ল্যাবা (ছোট গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৮ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:২০:০৪ দুপুর
অনেক মানুষের ভিতর থেকে কীভাবে সবাই যেন তাকে চিনে যায়।
সে কি সবার থেকে আলাদা?
কিংবা তার ভিতরে স্পেশাল কিছু একটা রয়েছে নিশ্চয়ই।
বাসের ভিতরে কন্ডাক্টর ভাড়া নিতে এসে ' ভাই ভাড়াটা কার বাকী আছে?' মুখে বলে এবং হেঁটে হেঁটে ঠিকই তার কাছে এসে দাঁড়ায় এবং বলে 'আপনার ভাড়াটা দেন নাই তো?' অথচ সে-ই সবার আগে ভাড়া দিয়েছিল কন্ডাক্টরকে।
বাস ভর্তি মানুষ। একজন মহিলা উঠেছেন। কয়েকজন যার যার যায়গায় বসে বলে উঠল, ' এই, মহিলা সীটে যে আছেন উঠে যান।' কিন্তু সে মহিলা সীটে না বসেও উঠে দাঁড়ায়। আর যারা মহিলা সীটে বসে আছে তারা নির্বিকার থাকে। কিন্তু যে মহিলা তার ছেড়ে যাওয়া সিটটিতে বসলেন, তিনি একবার ওর দিকে তাকিয়েই মুখ ফিরিয়ে নেন। যেন সীটটা তারই প্রাপ্য। অথচ অন্যদের সাথে এরকম হলে নিদেনপক্ষে একটা ধন্যবাদ কিংবা হাসি কপালে জোটে।
তবে কি সে এক্সট্রা-অর্ডিনারি?
না আসলে সে একজন ল্যাবা।
ভোদাই টাইপের কাউকে অনেক যায়গায় এই 'ল্যাবা' নামে ডাকা হয়। এর আর একটি নাম হল 'মফিজ' কিংবা 'রংপুইর্যা মফিজ'। এটা মানুষের কাছে মনে হলেও সে নিজে জানে সে কি। মাঝে মাঝে মানুষের ওর সম্পর্কে ধারণা দেখে সে মনে মনে হাসে। আর রাস্তায় চলার পথে ওর একা একা সেই হাসি দেখে লোকজন প্রথমে একটু অবাক হয়... এরপর ভয় পায়... এবং সব শেষে যখন নিশ্চিত হয় সে ল্যাবা তখন আর ওকে মানুষই মনে করে না। ওর থেকে সকল আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল মাসুদের।
সালেহ আহমেদ মাসুদ। একজন ভার্সিটি গ্রাজুয়েট... একজন সাবেক লেকচারার এবং রানিং বেকার। এটাই মনে হয় ওর সমস্যা। যে সে একজন বেকার। দেশের এক কোটি শিক্ষিত বেকারদের একজন হতে পেরে সে অনেক আনন্দিত। আর এই কথা তার চার বছরের ছোট মেয়েকে খুব গর্বের সাথে সে সেদিন জানিয়েছিল। বলেছিল, ' জানো আম্মু, তোমার পাপা এই দেশের এক কোটি মানুষের ভিতর একজন'।এরপরে হেসেছিল। মেয়ে কি বুঝল সে ই জানে। কিন্তু পাপার হাসি দেখে সেও আনন্দে এবং খুশীতে হাসতে হাসতে চোখের পানি বের করে ফেলল। দু মেয়ের ভিতরে এই ছোট মেয়েটিই মাসুদের খুব নেওটা। বড় মেয়ে এবার পিএসসি (৫ম শ্রেনী ফাইনাল পরীক্ষা) দিবে। ওদের মা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অফিসার। বাসাটা সেই জন্য ভার্সিটির কাছেই নেয়া হয়েছে। যাতে করে রেখা পায়ে হেঁটেই সেখানে যেতে পারে। রেখার অফিস ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। এজন্য ১০টার ভিতরে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বড় মেয়েকে রেডী করে স্কুলে দিয়ে আসা- এসব রেখা ১০টার ভিতরেই সারতে পারে। মেয়েও মায়ের সাথে স্কুলে যেতে পেরে খুব খুশী। তবে ওর পাপা যখন স্কুল থেকে ওকে নিয়ে আসতে যায়, তখন তার মনটা খুব খারাপ হয়। সবাই মোটামুটিভাবে জানে যে ওর পাপা একজন ল্যাবা টাইপের মানুষ। আর ভাববেই বা না কেন? বাসা থেকে ওকে আনতে যখন বের হয়, তখন খেয়াল থাকে না কি পরে বের হল। একদিন তো লুঙ্গী পড়েই... আবার একদিন দু'পায়ে দু'রঙের স্যাণ্ডেল। বেশীরভাগ সময়েই একটা শার্ট ইন ছাড়া অবস্থায় পরে সে মৌ কে আনতে যায়। আর এটা নিয়েও ওর বান্ধবীরা আড়ালে আবডালে হাসাহাসি করে। এখন অবস্থা এমন যে মৌ এর সামনেই হাসে।
মৌ রেখাকে অনেকবার বলেছে, 'পাপাকে আর আমার স্কুলে আনতে পাঠিও না তো।' কিন্তু একা একা এই যুগে মেয়েকে আসতে দিতে রাজী হয়নি রেখা। অবস্থা এখন অনেক খারাপ। মেয়েও বলে বলে মন খারাপ করেছে থেকে থেকে। তবে এইটা না যে মৌ ওর পাপাকে ভালবাসে না। সে ওর ছোট বোন রায়নার থেকেও কোনো অংশে পাপাকে কম ভালবাসে না। তবে বাসায় যখন থাকে তখন পাপাও কেমন যেন পাপায় পরিণত হয়। মৌ বুঝেনা ওর পাপার বাইরে মানুষের সামনে গেলে কি হয়? একটা মানুষের ভিতর কি দুইটা মানুষ বাস করতে পারে? তবে ওর ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে এই চিন্তাটা এসে বেশীক্ষণ থাকেনা। পাপার নানারকম দুষ্টুমিতে ওরা দু'বোন অস্থির হয়ে থাকে। এর ভিতরে চলে পড়ালেখা-গোসল-খাওয়া... আর ওদের ল্যাবা পাপা এই কাজগুলো এতো সুচারুভাবে করে যে, ওদের কাছে মনে হয় এতো ভালোভাবে অন্য কোনো পাপা করতে পারবে না। তবে ওদের আম্মুর সামনে কেন জানি পাপা কে অসহায় মনে হয়।
স্কুলে মৌকে কতবার শুনতে হয়েছে, ' তোর পাপা কিছু করে না কেন রে?।' কিংবা ' তোর আম্মু চাকরী করে তোর পাপাকে খাওয়ায়'... এইসব কথার কোনো উত্তর মৌ কাউকে দিতে পারে না। আর এইসব প্রশ্নের উত্তরও বা কি দেয়া যায়? বিশেষ করে বাচ্চা বয়সের এই মেয়ের পক্ষে। তবে মৌ এর এটা বোঝার কথা নয় যে, ইঁচড়ে পাকা বাচ্চাগুলো নিজের থেকেই এই প্রশ্নগুলো করেনা। ওরা ওদের বাসায় যা শুনে সেটাই স্কুলে এসে সবার সাথে আলোচনা করে। এজন্য এখন স্কুল জীবনটা এইটুকু বয়সেই মৌ এর কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে... ওর পাপার জন্য... পাপাকে কেন্দ্র করে।
আজও মাসুদ বড় মেয়েকে আনতে ওর স্কুলের দিকে যাচ্ছে। ছোট মেয়েটার হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে।আজ কি কারণে জানি সে খুব খুশী। পাপার সাথে বের হলেও তার অনেক আনন্দ। তার ছোট্ট মনে পাপার প্রতি অনেক ভালবাসা। এটা সে প্রকাশ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। আমাদের ভিতরে কেবল মাত্র ছোটরাই অতি সহজে ভান ছাড়া সত্যিকারের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে পারে! আর বড়দের ভিতরে কেবলই ভান আর অতি অস্বাভাবিকতা। চার বছরের রায়না পাপার সাথে বাইরে বের হয়ে অনেকবার দেখেছে তার পাপাকে একেবারে গরীব শ্রেণির মানুষেরা খুবই পছন্দ করে। আর ওর পাপাও রাস্তায় তাদের সাথেই দেখা হলে থেমে একটু কথা বলে... কোনো বৃদ্ধ বাজার নিয়ে আসার পথে হয়তো ওজনের জন্য ব্যাগটা টেনে আনতে পারছে না, ওর পাপা জোর করে তার ব্যাগটাকে নিয়ে তার বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসবে। আর রায়না তখন ওর বাবু মনে খুব আনন্দ অনুভব করে। আর কোনো ভিক্ষুক ওর পাপার কাছ থেকে কখনো কিছু না পেয়ে ফিরে যায় না। বাসায় থাকাকালীন ওর পাপা ওদের দু বোনকে অন্তত এই শিক্ষাটা দিয়েছে যে, কখনো গরীব কাউকে ফিরাবে না। আর এজন্য দু'বোনের ভিতর মুসাফির এলে মুক্ত হস্তে দানের প্রতিযোগিতা চলে।এটা দেখে ওদের ল্যাবা পাপার মুখে হাসি আর ধরে না।
