নাস্তিকের যত প্রশ্ন-০৬
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ২৭ জুন, ২০১৪, ০৭:৪৬:৫২ সন্ধ্যা
হাসান নাসিরের মত কিছু নাস্তিক বলেন (বিশ্বাস ধর্ম যুক্তি বই থেকে)
প্রশ্ন: প্রত্যেক ধর্মেই তাহার নির্দ্দিষ্ট বিধি বিধানসমুহের সত্যাসত্যের সমালোচনা একবারেই বন্ধ। যেমন পাপ ও নরকের ভয়ে ভিতরের সমালোচনা বন্ধ, তেমন বাইরের (ভিন্নধর্মের লোকদের) সমালোচনা চিরকালই বাতিল। কাজেই ধর্ম নির্বিঘ্নে আপন মনে দিন কাটাইতেছে। কিন্তু এইখানেই কি শেষ ? না, বোবারও কল্পনাশক্তি আছে। মুখে কিছু বলিতে না পারিলেও সে বিশ্বের ঘটনাবলী সম্পর্কে চিন্তা করে, সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
উত্তর:
---ইসলাম ধর্মে অযৌক্তিক কিছু আছে কি যে সমালোচনা করবেন? সমালোচনা করার যেটা আছে সেটা হলো, ইসলামের নামে কিছু অজ্ঞলোকের বাড়াবাড়ি এবং কুসংস্কার। ইসলামকে যারা গ্রহন করেছে, তারা কেন তার সমালোচনা করবে? যারা করেনি, তারা তো চিরকালই সমালোচনা করেছে এবং এখনো করছে। মহানবীর আমল থেকেই প্রতি মুহুর্তেই ইসলামের উপর আঘাত এসেছে এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। কাজেই ধর্ম নির্বিঘ্নে আপন মনে দিন কাটাইতেছে-এধরনের মন্তব্য ইসলামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
প্রশ্ন: নাস্তিক বলেন, মন যাহা চায়, ধর্মের কাছে তাহা পায় না। মানুষের মনের ক্ষুধা অতৃপ্তই থাকিয়া যায়। ক্ষুধার্ত বলদ যেমন রশি ছিঁড়িয়া অন্যের ক্ষেতের ফসলে উদরপুর্তি করে, মানুষের মনও তেমন ধর্ম-ক্ষেত্রের সীমা অতিক্রম করিয়া ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য ছুটিয়া যায় দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে।
উত্তর:
---অন্যান্য সকল ধর্মের ক্ষেত্রে একথা প্রযোজ্য হলেও ইসলামের ক্ষেত্রে নয়। ইসলাম ধর্মে মন যা চায় মানুষ তা পায়। অবৈধ বা অন্যায় কিছু চাওয়া ইসলাম শেখায় না। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের মনে অবৈধ কোন মনের ক্ষুধা থাকে না। কাজেই মন অতৃপ্ত থাকে না। আল্লাহকে বিশ্বাস অবিশ্বাসের জন্যে ইসলামধর্মী মানুষ কোন দর্শন বা বিজ্ঞানের কাছে ছুটে যায় না। তারা না দেখেই বিশ্বাস করে। অদেখা আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করে এবং পেয়েও যায়। যা নাস্তিকেরা পায় না।
প্রশ্ন: নাস্তিক বলেন, ধর্মের অধিকাংশ তথ্য অন্ধবিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত।
উত্তর:
---আগের মতই বলছি, ইসলামের ক্ষেত্রে এটা সত্য নয়। কোরআনকে বড় বড় পন্ডিতরা (মরিস বুকাইলিসহ বহু পন্ডিত) অনেক যাচাই বাছাই করেছেন। বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে দেখেছেন। কোন অসমাঞ্জস্য খুঁজে পাননি। বরং প্রমাণিত হয়েছে এটা বিজ্ঞানময় গ্রন্থ। ইসলাম অন্ধ বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত কোন ধর্ম নয়।
প্রশ্ন: নাস্তিক বলেন, আল্লাহর অনিচ্ছায় কোন ঘটনা ঘটে কি?
বলা হয় যে, আল্লাহর অনিচ্ছায় কোন ঘটনা ঘটে না। এমনকি গাছের পাতাও নড়ে না। বিশেষত তাহার অনিচ্ছায় যদি কোন ঘটনা ঘটিতে পারে তাহা হইলে তাহার ‘সর্বশক্তিমান’ নামের সার্থকতা কোথায়? আর যদি আল্রাহর ইচ্ছায়ই সকল ঘটনা ঘটে, তবে জীবের দোষ বা পাপ কি?
উত্তর:
---মুসলমানের বিশ্বাস পৃখিবীর সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে। আল্লাহ মানুষকে ভাল মন্দ বুঝার ক্ষমতা দিয়েছেন। ভালটা গ্রহন করলে পুরস্কার, আর মন্দটা গ্রহন করলে আছে শাস্তি। ধরা যাক, আপনি হাইওয়ে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। বড় বড় গাড়ী চলছে রাস্তায়। আপনাকে আল্লাহ সাবধান হওয়ার গাইডলাইন দেয়া সত্বেও আপনি যদি চোখ বন্ধ করে রাস্তা পার হতে গিয়ে এক্সিডেন্টের শিকার হন, তাহলে সেটা নিতান্তই আপনার নিজেরই বাড়াবাড়ির ফল। এটা আপনার নিজেরই দোষ, আপনার পাপ। এতে আল্রাহর ‘সর্বশক্তিমান’ নামের সার্থকতা ম্লান হয় কি করে?
প্রশ্ন: নাস্তিক বলেন, ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করিয়াছেন কোন এক সময়ে। কিন্তু ‘সময়’কে সৃষ্টি করিয়াছেন কোন সময়ে, তাহার কোন হদিস পাওয়া যায় না।
উত্তর:
---এর জন্যে আপনাকে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে। আলকোরআনের সৃষ্টি সংক্রান্ত আয়াত সমুহ অনুধাবন করতে হবে। ডঃ মরিস বুকাইলির বইটি অন্ততঃ একবার পড়ে দেখুন।
প্রশ্ন:
নাস্তিক বলেন, ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবেরা সকলেই তাহার দয়ার সমানাংশ প্রাপ্তির দাবীদার। কিন্তু তাহা পাইতেছে কি? ঈশ্বরের দয়া বন্টনে এরূপ পক্ষপাতিত্ব কেন? আর ‘ভাগ্য’ বলিয়া কিছু আছে কি-না। থাকিলে কাহারও ভাগ্যে চিরশান্তি নাই কেন? ভাগ্যের নিয়ন্তা কে?
উত্তর:
---এমন কথা তো আল্লাহ বলেননি। আল্লাহ বলেছেন মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। তারাই বেশী দয়া পেয়েছে। তাদের মধ্যেও আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দয়া করেন। কম বেশী আবশ্যই করে থাকেন। বিচারের মানদন্ড তো নির্ধারিত হবে শেষ বিচারের দিন। সুনির্দ্দিষ্ট কিছু বিষয় আল্লাহ মানুষের বিবেক ও বিচার বিবেচনার উপর ছেড়ে দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। এ পরীক্ষায় যারা পাশ করবেন তারাই জান্নাতী।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন