ধারাবাহিক উপন্যাসঃ নাইয়র (পর্ব- পাঁচ)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৫৯:৫৯ সন্ধ্যা
শীতকালে গ্রামের মানুষের জন্য চলাফেরায় খুব সুবিধা। শুকনার সময়ে রাস্তাঘাট ঝরঝরা থাকে। তবে এখন থেকে বর্ষায়ও শ্রীরামকাঠীর মানুষের তেমন অসুবিধা হবে না। চেয়ারম্যান মোতাহার মূল রাস্তাগুলোকে বাজার থেকে একেবারে আধাঝুরির খাল পর্যন্ত পাকা করে ফেলেছে। এজন্য অবশ্য ওকে অনেক দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। তবে কষ্ট সফল হয়েছে। নিজে সকল কাজের তদারকি করেছে। তবে মালেক শিকদারের সাথে কিছুটা মনোমালিন্য হয়েছে। রাস্তার এই কাজটা সে নিতে চেয়েছিল। মোতাহার রাজী হয়নি। বরং বলেছে, ' আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব নেই। দশের কাজে আমার সাথে সাথে থাকেন।' রুষ্ট হয়ে সেদিন সে অনেক কথা শুনালো মোতাহারকে।
কবি মুজিবরের দিন ভালোই কেটে যাচ্ছে। সে এখন কলতান কিন্ডারগার্টেন এর একজন শিক্ষক। পারুলের সাথে সে-ও ওখানে ক্লাস নেয়। আরো দু'জন শিক্ষক নেয়া হয়েছে। গ্রামের কচিকাঁচাদের হাস্যকলরবে মুখর থাকে এখন যায়গাটি। মাঝে মাঝে মোতাহার যায়। তবে সে কি স্কুলের জন্য যায়, না পারুলের জন্য? পারুলকে ঘিরে দু'জন পুরুষের ভিতরে শীতল লড়াই শুরু হয়েছে। এটা পারুল বুঝতে পারে। সে এগুলো ভালোই অনুভব করে। কিন্তু মোতাহারের জন্য কষ্ট পাওয়া ছাড়া পারুলের আর কি-ই বা করার আছে। সে জীবনের প্রথম দিকেই তাঁর হৃদয় মুজিবরকে দিয়েছে। মাঝখানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো না হলে আজ তো ওরা দুজনে সুখের সংসারে ব্যস্ত থাকত।
পৌষের মাঝামাঝি এক বিকেলে পারুল একা একা বাড়ির পিছনের মাঠ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। একে স্থানীয় ভাষায় বলে 'কোলা'। ধান কাঁটার পরে শুন্য মাঠ... দিগন্তের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে পারুলের খুব ভালো লাগছিল। ওর বিপরীত দিক থেকে কাউকে আসতে দেখে পারুল সেদিকেই যেতে থা্কে। আরো একটু কাছে আসার পর মোতাহারকে চিনতে পারল। দু'জন কাছাকাছি এলে কুশল বিনিময় হয়। টুকটাক কথা হয়। তারপর দুজনেই নীরব। শুধু মাটির উপর দিয়ে হেঁটে চলায় দুজনের জুতার শব্দ। তবে মোতাহারের হৃদযন্ত্রের শব্দটাকেও যেন পারুল শুনতে পায় । আজ তাঁকে কেমন যেন একটু ডিস্টার্বড... একটু উত্তেজিত লাগছে পারুলের কাছে। আগ বাড়িয়ে সে-ই জিজ্ঞেস করে, ' হঠাৎ এদিকে যে?' মোতাহার একটু চমকায়। সামলে নিয়ে বলে, ' না, এমনিতেই আসছিলাম। বাড়ি থেকে বের হলাম। তোমাদের ওদিকেই যাবো ভেবে বের হয়েছি'। পারুল মনে মনে হাসে। তবে বলে না যে, তোমার রাস্তা তো এদিক দিয়ে না। ছোট্ট একটা নালার সামনে কেওড়া গাছের ঝোপ। সেখানে এক যায়গায় মাটি কিছুটা উঁচু হয়ে ঢিবির আঁকার নিয়েছে। দুজনে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালো। মোতাহার এবারে বলে, ' তোমাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম... অনেকদিন ধরে বলব বলব করেও বলা হয়নি।'
পারুল জানে ঠিক এরপরের কথাটি কি হবে। সে এগুলো অনেক শুনেছে। তবে এটা ভেবে সে মোতাহারকে ছোট মনে করছে না। আসলে কিছু কিছু কথা থাকে... কিছু মানুষের কাছে একান্ত কিছু কথা শুরু করতে গেলে এই কথাগুলোই মুখ দিয়ে আগে বের হয়। সে কেওড়া গাছের দিকে তাকিয়ে বলে,' এখন বলে ফেল।' মোতাহার একটা ঢোক গিলে। মাটির দিকে তাকায়... পারুলের চোখে তাকাতে চেয়েও পারে না। শেষে সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে বলে, ' তুমি কি বাকি জীবনটা এভাবেই একা একা কাটাবে?' পারুল একটু সময় নেয়। তারপর মোতাহারের পানে চায়। বলে, ' আমি জীবনটাকে নিয়ে এখন আর ভাবি না। একসময় এতোটা ভেবেছি... এতো কিছু মনে মনে আশা করেছি... সব শেষে আশাভঙ্গের বেদনায় হৃদয় পোড়া জ্বালায় জ্বলেছি । এখনো জ্বলছি। তাই সামনের দিনগুলো কীভাবে যাবে তা নিয়ে ভেবে নিজেকে আর কষ্ট দিতে চাই না।' মোতাহারকে চুপ দেখে আবার বলে, ' এ কথা কেন জিজ্ঞেস করলে?'
মোতাহার শুধু সামনেই তাকিয়ে থাকে। অনেকক্ষন পরে বলে, ' আমি আসলে ওভাবে তোমার দিকটা কখনো ভাবিনি। আমি নিজেও একা একা থাকি। নিজের একাকীত্বকে অনুভব করে তোমার নিঃসঙ্গতাকে উপলব্ধি করতে চাইছিলাম শুধু।'
দুজনে আবার একসাথে হাঁটে। পারুল মোতাহারের দিকে একপলক তাকায়। মোতাহার অনুভব করে। একসময় পারুলের প্রশ্নে সেও ওর দিকে চাইতে বাধ্য হয়। ' তুমি কি আমাকে বিশেষ কিছু বলতে এসেছিলে?' একটু থামে ওরা দুজন... মোতাহার সময় নেয়... পারুল অপেক্ষা করে। এভাবেই তো জীবন চলে। চলার পথে একটু থামা... একজন অপরজনকে বোঝার চেষ্টা... তারপর আবার পথ চলা। মোতাহার বলে, ' আমি তোমাকে নিয়ে বাকি জীবনটা কাটাতে চেয়েছিলাম।' আর কিছু বলে না সে। কিছুদূর যাবার পর পারুলকে নিশ্চুপ দেখে জানতে চায়, ' তুমি কি কাউকে ভালোবাসো?' পায়ের নখের দিকে তাকিয়ে পারুল বলে,'হ্যা!'
আর কিছু মোতাহার জানতে চায় না। তাঁর আকাশের ঘুড়িটা এইমাত্র সূতা ছিড়ে দূর দিগন্তের দিকে যাত্রা করেছে। সে জানে এই দূরত্ব কখনোই সে অতিক্রম করে ছিড়ে যাওয়া ঘুড়িকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। কারণ এতোটা দূরত্বে সে নিজেই উঠিয়েছিল, নিজের মনের আনন্দে... এখন চলে যাওয়াটাও ঠিক ততোটাই দূরেই। হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ পারুলও পায়... পাশাপাশি চলা দুজন মানুষ, যার একজনের ভাঙা হৃদয়ের সাথে অন্যজন তার ফ্রেশ হৃদয় জোড়া লাগাতে চাইছে। কিন্তু ভাঙা জনের সে হৃদয় তৃতীয় আর একজনের সাথে বহু আগে থেকেই জুড়ে আছে! এই ভাঙ্গাগড়ার ভিতরে একটা জটিল ট্রায়েঙ্গেল কীভাবে যেন অস্তিত্ব লাভ করে।
বিস্তীর্ণ কোলার মাঝামাঝি গিয়ে পারুল থামে। মোতাহারও ওকে অনুসরণ করে। নিজের হাতটা পারুল মোতাহারের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ' তোমার কষ্টকে আমি বুঝতে পারি। কিন্তু আমি শুধু একজন ভালো বন্ধু-ই হতে পারব তোমার... এর বেশী কিছু না। তুমি ইচ্ছে করলে আমার এই হাত ধরে পাশাপাশি কিছুক্ষণ হাঁটতে পারবে। তবে আমাকে ধরলে তোমার মনের সাপ তোমাকে দংশন করবে না তো?' মোতাহার ওর কথার মানে বোঝার চেষ্টা করে। যখন বোঝে ধীরে ধীরে ম্লান হাসে। বলে, ' কিছুক্ষণ? না, কেন আগ বাড়িয়ে নিজেকে কষ্ট দেয়া। আমি বন্ধু হয়েই থাকব। পাশাপাশি... সবসময়েই আছি। তার জন্য তোমার হাত ধরতে হবে না।' পারুলও ওর দেখাদেখি হাসে। তবে তা কান্নার মত দেখায়। মোতাহারের পরের কথায় সে হৃদয়ে শান্তি পায়। ' আমার মনের ভিতরে একটা সাপ অবশ্য রয়েছে। সবার ভিতরেই থাকে। কিন্তু তোমার কথা চিন্তা করলে বা তোমাকে ছুঁলে সে জাগবে না। আমি পবিত্রতার মায়াজাল দিয়ে ঐ সাপকে বশ করেছি।'
একজন পুরুষ ও এক নারী শীতের অলস বিকেলে পাশাপাশি হেঁটে যায়... কেউ কারো দিকে তাকায় না। কিন্তু স্ফটিকের মত ভিতর-বাহির একে অপরের সব কিছুই দেখতে পায়। এইমাত্র ওরা দুজন চোখ বুঝে দেখার ক্ষমতা অর্জন করেছে। আর সব চেয়ে বড় ব্যাপার, নিজেদের মনের দুটো সাপকে মারতে পেরেছে। ভয়ানক সেই সাপগুলো ওদের ভিতরেই বাস করছিল।
... ...
ছোট্ট ক্লাব ঘরটির দরজা খোলা। ভিতরে কবি একা। শাল এবং মাফলার দিয়ে নিজেকে এমন ভাবে আবৃত করে রেখেছে যে, চোখ দুটো না দেখলে হঠাৎ করে সে যে কোনো মানুষ না কাপড়ের স্তুপ বোঝা যাবে না। গভীর ধ্যানমগ্ন একজন ঋষির মত লাগছে ওকে। নজরুলের ‘মানুষ’ কবিতাটি পড়ছে। পড়তে পড়তে একটা যায়গায় গিয়ে থেমে গেছে। নিজেও কেমন ভাবের ভিতরে চলে গেছে। কবি নজরুল সেখানে দয়াময় সৃষ্টিকর্তার সাথে আলাপরত... সেই চিরমহান সত্ত্বাকে বলছেন যে, যারা ভালো মানুষ তাঁরা তো নিজের ভালো কাজের দরুন মাফ পেয়ে যাবে। আর আমার মত পাপী বান্দাকে তুমি যদি নিজ গুণে মাফই না করলে, তবে কেমন দয়াময় তুমি? বিষয়টা নিয়ে আরো চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন আছে... ভাবছে মুজিবর।
এমন সময় পারুল হন্তদন্ত হয়ে দরোজার সামনে আসে। কবির ধ্যান ভাঙ্গে। তবে সম্পুর্ণ বাস্তবে সে তখনো আসেনা। ওর কাছে লাগে উর্বশী মেনকা যেন ওর সামনে দাঁড়িয়ে! আর সে একজন ঋষি। ‘ তোমার সাথে কিছু জরুরী কথা ছিল’ –পারুলের এই কথায় এবার পুরোপুরি বাস্তবে আসে মুজিবর। একটু নড়েচড়ে বসে। পারুলকে ভিতরে আসতে বলে। পারুল টেবিলের সামনে কবির মুখোমুখি দাঁড়ায়। শীতের ভিতরেও কি ভালবাসার মানুষের শরীর থেকে নির্দিষ্ট কোনো ঘ্রান বের হয়? পারুল কাছে আসাতে মুজিবরের সমগ্র চেতনায় কেমন মাতাল করা এক সুবাস ওকে দিশেহারা করে দেয়। সে আবার কল্পনার জগতে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় ওর কাছে ওর প্রিয়তমা বিশেষ কোনো কাজে এসেছে। পারুলকে খাটে বসতে বলে।এরপর জিজ্ঞাসু নেত্রে পারুলের দিকে তাকায়। পারুল কথা শুরু করে, মুজিবর শুনে যায়। মাঝে মাঝে সে দু’একটা উত্তর দেয় কিংবা প্রশ্ন করে।
এর ঘন্টাখানিক পরে পারুল ও মুজিবরকে মোতাহারের সাথে দেখা যায়। ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে ওদের সাথে খুব কাছের আরো কয়েকজন রয়েছে। রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে। পারুল ওদেরকে জানায় যে, ক্লাস টু এর সব থেকে মেধাবী ছাত্রী রাশেদা আজ দু’দিন ধরে স্কুলে আসছে না দেখে কিছুক্ষন আগে ওদের বাড়ি যায়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে সে স্কুলে আসছে না কেন জানতে চাইলে ওর মা সোজা বলে দেয় যে রাশেদা আর স্কুলে যাবে না। কিছুটা অবাক হলেও পারুল কারন জানতে চায়। মহিলা কিছুতেই বলতে চায় না। অনেক জোরাজুরির পরে সে জানায়, রাশেদার বাবা জমিতে চাষাবাদের জন্য বেশ কিছু টাকা সুদে ধার নিয়েছিল কোব্বাত মিয়ার কাছ থেকে। চড়া সুদের সেই টাকা এখনো পর্যন্ত শোধ করতে পারেনি। গত পরশু কোব্বাত আর মালেক শিকদার এসেছিল বাড়িতে। প্রথমে কোব্বাত মিয়া সুদ ও আসল সহ সব টাকা ফেরত চায়। রাশেদার বাবা বলে যে সব এক সাথে কিভাবে দিবে। কোনো কথাই শুনতে চায় না ওরা। বরং গোয়াল থেকে হালের বলদ দুটো নিয়ে যেতে উদ্যত হয়। অনেক কাকুতি মিনতি করার পরে মালেক শিকদার বলে, এক শর্তে তাঁরা রাজী হতে পারে। তা হল রাশেদাকে আর নতুন স্কুলে পড়তে যেতে যেন না দেয়। তবেই আগের মত ধীরে ধীরে সুদ দিয়ে গেলেই চলবে। এজন্য তারা আজ দু’দিন রাশেদাকে স্কুলে পাঠায়নি।
সব শুনে মোতাহারের মাথায় আগুন ধরে যায়। টেবিলের উপর রাখা পেপার ওয়েটটি হাতের মুঠোয় ছিল। কথা শুনতে শুনতে এবারে সর্ব শক্তি দিয়ে চাপ দেয়। অনেক কষ্টে নিজেকে সে সামলায়। পারুলকে বলে,‘ এতো ভীষণ সমস্যা। এরকম কয়জন ওদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছে?’ পারুল বলে, ‘ আমি সঠিক সংখ্যা বলতে পারব না। তবে বেশ কয়েকজনই নিয়েছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরাও কলতানে পড়ছে।‘ মোতাহার উপস্থিত কালু মেম্বারকে কারা কারা কোব্বাতের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার নিয়েছে তার একটা তালিকা ওর কাছে যেভাবেই হোক নিয়ে আসতে বলে। পারুল এবং মুজিবরকে রেখে অন্য সবাই বের হয়ে যায়। এরা সবাই মোতাহারের খুব আপন মানুষ এবং আত্মীয়। সবাই যাবার পরে মোতাহার আবারও বলে, ‘ ভীষণ সমস্যায় পড়া গেলো দেখছি!’
মুজিবর প্রথম থেকেই চুপ করে ছিল। এবার সে কথা বলে, ‘ সমস্যা তো একের পর এক লেগেই থাকবে। এখন এইটার সমাধান খুঁজে বের করি চলো।‘ পারুলকে উদ্দেশ্য করে বলে মোতাহার, ‘ তোমার কি মনে হয়? অন্য যারা টাকা নিয়েছে তারাও কি রাশেদার বাবার মত মেয়েদেরকে নিয়ে যাবে?’ কিছুক্ষন চুপ করে থেকে পারুল জানায়, ‘ হয়ত। চাপ দিলে এটা করা ছাড়া ওদের আর কিছুই তো করার নেই।‘
তিনজন অনেকক্ষণ চুপ থাকে। হঠাৎ পারুল বলে, ‘ আচ্ছা একটা আইডিয়া এসেছে। অবশ্য এটা সময়সাপেক্ষ। তবে করতে পারলে কাজ হবে।‘ দুজনেই পারুলের দিকে তাকায়। পারুল বলে, ‘ আমাদের এখানে কৃষি ব্যাংকের কোন শাখা নেই। সেই পিরোজপুরে গিয়ে টাকা লোন নিতে হয়। সবার পক্ষে ওখানে গিয়ে আনাটাও খুব সহজ না। তাই ভাবছিলাম যদি কোনোভাবে আমাদের বাজারে একটা শাখা আনা যায় তবে কম সুদে সবাই লোন নিতে পারে। চড়া সুদে টাকা নেবার আর প্রয়োজন হয় না।‘
মোতাহার এবং মুজিবর খুশী হয়। দুজন পুরুষের মুগ্ধদৃষ্টির আঁচে পারুল রক্তিম হয়ে উঠে। তবে এই মুগ্ধতার আড়ালে তাঁর প্রতি ওদের ভালোবাসাকে অনুভব করে একাধারে সে আনন্দ বেদনায় প্রগলভ হয়। দুজনের অকৃত্তিম ভালবাসার প্রতিদান সে একসাথে দুজনকে কখনোই দিতে পারবে না ভেবে কিছুটা ম্রিয়মানও হয়ে পড়ে। তিনজন মিলে ভবিষ্যৎ কর্মপহ্না ঠিক করে। সময় বয়ে যায়। তিনজন একনিষ্ঠ মানুষের স্বার্থহীন ভালবাসার আগুনে সময় পুলকিত হয়ে বয়ে যায়।
সেদিন সন্ধ্যায় দুষ্ট চক্রের সভা বসে হাবিব মুন্সীর বৈঠকখানায়। মালেক শিকদার স্কুল বন্ধ করার ব্যাপারে তাদের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে। মুন্সী খুশী হয়। আরো কিছু কু-বুদ্ধি দেয়। তাদের হৃদয়ের হীনতার বিষবাস্প সাঁঝের আকাশে ওদের কুটিল হাসিকে সাথে নিয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে। শুভবুদ্ধির দ্বারা পরিচালিত একটা অগ্রগতির ধারাকে রোধ করতে পেরেছে ভেবে এই চক্রের সদস্যরা নিজেদের কালো মুখোসের আড়াল থেকে কিছু সময়ের জন্য বের হয়। তখন সন্ধ্যার নিকষ আঁধারও তাদের থেকে দূরে সরে যায়। মেঘের আড়াল থেকে চাঁদ উঠে... অন্ধকারগুলো আলোয় গিয়ে মুখ লুকায়।
(ক্রমশঃ)
বিষয়: সাহিত্য
৯৩৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসম্ভব সুন্দর কথামালা। সুন্দর লাগলো। বেশী বেশী লিখুন।
আপনার ভালোলাগার অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আরো অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
শুভেচ্ছা রইলো।
ধন্যবাদ, অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
যে নাটকে দর্শক আর বিচারক মাত্র একজন।
শুভেচ্ছা সহ..
আপনাকে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন