(একটি একাংকিকা }বর্তমান রাজনৈতিক পে্রক্ষাপটে লিখা অস্তিত্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন এসো স্বপ্নবুনি ২৪ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:২৮:২৮ রাত
বাংলাদেশঃ আমাকে চিনতে পেরেছো তোমরা? আমি হলাম সেই গল্পের সুযলা সুফলা শষ্য শ্যামলা সুবজে ঘেরা বাংলাদেশ।যার প্রতি আবহমানকাল থেকে লোভ ছিল ভিনদেশী বানিয়া আর লুটেরাদের। রুপের রাণী বলা হয় আমাকে। আমার বুকে জন্মে নাকী তোমরা নিজেকে ধন্য মনে কর। এসব নীতিকথা তোমাদের মুখে আর শোভা পায়না। তোমরাতো আত্মধ্বংসের খুব কাছাকাছি পৌছে গিয়েছ। চারদিকে আজ আগুন আর আগুন। এ যেন এক নিকৃষ্ট নরক! যা তোমাদের অস্তিত্বকে এক সময় মিটিয়ে দেবে।
পেট্রোল বোমাঃ অস্তিত্ব? হাঃ হাঃ হাঃ। যে দেশের প্রধান মন্ত্রী পিতৃহত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ঘৃন্য ষরযন্ত্রে লিপ্ত, সে দেশের অস্তিত্ব রক্ষা কে করবে বল?
বাংলাদেশঃ এই দুঃসময়ে তুমি আবার কে হে বাছা?
পেট্রোল বোমাঃ আমাকে চিনতে পারলে না? এসময়ে আমাকে নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। আমিই হচ্ছি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষপটে নব সংযোজন পেট্রোল বোমা। হাঃ হাঃ হাঃ। ভয় পাচ্ছো? আমাকেইতো ব্যবহার করে জনগণকে অন্ধকারে রেখে অন্যের উপরে দোষ চাপিয়ে তোমার উপর শাসন-কতৃত্ব পাকাপোক্ত করতে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশঃ তাহলে তুমিই কি সেই অশুভ শক্তি? আমার বুকের ভিতর নরকের দাবদাহ সৃষ্টি করে পিশাচের মত হাসছো? অসংখ্য মায়ের বুক খালি করেছো। বৃদ্ধ নর-নারী আর শিশুদের হাত-মুখ পুড়িয়ে দিয়ে তোমার লাভ কি?
পেট্রোল বোমাঃ আমার কোন লাভ নেই। লাভ তোমার। বড় কিছু পেতে হলে একটু ক্ষতিতো স্বীকার করতেই হবে। জনগণের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটাতেই তো আমার জন্ম। বিরুধী দল ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যেই অনন্যোপায় হয়ে আমাকে আবিস্কার করছে। হাঃ হাঃ হাঃ। তবে দূঃখের বিষয় হচ্ছে বিরোধী দলকে আর্ন্তজাতিকভাবে জঙ্গী হিসেবে চিহ্নিত করতে সরকার এখন আমাকে ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশঃ দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ আমি রাজনৈতিক টানাপোড়নে এমনেই জ্বলে খাক হচ্ছি। তার উপরে তুমি এসেছো আমার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে।
তুমি যাও। তোমার কর্কশ আর ঐ বিশ্রি হাসি আমার যন্ত্রনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। তোমার কি দয়া মায়া বলে কিছুই নেই? তুমি কি সেই আগুনেরই অংশ নও, যে আগুন ইব্রাহিমকে না পুড়িয়ে ফুল বাগিচায় পরিণত হয়েছিল?
পেট্রোল বোমাঃ হাঃ হাঃ হাঃ। তোমার বুকে বিচরনকারী মানুষগুলো কি ইব্রাহিমের মত পরিক্ষা দিয়ে পাস করার মতো ঈমানী বলে বলিয়ান হয়েছে? শাসক গোষ্ঠীর কুট-কৌশলের মোকাবেলায় এরা নিজেদেরকে কতটুকু প্রস্তুত করতে পেরেছে? এরাতো শাসক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রগুলোর ব্যাপারেই সচেতন নয়। এদেরকে শাসক গোষ্ঠী বিরোধী দলের নামে পেট্রোল বোমা মেরে ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে এবং আন্দোলনকারীদের উপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
জনগণ যদি এখনো তাদের প্রকৃত সত্রু এবং মিত্র চিনতে না পারে তবে তাদের ভাগ্যাকাশে ২০০ বছর শাসন করা ইংরেজদের চাইতেও কঠিন মেঘের উপস্থিতি খুবই নিকটে। __ [প্রস্থান]
বাংলাদেশঃ
ওহে সম্মানিত মেঘের মালাইকা!
আল্লাহর নির্দেশে কিছু বৃষ্টি দাও।
প্রজ্জ্বলিত এই নিস্ফলা শুষ্ক বুকে ...
