১২৬ বছর পর যেভাবে ধরা পড়ল সিরিয়াল কিলার 'জ্যাক দ্য রিপার'
লিখেছেন লিখেছেন রাজিবুল হাসান ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:৫০:৪৪ রাত
১২৬ বছর পর যেভাবে ধরা পড়ল সিরিয়াল কিলার 'জ্যাক দ্য রিপার'
===============
রাতের আঁধারে ডুবে গিয়েছে হোয়াইটচ্যাপেল। পূর্ব লন্ডনের এই ঘিঞ্জি বস্তিতে ‘খদ্দের’-এর সঙ্গে ফিরছিলেন যৌনকর্মী ক্যাথরিন এডোওয়ে। হঠাৎ তীব্র চিৎকার। ছুটে আসেন পাড়া-পড়শিরা। দেখেন রক্তে ভাসছেন ক্যাথরিন। পেট ফালাফালা। সালটা ১৮৮৮। সে বছর একই রকম ভাবে খুন হয়েছিলেন পূর্ব লন্ডনের আরও চারজন যৌনকর্মী। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড তখন খুনিকে ধরতে পারেনি। শুধু নাম দিয়েছিল ‘জ্যাক দ্য রিপার’। ১২৬ বছর পরে সেই কুখ্যাত খুনির পরিচয় জানা গেছে বলে রবিবার দাবি করল এক ব্রিটিশ সংবাদপত্র।
কে এই খুনি? ওই দৈনিকের দাবি, পুলিশের সন্দেহের তালিকায় সব চেয়ে উপরের দিকে যে তিন জনের নাম ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম অ্যারন কসমিনস্কি। আদতে পোল্যান্ডের বাসিন্দা এই ইহুদি পেশায় ‘হেয়ারড্রেসার’ ছিল। পুলিশ প্রথম থেকেই জানত, অ্যারন ‘প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়ায়’ আক্রান্ত। যার জেরে বহু সময়ই সে নিজেকেও যৌন নির্যাতন করত। সম্ভবত সেই বিকৃত কামের তাড়না মেটাতেই পর পর পাঁচ যৌনকর্মীকে হত্যা করে। প্রথম কোপে গলার নলি ফাঁক, তার পর নিহতদের পেট চিরে কারও জরায়ু, কারও কিডনি বের করে নেওয়া নৃশংসতায় ‘অদ্বিতীয়’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সে।
কিন্তু লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড কিছুতেই ধরতে পারেনি এই ‘সিরিয়াল কিলারকে'’। মাঝে প্রশ্ন উঠেছিল, জ্যাক দ্য রিপার কি একই ব্যক্তি? তদন্তে নেমে পুলিশ অবশ্য নিশ্চিত হয়ে যায় এক জনই খুন করেছে ওই পাঁচ যৌনকর্মীকে। তাকেই জ্যাক দ্য রিপার নাম দিয়ে শুরু হয় তদন্ত। তখনই অ্যারনের নাম উঠে আসে। কিন্তু সে সময় মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি হয় অ্যারন। শেষ দিন পর্যন্ত ওখানেই ছিল সে। ফলে জোরালো সন্দেহ থাকা সত্ত্বেও ধরা যায়নি তাকে।
তা হলে শতাব্দী-প্রাচীন রিপারকে এখন কী ভাবে চেনা গেল? এর পিছনেও রয়েছে প্রায় এক অবিশ্বাস্য কাহিনি। ২০০৭ সালে নিলামে রাসেল এডওয়ার্ডস নামে এক ব্যবসায়ী একটি শাল কিনেছিলেন। নিলামের সময় তিনি শুধু জানতেন, শালটি রিপার-রহস্যের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু পরে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন, শালটি ক্যাথরিন এডোওয়ে হত্যার সময় খুঁজে পেয়েছিল পুলিশ। রাসেল সেটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। তখনই সেখানে দুই ব্যক্তির শতাব্দীপ্রাচীন ডিএনএ-র সন্ধান মেলে। সন্দেহের নিরসন করতে রাসেলের অনুরোধে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শাল থেকে সেই নমুনা সংগ্রহ করেন বিশেষজ্ঞ জারি লৌহেলেনেন। আর তার পর ক্যাথরিনের উত্তরসূরির সঙ্গে ডিএনএ-র নমুনাদু’টি মেলান। একটার সঙ্গে মিলও পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটি ডিএনএ ক্যাথরিনের। কিন্তু দ্বিতীয়টি কার? বিভিন্ন প্রমাণ দেখে রাসেলের সন্দেহ হয়েছিল অ্যারনই খুনি। তাই অ্যারনের এক উত্তরসূরির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। আর তার পর শুরু হয় দ্বিতীয় ডিএনএ-র সঙ্গে মিল খোঁজার কাজ। এখানেও সাফল্য। অ্যারনের উত্তরসূরির সঙ্গে অবিশ্বাস্য মিল রয়েছে দ্বিতীয় ডিএনএ-র। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় ছবিটা।
সুত্র:আনন্দ াজার
বিষয়: বিবিধ
৮৪৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন