সাবধান! দাজ্জাল আসছে। ঈমান বাঁচাও।
লিখেছেন লিখেছেন মুফতি যুবায়ের খান রাহমানী। ২০ মার্চ, ২০১৫, ০২:৩৮:৪২ রাত
অত্যধিক আগ্রহ নিয়ে মাওলানা আসেম ওমরের "তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও দাজ্জাল" এবং মাহদী হাসান লিখিত "সাবধান দাজ্জাল আসছে, ঈমান বাঁচাও!" বই দুটি পড়ছিলাম।পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, পৃথিবীর তথাকথিত সভ্যতা আমাদেরকে ধোঁকা দিয়ে কত পরিকল্পিতভাবে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বাঁককে কীভাবে আমাদের জন্য মৃত্যু উপত্যকা বানিয়ে রেখেছে! সেই সঙ্গে ঠিক আমাদেরকেই দাজ্জাল ও তার সহযোগীদের কাতারে অবলীলায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে! আর আমরা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় তার আগমনের জন্য, তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিরলস সহযোগীতা করে যাচ্ছি! আমরা তা আদৌ অনুধাবন করতে পারছিনা। ইশ! আমার আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীসহ এদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে যদি বইয়ের সে কথাগুলো, সে তথ্যগুলো বা তার চিত্রটি তুলে ধরা যেত!
হযরত হুযায়ফা রাযি. বর্ণনা করেন রাসুল সা. বলেছেন, আমি দাজ্জালের বিষয়টি এজন্য বারবার তোমাদের সামনে বর্ণনা করেছি, যাতে তোমরা এটা নিয়ে চিন্তাগবেষণা কর। ভালো করে বুঝ এবং সবসময় সজাগ থেকে এর ওপর আমল কর। সেই সঙ্গে তোমাদের পরবর্তী লোকদের পর্যন্ত তা উত্তমরূপে পৌঁছাতে পার! তাই, সবাই যেন একে অপরকে বলে দেয় যে, তার (দাজ্জালের) ফেতনাটি অত্যন্ত ভয়ানক ফেতনার আকারে প্রকাশ পাবে!
হযরত আনাস রাযি. হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ইস্পাহানের (ইরানের একটি বিখ্যাত নগরী) সত্তর হাজার ইহুদী কালো অথবা সবুজ পোষাক পরিধান করে দাজ্জালের সাথে যুক্ত হবে। (সহীহ মুসলিম)
দাজ্জালের বাহিনী মক্কা ও মদীনা ব্যতীত সকল শহরকেই পদদলিত করবে। কিন্তু মক্কা মদীনায় প্রবেশের পথে তাদেরকে বাঁধা প্রদানের জন্য ফেরেশতা মোতায়েন থাকবে। ফলে সে সেখানে প্রবেশে সক্ষম হবেনা। নারীরা অধিকহারে দাজ্জালের ফিতনার শিকার হবে। হাদীস শরীফে রয়েছে যে, পুরুষরা তাদের স্ত্রী, মাতা, ভগ্নি, কন্যাদেরকে রশি দ্বারা বেঁধে ফেলবে এই আশংকায় যে, তারা হয়তো দাজ্জালের ফিতনার শিকার হয়ে পড়তে পারে। (মুসনাদে আহমাদ ৬৭/২)
ওহে বন্ধু! তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো! অথচ দাজ্জালের নিদর্শনগুলো স্পষ্ট! তোমার শিয়রে দাজ্জাল বা তার ফেতনা এসে উপস্থিত! আমরা যদি নবীজির হাদিসের দিকে তাকাই, পৃথিবীতে বিরাজমান সমস্যা এবং তার উৎপত্তিস্থলের দিকে দৃষ্টিপাত করি তবে দিবালোকের ন্যায় আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠবে নবীজির সেই হাদীস যেখানে তিনি বলেছেন দাজ্জাল ততক্ষণ পর্যন্ত আগমণ করবেনা যতক্ষণ না মানুষ তার থেকে অসতর্ক হয়ে যায়! পুরো মুসলিম সমাজ আজ সেই গাফলতির চাঁদর গায়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন! আর দাজ্জাল ও তাঁর অনুসারী বিশ্বের কুফুরী সমাজ আমাদের বাড়ীর দোরগোড়ায় বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখা ঈমানের একমাত্র সম্বলটুকু ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পরিকল্পনা সম্পন্ন করে দাঁড়িয়ে আছে! আর আমাদের অবস্থা তো ঐ প্রতিবেশীর মত, যে ডাকাত সম্পর্কে সতর্ক করতে এলে এই বলে তাকে তাড়িয়ে দিচ্ছি তোমার কি খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই? এই প্রভাতকালে কে আসবে আবার ডাকাতি করতে? যখন সব লুটে নিয়ে চলে গেল তখন এসে বললাম, হায় ভাই, তুমি যদি আরও একটু জোর দিয়ে বলতে, ডাকাতদল ভারী অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত ছিলো! তারা যে কোন মূহুর্তে যে কোন স্থানে আক্রমণ করতে সক্ষম! তবে তো আর এভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম না! ঠিক আমাদেরও হয়েছে আজ সেই দশা!
এ বিষয়ে সতর্ক করতে গেলে বা বলতে গেলে, চেহারায় ভাজ ফেলে বলে, বেশ তো কাজ পেয়েছো না! এখনো সময় অনেক বাকী! আর বিষয়টি তো আমরা জানি, তবে তা এখনই নয়!
আমরা হয়তো তখন জাগবো, যখন দাজ্জাল আমার ঘুমন্তাবস্থায় শিয়রে এসে দাঁড়াবে এবং আমাকে জাগিয়ে বলবে, তোমার ঈমানটুকু দিয়ে দাও আর তার প্রতিদান স্বরূপ চোখের ধাঁধার জান্নাতসাদৃশ্য জাহান্নামে প্রবেশ কর!
তখন আমার জাগরণ কী উপকার বয়ে আনবে? তাই সচেতনসমাজকে বলবো, অনুগ্রহ করে একবার চোখ খুলে দেখুন, দাজ্জাল কীভাবে পৃথিবীর চারপাশে চক্রান্তের জাল ছড়িয়ে দিয়েছে। দলেদলে কতশত মানুষ সে জালে শিকার হয়ে ধ্বংসের অতল গহবরে ডুবে যাচ্ছে!
এখানে দেখুন
বিষয়: বিবিধ
২৪১৭ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
কি ভয়াবহ কথা!
যেকোন বই ঘরে বসে কেনার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান amaderboi.com
যেকোন বই ঘরে বসে কেনার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান amaderboi.com
মন্তব্য করতে লগইন করুন