কিছু স্বপ্ন দাও।
ফোস্কা পড়া এই চোখে দাও কিছু আলো।
শান্তিমাখা স্নেহময়ী স্পর্শ বুলাও
নয়ন জুড়ে নামিয়ে আনো শান্তির ঘুম।
বিশ্ববিবেকঃ তোমার বুকে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা দেখে আমারা মর্মাহত। আমরাতো শান্তি প্রত্যাশী। বিশ্বের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করুক, এটাই আমরা চাই। একটি পিসফুল বিশ্ব আমরা গড়তে চাই। হে বাংলাদেশ! তোমার মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক এটাও আমাদের এখনকার চাওয়া।
বাংলাদেশঃ শান্তিদূত হয়ে তুমি আবার কে এসেছো হে?
বিশ্ব বিবেকঃ আমাকে চিনলে না? আমি হচ্ছি বিশ্ববিবেক। একটা গণতান্ত্রিক বিশ্ব উপহার দিয়ে মানবতার কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য।
গণতন্ত্রঃ ওহে বিশ্ব বিবেক! তোমার মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। বিশ্বে সবর্ত্রই গনতন্ত্রের নামে ফ্যাসিবাদ চলছে। বর্তমানে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার সংরক্ষণ ও বিকাশের চেয়ে ক্ষমতার সূরক্ষা এবং ক্ষমতাকে করায়ত্ব করাই রাজনৈতিক দলগুলোর মূল লক্ষ্য। আর তাদের মধ্যে যাদের নীতি-আদর্শের সাথে তোমাদের বিরোধ তাদের পক্ষে তোমাদের এই সুন্দর বুলির সবসময়ই কমতি পড়ে যায়। আর এজন্যই আজ সংঘাতের ঘূণাবর্তে আবর্তিত বিশ্ব রাজনীতি।
বিশ্ব বিবেকঃ তোমার স্পর্ধাতো কম নয়। আমার বিরুদ্ধে এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা তোমাকে কে শিখিয়েছে? তোমার জন্মদাতা হিসাবে আমরাতো তোমাকে এমন শিক্ষায় কখনো শিক্ষিত করি নি। সর্বদা আমাদের আদলেই তোমাকে প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বিশ্ববিবেক সদা তৎপর।
বাংলাদেশঃ এবার বুঝেছি! বিশ্ব বিবেক নামে বিশ্বময় শান্তিকামী মানুষদের যারা শত্রু, তাদের কৃড়ানকের ভূমিকায়-ই তুমি রয়েছো হে বিশ্ব বিবেক। মুখে গণতন্ত্রের কথা বল, কিন্তু কার্যত যেখানেই মজলুমানের স্বার্থজনিত বিষয় এসে যায়, সেখানে তোমাদের গণতন্ত্র কিতাবের অভ্যান্তরেই রয়ে যায়।
গণতন্ত্রঃ তুমি যথার্থ বলেছো! আজ বাংলাদেশে গনতন্ত্র ভুলন্ডিত হচ্ছে। কিছুদিন আগে সারা বিশ্ব দেখেছে মিশরে একটি গণতান্ত্রিক সরকার এবং সেখানের গণতন্ত্রকামী মানুষদের বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেক কি ভূমিকা রেখেছে। বিশ্ব এ-ও দেখেছে যে, বিগত নির্বাচনে বাংলাদেশে একশ তিপ্পান্ন আসনে কোন নির্বাচন ছাড়াই প্রতিনিধি নামের সরকারী সাংসদদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে কি নির্লজ্জ ভাবে। বাংলাদেশে আজ যে সংকট ঘনিভুত হয়েছে তার একমাত্র কারনই হচ্ছে জনগনের রায়ের ভিত্তিতে সরকার গঠন না হওয়া।
বিশ্ব বিবেকঃ আমরা চাই বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার ব্যাবস্থার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু তার অর্থ এ নয় যে, বাংলাদেশে আর একটি মিশরের উত্থানকে আমরা সমর্থন দেবো। আমরা বুঝতে পেরেছি যে সুষ্ঠু নির্বচান মানে বি.এন.পি’র ঘাড়ে চড়ে ইসলামী শক্তির উত্থান, যাকে আমরা কখনোই বরদাস্ত করতে পারি না। আর সে কারণেই আমরা অবস্থার নিবীড় পর্যবেক্ষণে রাখছি। তাছাড়া “র” এবং “মোসাদও” তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে, যার সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগও রয়েছে।
বাংলাদেশঃ কারো কোন ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বাংলাদেশীরা জীবন দিয়ে হলেও তাদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনবেই। বাংলাদেশীদের প্রতি আমার সবচাইতে বড় আবেদন হলো, তোমরা তোমাদের শত্রু-মিত্র চিনতে ভুল কোরো না।
[কবিতা আবৃতি] সবাই মঞ্চে দাড়িয়ে থাকবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন