আধুনিকতা আমরা কি ভাবছি
লিখেছেন লিখেছেন মু আতিকুর রহমান ২০ জুন, ২০১৪, ০৩:০২:৫৪ রাত
বিশ্বে ‘আধুনিকতা’ ধারনার প্রথম উদ্ভব ঘটাই ইউরোপিয়রা। উনিশ শতকের শুরুর দিকে ব্রিটেন শিল্প বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এ ধারনা সর্ব স্তরের একটা শক্ত ভিত গেড়ে বসে। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কতিতে আধুনিকতার ধারনা সার্বজননীতা লাভ করে। এর কিছুকাল পর ইউরোপিয়রাই আবার বলতে শরু করে। ‘উত্তরাধুনিকতা’ র কথা। আর এই দোলাচালে দুলতে শুরু করে সারা বিশ্ব। আধুনিকতার ধারনা প্রচারের পর কিছু শব্দ খুব গুরুত্ব পেয়ে যায়। সেকালে, গেয়,খেত,বর্বর ইত্যাদি আমরা ইউরপিয়দের আধুনিকতার ধারনা লুফে নিয়েছি আত সাড়ম্বরে। এখন মানুষের জীবনে আধুনিকতা একটি বড় বিষয়। টিকে থাকতে হলে যেন আধুনিক হতেই হবে। অপরদিকে ‘উত্তরাধুনিকতা’ এখনো সুপ্রতিষ্ঠিত হতে না পারলেও এর একটা প্রভাব ইতিমধ্যে আমরা দেখতে শুরু করেছি। প্রকৃতপক্ষে উত্তরাধুনিকতা বলতে কিছু হয় না। আমরা তাই মনে করি। কারন এটি একটি ভ্রান্ত ধারনা যে, ভবিষ্যতেকে বর্তমান রুপ দেয়া যাই। এটি বলা যায় কিন্তু বাস্তবে করা যাই না। তবে অনেকে মনে করেন,আধুনিকতার একটি ব্যাঙ্গরুপ হল উত্তরাধুনিকতা। আমরা এখানে বিশেষভাবে শিল্প সংস্কৃতিতে এ দুটি ধারনার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করছি।
আধুনিকতা ধারনাকে আমরা মেনে নিয়েছি কোন প্রকার বাছ বিচার ছারাই। আমাদের দেশে আধুনিকতার মানে হল, ইউরপিয়দের অনুকরন আনুসরন। তাদের শিক্ষা পদ্ধতি,সংস্কৃতি,ফ্যাশন,স্টাইল এবং যে কোন বিষয়ের উপায় উপকরণ ইত্যাদির হুবহু আনুকরণ।
আমরা আধুনিকতার সঠিক ব্যবহার করতে সমর্থ হইনি এবং নিজেদের স্বকিয়তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছি।আধুনিকতা ধারনা কে ব্যবহার করে আমরা আলাদা এক প্রকার ঢং তৈরি করতে পারতাম। অথচ ইউরোপের জীবনধারা,পোশাক, সংস্করিতি ও শিল্প দিয়ে আমরা নিজেদের ঢেকে দিয়েছি। ফল হয়েছে কি? ভেড়ার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে কুকুরের ডাক। অথবা দেখতে কুকুর কিন্তু কাজ করছে ভেড়ার। আধুনিকতার ধারনা নতুনভাবে আমাদের মানবিকতার উপর আঘাত হেণেছে। পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ ক্ষুণ্ণ করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তা শ্রেণী বৈষম্যারও জন্ম দিয়েছে। জাতীয় জীবনে শহুরে এবং গ্রামীন মানুষ সরল প্রকৃতির এবং সময়ের সাথে বেমানান। আবার গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ভাবে শহুরে মানুষ অতাধুনিক এবং কপট স্বভাবের। আধুনিকতা তাই স্পষ্টঃ
পরস্পর বিরোধী মানস প্রতিষ্ঠার জন্য দায়ী। আধুনিকতা ও ঊত্তরাধুনিকতার ধারণা সবচেয় বেশি আঘাত হেনেছে আমাদের সাস্কতিতে। এ ধারণা আমাদের সাংস্কতিতে লণ্ডো ভণ্ড দিয়েছে বললে ভূল হোয় না তাই আধুনিক বাঙালী বাবু আর বিলাতী সাহেবের তফাৎ খুব একটা বেশী নয়।
বর্তমানে আমাদের একটি শ্রেণী গড়ে ঊঠেছে স্থূল পোষ্ট-মডার্ন ধারণার উপর ভিত্তি করে। এ শ্রেণীর কোন কম্যুনিটি সেন্সে রয়েছে বলা যায় না এবং আমরা এদের প্রকতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি না। এ শ্রেনী ট্র্যাডিশন ভেঙ্গে দিয়ে সবকিছুকে নিজের ম্ন মত উপস্থাপন করার পক্ষপাতি। এরা জাতিয়তাকে ভীষনভাবে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এমতাবস্থায় আধুনিকতার জাতিগত সংজ্ঞা নির্ধারন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। নচেৎ অদুর ভবিষ্যতে মানুষের জাতীয়তা গভির সংকটের মুখে পড়তে পারে। আমরা মনে করি আধুনিকতা সম্পর্কে প্রতিটি জাতির নিজস্ব একটা ব্যাখ্যা থাকা প্রয়োজন এবং পোষ্ট- মডার্ন ধারনা বর্জন করা উচিৎ। আমরা কি নেব আর কি নেবনা এ ব্যাপারে আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
২৬৬৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন