই ভাবে অন্য কারো মুখ থেকে বের হতে তিনি শুনেন নাই।
আবু মুসা আল আশারীর বর্ণনায় জানা যায় যে, নবী সাঃ বলেন- অন্যান্য মহিলার সাথে আয়েশা রাঃ এর শ্রেষ্ঠত্বের তুলনা ত্বারিদের সাথে অন্যান্য অন্যান্য খাদ্যের শ্রেষ্ঠত্বের তুলনার মত। (ত্বারিদ হচ্ছে গোস্ত আর রুটি তৈরি এক প্রকার অতুলনীয় খাদ্য)। দেখুন বুখারী ৪-৬৪৩।
মুসা ইবনে তালহা রাঃ বলেন- আমি দেখিনাই কোন একজনকে আয়েশা রাঃএর চেয়ে ভাল ভাষণ দিতে। দেখুনঃ হাকিমের মুস্তাদ্রাক ভল্যুম ৪ পৃঃ ১১
দূর দূরান্তের নারী পুরুষগণ আয়েশা রাঃ এর থেকে জ্ঞান লাভ করেছিলেন। উনার দারুণ আগ্রহ সহকারে আধ্যায়নে আল কোরআন বোধগম্য হয়েছিল। তিনি বেশ কিছু আয়াত নাজিলের চাক্ষুষ সাক্ষী ছিলেন। কয়েক বার উনার বিছানায় রাসুল সাঃ কাজে ওহী নাজিল হয়েছিল। সেই কারণে সেই আয়াত নাজিলের কারণ সম্পর্কে উনার সুস্পষ্ট ধারণা ছিল যার কারণে এই আয়াতের ব্যাখ্যা করা তাঁর জন্য সহজ ছিল।
মুহাম্মদ সাঃ আয়েশা রাঃ কোলে মাথা রেখেই ইন্তেকাল করেছিলেন। এবং উনার ঘরেই রাসুল সাঃকে দাফন করা হয়েছিল।
আয়েশা রাঃ এর জীবন ইতিহাস প্রমাণ করে দিচ্ছে যে, নারীরা চেষ্টা করলে পুরুষদের চেয়েও বেশী জ্ঞান অর্জন করার ক্ষমতা রাখেন এবং যে কোন এক বা একাধিক বিষয়ে পাণ্ডিত্য অর্জন এবং বিশারদদেরও শিক্ষক হতে পারেন। তাঁর জীবন আরও প্রমাণ করে যে, একজন নারীও ক্ষমতা আছে অন্যান্য নারী ও পুরুষদের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাদের নেতৃত্ব দান করতে অনুপ্রাণিত করতে।
আয়েশা রাঃ আজো সমান ভাবে অনুপ্রেরণা এবং আদর্শ ভূমিকা রাখতে পারেন আমাদের তরুণদের মাঝে যারা একটি আদর্শ চরিত্র পাওয়ার জন্য তারা কায়মনোবাক্যে খুঁজে চলছেন তাদের প্রিয় তারকা, চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী কিংবা ক্রীড়া তারকাদের মধ্যে।
আয়েশা রাঃ যে ভাবে এখনও মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের মধ্যে চির জাগরূক আছেন এবং অব্যাহত ভাবে চির জাগরূক থাকবেন । আমরা মহান আল্লাহর দরবারে আরজ জানাচ্ছি এই মহান মহীয়সী নারীকে বেহেস্তে দরজা বুলন্দ করে দিন। আমিন!
উপসংহারঃ
উপরে বর্ণিত আয়েশা রাঃ কার্যক্রম এবং গুণাবলি বিচার বিশ্লেষণ করার পর প্রমাণ হয় যে, রাসুল সাঃ পরবর্তী সময়ে ইসলামের সেবার জন্য মুহাম্মদ সাঃ প্রত্যক্ষ পরিচর্যায় মাধ্যমে আয়েশা রাঃকে ছাঁচে ঢেলে সক্ষম করে তোলাই ছিল কিশোরী আয়েশা রাঃ বিয়ে করার প্রধান কারণ। কোন অবস্থাতে বিপথগামী ওরিয়েন্টালিস্ট বা বর্ণবাদী মুশরিক, বা ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক তথা এন্টি মুসলিমগণে অপপ্রচার তাদের বিকারগ্রস্ত আনা কারণ নয়।.
অতএব আমি দুনিয়ার আস্তিক নাস্তিক, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ সকল অকপট মানুষদেরকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আমরা – আপনারা আসুন মনের বন্ধ দরজা জানালা খুলে কোরআন এবং সুন্নাহর নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত উৎসের আলোকে মুহাম্মদ সাঃ জীবনী পড়ুন। নিজেদের বিবেক দ্বারা নিজেরাই বিচার করুন কোনটি সত্য কোনটি মিথ্যা!
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মালিক আপনার আমার সবার সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা ইসলামকে মানব সমাজ সত্য বলে স্বীকার করে নেওয়ার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে দুনিয়াতে চিরস্থায়ী শান্তি যেমন আসবে তেমন করে মৃত্যু পরবর্তী জীবনেও দোযখের আগুন থেকে পাবেন চির পরিত্রাণ।
আমি তাঁকে (মোহাম্মদ সাঃ) বিশ্লেষণ করে দেখেছি – আশ্চর্য এক ব্যক্তি এবং আমার মতে তিনি অ্যান্টি ক্রাইস্ট তো নন-ই, বরং তাঁকে অবশ্যই মানবতার রক্ষাকারী হিসাবে বর্ণনা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যে তাঁর মতো মানুষ যদি আধুনিক পৃথিবীর একজন সার্বভৌম ক্ষমতাপ্রাপ্ত শাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি এর সমস্যাগুলির সমাধান এমন ভাবে করতে সক্ষম হবেন যে এতে আবার বহু প্রয়োজনীয় সুখ ও শান্তি ফিরে আসবে।
— জর্জ বার্নার্ড শ', দ্য জেনুইন ইসলাম ভল্যুম.১,নং ৮১৯৩৬।
আজ যদিও মুহাম্মদ সাঃ স্বশরীরে আমাদের মধ্যে নাই তথাপি উনার মহত্তম জীবন আদর্শ পৃথিবীর সকল মানুষের অনুসরণের জন্য উত্তম রূপে সংরক্ষিত করা আছে।
British Dictionary definitions for pedophile এর সজ্ঞ্যায় বলা হয়েছে- a person who is sexually attracted to children. Child Abuse এর ধারার pedophile একটি যঘন্য অপরাধ। এবং নিচের এই হাদীসটিই নবী মোহাম্মদের pedophile চরিত্র প্রকাশ পায়।
উর্সা হতে বর্নিত- আল্লাহর নবী আবু বকরকে তার কন্যা আয়শাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলেন।আবু বকর বললেন- কিন্তু আমি তো তোমার ভাই হই। নবী বললেন-তুমি তো আমার ধর্ম সম্পর্কিত ভাই, তাই আয়শাকে বিয়ে করাতে আমার কোন বাধা নেই। সহি বুখারী, ০৭:১৮
শুধু তাই না, কোরাণের বর্ণনায় স্ত্রী নির্যাতনের অনুমতি আছে। "পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।"
যে কারনে মোহাম্মদ তার নিজ স্ত্রীদের নির্যাতন করতেন। যার প্রমান মিলে নিচেরে এই সহিহ হাদীসের বর্ণনা থেকে
Muslim (4:2127) - Prophet(S) struck his favorite wife, Aisha, in the chest one evening when she left the house without his permission. Aisha narrates, "He struck me on the chest which caused me pain."
নিচের এই হাদীসটিও নবী কতৃক স্ত্রী নির্যাতনের বিষয়টির অনুমোদন আরও প্রকট ভাবে প্রকাশ পায়। Bukhari (72:715) - A woman came to Muhammad and begged her to stop her husband from beating her. Her skin was bruised so badly that she it is described as being "greener" than the green veil she was wearing. Muhammad did not admonish her husband, but instead ordered her to return to him and submit to his intimate desires. নবী কতটা নিষ্ঠুর হতে পারলে কথা বলতে পারেন!!!
আপনি বলেছেন- "মুহাম্মদ সাঃ আয়েশা রাঃ কে প্রাথমিক যে তিন কারণের জন্য বিয়ে করেছিলেনঃ
আবু বকর রাঃ সাথের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার মজবুত বাঁধনে পর্যবেশিত করে রাখা।
আয়েশা রাঃ ইসলামের বিধি বিধান শিক্ষা এবং তৈরী করা যাতে তিনি ইসলামের বিধি বিধানকে সংরক্ষণ, (বিশেষ করে নারীদের জন্য একান্ত বিষয়াদি) রাসুল সাঃ জীবন ইতিহাস, আল কোরআনের আয়াতের নাজিলের কারণ এবং মানুষকে তাঁর সঠিক শিক্ষাদান করতে পারেন।
উনাকে সে ভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল যাতে তিনি উনার সম্পূর্ণ সক্ষমতাকে ইসলামের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
বাহ বা, চমৎকার যুক্তি বটেই। আবু বকর রাঃ সাথের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার মজবুত বাঁধনে পর্যবেশিত করে রাখা। তা হলে, এখন থেকে তাই এখন থেকে মুমিন বান্দাদের উচিত হবে তাদের সমবয়স্ক বন্ধুদের বাড়ীতে গিয়ে তাদের শিশু মেয়েদেরকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়া কারন সেটাই আদর্শ , স্বয়ং মহানবী তা নিজ জীবনে প্রদর্শন করে গিয়েছেন। আশা করি আপনার মানসিক প্রতিবন্ধি মন তাতেও সায় দিবে।
উনাকে সে ভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল যাতে তিনি উনার সম্পূর্ণ সক্ষমতাকে ইসলামের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
মানুষকে এত ভোদাই মনে করেন ক্যান? এ কাজ গুলো করার জন্য ৬ বছরের আয়শাকে বিয়ে করতে হবে কেন!! মহা দার্শনিক সক্রেটিসের মত একটি পাঠশালা খুলে আয়শা'দের মত বুদ্ধিমান মেয়েদের নিয়ে স্টাডি সার্কেল করা যে্ত না। নাকি যৌন সহবত না করে ছাত্রীকে শিখনো যয় না?????? উত্তর দিন
২। আয়েশা রাঃ কে বিয়ে করা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা যা ওহির মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
শুধু আয়শা না, সুন্দরী মক্ষীনারী মোহাম্মদের নজরে পরলে আল্লার ওহি ফাটাফাট অটোমেটিক জারি হয়ে যেত। এটা রসিক জনেরা ঠিকই বুঝে?? হাহা, হাহা।
আপনারা আছেন বলেইতো মহান ইসলামের আলো বিচ্ছুরিত হচ্চে .... ধন্যবাদ আরও সমালোচনা করুন মহান ইসলাম ধর্মের
এই শয়তানের এজেন্টটিকেও ব্লগ থেকে ভাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্লগ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষোন করছি।
আপনি বল্লেন মোহাম্মদ কখনো স্ত্রী নির্যাতন করেন্নি। আমি কোরাণ হাদীসের পাতা উল্টে প্রমান করে দিলাম তিনি স্বয়ং শুধু স্ত্রী নির্যাতনকারী নন, বরং স্ত্রী নির্যাতনকারী পুরুষদের উসকে দিতেন।
আর, প্রোঢ় নবীর বিবি আয়শা কে বিয়ে করার যেসব খোড়া যুক্তি দিয়েছেন ওগুলো গন্ডমূর্খ ৭২ বেশ্যালোভি মুমিনদের সান্তনা দিলেও কমন ফুরামে এক্কেবারেই হাস্যকর। আমি সেটাও প্রমান করে দেখিয়েছি।
এখন আপনাকে কল্লা কাটার ঈমানী জোশ পেয়ে বসেছে । মেধা, যুক্তি, ভাষা, শিষ্টতা, শিক্ষা, সভ্যতা.......শুন্যের কোঠায় চলে গেলেই মানুষ এমন সিংস্র হয়ে যায়। আইসিস, বোকোহামাম, তালেবানদের যে দশা হয়েছে।
আসলে কোরাণ হাদীসের গোবর যাদের মাথায় একবার ঢুকে যায় তাদের প্রতি করুনা ছাড়া আর কিছু করার নেই। আপনার প্রতি করুনা......।
আপনার জন্য একটাই ডায়ালগ মনে পড়ছে, " ভন্ড ভাইগা যান- এক্কেরে কৃষ্ণের কোলে রামলীলা করেন গিয়ে" এইটাই তো পৌত্তলিকদের একমাত্র ধর্ম।
আর রবি বাবুর প্রথম সন্তান হয় তার স্ত্রীর বয়স যখন ৯
আর, কবি রবীন্দ্রনাথ তার বাল্য বয়সেই বালিকা বধু বরন করেছেন। তিনি আপনার নবীর মত নস্ট/পঁচা বুড়ো পিডোফিল ছিলেন্না। বিষয়টি এমন্না যে বিয়ের সময় রবীন্দ্রনাথের ঘরে আরো ১৪টি বিবি/বান্দি/যৌনদাসী বিদ্যমান ছিল। ধন্যবাদ।
ঠিক, সহমত। যে কারনে কেউ কখনো দাবি করেনা যে সম্রাট অশোকা, আকবর অথবা রাণী এলিজাবেথ-১......... এর জীবনী পৃথিবীর সর্বকালের পাথেয়, আদর্শ। কিন্তু বেকুব মুসলমানরা দাবি করেন ৭ শতকের মোহাম্মদ পৃথিবীর সর্বকালের, সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ আদর্শ। সমস্যা এখানেই।
এই তো, আস্তে আস্তে আপনার মাথা খুলতাসে ভাই। ধন্যবাদ।
তা, আপনার নবী মোহাম্মদ সমাজের কী কী সংস্কার করেছেন! বহুবিয়ে, শিশু বিয়ে, ক্রীতদাসীর'দের যৌনতা, যুদ্ধবন্ধী নারী ধর্ষন, দাস কেনাবেচা, নারীস্বাক্ষ পুরুষের অর্ধেক, নারীকে চার দেয়ালে বন্ধি,চাবুক দোররা, কব্জিকাটা, পাথর নিক্ষেপ........... এসব ৭ শতকী নেয়ামতকে চিরস্থায়ী হেফাজত করে গেছেন। মানুষ ওনাকে সর্বকালে অনুসরণ করবে না তো, কাকে করবে?? মারহাবা।
আমার উত্তর:
ব্লগার "শেষ বিকেলের" অভিযোগটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। কারণ ৭ বছর মতান্তরে ৬ বছর বয়সে আয়েশা (রাঃ) এর সাথে নবী (সাঃ) বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু আয়েশা (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর ঘরে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন ৯ বছর বয়সে যখন তিনি সাবালিকা ছিলেন। আর রাসূল (সাঃ) তখন বৃদ্ধ ছিলেননা। তিনি ৪০ বছর বয়সে নবী হন। মক্কায় ১৩ বছর অবস্হান করেন এবং হিজরতের ২/৩ বছর আগে আয়েশা (রাঃ)কে বিয়ে করেন। অর্থাৎ তিনি তখন মধ্যবয়স্ক ছিলেন, বৃদ্ধ না। রাসূল (সাঃ) তার কোন স্ত্রীকেই নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেননি। অনেকক্ষেত্রেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহর নির্দেশেই তা কার্যকর হয়েছ। এমনকি যখন কোরআনের এই আয়াত নাজিল হয়: "হে! নবী আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে এসো,আমি তোমাদের ভোগ-সামগ্রীর ব্যবস্হা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদেরকে মুক্ত (বিবাহ বিচ্ছেদ) করে দেই। (আহযাব: ২৮)" ,তখন রাসূল (সাঃ) সর্বপ্রথম আয়েশা (রাঃ) এর নিকট যান এবং এ আয়াতটি বর্ণনা করেন। এবং তাকে বলেন, তুমি এ ব্যাপারে তোমার মা-বাবার সাথে আলোচনা করতে পার। আয়েশা (রাঃ) সাথে সাথেই উত্তর দিলেন," এই তুচ্ছ বিষয়ে আমাকে আমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ করতে হবে? আামিতো আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ও পরকালের আবাসই কামনা করি।" (বুখারী-৪৮৮৪, ৯ম খন্ড)
আয়াত ও ঘটনা জানার পরে রাসূল ষাঃ) এর অন্যান্য স্ত্রীগণও (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) এর মত অনুভুতি ব্যক্ত করেন।
নাস্তিক ও উগ্র হিন্দুরা সর্বদা একটা কথা বলে, আয়েশা (রাঃ) বাদে ( যায়নাব বিনতে জাহাশ ছিলেন তালাকপ্রাপ্তা) রাসূল (সাঃ) এর সব স্ত্রী যেহেতু বিধবা ও অধিকাংশই বয়স্কা ছিলেন কাজেই মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবূ বকর (রাঃ)-এর কিশোরী মেয়ের উপর কুনজর দিয়েছিল। আয়েশার সুন্দর চেহারা তাকে পাগল করে দেয় তাই বিয়ের নামে ৯ বছরের কিশোরীকে ঘরে তুলে যৌন কামনা চরিতার্থ করাই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। (নাউযুবিল্লাহ)
# আমার উত্তর: নাস্তিক ও উগ্র হিন্দুদের কাছে একজন স্ত্রী মানে শুধুমাত্র একজন সেক্স পার্টনার ছাড়া আর কিছুই না। যাকে যেভাবে ইচ্ছা ভোগ করা যায়। তাদের পূর্বপুরুষ মার্কস, এঙ্গেলস, নিৎসে, দুরখেইম, ফ্রয়েড রা যেমন পরিবার প্রথার বিলোপের পক্ষে বলেছেন, পরিবারের বদলে মানব বংশবৃদ্ধির উপায় হিসেবে কমিউন কালচার চালুর পক্ষে বলেছেন, আজ ঠিক তাদের উত্তরাধিকারী বর্তমান নাস্তিকেরা যৌন স্বাধীনতা বা আবাধ যৌনতায় বিশ্বাস করেন, পরিবার প্রথার বিলোপের কথা বলেন। সমকাম, লিভ টুগেদারকে promote করেন। আবার নাস্তিকেরা বলেন, মোহরানা হল পতিতা ভাড়া করার ইসলামিক সিষ্টেম। (নাউযুবিল্লাহ) পতিতাকে যেমন যৌন চাহিদা পুরণের জন্য টাকা পরিশোধ করতে হয় তেমনি মুসলিম পুরুষরাও স্ত্রীকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি যৌন চাহিদা পুরণের জন্য মোহরাণার অর্থ পরিশোধ করেন। (নাউযুবিল্লাহ) অথচ আমরা মুসলিমরা ভাল করেই জানি, একজন মুসলিম নারীর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই মুসলিম স্বামীর উপর মোহরাণার অর্থ প্রদান করাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। যেন তার মৃত্যু বা আকস্মিক কোন বিপদে তার স্ত্রীকে অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। তার মানে এটা প্রমাণিত তারা নারী-পুরুষের সম্পর্ককে যৌনতা ছাড়া অন্য কিছুর ভিত্তিতে বিচার করেনা। অথচ আমরা কোরআন থেকে জানি, আল্লাহ নারী-পুরুষকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন, স্বামী-স্ত্রী হল একে অন্যের পোশাক স্বরূপ, মুমিনের জন্য বিয়ে মানে তার ঈমানের অর্ধেক পুরণ হওয়া, মুমিন পুরুষকে চরিত্রবান হতে গেলে তার স্ত্রীর সার্টিফিকেট লাগবে আবার একজন মুমিন স্ত্রীর জান্নাত লাভের সহজ পথ মুমিন স্বামীর সন্তুষ্টি এবং মুমিন স্ত্রী- মুমিন স্বামীর বৈবাহিক সম্পর্ক জান্নাতেও অটুট থাকবে।
# আর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে যৌনতা বলবেন? কিভাবে? আমাদের আদি পিতা আদম (আঃ) এর সাথি হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাতা হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টি করেছিলেন, আল্লাহ নিজেই তাদের বিয়ে দিয়েছিলেন এবং জান্নাতের একটা অংশে তারা দীর্ঘদিন অবস্হান করেছেন। আচ্ছা জান্নাতে থাকাকালীন সময়ে কি মানব ইতিহাসের প্রথম স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন যৌন সম্পর্ক ছিল?? নাহ! কোরান বলে, ছিলনা। পৃথিবীতে আসার পরই তাদের সেটা দরকার হয়েছে কারণ সন্তানের প্রয়োজনে। কাজেই ইসলামে স্বামী-স্ত্রী মানে সেক্স পার্টনার না। আবার স্বামী-স্ত্রীর যৌন ক্রিয়াতেও ইসলাম স্পষ্টভাবে হালাল-হারামের বিধান জানিয়ে দিয়েছে। যেমন: রাসূল (সাঃ) বলেন:-
ক. আল্লাহ ঐ ব্যক্তির প্রতি ফীরে তাকাবেন না, যে ব্যক্তি কোন নারী (স্ত্রী) বা পুরুষের মলদ্বারে মৈথুন করে।
খ. অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি যে লুতের কওমের মত কুকর্ম (সমকাম/ANAL SEX ) করে।
# হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসগুলিতে বর্ণনা করা হয়েছে, রাসূল (সাঃ) যৌন সম্পর্ক ছিল যে কোন ধরণের নোংরামি থেকে মুক্ত। কাজেই বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগ নিতান্তই নাস্তিকদের চরম বিকৃত রুচি ও নবী (সাঃ) বিদ্বেশি মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
# নাস্তিকরা আয়েশা (রাঃ) এর ৯বছর বয়সের কথা বলে তার প্রতি মায়াকান্না দেখায়। তিনি নাবালিকা ছিলেন পরিস্হিতির শিকার ছিলেন ইত্যাদি জঘন্য কথাবার্তা বলে রাসূল (সাঃ) এর চরিত্র নিয়ে মিথ্যাচার করে। কারণ তাদের কাছে বিয়ের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য সেক্স পার্টনার অর্জন করা। যাকে মোহরাণা প্রদান করা লাগবে না, সে পুরুষের সমান তাই তাকেই অর্থ কামাই করে নিজের ভরণপোষনের দায়িত্ব পালন করতে হবে কারণ স্বামীর টাকা তার জন্য অসন্মানজনক। সে স্বামীর সাথে থাকবে শুধুমাত্র নিজ যৌন চাহিদার জন্য, এটাই নাস্তিক্য থিওরি।
#১৮ বছর বয়সে সাবালক-সাবালিকা হয় এমন ধারণা আমাদের মাঝে এসেছে ব্রিটিশ আইনের কারণে। একটা সময় পৃথিবীময় ছিল ব্রিটিশ শাসন আমরাও ছিলাম ব্রিটিশ কলোনি। সম্প্রতি ভারতে আলোচিত মেডিকেল ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ১৭ বছরের তরুণ। তার বিচার হলে সাজা হবে মাত্র ৩ বছর কারণ সে শিশু!!!! আচ্ছা যেই ছেলে তার থেকে ৬ বছরের বড় একজন নারীকে ধর্ষণ করা শিখে গেছে সে কি নাবালক? সাধারণভাবে বললে ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্ত বয়স্ক হবার বিষয়টা অনেকাংশে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগলিক আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে, কোন আইনের উপর নির্ভর করেনা। আবার জেনেটিক্স এর ভাষাতেও যথার্থ ব্যাখ্যা আছে। বাংলাদেশ এর মত দেশগুলোতে ছেলে মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় ১১-১২ বছরের মাঝে। আবার ইউরোপের শীত প্রধান এলাকাগুলোতে ১৬,১৭ বা ১৮ বছর লাগতে পারে আবার আরবের মরুভূমির গরম আবহাওয়ার জন্য সেখানে সাধারণত ৯ বছরেই প্রাপ্তবয়স্ক হবার ব্যাপারটা ঘটে থাকে। খৃষ্টান পাদ্রিদের মতে, যখন মারিয়াম (আঃ) এর গর্ভে ঈসা (আঃ) (জেসাস/যিশু) এর জন্ম হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩-১৫ বছরের মধ্যে, যা কিনা ঐতিহাসিক ভাবে সত্য। তাহলে কি খৃষ্টানদের ইশ্বর যিশুর মাও নাবালিকা ছিলেন? কাজেই রাসূল (সাঃ) কোন নাবালিকাকে ঘরে তোলেননি। আর আগেও বলেছি নাস্তিক বা উগ্র হিন্দুদের কাছে যেহেতু বিবাহিতা স্ত্রী মানে শুধুমাত্র সেক্স পার্টনার কাজেই তাদের মাথায় জঘন্য সব চিন্তার উদয় হবে সেটাই স্বাভাবিক।
তাহলে এবার আসুন আমরা হযরত আয়েশা (রাঃ) কে বিয়ের কারণগুলো ব্যাখ্যা করি।
# আয়েশা বিনতে আবূ বকর (রাঃ): হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবস্হানের শেষ সময়ে রাসূল (সাঃ) তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবূ বকরের কণ্যা আয়েশা (রাঃ) কে বিয়ে করেন যখন তার বয়স ছিল ৭ মতান্তরে ৬। এই বিয়ের সিদ্ধান্ত স্বয়ং আল্লাহ জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে প্রদান করেন তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তবে তা বাস্তবায়ন করুন। হযরত আয়েশা (রাঃ) মদিনায় হিজরতের পরে ৯ বছর বয়সে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে রাসূল (সাঃ) এর গৃহে শিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন।
শিক্ষার উদ্দেশ্যে??? অবাক হচ্ছেন? আমরা ছোট বয়সে স্কুলে ভর্তি হই শিক্ষার উদ্দেশ্যে তারপর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। আবার অনেকে গবেষণা নির্ভর পড়ালেখা চালিয়ে যান পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আয়েশা (রাঃ) ও রাসূলের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন এই শিক্ষা অর্জনের জন্যই। তিনিই সেই আয়েশা (রাঃ) যিনি সাহাবীগণ (রাঃ), কোরানের প্রসিদ্ধ তাফসীরকারক, মুহাদ্দিস(হাদিস বিশেষজ্ঞ), ফকীহ( ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ) সহ ইসলামের বড় বড় আলেমদের শিক্ষক। রাসূল (সাঃ) যখন ইন্তেকাল করেন তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর। ফাতিমা (রাঃ) ছাড়া রাসূল (সাঃ)-এর কোন সন্তান জীবিত অবস্হায় ছিলেন না। হযরত ফাতিমা (রাঃ) নিজেও রাসূল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের মাত্র ৬মাস পরেই ইন্তেকাল করেন। এ অবস্হায় নবী পরিবার হিসেবে ইসলামের প্রসার ও শিক্ষার দিক থেকে রাসূল (সাঃ) পরিবারের প্রতিনিধিত্ব গ্রহণ করেন হযরত আয়েশা (রাঃ) ও যয়নাব (রাঃ)। তিনি ছিলেন কোরানের হাফেজ এবং সর্বপ্রথম তিনিই কোরানের আয়াতসমূহ গণনা করেন এবং কোরআনের লিপিবদ্ধকরণেও তার ভূমিকা ছিল। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী মুসলিমদের মধ্যে তার অবস্হান ছিল দ্বিতীয়। তিনি ২২১০ টি বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণনা করেন যা ছিল আবূ হুরায়রা (রাঃ) (পাচ হাজারের অধিক) এর পরে সর্বাধিক। ইসলামি ফিকহ বা শরীয়তের এক-চতুর্থাংশ এসেছে সম্পূর্ণরূপে তার গবেষণা থেকে। আরব জাতীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তার জানার পরিধি ছিল বিশাল এবং তিনি কথা বলতেন আরবের সবচেয়ে বিশুদ্ধতম ভাষায় এবং কবিতা চর্চাও করতেন। তৎকালীন সময়কার চিকিৎসা বিদ্যা সম্পর্কেও তার জ্ঞান ছিল। রাসূল (সাঃ) মৃত্যুর পর ৫৮ হিজরীতে নিজ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইসলামি শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে কাজ করে গেছেন। তার নিজস্ব একটি ইসলামী শিক্ষালয় ছিল যেখানে ছাত্রসংখ্যা ছিল প্রায় ২০০ । মুসলিম খলিফাদের দরবারে তিনি ফতোয়া প্রদান করতেন। সাহাবী ও তাবেয়িরা দ্বীনের ব্যাপারে কোন বিষয়ে সমস্যায় পতিত হলে সাথে সাথে ছুটে যেতেন তার কাছে সমাধানের আশায়। হ্যা! তিনিই সেই নারী যাকে ছাড়া তৎকালীন মুসলিম সমাজ কল্পনা করা অসম্ভব।
#ওহে! মুসলিম ভাই-বোনেরা এই মহিয়সী নারী কোথা থেকে এত জ্ঞান অর্জন করলেন?
উত্তর একটাই: তার শিক্ষক ও নারী-পুরুষ গোটা মানবজাতির শিক্ষক মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর কাছ থেকেই এই জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। নবী (সাঃ)-এর গৃহেই তিনি তার শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেছেন আর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুসলিম সমাজে সেই শিক্ষা বিস্তারেই জীবন ব্যায় করেছেন।
#যার বিয়ে হয়েছে ছোটকালে সে কিভাবে এত গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠল? কার হাত ছিল?
উত্তর: ফেরেশতারা যখন মানবসৃষ্টি নিয়ে আল্লাহর সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছিলেন তখন আল্লাহ তাদের বলেছিলেন, হে! ফেরেশতারা আমি যা জানি তোমরা তা জান না। সবজান্তা আল্লাহই এই নারীকে সৃষ্টি করেছিলেন, তিনিই রাসূল (সাঃ) এর সাথে তাকে সরাসরি সিদ্ধান্তের দ্বারা বিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ আল্লাহ তায়ালা জানতেন, তিনি আয়েশা (রাঃ) কে ভবিষ্যতে কোন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন, যা কিনা রাসূল (সাঃ) ও হয়ত জানতেন না। তাই তিনি জিবরাইল (আঃ) কে বলেছিলেন, "আমার সাথে আয়েশার বিয়ের সিদ্ধান্ত যদি আল্লাহর হয়ে থাকে তবে বাস্তবায়ন করুন (আমার নিজস্ব কোন মতামত নেই)।" কাজেই নাস্তিকদের এলোমেলো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।
এদের কি খেয়ে দেয়ে আর কোন কাজ নেই?
মন্তব্য করতে লগইন করুন