নিছের এই লেখাটির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে -- আসুন একটি কালো পতাকা উড়াই--
লিখেছেন লিখেছেন এবেলা ওবেলা ২০ জুলাই, ২০১৪, ০৭:২৭:২৬ সন্ধ্যা
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে আপাতত ঘৃণা প্রকাশ ছাড়া আর কিইবা করার আছে। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপলক্ষে সারা দেশে প্রিয়দলের পতাকা উড়িয়েছেন সবাই। এবার আসুন ইসরায়েলি বিমান হামলায় যে শত শত নিরাপরাধ মানুষ মারা যাচ্ছে তাদের স্মরণে অন্তত একটি কালো পতাকা উড়িয়ে দেই। মানুষ দেখুক বাংলাদেশের আকাশে কালো পতাকা উড়ছে ইসরায়েলি বর্বরতা বিরুদ্ধে। এজন্যে আপনাকে মৌলবাদী হবার কোনোই প্রয়োজন নেই।
আপনি ঈদ উৎসব করছেন, বাচ্চাদের জন্যে জামা কাপড় কিনছেন, আরো কিনুন, আপনার ঈদ আপনারই থাকবে, শুধু এক খন্ড কালো পতাকা উড়িয়ে সবাইকে জানিয়ে দিন ইসরায়েল যা করছে তা কোনো যুদ্ধ নয়।
ইহুদি লেখক নোয়াম চমস্কি পর্যন্ত বলছেন গাজায় ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন হচ্ছে। নিরস্ত্র মানুষকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। বিমান থেকে লিফলেট ফেলা হচ্ছে যাতে লেখা আছে ফিলিস্তিনিরা সরে যাও। ওসব ঘরবাড়িতে অতীতের মত ইহুদীদের বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ডেকে এনে ঢুকিয়ে দেয়া হবে।
একটি কালো পতাকা আপনার প্রতিবেশির চোখে পড়বে। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লা থেকে মহল্লায় প্রশ্ন সৃষ্টি করবে কেন এই কালো পতাকা। তারা জানেন ইসরায়েলিরা কি করছে গাজায়। যারা জানেন না, টেলিভিশন দেখেন না, পত্রিকা পড়ার সুযোগ পান না তাদের কালো পতাকা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়ে দিন আপনিও মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করছেন।
যেমন দিন কয়েক আগে আমরা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্সের পতাকা উড়িয়েছি। পতাকা আইনে তা নিষিদ্ধ থাকলেও আমাদের প্রিয় দলের প্রতি আবেগ ও ভালবাসা ওসব দেশের পতাকা উড়াতে বাধ্য করেছে। দেশের কোথাও কোথাও জরিমানা করা হয়েছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পতাকা নামিয়ে ফেলতে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পতাকা ওড়ানোর মধ্যে দোষের কিছু নেই। এমনকি ফাইনাল খেলা শেষ হবার পর মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেসি গোল দিলে ভাল হত। এটা তার ফুটবলের প্রতি গভীর অনুরাগেরই বহি:প্রকাশ। এই অনুরাগ, ফুটবলের প্রতি ভালবাসা দোষের কিছু নয়। কিন্তু যে ফিলিস্তিনিদের মেরে ফেলা হচ্ছে, বোমার আঘাতে তাদের বাড়ি ঘর চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হচ্ছে তাদের প্রতি একটু সহানুভূতি জানানো কি মানুষ হিসেবে আমরা দেখাতে পারি না। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, ১৯৭১ সালে ফিলিস্তিন একাত্মতা প্রকাশ করেছিল। এটা আমরা কেমন করে ভুলে যাই?
আমরা ভাষার দাবিতে বুকের তাজা রক্ত দিয়েছি। আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস আছে। ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম করছে মানুষ হিসেবে এ পৃথিবীতে টিকে থাকার। আমরা ভাষা দিবসে বুকে কালো ব্যাজ পড়ি। এখন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে ফিলিস্তিনে, তাদের বিনা দোষে, বিনা কারণে হত্যা করা হচ্ছে, আসুন তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে কালো পতাকা উড়াই।
মসজিদে যে ইমাম মোনাজাত ধরছেন, তিনি যেন ফিলিস্তিনে মানুষের প্রতি ইসরায়েলি বর্বর হামলার বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান। আমরা আমাদের পকেট থেকে দুটো পয়সা খরচ করতে পারব না, কিন্তু একটি কালো পতাকা উড়ালে অন্তত ফিলিস্তিনের মানুষ জানবে এই বাংলায় তাদের প্রতি মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও প্রতিবাদ জানানোর কেউ আছে।
এই একটি কালো পতাকা সম্পূর্ণ প্রতীকি। এর মাঝে কোনো প্রকার রাজনীতির সংকীণতা নেই। ইসরায়েলিরা মুসলমান হত্যা করছে বলে কালো পতাকা নয়। মানুষ হত্যা করছে বলেই। একটি ফিলিস্তিনি শিশু সে মুসলমান কি না, খিস্টান কি না, ইহুদী কি না তার চেয়ে সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানব শিশু। তার মা তার নাম ধরে ডাকছে। তার নাম ধরে শোকে স্তব্ধ হয়ে কাঁদছে। যেমন ১৯৭১ এ কাঁদতেন যুদ্ধে যাওয়া কোনো মুক্তিবাহিনীর সদস্য দামাল ছেলের কোনো মা। তবু তার হাতে অস্ত্র ছিল। ফিলিস্তিনিরা নিরস্ত্র।
অথচ মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো বছরে শত শত বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনছে ইসরায়েলের দোসর, ম“দাতা, পরামর্শদাতা দেশগুলোর কাছ থেকে। কই সে সব অস্ত্র তো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে না একটি ফিলিস্তিনি শিশু রক্ষার জন্যে। মানবতা রক্ষার জন্যে। এই ঈদে মধ্যপ্রাচ্যের রাজা বাদশাহরা, তাদের যুবরাজ ও পত্মীরা উড়োজাহাজে গিয়ে বিলেতের মত বিভিন্ন দেশ থেকে কেনাকাটা সারছেন। তাদের বিমান উড়ে যাওয়ার সময় তারা কি দেখতে পাচ্ছেন গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর সেই জনবসতি থেকে বিষাক্ত ফসফরাসের কালো ধোঁয়া কিভাবে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছে। আপনি যদি একটি কালো পতাকা তুলতে পারেন তাহলে তা হবে ওই আঘাতের বিরুদ্ধে সবচেয়ে মৌন ও দুর্বল হলেও বিবেকের দ্বার রুদ্ধ না করা অন্তত একটি প্রতিবাদ মাত্র। উৎসঃ Click this link
বিষয়: বিবিধ
১১৪৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 9368
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
কিন্তু বর্তমান এ বিশ্বাসের পাশাপাশি একটা গনজোয়ার এর প্রাধান্য এসে গেছে -- যার একটি উদাহরণ মিশরে আরব বসন্ত ।তাই আসলে আমাদের বিশ্বকে জানান দেওয়ার জন্য প্রতিকী কিছু করা উচিত - এটা সবার চিন্তায় আসার দরকার আছে বলে আমার মনে হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন