আশূরায় করনীয়, বর্জনীয়-
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ১৬ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৩৭:১২ রাত
শীয়া নামধারী কিছু লোকজন আশূরার দিনে শোক পালনের নামে নানা শিরক বিদআতে লিপ্ত হয়। আর তাদের এই কার্যকলাপ দরবারী আলেমদের জন্যে হয় পোয়াবারো। কেননা এগুলোর বিরোধিতা করতে গিয়ে তারা কারবালার পুরো ইতিহাসকেই ইয়াজিদের পক্ষে দাড় করিয়ে দেয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করার নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়।
আশুরার দিন যা বর্জনীয়
১। সুন্নি নামধারী কিছু লোক এদিন নানা জাতের খানাপিনা করেন, মহরম-এর বাদ্য বাজান, এদিনটাকে খুশীর আমেজে পালন করেন। আবার শীয়া নামধারী কিছু কুলাঙ্গার এদিন নানা জাতের মাতম করেন, বুকে পিঠে ছুরি মারেন, তাজিয়া মিছিল করেন। এসব কাজ অবশ্যই বর্জনীয়। এসব কখনোই ইসলাম অনুমোদন করেনি। কাজেই এগুলো বিদআত। এদের কিছু কিছু কর্মকান্ড শির্কের পর্যায়ভূক্ত। মুসলমানদেরকে অবশ্যই এসব বর্জণ করতে হবে। এইসব শির্ক বিদআত-রাজতন্ত্রপন্থীদের প্রচারনার জন্যে একটা মোক্ষম অস্ত্র হিসাবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই শির্ক বিদআতের বিরোধীতার নামে তারা কারবালার ইতিহাস বিকৃতি ঘটাতে সচেষ্ট হয়। ‘মানুষকে সঠিক ইতিহাস’ শেখাবার নামে রাজতন্ত্রীরা কৌশলে আহলে বাইতের বিরুদ্ধে নেমে যায়।
২। মুসলমানদের দূর্ভাগ্য, হারামাইন আল শরীফাইন এখনো ইসলামী ছদ্মবেশের রাজতান্ত্রিক স্বৈরাচারদের দখলে। ইয়াজিদের প্রেতাত্মারা এখনো মুসলমানদের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছে। নানাভাবে ইহুদী-নাছারাদের সহযোগিতা করে আসছে। তাদের অর্থে লালিত ইয়াজিদের গুনগান গাওয়া ধূর্ত দরবারী আলেমরা মুসলমানের মাঝে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আমাদের দেশের যেসব মাদ্রাসা মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর দান খয়রাতে চলে, তারাই ইসলামের নামে রাজতন্ত্রের পক্ষে ওকালতি করে। এদের প্রত্যাখ্যান করুন, যারা কারবালার ঘটনাকে খাটো করে ও এদিনটিকে গুরুত্বহীণ দেখানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এদের এড়িয়ে চলুন। প্রকৃত ইতিহাস শেখাবার নামে এরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ইয়াজিদের পক্ষে, রাজতন্ত্রের পক্ষে জনমত গঠনই এদের লক্ষ্য। নবী পরিবারের এইসব দুষমনদের জন্য আল্লাহর দরবারে হেদায়েত প্রার্থনা করুন।
যা করনীয়
১। মহররমের ৯ ও ১০ তারিখে অথবা ১০ ও ১১ তারিখে রোজা রাখুন। কেননা কারবালার এই মর্মান্তিক ঘটনা ছাড়াও এদিনটি ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রামাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)৬) ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই আশুরার দিনের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে এত গুরুত্বসহকারে অন্য কোন দিন রোযা পালন করতে দেখিনি। (অর্থাৎ রামাযান মাস ছাড়া) (বুখারী)।
২। কারবালার এ বিয়োগান্ত ঘটনা স্মরন করে ইমাম হুসাইন (রাঃ) ও তার পরিবারবর্গের জন্যে দোয়া করুন। আল্লাহপাক বলেছেন, ‘যাঁরা আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় শহীদ হন তাঁদেরকে কখনও মৃত মনে করো না। বরং তাঁরা নিজেদের রব তায়ালার নিকট জীবিত ও রিযিকপ্রাপ্ত।’ (সূরা আলে ইমরান-১৬৯)
৩। কারবালার ঘটনার চেতনায় উদ্ভূদ্ধ হয়ে রাজতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, পীরবাদ, জালিম শাসক, শিয়া-ছুন্নী ফেরকা সমুহের বিরুদ্ধে মনেপ্রাণে ঘৃণা প্রকাশ করুন, ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠায় নিজ করনীয় ঠিক করুন এবং তা পালনের দৃঢ় শপথ নিন। কবি’র এ অমর বাণীটা স্মরণ রাখুন, ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালা কি বাদ।
বিষয়: বিবিধ
১৭৮৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
যা করনীয়
” ১। মহররমের ৯ ও ১০ তারিখে অথবা ১০ ও ১১ তারিখে রোজা রাখুন। কেননা কারবালার এই মর্মান্তিক ঘটনা ছাড়াও এদিনটি ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রামাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)৬) ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই আশুরার দিনের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে এত গুরুত্বসহকারে অন্য কোন দিন রোযা পালন করতে দেখিনি। (অর্থাৎ রামাযান মাস ছাড়া) (বুখারী)।
২। কারবালার এ বিয়োগান্ত ঘটনা স্মরন করে ইমাম হুসাইন (রাঃ) ও তার পরিবারবর্গের জন্যে দোয়া করুন। আল্লাহপাক বলেছেন, ‘যাঁরা আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় শহীদ হন তাঁদেরকে কখনও মৃত মনে করো না। বরং তাঁরা নিজেদের রব তায়ালার নিকট জীবিত ও রিযিকপ্রাপ্ত।’ (সূরা আলে ইমরান-১৬৯)
৩। কারবালার ঘটনার চেতনায় উদ্ভূদ্ধ হয়ে রাজতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, পীরবাদ, জালিম শাসক, শিয়া-ছুন্নী ফেরকা সমুহের বিরুদ্ধে মনেপ্রাণে ঘৃণা প্রকাশ করুন, ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠায় নিজ করনীয় ঠিক করুন এবং তা পালনের দৃঢ় শপথ নিন। কবি’র এ অমর বাণীটা স্মরণ রাখুন, ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালা কি বাদ। “
আপনার এই অংশের সাথে সম্পূর্ণ এক মত ।
আপনি বলেছেন :
”আশুরার দিন যা বর্জনীয়
১। সুন্নি নামধারী কিছু লোক এদিন নানা জাতের খানাপিনা করেন, মহরম-এর বাদ্য বাজান, এদিনটাকে খুশীর আমেজে পালন করেন।”
আপনার এই কথার সাথে এক মত নই । কারণ এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট সহীহ হাদিস রয়েছে ।
পরিশেষে এতটুকু বলছি : শোক চির দিনের বিষয় নয় । শোক বা আবেগের চেয়ে বেগ বা গতি বড় বা ত্যাগ বড় । রাসুল (সা) - এর পরিবারবর্গ সবাই জান্নাতের সর্দার ও সর্দারনি । তাদের জন্ম-ওফাত বা শাহাদাত সব কিছুই আমাদের জন্য বরকতময় ও আনন্দের ।
মহররমের ১০ তারিখ কম করে হলেও ৩৫ টা ঘটনার জন্য আলোচিত ও তাৎপর্যপূর্ণ । মহররমের ১০ তারিখ জান্নাতে যুবকদের সর্দার সায়েদুনা ইমাম হুসাইন রা - শাহাদাত বরণ করে নিজেকে আরো বেশী সম্মানিত করেছেন । আর তার শাহাদাত ছিল আল্লাহর ইচ্ছা ।
পরিশেষে বলছি : পশ্চিমা অমুসলিম শক্তির তাবেদার সহিহ ইসলাম প্রচারের দাবিদাররা বরাবরই মহররম মাসটিকে আড়াল করার চেষ্টা করে থাকে । কারণ তারা শয়তানের শিং-এর অনুসারী । তাদের বিরোদ্ধে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে বা বিভিন্ন মত-পথের মুসলিমদের লড়াই করে যাওয়া ঈমানী কাজ । আর এই লক্ষ্যে যারা অগ্রগামী হবে বা শাহাদাত বরণ করবে তারা জান্নাতের সর্দার সাইয়িদুনা ইমাম হোসাইন রা - এর সাথে জান্নাতে স্হান পাবে ইনশাআল্লাহ ।
এই মুহুর্তে মিশর, ইয়েমেন, সিরিয়ায় শয়তানের শিং-এর অনুসারীরা কাল হাত বিস্তার করেছে । শয়তানের শিং মক্কা-মদিনার মতো আমাদের পবিত্র স্হানগুলো দখল করে আছে । তাদের বিরোদ্ধে সোচ্চার হওয়া এখন আমাদের সময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন