আয়নায় বন্ধুর মুখ
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ০৫ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:৩৪:১০ সকাল
পুরনো এক বন্ধুর সাথে অনেক বছর পরে ফেসবুকে নতুন করে পরিচয় হল।
সেদিনের সেই বন্ধু- দুই বেনী দোলানো বন্ধু, আজ সময়ের সাথে সাথে সাঁতার কেটে কেটে অনেক ক্লান্ত। তার চেহারাও (প্রো-পিকে যেভাবে দেখেছি) আগের দুই বেনীওয়ালাকে সাপোর্ট করেনা।
আমার নিজের স্মৃতির রেলিঙগুলোকে একে একে টপকে যেয়ে আমি অনেক খোঁজার চেষ্টা করেছি।
লাভ হয়নি।
ভার্সিটির লাইব্রেরির সামনে আমরা সবাই আড্ডা দিতাম। কোনোভাবেই ওকে মিলাতে পারছিলাম না।এরপর ফেসবুকে অ্যাড হলাম ও সহ আরো অনেকের সাথে।আমাকে সে নিজেই পরিচয় দিলো।ও ফুলের বন্ধু (ফুল কে তা বলা যাবে না। ফেবকের এইটুকু নিজস্ব ক্ষমতা আমি এখানে অ্যাপ্লাই করলাম)। এটা বলার পরে আমি সেই ১৫ বছর আগেকার দুই বেনীওয়ালাকে চিনতে পারলাম।
কিন্তু আগেই বলেছি, মিলাতে পারলাম না।
সেকেন্ডের কাটা ঘুরে ঘুরে মিনিটের দিকে যায়... মিনিট ঘন্টায়।
স্ট্যাটাস আপডেট আর গ্রুপে বন্ধুসুলভ খুনসুটিতে দূরে থেকেও একে অপরের কাছে আসা অন্যদের থেকে একটু বেশী ।নিজের ভিতরে তৈরী হয় আলাদা এক প্রতিচ্ছবি।বন্ধুকে নিয়ে। এরই ভিতরে লেখার মাধ্যমে দু'বন্ধুর অনেক অজানা কথা- না বলা ব্যাথা, একে অপরের কাছে ট্রান্সফার হয়ে যায়... নিজেদের অজান্তে।হৃদয় নামের আয়নাতে তিনটি ছবি দেখতে পাই।একটি দুই বেনিওয়ালার... অন্যটি বর্তমানের... আর তৃতীয়টি নিয়ে ই সমস্যা।আয়নাতে এটা দেখা যাচ্ছে না।
তবে চোখ বন্ধ করলে এটা সারা শরীর দিয়ে অনুভব করতে পারছি।
জীবনের এই শেষ সময়ে এসে একি হচ্ছে?
নিজে নিজেকে চোখ রাঙালাম।
এরপর হঠাৎ করে একদিন বন্ধু ফোন করলো আমায়।
তারপর থেকেই তৃতীয় ছবিটা হৃদয় থেকে মুছে গেলো। চোখ বন্ধ এবং খোলা কোনো অবস্থায়নই আর দেখি না এখন।
শরীর দিয়ে তো প্রশ্ন ই আসে না।কারণ 'চোখ হল সেই আয়না যাকে ঠকানো কখনো যায় না'।
অনেক ভাবলাম (আগের মত সিগ্রেট খেলে হয়তো লিখতাম,... একের পর এক সিগ্রেট ধ্বংস করলাম)।
এটা কি মনের যে তিন স্তর রয়েছে তার কোনোটার ভিতর পড়ে?
চেতন ?
অবচেতন?
অচেতন?
মানুষ শুধু দুইটাকে বুঝে থাকে। তৃতীয়টা সবার বুঝে আসে না।
এই কন্ঠস্বরের সাথে তৃতীয় ছবির গায়েব হবার লিঙ্ক খুঁজতে থাকি।চেতন ও অবচেতন মনকে নিয়ে গভীর এক্সপেরিমেন্ট করি; কিন্তু খুঁজে পাই না।
তাহলে অচেতন মনেরই কি কোনো খেলা ছিলো এটা? যখন চোখ শুধুই দেখে কিন্তু ভাবে না, সেটা হলো চেতন এর পর্যায়। সকল মানুষ এই পর্যায়ে জন্ম থেকে থাকে। আর মন যখন ভাবা শুরু করে, তখনই অবচেতন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া।আর এই দুটো যখন বন্ধ থাকে তখন অচেতন মনের কাজ শুরু হয়। অনেকে একে স্বপ্ন বা কল্পনা হিসাবে বলে থাকে।
আমার বন্ধুর সেই তৃতীয় ছবি তাহলে আমার অচেতন মনের কারসাজি ছিলো, যা আমার সাথে তার ফোনে কথা বলার দ্বারা অচেতন পর্যায় থেকে ব্যাকফ্লাশ হয়ে অবচেতন মনের দরোজা দিয়ে চেতনার গন্ডী পার হয়ে শুন্যে বিলীন হয়ে গেছে।
এখন সে শুধুই বন্ধু আমার।
তাকে আর সমস্ত শরীর দিয়ে অনুভব করার প্রয়োজন নেই।
এখন সে আয়নাতে বন্ধুর মুখ হয়ে আছে।
চীরকাল তাই-ই থাকবে।
বিষয়: বিবিধ
১১২০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভার্সিটি জীবনটা আমার এমন ছিল, আমাকে ভালোবাসার প্রশ্নই আসত না। তবে গ্রুপে অনেক বান্ধবী ছিল, যাদেরকে ভালো লাগত।
ভালোলাগা আর ভালোবাসা এক হতে পারে কি?
আমি অনেক বছর পরে হৃদয়ে উৎসারিত কিছু ভালোলাগার পোষ্টমর্টেম করতে চেয়েছিলাম।
ফলাফলঃ নির্বোধ অভিব্যক্তি
সুন্দর প্রশ্ন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
জাজাকাল্লাহু খাইর।
হ্যা, মাঝে মাঝে নিজে নিজের সাথে মারপ্যাঁচ করতে ভালো লাগে। তাই এই প্রচেষ্টা।
http://www.facebook.com/almamunk3
এইটা আমার ফেবু আইডি।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার লেখনীতে অন্য রকম মজা পাই....।
অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ভালো লাগল।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ঈদ নিশ্চয়ই ভালোভাবে কেটেছে আপনার?
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার শুভকামনায় জাজাকাল্লাহ।
আল্লাহপাক আপনাকে সবসময় ভালো রাখুন।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ,
ঈদের শুভেচ্ছা- কুরবানী ও ঈদ মোবারক
ত্যাগের আলোয় ব্যক্তি ও সমাজ জীবন আলোকিত হোক
পড়লাম, জাযাকাল্লাহ.. দোয়া করি
আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার দোয়ায় আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন