তোমরা যারা ফেইসবুক ও ব্লগে দাওয়াহ দাও এবং উগ্রভাবে কথা বল --- দাওয়াহ নিয়ে ড. ইউসুফ আল-কারাযাভীর একটি মূল্যবান উপদেশ

লিখেছেন লিখেছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:১৮:৩৮ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম



আমরা তো অনেক সময় আচার-আচরণে ‘আন্তরিক’ ও ‘কর্কশের’ তফাতও ভুলে যাই। প্রকৃত দা’ঈকে মধুর ভাষণ ও সদয় অভিব্যক্তি দিয়ে দাওয়াতী কাজ চালাতে হবে। এমন প্রমাণ আছে যে, কর্কশ আচরণের ফলে আসল বিষয় বিকৃত বা বিলীন হয়ে গেছে। এগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। এজন্যেই বলা হয়েছে, যে ভালো পথের আদেশ করে সে যেন ঠিক পথে করে।

ইমাম গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ) তার ‘আমরু বিল মারুফ ওয়া নাহি আনিল মুনকার’ বইতে লিখেছেন, “যে ব্যক্তি ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং নিষেধ করে খারাপ কাজ থেকে তার ধৈর্য, সহানুভূতি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থাকতে হবে।” প্রসঙ্গত তিনি একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। একবার এক ব্যক্তি খলীফা আল-মামুনের দরবারে এসে কর্কশ ভাষায় পাপ-পুণ্য বিষয়ক পরামর্শ দান শুরু করলো। ফিকাহ সম্পর্কে আল-মামুনের ভালো জ্ঞান ছিলো। তিনি লোকটিকে বললেন, “ভদ্রভাবে কথা বলো। স্মরণ করো আল্লাহ তোমার চেয়েও ভালো লোককে আমার চেয়েও একজন খারাপ শাসকের কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং তাকে নম্রভাবে কথা বলার আদেশ দিয়েছিলেনতিনি মুসা (আ) এবং হারুনকে (আ) যারা তোমার চেয়েও ভালো পাঠিয়েছিলেন ফিরআউনের কাছে, যে আমার চেয়েও খারাপ ছিলো এবং তাদেরকে আদেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা উভয়ে ফেরআউনের কাছে যাও সে খুব উদ্ধত হয়ে গেছে। “অতঃপর তোমরা তাকে নম্র কথা বল, হয়তো সে চিন্তা-ভাবনা করবে অথবা ভীত হবে।” [২০: ৪৩-৪৪]

এভাবে মামুন তর্কে জয়ী হলেন। আল্লাহ মূসাকে (আলাইহিস সালাম) ভদ্র ভাষায় ফিরাউনের কাছে দাওয়াত পেশ করার শিক্ষা দিয়েছেন। মূসা (আ) ও ফিরাউনের মধ্যকার সংলাপ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ফিরাউনের ঔদ্ধত্য, নিষ্ঠুরতা ও লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সত্ত্বেও মূসা (আ) অত্যন্ত সতর্কতার সাথে দাওয়াত পেশ করেছেন। সূরা আশ-শূরায় এ বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়।

রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবন ও সুন্নাহ অধ্যয়ন করলেও আমরা দেখি দয়া, মায়া, নম্রতা সেখানে কঠোরতার কোন অবকাশ নেই। তাই কুরআন বলছে, “তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।” [৯:১২৮]

সাহাবীদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে কুরআন বলছে, “আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো।” [৩:১৫৯]

[ইসলামি পুনর্জাগরণ : সমস্যা ও সম্ভাবনা, ড. ইউসুফ আল কারাদাওয়ি, পৃষ্ঠা ১২৯]

Download The Book

This excellent Book Download From Here -

অসাধারণ এই ছোট্ট লেকচারটী দেখতে ভুলবেন নাহহহহহহহ

How to Give Dawah - Nouman Ali Khan - Quran Weekly

http://www.youtube.com/watch?v=gjyPsMz-kpc

বিষয়: বিবিধ

১২৫৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266638
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৪৩
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৪
210859
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদHappy
266771
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ শিক্ষনিয় পোষ্টটির জন্য।
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৩
210858
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
266839
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
"আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে।"
(সুরা নাহল, আয়াত-১২৫)

ভার্চূয়াল জগতে যারা ইসলামের কথা বলেন তাদের অনেককে, বিশেষ করে এই ব্লগের কিছু লেখককে আয়াতটি আবার স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
জাযাকাল্লাহ খইর
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৩
210857
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ। সেটাই। এই জন্যই পোস্ট দেওয়া।
321467
২১ মে ২০১৫ রাত ০১:৪৯
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভালো লাগল, ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File