কার কাছ থেকে দ্বীন শিখছেন সে ব্যাপারে সতর্ক হন --শাইখ মীর্জা ইয়াওয়ার বেইগ

লিখেছেন লিখেছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৫০:২৯ সকাল

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম

অনেকেই প্রশ্ন করেন, “কোনো ‘আলিম—যিনি অনেক জানেন, কিন্তু তার মধ্যে হয়তো সেই পরিমাণ চর্চা নেই—সে কী করছে না করছে এত কিছু না-ভেবে শুধু দীন শেখার উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে গেলে ক্ষতি কী?”



আপাতদৃষ্টিতে প্রশ্নটি যুক্তিসঙ্গত মনে হলেও, নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখুন তো, “আমি কি এমন কারও কাছ থেকে বিমান ওড়ানো শিখব, যে কিনা বিমান সম্বন্ধে সবকিছুই জানে, অথচ কখনো কোনো বিমান ওড়ায়নি?”

আসলে সমস্যাটা হচ্ছে ইসলামের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে। ইসলাম কোনো মতবাদ বা কারও ব্যক্তিগত ভাবাদর্শ নয়। ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হয়েছে একে মতবাদের স্তরে নামিয়ে এনে। আর দশটা মতবাদ আর দর্শন যেভাবে শিখি ইসলামকেও আজ আমরা সেভাবে শিখছি।
আমরা ইসলামের মূলনীতিগুলো শিখি, আইনের জটিল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো শিখি, এটা ওটার মানে শিখি―কিন্তু যা শিখেছি সেটা চর্চা করার কোনো প্রয়োজন দেখি না। এটাই কি পূর্বসূরি-সালাফদের নীতি?

আপনারা অনেকেই ইব্‌ন ‘উমার (রা.)-এর সেই ঘটনাটার সাথে পরিচিত। সেখানে আমরা দেখি, সবকিছুর ওপরে তাঁরা চর্চা বা ‘আমাল করাকে গুরুত্ব দিতেন। যা শিখেছেন সেটার চর্চা করে সন্তুষ্ট না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ইচ্ছে করেই আর নতুন কিছু শিখতেন না। কত সুন্দর করেই না আমরা মানুষদের এ ঘটনাগুলো বলে বেড়াই কিন্তু আমাদের মধ্যে সেই চর্চা কোথায়? এটা কেমন মানসিকতা?

ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা। নৈতিক মূল্যবোধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। চর্চা ও আচার-আচরণের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে। পরিপূর্ণভাবে ইসলাম চর্চা করছেন এমন কাউকে সরাসরি দেখে ও তাঁর সাথে থেকে ইসলাম যতটা শেখা যায়, কেবল বই পড়ে কিংবা কিছু লেকচার শুনে তার সামান্যই শেখা যায়। সাহাবাদের মর্যাদা কেন এত উঁচুতে? কারণ তাঁরা পেয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গ। তাঁর সাথে থেকে থেকে ইসলামের পাঠ নিয়েছেন সাহাবারা। নিজেদেরকে দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করে এভাবেই শিক্ষা দিতেন পূর্বসূরি বিদ্বানগণ।

সুতরাং একজন দীন-শিক্ষার্থীর জন্য প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে তার শিক্ষকের যোগ্যতা বিবেচনা করা। আমার মতে একজন শিক্ষকের মধ্যে নিম্নলিখিত পাঁচটি গুণ খুঁজে দেখতে হবে। এবং যার মধ্যে এই গুণগুলো পাওয়া যাবে তাকেই গ্রহণ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এই সবগুলো গুণেরই চিহ্ন যেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কথায়, কাজে ও জীবনে চোখে পড়ে। কোনটার প্রাধান্য বেশি হবে সেই ভিত্তিতে এগুলো এভাবে সাজানো হয়েছে:

-- শিক্ষকের তাকওয়া (আল্লাহর প্রতি সদা-সচেতনতা) ও খাশিয়াতুল্লাহ (আল্লাহভীতি—তাঁর যুহ্‌দ ও ইবাদাহ, বিশেষ করে নাওয়াফিল ইবাদাহ)

-- তাঁর আকীদাহ (তাওহীদের বিশুদ্ধতা; শির্ক ও কুফ্‌রের প্রতি প্রবল ঘৃণা)

--সুন্নাহর অনুসরণ (প্রাত্যহিক সব কাজে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে)

-- নাম-খ্যাতি-সম্পদের মোহ এড়িয়ে চলা (কারণ এগুলো হৃদয়ের অসুখ)

-- জ্ঞান

এখানে লক্ষ্যণীয় যে, জ্ঞানকে আমি সবার শেষে স্থান দিয়েছি। জ্ঞানের গুরুত্ব নেই, ব্যাপারটা এমন না; তবে অন্যান্য গুণাবলির তুলনায় এটাই এর প্রকৃত অবস্থান। যে-জ্ঞানীর মধ্যে তাকওয়া ও খাশিয়াতুল্লাহর অভাব রয়েছে, তাঁর আকীদা-বিশ্বাস ভ্রান্ত, সে সুন্নাহর অনুসরণ করে না, সে ছোটে অর্থহীন খ্যাতি ও সম্পদের পেছনে। যেই জ্ঞান তার নিজেরই কোনো কাজে লাগেনি, সেই জ্ঞান দিয়ে সে কীভাবে তার ছাত্রদের কল্যাণ করবে?

আল-বিশ্‌র আল-হাফি নামে ইমাম আহমাদ ইব্‌ন হানবালের একজন বন্ধু ছিলেন। ইমাম আহমাদ তাঁর বন্ধুকে উস্তাদ বলতেন। কেউ একজন তাঁকে বললেন, ‘বিশ্‌র তো খুব বেশি হাদীস় জানে না; তার ইল্‌ম কম।’ ইমাম আহমাদ বললেন, “জ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে খাশিয়াতুল্লাহ। বিশ্‌রের আল্লাহভীতি প্রবল। প্রকৃত ইল্‌ম এটাই।”

ইমাম মালিকের উস্তাদের ব্যাপারে তাঁর মা তাঁকে উপদেশ দিতেন, “রাবী’ঈয়ার কাছ থেকে জ্ঞান শেখার আগে আখলাক় শিখবে।”

‘উলামার গুণাবলী বর্ণনায় আল্লাহ বলেছেন,

ফাতির ২৮: إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاء

(অর্থের ব্যাখ্যা) যাদের মধ্যে জ্ঞান আছে আল্লাহর দাসদের মধ্যে তারাই প্রকৃত অর্থে তাঁকে ভয় করে।

তিনি আরও বলেছেন,

হুজুরাত ১৩: إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ

(অর্থের ব্যাখ্যা) তোমাদের মধ্যে যার তাকওয়া আছে আল্লাহর দৃষ্টিতে সে-ই সবচেয়ে সম্মানিত।

কাজেই দীনের জ্ঞান নেওয়ার আগে অবশ্যই শিক্ষকের যোগ্যতা যাচাই করতে হবে। কারণ একজন জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য এটা জীবন-মরণের প্রশ্ন নয়; এটা পরকালীন জীবনের প্রশ্ন।


ঠিক-বেঠিকের মধ্যে পার্থক্য করা একজন সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কঠিন একটা ব্যাপার। বিশেষ করে তারা যদি এমন কোনো বাকপটু তর্কবাগীশ লোকের ফাঁদে পড়েন যিনি খুব ভালো করেই জানেন কীভাবে তর্কে জিততে হয়। কিংবা এমন কোনো লোক যিনি কথার মাধ্যমে নিজেকে ‘আলিম হিসেবে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারেন। এরকম অসংখ্য দৃষ্টান্ত আছে যেখানে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ভেড়ার পালের একদল ভেড়ার মতো এসব প্রতারণাকারীদের অনুসরণ করছে। অনুসরণ করতে করতে ভেড়াগুলো যে নিজেরাই স্বেচ্ছায় কসাইখানায় ঢুকছে সে ব্যাপারে এদের কোনো চিন্তা নেই। কথিত এসব ‘আলিমগণ নিজেরাই বিভ্রান্ত। আপনার পকেট থেকে টাকা খসানোর জন্য তারা এমন সব কথা বলবে যেগুলোকে আপনার কাছে খুবই যৌক্তিক মনে হবে। কারণ আপনার নিজের নাফ্‌সেরই যেখানে পরিচর্যা প্রয়োজন, সেখানে ভ্রান্ত স্কলারদের এ ধরনের কথাবার্তা আপনার ব্যক্তিগত কামনাকে আরও উসকে দেবে। আর একারণেই অনেক লোক এমন সব ‘আলিমদেরই খোঁজে যারা তাদের কামনা পূরণে সহায়তা করে, তারা যা করতে চায় সেগুলোকে ‘অনুমোদন’ দেয়, বিভিন্ন ইসলামিক আইনের ফাঁকফোকর খুঁজতে সাহায্য করে—যদিও ইসলামিক আইনে কোনো ফাঁকফোকর নেই।

দৃষ্টান্তস্বরূপ সেসকল ‘আলিমদের কথা বলা যায় যারা ইসলামের নামে সংগীত, নাচ এবং খ্রিষ্টান রিভাইভালিস্টদের ইঙ্গিতবাহী বিভিন্ন রীতিনীতির অনুমোদন দেয়। কোনো হারামকে হালাল বললেই তা হালাল হয়ে যায় না। মূলত এর ফলে যা হয়, বিচক্ষণ ও বোধসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে এসব কথিত ‘আলিমদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায়। অবশ্য কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের চোখ বন্ধ করে রাখে তাদের কথা আলাদা।

জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে ইবলীস জাহান্নামে যাবে না। ইবলীস জাহান্নামে যাবে আল্লাহর প্রতি ভয় না-থাকার কারণে। সাংঘাতিক এই পীড়ার কারণে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ংকর পরিণতি থেকে তার জ্ঞান তাকে বাঁচাতে পারবে না। যারা হাতে গোনা কিছু বই পড়েছে, অমুক-তমুক কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়েছে কিন্তু তারবিয়্যার শিক্ষা পায়নি, তাদের পরিণতিও একই। তাদের মধ্যে আল্লাহভীতির চরম ঘাটতি আছে। তাদের কামনা-ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য তারা জ্ঞানের অপব্যবহার করে ইসলামিক বিধিবিধানের ফাঁকফোকর খোঁজে। তারা তাওয়ীলাত (ব্যাখ্যা ও ওজর) তৈরি করে। এবং তাদের বক্তব্যের সমর্থনে—খালি চোখেই যেটার ভুল ধরা পড়ে—কুরআন-হাদীস ব্যবহার করে। তারা যে নিজারেই তাদের জাহান্নামের পথ সুগম করছে সে ব্যাপারে যেন একেবারেই বেখেয়াল। তাদের এই জ্ঞান তাদের জীবিকা অর্জনের একটা উপায়; আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার নয়।

একজন প্রকৃত ‘আলিম একটি বাতির মতো। ঘরে কেউ আছে কি না সেটা নিয়ে তিনি মাথা ঘামান না। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার কারণেই তিনি ঘরটা আলোকিত করেন; কারণ এটাই যে তার স্বভাব! স্বাভাবিকভাবেই যারা তাঁর আশেপাশে থাকেন, তারা তাঁর জ্ঞানের আলোয় নিজেদের উদ্ভাসিত করেন। যদিও সেই ‘আলিম ব্যক্তিগতভাবে এগুলো নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন; বাতি কি কখনো জিজ্ঞেস করে, ‘কেউ কি আমার দিকে তাকিয়ে আছে?’ বাতির শিখা একা একাই জ্বলজ্বল করে জ্বলে ওঠে। এটাই তার প্রকৃতি। জ্বলে ওঠা ছাড়া আর কী করার আছে তার! আর এটাই ‘উলামা-উল-হাক়—প্রকৃত বিদ্বানদের বৈশিষ্ট্য। জ্ঞানের মাঝেই তাঁরা গড়ে তোলেন তাঁদের বসতি, কেননা তাদের মনে শুধু একটিই অভিলাষ: আল্লাহর সন্তুষ্টি।

প্রখ্যাত ‘আলিম শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলাওয়ির ছেলে শাহ আব্‌দুল-আযিয দেহলাওয়ি একবার দিল্লির এক জামিয়া মাসজিদে লেকচার দিচ্ছিলেন। এটা এশিয়ার অন্যতম বড় মাসজিদ। হাজারো লোক এসেছিল তাঁর বক্তৃতা শুনতে। জনারণ্যের শেষ মাথা পর্যন্ত যেন তাঁর কথা শোনা যায় তেমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দেড় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য রাখেন তিনি। বক্তৃতা শেষ করে তিনি তার চেম্বারে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় এক লোক এসে বলল, “হাযরাত, দিল্লি থেকে বহু দূরের অমুক গ্রাম থেকে শুধু আপনার কথা শোনার জন্যই এসেছিলাম। আমি যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও অনেক বেশি সময় লেগে গেছে আসতে। অনেক কষ্ট হয়েছে। কিন্তু এসে দেখি আপনার লেকচার শেষ। খুব খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে আমার সব কষ্ট বিফলে গেল। আমি এখন কী করব?”

শাহ আব্‌দুল-আযিয তাকে বললেন, “আপনি বসুন। আমি আবার বলছি।“ তিনি উঠে দাঁড়ালেন। যে-উদ্যম ও নিষ্ঠা নিয়ে তিনি হাজারো লোকের সামনে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেই একই উদ্যম ও নিষ্ঠা নিয়ে তিনি গ্রামের সেই লোকটির সামনে বক্তৃতা দিলেন। লোকটি তাঁর বক্তৃতা শুনে খুব মুগ্ধ হলেন। শাহ আব্‌দুল-আযিযকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়ে তাঁর জন্য অনেক দু‘আ করে বিদায় নিলেন তিনি।

শাহ আব্‌দুল-আযিযের ছাত্ররা এই ঘটনা দেখে তো বিস্ময়ে হতবাক। ছাত্রদের একজন জিজ্ঞেস করল, “শায়খ, খুবই আশ্চর্যজনক একটা ঘটনা দেখলাম আজকে। হাজারো লোকের সামনে আপনি যেভাবে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, গ্রামের এই লোকটির সামনে আপনি সেই একইভাবে বক্তৃতা দিলেন। লোকটি এমন এক গ্রাম থেকে এসেছিল যে গ্রামের নাম আমরা কখনো শুনিইনি, কিন্তু আপনি যেভাবে বক্তৃতা দিলেন, যে দরদমাখা কণ্ঠে, সমান নিষ্ঠা ও উদ্দীপনার সাথে বক্তৃতা দিলেন সেটা এক কথায় অভাবনীয়। কীভাবে সম্ভব এটা?”

শাহ আব্‌দুল আযিয বললেন, “এতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে? হাজার হাজার লোকের সামনে যখন আমি কথা বলছিলাম তখন আমি যেমন শুধু একজনকে সন্তুষ্ট করার জন্যই কথা বলেছি, এখনো আমি যখন একজন লোকের সামনে বক্তৃতা দিয়েছি আমার উদ্দেশ্য ছিল শুধু তাঁকেই খুশি করা।”

আল্লাহ যেন উনার উপর এবং সব উলামা-উল-হাক়-এর উপর সন্তুষ্ট হন।

তারবিয়্যার ফল এটাই। শাহ আব্‌দুল আযিয তাঁর বাবার কাছ থেকে সঠিক তারবিয়্যার শিক্ষা নিতে পেরেছিলেন। আল্লাহ তাঁদের সবার উপর সন্তুষ্ট হোক।

যারা এই লেখাটি পড়ছেন, তারা যা জানেন সেটা যদি চর্চা করে থাকেন, তাহলে আমার মনে হয় জান্নাতে যাওয়ার জন্য যতটুকু জানা প্রয়োজন, সম্ভবত তারা ইতিমধ্যেই তা জেনে নিয়েছেন। তারপরও ‘জ্ঞান অন্বেষণ’-এর নামে আমরা এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াই, অথচ ইতিমধ্যেই যা জেনেছি সেগুলো চর্চা করার ব্যাপারে খুব একটা পাত্তা দেই না। কে কতটুকু জানে তার ভিত্তিতে কেউ জান্নাতে যাবে না। মানুষ জান্নাতে যাবে সে কী করেছে তার ভিত্তিতে।

তাই কার কাছ থেকে দীন শিখছেন সে ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকুন। অনেক কিছু জেনে আল্লাহর বিধানকে অমান্য করার চেয়ে অল্প জেনে সেটা পালন করাই অনেক বেশি ভালো। বেশি জেনে আল্লাহর অবাধ্যতা করার মতো কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।

আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় পাবেন না। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করুন। দেখবেন, আল্লাহই আপনাকে রক্ষা করছেন।

-------------------------------------------

ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ এর অনুবাদ।

ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটিতে BAIS কোর্সে পড়াশোনা

চাইলে ফ্রি কোর্স করতে পারেন সিস্টেম্যাটিক্যালি ইসলামকে জানার জন্য, ইচ্ছেমত কোর্স বাছাই করে পড়তে পারেন।

বিস্তারিত - http://www.islamiconlineuniversity.com

সুতরাং যারা ব্লজ্ঞ বা ফেইসবুকের লোকদের কাছ থেকে ইসলাম শিখতে চান, যারা খ্যাতির কারণে, লাইক বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আপনার দ্বিমতের সাথে দুর্ব্যবহার করে, যাদের জ্ঞানের ভিত্তি ও আমাল জানেন না, যারা স্কলার থেকে না শিখে কিছু বই পড়ে নিজের মত করে মতবাদ আকারে ইসলামকে তাদের মত করে ব্যাখ্যা করে, নিজেদের মতের মত করে, যাদের জ্ঞানের একাডেমিক ভিত্তি নেই, যাদের লাইক ও প্রশংসা রুগে নিমগ্ন ---একটূ সাবধান হউন , কারণ এটা আপনার সমস্ত জীবনের প্রশ্ন, পরকালীন জীবনের প্রশ্ন-সফলতা বা ব্যর্থতার প্রশ্ন।

বিষয়: বিবিধ

১৪০৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266282
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০২
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : বিশেষত ফেইসবুক যে আমাদের নিয়তকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, ডাইরেক্ট জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, রিয়া-প্রদর্শনেচ্ছায় পতিত করছে, শিরকএ লিপ্ত করছে, সঠিক ব্যবহার না জানার কারণে পথভ্রষ্ট করছে তার জন্য এই দুটি অসাধারণ লিংক দেখা যেতে পারে -

ফেইসবুক : লুকানো বিপদ ও শঙ্কা – উস্তাযা ইয়াসমিন মোজাহেদ
http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/7762/alsabanow13/53255#265303

The Fiqh of Facebook
- Sohaib Saeed
http://www.suhaibwebb.com/society/media/the-fiqh-of-facebook/

স্কলার লেভেলের লোকদের কাছ থেকে এরকম সাবধানতাকামী লেখা সত্যিই অনেক উপকারী।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
209973
কাহাফ লিখেছেন : পোস্ট অনেক বড় লাগে,পার্ট পার্ট করলে ভালো হতো।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১২
209980
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : জান্নাতের পথের ঠিকানা কি ফেইসবুকের/ব্লগের একটা ছোট্ট পোস্ট দিয়ে হয়? - এইটুকুই যদি পড়তে না পারি তবে আমাদের দুর্ভাগ্য। অথচ স্কলাররা এখনো ইমাম গাজ্জালীর ৪০ পার্ট্রের ইয়াহইয়া উলুম আদ্দ্বীন শেষ করে চল্লিশ দিনে, মুহাদ্দীসরা বুখারী রিভাইস করতো প্রতি ১০ দিনে একবার যাতে ভুলে না যায় এত বড় বই- এরকম আরো বহু উদাহরণ দেওয়া যাবে।
সূরা আলে ইমরানের শেষে এক্কবার পড়ে দেখুন - যারা জিকর করে, এবং চিন্তা করে - মানে যারা জ্ঞান অন্বষণ করে চিন্তা করে--তাদের জ্ঞান এত অল্প হলে আল্লাহর বিশালতা জানা সম্ভব? ---জ্ঞান ও আধ্যাতিকতা না থাকলে জান্নাতের রাস্তা কিভাবে চিনব ভাই?

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
209982
কাহাফ লিখেছেন : এত সব ভেবে আসলে কথাটা বলিনি, আল্লাহ আমি-আপনি-সবাইকে সঠিক বুঝ ও আমল দান করুন......আমিন।
জাযাকাল্লাহু তায়ালা খাইরান.....।Good Luck
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
209983
কাহাফ লিখেছেন : এত সব ভেবে আসলে কথাটা বলিনি, আল্লাহ আমি-আপনি-সবাইকে সঠিক বুঝ ও আমল দান করুন......আমিন।
জাযাকাল্লাহু তায়ালা খাইরান.....।Good Luck
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯
209984
বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ লিখেছেন : আসলে আমিও এক সময় এরকম ই ভাবগতাম, তাই ইসলামি পোস্ট একটু বড় হলে পড়তে অনীহা লাগত, কিন্তু এখন আর সেটা হয় না, তাই ভালো ভালো ইসলামী বই পড়তেও আর অনীহা লাগে না। আল্লাহ আমাদের বুঝের তাওফিক দিন। জাযাকাল্লাহ ভাই।
266283
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৪
কাহাফ লিখেছেন : জানার স্বল্পতার কারণে ইবলিশ শয়তান জাহান্নামে যাবে না,আল্লাহর ভয় ও তার নির্দেশিত আমল না করার কারণে জাহান্নামে যাবে সে।
অসাধারণ প্রয়োজনীয় কিছু বিষয়ের সুন্দর আলোচনা।আসলে-- জানার চেয়ে মানা জরুরী।আমলহীন আলেম ভয়ংকর জালেম হয়ে থাকে।
আল্লাহ আমাদের সঠিক তৌফিক দিন....আমিন।
266348
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৭
সালমা লিখেছেন : ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা। নৈতিক মূল্যবোধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। চর্চা ও আচার-আচরণের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে। পরিপূর্ণভাবে ইসলাম চর্চা করছেন এমন কাউকে সরাসরি দেখে ও তাঁর সাথে থেকে ইসলাম যতটা শেখা যায়, কেবল বই পড়ে কিংবা কিছু লেকচার শুনে তার সামান্যই শেখা যায়। সাহাবাদের মর্যাদা কেন এত উঁচুতে? কারণ তাঁরা পেয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গ। তাঁর সাথে থেকে থেকে ইসলামের পাঠ নিয়েছেন সাহাবারা। নিজেদেরকে দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করে এভাবেই শিক্ষা দিতেন পূর্বসূরি বিদ্বানগণ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File