তেতাল্লিশ বছর বয়সটা এমনই
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৯ আগস্ট, ২০১৪, ১২:২৪:৩৩ রাত
সেদিন বিকেল বেলা,
রাঁধাচুড়া গাছটির পাশে দাঁড়িয়ে, বারবার
হাতঘড়িতে সময় দেখে অপেক্ষার প্রহরগোনা
সেই মেয়েটিকে মনে হল যেন কত দিনের চেনা!
হলুদ-সবুজে নিজেকে ঢেকে রাখা সে
মুখ তুলে আয়ত নয়নে একবার আমায় দেখে,
আবার ডুবে যায় রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে
কারো আসার অপেক্ষায়।
তেতাল্লিশ বছর বয়সটা এমনই যে,
অপেক্ষমান কোনো অষ্টাদশীর চোখে
ক্ষণিকের কৌতূহলও জাগায় না।
সেদিন খেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাবার সময়
দুই যুবক নিজেদের একান্ত আলাপচারিতা থামিয়ে দেয়,
হাতের জ্বলন্ত সিগ্রেট আড়াল করলেও
উড়ন্ত ধোঁয়া আর ওদের বিরক্তির ভ্রুকুটি আড়াল হয় না!
তেতাল্লিশ বছর বয়সটা এমনই যে,
প্রানোচ্ছল যুবকের পাশে একদন্ড
দাঁড়ানোর সুযোগও এনে দেয় না।
পনের বছর ধরে পথ চলা সাথীর একান্ত জগতে
কখনো অনাহুতের মতো ঢুকে পড়ি,
আর পরিচিত দৃষ্টির অপরিচিত দর্পণে, নিজেকে
বড্ড অসহায় লাগার মুহুর্তগুলোতে
তীব্র বেদনার নীল শিখায় ঝলসে যেতে যেতে ভাবি-
তেতাল্লিশ বছর বয়সটা আসলেই এমন কেন?
পুঁই লতার মত বেড়ে উঠছে মেয়ে আমার! একদিন
দুজনের দূরত্বটাকে পাল্লায় মাপার মতো ওজনদার লাগে,
তাঁর সাজানো রুমের ভিতরে এক বাবা
হঠাৎই হয়ে যায় ওর পরিত্যক্ত এক খেলনা পুতুলে!
তেতাল্লিশ বছর বয়সটা এমনই যে
নিজের সত্ত্বাও ক্রমশঃ ছায়া হতে হতে
একসময় কাছে থেকেও যেন দুর্বোধ্য দেয়ালের ওপারে।
ঘরে বাইরে পরিচিতদের অপরিচিত হয়ে ওঠা
দেখে দেখে ক্লান্ত আমি পথ হারিয়ে এখন
পথ চলি ডানে-বামে না তাকিয়ে।
দৃষ্টির সরল পথে খুঁজে ফিরি
তেতাল্লিশ বছরের এমন কাউকে, যে
পথের শেষ মাথা ধরে হেঁটে আসছে আমারই পানে।
আর আমি
পলাতক চাঁদ হয়ে অপেক্ষা করি-
তেতাল্লিশ বছরটিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে।
অন্যদের কাছে হয়তো
তেতাল্লিশ বছর বয়সটা এমনই যে ... ... ... তবে
বন্ধুর জন্য,
কোনো তেতাল্লিশ বছর কোনো ব্যাপারই না।।
বিষয়: সাহিত্য
৮৭২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন