নারী নেতৃত্বের নামে অপপ্রচার
লিখেছেন লিখেছেন বাংলায় কথা বলি ২১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:০২:৪৫ রাত
ইসলামের দৃষ্টিতে নারি নেতৃত্ব হারামঃ-
ইসলামের দৃষ্টিতে নারি নেতৃত্ব হারাম এই কথা সবাই বিশ্বাস করে। কিন্তু কোন একটি মহল যদি এই কথা না বুঝে না শুনে অপবাদ দেওয়া শুরু করে তাহলে অবস্থা কি হয়? কখনো কি ভেবে দেখেছেন? আজকে নেতৃত্ব ও সন্ধি নিয়ে সামান্ন কিছু বলার চেষ্টা করছি।
নেতৃত্ব কি??
নেতৃত্ব হল নেতার একটি বিশেষ গুণ, যার মাধ্যমে সে তার সকল কর্মীবাহিনীকে নিয়ন্ত্রন করে।
অথবা, যে বাক্তির কথাই কোন একটি দল,কোন একটি সংগঠন, অথবা কোন একটি গোষ্ঠী পরিচালিত হয় তাকে নেতা বলে। আর নেতার সকল গুনাবলিই নেতৃত্ব।
সন্ধি কি?
বিশেষ কিছু শর্ত সাপেক্ষে কোন একটি জাতি, কোন একটি গোষ্ঠী, অথবা কোন একটি দলের সাথে একটি সময় সীমার জন্য চুক্তি করাই হল সন্ধি। সন্ধির শর্ত পুরন হয় কেবল কিছু সময় পর্যন্ত। পক্ষান্তরে নেতার নেতৃত্ব ততদিন মানতে হয় যতদিন সে নেতা থাকে। সুতারাং সন্ধির শর্ত পুরন করা আর নেতৃত্ব মানা এক নয়!
নারি নেতৃত্ব কি?
নারি নেতৃত্ব হল একটি দলের/গোষ্ঠীর সকল প্রকার ক্ষমতা নারির হাতে তুলে দেওয়া। নারি যেইভাবে বলবে সেই ভাবে পালন করা।
জামাআত-শিবির নারি নেতৃত্বকে হালাল মনে করে এবং নারি নেতৃত্ব মানে এই কথাটা সত্যিকিনা? নাকি এটা জামাআত-শিবিরের নামে অপবাদ??
আমি আগেই বলছি নেতৃত্ব মানা আর সন্ধির শর্ত মানা এক নয়! জামায়াত কি তাদের দলের সকল কার্যক্রম নারির হাতে তুলে দিয়েছে? জামায়াতের প্রোগ্রাম কি বি.এন.পি পরিচালনা করে? নাকি জামায়াতের প্রোগ্রাম জামায়াত পরিচালনা করে? জামায়াতের কোন মিছিলে কি বি.এন.পি যোগদান করে? বি.এন.পি এর কোন মিছিলে কি জামায়াত যোগদান করে? না করেনা!!!! বরং জামায়াত যেহেতু বি এন পি এর সাথে জোটবদ্ধ অথবা সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ সেহেতু জামায়াত সেই সকল প্রোগ্রাম অথবা মিছিলে উপস্থিত থাকে যা জোটের পক্ষ থেকে ডাকা হয়। যেহেতু বি এন পি এর সাথে জামায়াত জোটবদ্ধ, এবং বি এন পি এর নেতা নারি। সেহেতু জোটের নেতা হল খালেদা জিয়া। এখন কেউ যদি বলে জামায়াত খালেদার নেতৃত্ব মানে তাহলে আমি বলব সে একটি ভুল ধারনার মধ্যে আছে। বরং জামায়াত সেই সকল প্রোগ্রাম বা মিছিল বি.এন.পি এর সাথে একসাথে পালন করে যা জোটের সকল দলের অংশগ্রহনে সিদ্ধান্ত হয়। আর যেই সকল প্রোগ্রাম জামায়াতের দলীয় প্রোগ্রাম তা বাস্তবায়ন করে জামায়াত। সুতারাং জামায়াত যদি নারি নেতৃত্ব মানতো তাহলে সকল কাজ করার ক্ষেত্রে বি এন পি কে জিজ্ঞাসা করেই করত।
এখন কেউ যদি বলে জামায়াত যদি নারি নেতৃত্ব না মানে তাহলে জামায়াত কেন বি এন পি এর সাথে জোট করেছে?
তাদেরকে শুধু একটি কথা বলব যে জামায়াত এটা কুরআন থেকে শিক্ষা গ্রহন করেছে। এই প্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন করব যে রাসুল সঃ হুদাইবিয়ার সন্ধি কাদের সাথে করেছে?
কেন করেছে? কোন প্রেক্ষাপটে করেছে? রাসুলুল্লাহ সঃ কাফেরদের সাথে সন্ধি করছেন! যখন মুসলমানদের কে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে রাসুল সঃ কাফিরদের সাথে সন্ধি করেন। যার ফলে ইসলামের দাওয়াত দিক বিদিক ছুটে যায়। সকল মানুষের মাঝে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে যায়, ইসলামের শক্তি হাজার গুনে বৃদ্ধি হয়। এখন কেও যদি বলে, (নাউজুবিল্লাহ) রাসুলুল্লাহ সঃ যেহেতু কাফিরদের সাথে সন্ধি করেছেন সেহেতু তিনি কাফিরদের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন তা কি সঠিক? না সঠিক নয়!!! সুতারাং জামায়াত বি.এন.পি এর সাথে সন্ধি করার কারনে নারি নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন এই কথা কিভাবে সঠিক হয়???? যখন বাংলাদেশে আওয়ামিলীগ ইসলাম পন্থিদেরকে নির্যাতন করা শুরু করে, কুকুরের মাথাই টুপি পরাই, মসজিদের ভিতর জুতা নিয়ে প্রবেশ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণে সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরন করে, আলেম ওলামাদেরকে নির্যাতন করা শুরু করে, মাদ্রাসাকে জঙ্গিবাদের আখড়া বলে আক্ষায়িত করে, সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিয়ে দেই, সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ কে বাদ দিয়ে দেই, তখন বাংলাদেশের সকল মুসলমান এই জালিম সরকারের নির্যাতন থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, যাতে করে দেশের মানুষ জালিমের হাত থেকে রক্ষা পাই। আর তখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল ছিল বি.এন.পি এবং জামায়াত। জামায়াত দেখল যে, যদি জামায়াত ও বি এন পি আলাদা নির্বাচন করে তাহলে ভোট কাটা গিয়ে আওয়ামিলিগ আবারো ক্ষমতাই চলে আসবে। আর বি এন পি ও উপলব্ধি করল যে একা নির্বাচন করলে আওয়ামিলীগ কে হটানো যাবেনা। তখন দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ জামায়াতে-ইসলামী আওয়ামি সরকারকে হটানোর জন্য এবং ইসলামী আন্দোলনের বৃহত্তর কথা চিন্তা করে বি এন পি এর সাথে ৩ নিরবাচনের সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। সুতারাং চুক্তি শেষ হয়ে গেলে এবং ইসলামি আন্দোলনের/সংগঠনের শক্তি মজবুত হলেই জামায়াতে ইসলামী বি.এন.পি থেকে বের হয়ে এসে আলাদা নির্বাচন করবে। এটাই হল বাস্তব সত্য কথা। যারা বর্তমান সময়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় তারা মুলত নাস্তিকদের দালাল, ইস্লামের শত্রু, মুনাফিক সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর অনুসারি। সুতারাং না বুঝে, না শুনে অযথা কাউকে গালি দিবেননা, কাউকে তিরস্কার করবেননা, অপবাদ দিবেননা, যদি অপবাদ দেন, অথবা কুরআন/হাদিসের অপব্যাখ্যা করেন তবে জেনে রাখবেন চুড়ান্ত বিচারের মালিক হলেন আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ আমাদেরকে সত্য কথা জানার, সত্য কথা বলার, সত্য কথা মানার এবং সত্য পথে চলার তাওফিক দিন (আমিন)
বিষয়: বিবিধ
২৫৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন