এইডা কি শুনলাম? আগে শুনছি বিএনপি একরাম হত্যায় জড়িত, অখন দেখি সবই আওয়ামীর কুত্তালীগের পুলাপান।
লিখেছেন লিখেছেন নানা ভাই ২৪ মে, ২০১৪, ১১:৫৫:৪৯ রাত
						 
						 

নিজাম উদ্দিন হাজারী আমার ফুফাত ভাই। তবে একরামুল হক হত্যার বিষয়ে তিনি (নিজাম হাজারী) জানেন কি না আমি তা বলতে পারবোনা। আমাদের বড় ভাই জিহাদ চৌধুরীর নির্দেশে ওইদিন আমার প্রায় আড়াইশ লোক ঘটনাস্থলে ছিলাম। আমার কাছে কোনো পিস্তল ছিল না। শুধু একটা চাপাতি ছিল। তাকে খুন করা হয়েছে তাও আমি জানি না। শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে র্যাব হেডকোয়ার্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান একরামুল হককে খুন করার অপরাধে র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত আবিদুল ইসলাম আবিদ (২২)। তিনি ফেনী-২ আসনের সংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর সঙ্গে তার আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা এভাবেই অকপটে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। বর্ণনা দেন একরামুলের খুনের পুরো ঘটনা।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে হত্যা করার আগের দিন রাত আনুমানিক ৮টার দিকে টাংক রোডে দিঘীর পাড়ে আবিদ, সানান, রুটি সোহেল ও বক্কর উপস্থিত ছিল। সেখানে আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত নেতা জিহাদ চৌধুরী তাদের জানান, একরামের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া লাগবে। সেখানে একরামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পাঞ্জাবি ছিড়ে দিতে হবে, মারধর করতে হবে, গাড়ি ভেঙে দিতে হবে।
রাতে জিহাদের সঙ্গে কথা বলে আমি, সানান, শিফাত, সিপন, অনিক, সৈকত, সানি, মোহন এবং রাহাত একাডেমিতে আসি। সেখান রাত নয়টার দিকে একরামের গাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর আমি বাসায় চলে যাই। বাসায় যাওয়ার পর রাত ১১ টার দিকে জিহাদ আমাকে ফোন দিয়ে মিজান রোডের ঈদগাহ ময়দানে থাকতে বলে। সেখানে রুটি সোহেল, আমি এবং জিহাদ ছিলাম। সেখানেই জিহাদ একরামকে মেরে ফেলার কথা বলে।’
আবিদ বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে একাডেমিতে আমি, শিফাত, শানান, সানি, রাহাত, মোহন, অনিক ও সৈকত আসি। এ সময় রুটি সোহেলকে ফোন দিয়ে একাডেমি থেকে বের হওয়ার কথা ফোনে জানাই। এ সময় রুটি সোহেল মানিক, পাংকু আরিফ, ছুট্ট, বক্কর, আনিস, আসিফ, রকি, রাসেল, কাইয়ূম এবং নয়নকে পাঠায়।
এ সময় রুটি সোহেল আমাকে ফোনে জানায় জিহাদ জিনিস (পিস্তল) আনতে বলছে। রুটি সোহেল জিহাদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল নিয়ে আসে। একটি পিস্তল আমাকে, একটি সানানকে এবং অন্যটি রুটি সোহেল রাখে। আর একটি পিস্তল জিহাদের কাছে ছিল। রুটি সোহেল আমাকে জানায় আশেপাশে লোকজন আসলে এগুলো কাজে লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘জিহাদ গাড়িতে কিভাবে আক্রমন করবো সেই পরিকল্পনাও এ সময় জানায়।
এরপর আমরা সবাই বের হয়ে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ফেনীর বিলাসী হলের সামনে পৌঁছাই। আমরা সবাই তিনজন, পাঁচজন, সাতজন এবং দশজন হয়ে ভাগ হয়ে যাই।
কিছুক্ষণ পর সেখানে চেয়ারম্যানের গাড়ি এসে পৌঁছায়। এ সময় জিহাদ, মানিক, পাংকু আরিফ এবং রুটি সোহেল একটি টমটম দিয়ে চেয়ারম্যানের গাড়িটি বেরিকেড দেয়। তখন ওই গাড়িটির সামনে কালো রঙয়ের একটি প্রিমো গাড়ি ছিল। কালো গাড়িটি অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে সবাই রামদা, রড দিয়ে গাড়িটি ভাঙচুর করা শুরু করি। এ সময় বাকিরা গাড়িটিতে ইট মারা শুরু করে। এ সময় ড্রাইভার গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডের উপর উঠিয়ে দেয়। ভেতর থেকে একরাম ভাই গুলি করেন। সানান গাড়ির ডান দিকে ছিল। বাম দিকে জিহাদ এবং রুটি সোহেল ছিল। জিহাদ ও শানান উপরের দিকে গুলি ছোড়ে। রুটি সোহেল গাড়ির ভেতরে গুলি করে। এ সময় পাপন, নয়ন এবং এদের বন্ধুরা পাশের দোকান থেকে কেরোসিন নিয়ে এসে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
জিহাদ ঘটনাস্থল থেকেই সানের পিস্তল নিয়ে যায়। বড়বাড়ির রোডের পুকুর পারে সবাই জিহাদ ভাইকে পিস্তল দিয়ে দেয়। এরপর তারা স্টেডিয়াম পুকুর পারে লুকিয়ে ছিল। তার সঙ্গে শিপন ও সিফাত ছিল। ওই রাতেই শিপন ও সিফাত ঢাকায় চলে আসে।’
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আবিদ বলেন, ‘পুরো কিলিং মিশন শেষ করতে আমাদের প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে। ঘটনাস্থল থেকে থানার দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। পুলিশ ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসতে পারে।”
র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত অপর আসামি শাহ জালাল শিপন নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার আগের দিন আমাদেরকে শোডাউনের কথা বলা ছিল।
এভাবেই র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত আটজন পুরো কিলিং মিশনের বর্ণনা করেন। প্রত্যেকেই জিহাদ চৌধুরীর নির্দেশে কাজ করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
কে এই জিহাদ চৌধুরী: ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা জিহাদ চৌধুরী। একরামকে যে স্থানটিতে হত্যা করা হয় ২০০০ সালে ওই  জায়গায় যুবলীগ নেতা বশির আহমেদকে (বইশ্যা) হত্যা করে প্রথম আলোচনায় আসেন জিহাদ চৌধুরী। তিনি ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিস্কৃত)। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের আগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জিহাদ চৌধুরীকে দল থেকে বহিস্কার করেন একরাম। এর একদিন পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার গুরু নিজাম উদ্দিন হাজারী তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।
গত মার্চ মাসের শুরুতেও একরামকে তিন/চার বার হত্যার চেষ্টা করেছিলেন জিহাদ। এছাড়া নির্বাচনের সময় একরাম সমর্থকদের নানান হুমকি-ধামকি দেয়ার ঢালাও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
একরামের সঙ্গে জিহাদের যে বিষয়ে বিরোধ ছিল: একরামুল হকের সঙ্গে জেহাদ চৌধুরীর চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই শত্রুতার সৃষ্টি হয়। জিহাদ ফুলগাজী উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে একরামুর হককে সমর্থন দেয়া হয়। এরপরও জিহাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এ কারণে দল থেকে জিহাদকে বহিস্কারও করা হয়। এতেই তাদের দুজনের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। এরপর জিহাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও ভেতরে ভেতরে একরামের পেছনে লেগেছিল।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা নির্বাচনের আগে ইউপি নির্বাচন থেকেই তাদের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়।
						 
						 
						 
						 
						 
						 
						 
						 
বিষয়: রাজনীতি
১১১৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
পড়েন মতিউর রহমান রেন্টুর "আমার ফাঁসি চাই, "Chudurbudur blog--চুদুরবুদুর ব্লগে http://abuls.blogspot.com
মন্তব্য করতে লগইন করুন