মেয়েকে আনতে স্কুলে যাবার পথ দু'টো। একটা যেটা সবাই ব্যবহার করে। গাড়ি-রিক্সা সব সেই পথে চলে। আর একটা আছে। সর্ট-কাট পথ। বড় পুকুরটার পাশ দিয়ে একেবারে স্কুলের পিছনের দিকে গিয়ে মিশেছে। তবে সে পথ দিয়ে যেতে হলে দু'টো কাঠের পুল পার হতে হয়। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এখনো যে কাঠের পুল রয়েছে সেটা মাসুদের মত একজন ল্যাবার মনেও বিস্ময়ের উদ্রেক করেছিল সেই প্রথম যখন এই গ্রাম গ্রাম পরিবেশের এলাকাটায় বাসা ভাড়া নিতে আসে। এরপর তো পার হয়ে গেলো অনেকগুলো বছর। সময়ের সাথে সাথে বাচ্চাদের স্কুলে যাবার পথের এই পুল দু'টোও জীর্ণ হয়ে পড়ে। একসময় ওগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠে। কয়েকটা তক্তা তো খুলে পড়েই যায়। তখন বাধ্য হয়ে ছোট ছেলেমেয়েরা মেইন রোড দিয়ে গাড়িঘোড়ার ভিতর দিয়ে স্কুলে যাওয়া শুরু করে। এটা দেখে মাসুদ নিজে টাকা খরচ করে মিস্ত্রী এনে যা যা প্রয়োজন সব কিনে আনে... পুল দুটো ঠিক করায়। সেই থেকে শুরু। আজ প্রায় ৪ বছর সে একই ভাবে নষ্ট হলে নিজ উদ্যোগে রিপেয়ার করায়। আর ওকে এ জন্যও লোকে আরো বেশী করে ল্যাবা ভাবে। রেখাও কয়েকবার ওকে বলেছে, ওর কিসের এতো ঠ্যাকা পড়েছে এগুলো করার। কিন্তু রেখার সামনে কোনো উত্তর না দিয়ে সে বোকার মত হেসেছে শুধু।
মাসুদের শ্বশুর আব্দুস সোবহান একজন সরকারী কর্মকর্তা। এখনো রিটায়ার্ড করেন নি। তিনি রেখাকে নিয়ে খুবই চিন্তা করেন। তার একমাত্র মেয়ের যে কীভাবে তার ভাষায় এরকম একজন অপদার্থের সাথে বিয়ে দিলেন সেটা এখনো ভাবেন। অথচ তিনি নিজেই মাসুদকে পছন্দ করেছিলেন। তখন সে একটি প্রাইভেট কলেজের প্রভাষক। দেখতে শুনতে ভালই... কথাবার্তা বলে তখন তো ল্যাবা মনে হল না। শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল। এরপর সময়ের সাথে সাথে জামাইয়ের চরিত্রের এই ল্যাবামি চোখে পড়তে শুরু করে। আসলে সে অতিরিক্ত সোজা। তিনি অনেকভাবে পরীক্ষা করে দেখেছেন... কোনো লাভ হয়নি। যখন কলেজের চাকুরিটা ছেড়ে চলে এলো, তিনি অনেক যায়গায় তার চাকুরীর জন্য সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু এক একটা ইন্টারভিউ দিয়ে এসেই সে চুপচাপ বসে থাকে। আর যার কাছে তাকে চাকুরীর জন্য পাঠানো হয়, পরে সোবহান সাহেব তাকে ফোন করলেই শুনতে পান, ' না ভাই। এই যুগে এতো সোজা মানুষ দিয়ে হয় না।'
মেয়ের বাসায় এক আধদিনের জন্য আসেন তিনি। তার অভ্যাস হল সকালে জগিং করার। তো তিনি এলে মাসুদকেও ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে তার সাথে জগিং এ যেতে হয়। একবার সকালে জামাইকে ডেকে রেডি হতে বললেন। সে জানালো যে তার হাঁটার মতো কেডস নেই। এটা শুনে সোবহান সাহেব সেদিন একাই হাঁটতে গেলেন। এবং ফিরেই টাকা দিয়ে এক জোড়া কেডস কিনে আনতে বললেন। মাসুদ বের হল এবং কিনেও আনল।
পরেরদিন সকালে...
শ্বশুর জামাই জগিং এ বের হয়েছেন। ২০ মিনিট হাঁটার পরে সোবহান সাহেব দেখলেন জামাই আর হাঁটতে পারে না। বার বার পিছিয়ে পড়ছে। থেমে জিজ্ঞেস করলেন সমস্যাটা কি। মাসুদ জানালো কেডস এতোটাই টাইট হয়েছে যে দু'পা ছিলে ফোস্কা পড়ে গেছে। এখন খালি পায়েও মনে হয় হাঁটতে পারবে না। অবাক হয়ে ভাবলেন সোবহান সাহেব, যে মানুষ নিজের পায়ের মাপে একটা কেডস-ই কিনতে পারে না তাকে দিয়ে আর কিচ্ছু হবার নয়। রেখার মায়ের সাথে অনেক আলাপ করেই শেষে মেয়েকে ভার্সিটির এই পোস্টটাতে ঢুকিয়ে দিলেন। মেয়েকে শুধু এইটুকুই বললেন, ' তোকেই যা করার করতে হবে রে মা!'
সেই থেকেই রেখা এই সংসারটা টেনে আসছে। মাসুদকে আর একবারো বলে নাই কিছু একটা করতে। একজন মেয়ে হয়েও সে পুরুষের ভুমিকাটা পালন করে আসছে।
আজ ছোট মেয়েকে নিয়ে যথাসময়ে স্কুলে পৌছুলো মাসুদ। ছুটির পরে মৌকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। ওদের বাসার কাছে আসতেই দেখল আরো একটু দূরে অনেক জটলা। অনেক মানুষ হৈ চৈ করছে... মৌ এবং রায়নাকে বাসায় রেখে মাসুদ কৌতূহল মিটাতে সামনের দিকে আগালো। একজন মধ্য বয়স্ককে ঘিরে রখেছে কয়েকজন পরিচিত যুবক। ওদের কাছ থেকে জানতে পারল, এই পাষণ্ড এক রিক্সাওয়ালার ১০ বছরের মেয়েকে একটা নির্মীয়মান বিল্ডিঙে নিয়ে রেপ করেছে। মেয়েটার চীৎকারে আশপাশ থেকে মানুষ বের হয়ে এলে ঘটনাটি সবার নজরে আসে। রক্তাক্ত মেয়েটিকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন একে নিয়ে কি করা যায়?
এই সময় মেম্বার মফিজ মাতবরকে দেখা গেলো। সে আরো গন্যমান্য কয়েকজনের সাথে এক পাশে কি যেন আলাপ করল। এরপরই সেই রেপিস্টকে যুবকদের মাঝ থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হল। যুবকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠলেও মফিজ মাতবরের সামনে কোনো উচ্চবাচ্য করল না। বেশ প্রভাবশালী এই লোক। মাসুদের চোখের সামনে দিয়ে এরকম একটি ঘৃণ্য লোককে এতো সহজে পার করে দেয়া হচ্ছে এই বোধটাই ওকে ভিতরে ভিতরে ক্ষিপ্ত করে তোলে। বেশ জোরের সাথেই সে বলে, ' একে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?'
মফিজ মাতবর নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। এতো মানুষ থাকতে শেষে কিনা একজন ল্যাবা তাকে এই প্রশ্নটা করল। সে শুনেও না শোনার ভান করে চলে যেতে উদ্যত হয়। এবার সামনে এগিয়ে মাসুদ পথরোধ করে দাঁড়ায়। বলে,
: আমার কথা কি আপনি শুনতে পান নি?
: কি বলতে চাও তুমি? মফিজ মাতবরের ক্রদ্ধ পালটা প্রশ্ন।
: একে আমাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে আপনি চলে যান।
মাসুদের কথায় যুবকেরা একটু জোর পেল এবং গুঞ্জন করে উঠল। তারপরও মফিজ মাতবর শেষ চেষ্টা করল,
: আমরা ওকে পুলিশের হাতে হ্যান্ডওভার করব।
: বেশ ভাল কথা। কিন্তু থানা তো ওদিকে নয়। এই দিকে... আর ছেলেরা একে ধরেছে। আপনি যে কোন পুলিশের কাছে নিয়ে যাবেন সেটাও ওরা ভাল করেই জানে।- এই বলে মাসুদ মোবাইল বের করে একটা পরিচিত নাম্বারে ডায়াল করে।
কিছুক্ষণ পরে একটা Rab এর গাড়ি আসে... ধর্ষককে ধরে নিয়ে নিকটস্থ Rab ক্যাম্পে নিয়ে যায়... ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহ করে... এরপরে সবকিছু সহ আসামীকে স্থানীয় থানায় হ্যান্ডওভার করে। শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয়। আর এই মামলার ১ নম্বর সাক্ষী হয় সালেহ আহমেদ মাসুদ।
একজন ল্যাবা মানুষ... যার সোজা চোখের ভিতরে সেদিন উপস্থিত সবাই একটা দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠতে দেখেছিল! যে চোখ এলাকায় এতোগুলো বছর নীচের দিকে তাকিয়ে চলেছে... সময়ের প্রয়োজনে সেই চোখ রক্তাক্ত হয়ে সরাসরি চোখে চোখ রেখেছিল সমাজপতির চোখে!
একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে একজন ল্যাবা কিছু সময়ের জন্য অন্য মানুষে পরিণত হয়েছিল। তবে সমাজের বেশীরভাগ অন্যান্য মানুষের মত মানুষে নয়।।
বিষয়: সাহিত্য
১৬৯৬ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহমত আপনার সাথে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
@আফরা: না গো আপু, দেয়ালে পিঠ ঠেকে নয়-
মামুন ভাই যে ল্যাবাকে হাজির করেছেন-
ওঁরা সমাজে চোখ নিচু কজে চলেন বটে,
কিন্তু অন্তর্চক্ষু থাকে দিগন্তপ্রসারিত, অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত
তারা যদি চোখ তুলে চলতেন তবে সমাজের সকল কোণায় আগুন ধরে যেতো!!
বাসে সীট ছেড়ে দিয়ে তিনি মায়ের জাতির সম্মানরক্ষার কাজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন- হারতে চাননি!
গাঁটের পয়সায় পুল মেরামত নয়-
ওটা সমাজ মেরামত!
আমি অমন ল্যাবাদের খুব ভালো করেই জানি ও চিনি!!
মামুন ভাইকে অজস্র ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ..
["মফিজ" শব্দটির প্রচলিত ব্যবহারে আমার প্রচন্ড আপত্তি ও ক্ষোভ, কিন্তু আপনাকে কিছু বলতে পারছিনা- প্রচলিত শব্দই তুলে এনেছেন-
যেমন ক্ষুব্ধ হই যখন বলা হয় "বিসমিল্লাহ-য় গলদ"
অথচ বাস্তবতা হলো "বিসমিল্লাহ-তেই সকল কল্যান"]
আল্লাহতায়ালা ক্ষমা করুন!!
খুব সুন্দরভাবে বোন আফরার মন্তব্যে উত্তর দিলেন।
'মফিজ' কি মহান আল্লাহপাকের গুণবাচক নামগুলোর একটি? তবে তো এই নাম এবং একইরকম অন্যান্য নামগুলোকেও আগামীতে যে কোনো ব্যঙ্গার্থে ব্যবহার না করতে খেয়াল রাখব।
ধন্যবাদ আপনাকে আবু সাইফ ভাই।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সাথে থাকবার জন্য এবং অনুভুতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সহমত
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাযাকাল্লাহ খাইর!
আপনার বক্তব্যের সাথে একমত- "শুধু প্রয়োজন বিচ্ছুরিত হওয়ার সঠিক উপাদান, সহায়ক পরিবেশ! "
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সালেহ আহমদ মাসুদ নামীয় এই সব'ল্যাবা'দের জন্যেই এখনো সমাজের 'ভারসাম্যতা' বজায় রয়েছে কিছুটা। সামাজিক অসংগতির বেড়াজালে পদে-পদে হোচট খেলেও একান্ত প্রয়োজনে এরাই আবার দ্রোহের আগুনে জ্বলসে উঠে দারুণ ভাবে।
অনন্য নান্দিকতায় ব্যতিক্রমী আয়োজনে অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা.....
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অসম্ভব ভাল লেগেছে গল্পটি! জাজাকাল্লাহু খাইর।
আরো অনেক কিছু বলার ছিল গুছিয়ে আনতে পারছিনা।
তবে যতটুকু বলতে পেরেছেন তাতেই ল্যাবা মাসুদের পক্ষ থেকে আপনাকে স্যালুটের উত্তর 'স্যালুট' দিয়েই জানানো হল সালাউদ্দিন ভাই।
ভালোলাগার অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন